নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
মায়া এক অনির্বচনীয় অনুভূতির নাম। অনির্বচনীয়, তবে ইন্দ্রিয়াতীত নয়, অনুভবযোগ্য। মুনী-ঋষিগণ যতই বলে যাক না কেন "কা তব কান্তা, কস্তে পুত্রঃ" (কে তোমার স্ত্রী, কেই বা তোমার সন্তান?), তবুও তো আমাদেরকে মায়াডোরে বাঁধা পড়তেই হয়। আর জগত সংসারের এই মায়াকে অস্বীকার করিই বা কিভাবে? মায়া আমাকে ভীষণ টানে! আমাকে মায়া করে, ছোটবেলায় বাসায় এমন কোন মেহমান আসলে সহজে তাকে যেতে দিতাম না; আবার কোথাও গিয়ে মায়ার বাঁধনে আটকা পড়লে সহজে ফিরে আসতে চাইতাম না। কৈশোরে সেই ১২ বছর বয়সেই যখন পারিবারিক বন্ধন ছেড়ে ক্যাডেট কলেজে চলে গেলাম, সেদিন বাসার সকলের জন্য মায়ায় বুকটা ফেটে যাচ্ছিল, বিশেষ করে ছোট তিন ভাইবোনের জন্য, কিন্তু কাউকে মুখে কিছুই বলতে পারিনি। তিনমাস পর পর যখন টার্ম-এণ্ড ছুটিতে বাসায় ফিরে আসতাম, তখন প্রথম প্রথম কয়েকদিন আদর যত্নে থাকতাম। তারপর থেকেই পুনরায় শুরু হতো পারিবারিক কড়া শাসনের দৈনন্দিন জীবন। ভাইবোনদের সাথেও ঝগড়া-ঝাটি, খুনসুটি শুরু হতো। তখন মনে হতো, আমি বাসা ছেড়ে ক্যাডেট কলেজে চলে যাওয়াতে এরা বোধহয় মোটেই আমাকে মিস করেনি। ছুটি শেষে কলেজে ফিরে যাবার দিন ঘনিয়ে আসতে থাকলে আবার আমার প্রতি খাতির যত্ন একটু একটু করে বাড়তে থাকতো। শেষের দিনে আবার সেই অনুভূতি! কণ্ঠ বাষ্পরুদ্ধ, দু’চোখ ঝাপসা, চোখের পাতার দ্রুত ওঠা নামা। এর নাম বুঝি মায়া।
আমার নাতনি আনায়ার বয়স মাত্র ৮ বছর, আর নাতি আরহামের আড়াই বছর। সেদিন ভিডিওতে দেখলাম, ‘কানাডা ডে’ উদযাপন উপলক্ষে ওদের মা বাবা ওদেরকে ফায়ার ওয়ার্ক্স দেখাতে নিয়ে গেছে। আনায়া খুব সুন্দর করে আরহামকে আগলে রাখছে, ও যেন কোন কিছুতে ভয় না পায়। যখন আতশ বাজিগুলো ফুটছিল আর সবাই ওয়াও, ওয়াও করছিল, আরহামও তা দেখে চিৎকার করে বলে উঠলো, “ওয়াও, আলো ভেঙে গেল”! একটি শিশুর এমন তাৎক্ষণিক একটি কাব্যিক মন্তব্য ধারণকৃত ভিডিওচিত্রে শুনে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম! আরহামের চেয়ে আনায়া মাত্র পাঁচ বছর চার মাসের বড়। কিন্তু বয়সের এই ব্যবধানটুকু অনেক, অনেক বেড়ে যায় যখন আরহাম কোন কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, কারো দ্বারা শাসিত হয়, কিংবা কোন কিছুতে ভয় পায়। সারাদিনে ওরা দুই ভাইবোন যতই ঝগড়া-ঝাটি, খুনসুটি এমন কি মারামারি পর্যন্ত করুক না কেন, উল্লেখিত তিনটি পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আনায়া সাথে সাথে মাতৃস্নেহ নিয়ে তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে, কম্ফোর্ট দেয়ার চেষ্টা করে, সাহস দেয় এবং তার প্রতি রূঢ় আচরণকারীকে পাল্টা শাসন করে। ঢাকায় আমাদের বাসায় থাকা কালে একদিন আরহাম দুষ্টুমি করার সময় আমি তার সাথে একটু জোরে কথা বলেছিলাম। সেটা শুনে আনায়া ছুটে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, “এই দাদা, তুমি জান না, আরহাম কত ছোট! তুমি ওর সাথে এত জোরে কথা বলছো কেন”? এই বলে সে আরহামকে বুকে জড়িয়ে ধরলো। আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। অথচ এর একটু আগেই ওরা দু’জনে কিছু একটা নিয়ে মারামারি করছিল! এর নামও বুঝি মায়া!
মেলবোর্নে আমার মেজ ছেলে ও বৌমার বাসায় আমরা এখন বেশ দীর্ঘ একটা ভ্যাকেশন কাটাচ্ছি। আমরা এখানে থাকতে থাকতেই ওদের ঘরে প্রথম সন্তান এসেছে। এই নিয়ে ওরা যেমন আনন্দে উদ্বেল, তেমনি ওকে নিয়ে অসম্ভব ব্যস্ত। আমরাও যতটুকু পারি, সাহায্য করছি নবজাতকের সেবা যত্নে। দেখতে দেখতে এই দীর্ঘ অবকাশও প্রায় শেষ হয়ে এলো, শীঘ্রই দেশে ফিরে যাবার দিন চলে আসছে। দিনটা যতই ঘনিয়ে আসছে, অনুভব করছি ছেলে ও বৌমা আমাদের প্রতি ততই বেশি করে অনেক মায়া করছে। এখানে আসার পর পরই ছেলে আমাদেরকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়ে বলেছে, তোমরা অস্ট্রেলিয়ায় এর আগেও এসেছো। গুগল সার্চ করে দেখ, যেখানে যেখানে যেতে ইচ্ছে করে, এই কার্ড ব্যবহার করে সেখানে চলে যাও। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক কিভাবে সার্চ করবো, সে পদ্ধিতিটাও শিখিয়ে দিল। যেমন আমরা ওদের ছোটবেলায় অনেক কিছু শেখাতাম। আমরাও যথেচ্ছা ঘুরে বেড়িয়েছি। বেড়িয়ে আসার পর রাতে যখন খাবার টেবিলে একত্রিত হই, তখন ওরা দু’জনে জানতে চায় কোথায় কোথায় গেলাম, কিভাবে গেলাম, এনজয় করলাম কিনা, ইত্যাদি। প্রথম কয়েকদিন কিছুটা গোলমাল হলেও, তারপর থেকে সফলভাবে ঘুরে ফিরে বাসায় ফিরে আসতে পারছি দেখে ওরা খুশি হয়। এর মধ্যে আমরা এমন কয়েকটা জায়গাতেও ঘুরেছি, যেখানে ওরা এখনও যায় নাই। কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি, ওরা আমাদেরকে এতদিনের চেয়ে আরও কিছুটা বেশি করে সময় দিচ্ছে। বুঝতে পারছি, আমাদের ফিরে যাবার দিনটি যতই অগ্রসরমান হচ্ছে, ওরাও তত মায়ার ভারে ভারাক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের খাওয়া দাওয়ার প্রতি সযত্ন দৃষ্টি রাখছে, কথা বার্তাও এমনভাবে বলছে, যা শুনে মনটা নরম হয়ে যায়। এসব দেখে ও অনুভব করে আমার আবার ছুটি শেষে ক্যাডেট কলেজে ফিরে যাবার সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে। এর নামই বুঝি মায়া!
কাকতালীয় হলেও, এ লেখাটা শেষ করে নীচে যখন তারিখ লিখছিলাম, তখনই মনে পড়ে গেল আজ থেকে ৫৫ বছর আগে, আষাঢ়স্য ঠিক এই দিনেই মুষলধারা বৃষ্টির মাঝে আমি মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছিলাম। বাসা থেকে বিদায় নেয়া পর্যন্ত আম্মা কোন রকমে নিজেকে সামলে রেখেছিলেন। পরে আপির কাছে শুনেছিলাম, আমি চলে যাবার পর পরই আম্মার চোখ দিয়েও আষঢ়ের ঢল নেমেছিল। এখন বলতে লজ্জা নেই, কলেজের প্রথম রাতটি বিনিদ্র কেটেছিল এবং মধ্যরাতের পর আমার চোখ দিয়েও....
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
০৭ জুলাই ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ৭৪৪
০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: "পড়ে ভালো লাগলো" - অনেক ধন্যবাদ।
"বিভিন্ন ফরম্যাটে মায়ার বহিঃপ্রকাশ" - ঠিক বলেছেন। সেটাই বুঝিয়েছি।
২| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৮
মিরোরডডল বলেছেন:
জীবন মানেই একটা মায়ার খেলা ।
মানুষ যে বলে ভালোবাসা,
ভালোবাসা আসলে কি, এটা তো একটা মায়া ছাড়া আর কিছুই না ।
একটা রহস্যময় অনুভূতি ! মনের অজান্তেই গড়ে উঠে ।
মায়ার বাঁধনে জড়াতে চাইনা, মায়া মানেই কষ্ট পাওয়া ।
আবার এই মায়া না থাকলে মনে হয় কি যেন নেই নেই !
কি এক জ্বালা ! থাকলেও বিপদ, না থাকলেও ভালো লাগে না ।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম চারটে লাইনের সাথে সম্পূর্ণ একমত।
"থাকলেও বিপদ, না থাকলেও ভালো লাগে না" - এই দ্বৈত অনুভবের জন্যই তো মায়া এতটা রহস্যময়, এবং সব কিছুর পরেও এতটা কাঙ্খিত!
পোস্টে প্রথম প্লাসটি দিয়ে ধন্য করে গেলেন। আজকের এই ডিজিটাল যুগে এসব আবেগময় লেখার কোন মূল্য নেই। মানুষের এত সময় কোথায় এসব নিয়ে ভাবার? আমি অবসরপ্রাপ্ত, তাই আমার হাতে আছে অঢেল সময়।
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৪
মিরোরডডল বলেছেন:
এই যে এবার বেশী সময় থাকা হয়েছে, তাও আবার নাতনিকে নিয়ে ।
এবার চলে গেলে কষ্টটাও বেশী হবে ।
আনায়া আরহামের কথা পড়ছি আর আমার নিস নেফিওর কথা মনে পড়ছে ।
ওদের মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠলেই আমার কষ্ট লাগে ।
খুব আদর করতে ইচ্ছে করে ।
০৮ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: "এবার চলে গেলে কষ্টটাও বেশী হবে" - নির্ঘাত তাই হবে! আপনি ঠিকই বুঝতে পেরেছেন।
আপনার নীস নেফিওর কথা জেনে ভালো লাগলো। চিলড্রেন আর দ্য এ্যাঞ্জেলস অভ গড!
পুনঃমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর, প্রাঞ্জল, মায়াময় লেখা।
'আলো ভেঙে গেলো।' ছোট্ট আরহামের এ কাব্যিক বাক্যে আমিও মুগ্ধ। ও কি স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে? বাচ্চাদের ভাঙা ভাঙা শব্দে কথা বলা আমি খুব উপভোগ করি।
আনায়া'র গার্ডিয়ানসুলভ অ্যাটিচুডও ভালো লাগলো। ছোটো দুই বা ততোধিক বাচ্চাদের বেলায় বয়সে বড়োটা নরমালি এমনই হয়ে থাকে। এটা নেচারালিই ডেভেলপ করে বাচ্চাদের মধ্যে। ওদের বন্ডিং-ও এর মধ্য দিয়েই বলিষ্ঠ হতে থাকে।
মেঝ ছেলের ঘরের সন্তানসহ সকল নাতি-নাতনির জন্য দোয়া ও শুভ কামনা থাকলো।
বিকালে ঘুমিয়েছিলাম। ঘুম ভাঙার সময় দেখি মনটা বিষাদে ভরে আছে। আমিও একটা মায়ায় বড্ড গেঁথে আছি, যার বাঁধন টুটতে হবে এ মাসের শেষ দিনেই। বিষয়টা ভাবতেই খুব কষ্ট লাগছে।
আপনার মনটাও নিশ্চয়ই খুব মায়াক্রান্ত এখন, মেলবোর্ন থেকে চলে আসতে হবে বলে। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য এবং ম্যাডামের জন্য।
০৯ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ৮:২০
খায়রুল আহসান বলেছেন: "সুন্দর, প্রাঞ্জল, মায়াময় লেখা" - অনেক ধন্যবাদ, আমার লেখার প্রতি এমন চমৎকার এবং কাঙ্খিত বিশেষণগুলো আরোপ করার জন্য।
অনেক ভালো লাগছে এটা দেখে যে আমার পোস্টের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি আপনার এতটা মনযোগ পেয়েছে। আপনিই প্রথম এ অনুচ্ছেদটি নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্য রাখলেন। আরহাম এখন মোটামুটি স্পষ্ট করেই কথা বলতে পারে। ওর বয়সে ওর বড় বোন আনায়াকে নিয়ে একদিন গাড়িতে করে দূরে কোথাও যাচ্ছিলাম। পথের দু'পাশে এপার ওপার করে টাঙানো কাপড়ের ফ্লায়ার (ব্যানার) গুলো কোন কোনটা বাতাসে ছিঁড়ে গিয়েছিল। ও সেগুলোর প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছিল, "দাদা দেখ, ঐ কাপড়গুলো 'ভেঙে' গেছে!
"ওদের বন্ডিং-ও এর মধ্য দিয়েই বলিষ্ঠ হতে থাকে" - জ্বী, আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক। এর আগের কথাগুলোও।
'মায়ায় বড্ড গেঁথে' থাকা তো কিছুটা কষ্টদায়ক হলেও একটি সুখকর অভিজ্ঞতা! কিন্তু একেবারে দিনক্ষণ বেঁধে সেই বাঁধনটাকে টুটতে হবে, এ কথাটা ভাবতেই তো আমিও কিছুটা কষ্ট অনুভব করছি। ঔৎসুক্য থাকলেও, নিতান্ত ব্যক্তিগত কোন বিষয় হবে অনুমান করে যা বলেছেন তার বাইরে আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না, কিন্তু এ মাসের শেষ দিনটিতে যেন আপনি কষ্টে ভারাক্রান্ত না হন, সে শুভকামনা রইলো।
"আপনার মনটাও নিশ্চয়ই খুব মায়াক্রান্ত এখন" - খুবই 'মায়াক্রান্ত' এবং দিনে দিনে তা ঘনীভূত হচ্ছে!
মন্তব্যের আন্তরিকতা স্পর্শ করে গেল! একজন লেখকের লেখার সাথে যখন পাঠক একাত্ম হতে পারেন, কেবল তখনই তার কলম থেকে বেরিয়ে আসতে পারে এমন একটি আন্তরিক এবং হৃদ্যতাপূর্ণ মন্তব্য।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য। স্বাস্থ্যরক্ষার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। রাতজাগা পরিহার করবেন। আপনার এখনো দেয়ার মত অনেক কিছু আছে। You are brilliant. You have yet to give the best out of you.
৫| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৯:৪১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার নাতি আর নাতনীর মধ্যে যে টান এটাকেই মায়া বলে। এটার অনেক রূপ। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে সেটা খুঁজে পায় তাদের জীবন চলার পথে। একটা জায়গায় অনেকদিন থাকার পর সেই জায়গা ছেড়ে আসতে মন খারাপ লাগে। এটাও এক ধরণের মায়া। কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় বিদায়ের সময় বিদায়ী সহকর্মীর প্রতি মায়া জাগে যদিও সেই সহকর্মীর সাথে অনেক ঝগড়া বিবাদ বিভিন্ন সময়ে হয়েছে।
আপনার নাতি আর নাতনীর জন্য দোয়া রইল।
০৯ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার নাতি আর নাতনীর মধ্যে যে টান এটাকেই মায়া বলে" - এই কথাটি এবং এর সাথের কথাগুলো দিয়ে 'মায়া'র চমৎকার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত হ'লাম। নাতি-নাতনি'র প্রতি দোয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
০৯ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।
৭| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:২৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
মায়ার ভুবনে
মায়ারে যতনে
রাখি পুশে মনে
মায়ার কারণে ...
ভাললাগা রইলো প্রিয় সিনিয়র
০৯ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২০
খায়রুল আহসান বলেছেন: 'মায়া' নিয়ে চমৎকার চারটে লাইন লিখেছেন! বড় ভালো লেগেছে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
৮| ০৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: মায়া করাটা ভীষন ভালো। কিন্তু এর ফলাফল কষ্টের।
বনের পাখি বনে উড়ে চলে যায়, কিন্তু পড়ে থাকে পাখির পালক। পালকটা হচ্ছে মায়া।
একটা গানও আছে, উইড়া যায়রে বনেড় পক্ষী, পইরা থাকে মায়া।
০৯ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "উইড়া যায়রে বনেড় পক্ষী, পইরা থাকে মায়া" - গানের পংক্তিটা খুব সুন্দর!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৯| ০৯ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১:৫৩
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: খায়রুল আহসান ভাই,
আপনি আপনার জীবনের সুন্দরতম সময় কাটাচ্ছেন। আপনার এই সুন্দরতম মুহুর্তের সুদীর্ঘতা কামনা করছি।
“ওয়াও, আলো ভেঙে গেল”!৷
আহ! আবেগের এমন সুন্দর প্রকাশ ভঙ্গিমা দেখতে পাচ্ছি না। তবে আপনার লেখা থেকে কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছি। আসলে এই দৃশ্যগুলো দেখার যে শান্তি ও পুলক সেটা কেবল দেখাতেই আছে। বাচ্চাদের আমার সবসময় ভালো লাগে। নিষ্পাপ বাচ্চাদের মধ্যে আমি স্বর্গ দেখি। মুগ্ধতা ছড়ানোর এক মেশিন নিয়ে যেন ওরা সবসময় চলাফেরা করে।
আরহাম ও আনায়ার প্রতি আপনার ভালোবাসা একটু বেশিই মনে হচ্ছে। আরহাম নিজ নামের মতই হয়ে উঠুক পরম দয়ার অধিকারী।
“এই দাদা, তুমি জান না, আরহাম কত ছোট! তুমি ওর সাথে এত জোরে কথা বলছো কেন”
আনায়া কর্তৃক আপনার প্রতি এই কিউটপূর্ণ শাসন দ্বারা সে প্রমান করছে, সে আসলেই দায়িত্বশীল তত্বাবধায়ক। তার নামের সাথে মিলিয়ে সে এমন যত্ন নিতে থাকলে আপনি অবাক হবেন?
আমি কোন বড় বোন পাইনি! ক্লাস এইটেই আমি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরি, আপনার মত। আমি আমার বড় বোনের শূন্যতা দূর করার যে সকল ট্রাই করেছি দুর্ভাগ্যবশত তা ছিল স্বল্প সময়ের জন্য। কারণ, আমি আমার শিক্ষা জীবন ও কর্মজীবনে কোথাও সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত করি নি। সে কারণে, স্থায়ী ভাবে কাউকে আমি বড় বোন হিসেবে পাইনি। তবে আমার ছোট বোনগুলো আমার কাছে একটু বেশিই প্রিয়। সে কারণে, তারা অনেক সময় আমার উপর বড় বোনের ন্যায় কর্তৃত্ব আদায় করার ট্রাই করে। আমি তাদের এই গুণটাকে উপভোগ করি।
আষাঢ় মাইস্যা বিদায়, আপনার মেজ ছেলে ও তার পরিবার থেকে বিদায় নেওয়ার মূহুর্তে আষাঢ় মাইস্যা বিদায় নেওয়ার যে কথাটা আজ স্মৃতিতে ভাসছে, সেখানটায় আপনার শ্রদ্ধেয়া মাতার নিজেকে সামলে নেওয়ার দৃশ্যমান বিষয়টি কিন্তু ভেতরে মনকে ক্রন্দনরত দেখেছে আষাঢ় মাসের বৃষ্টির মত।
১০ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৩২
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রিয় ব্লগার সৈয়দ ইসলাম,
এতটা বিশ্লেষণাত্মক এবং চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে কী বলে যে ধন্যবাদ জানাবো, বুঝতে পারছি না। আজকের দিনে কোন লেখকের ব্লগপোস্টে পাঠকের এমন মনযোগ এবং সুবিবেচিত মন্তব্য পাওয়া সত্যিই বিরল ঘটনা, যদিও আগে বেশ পাওয়া যেত। এখন খুব বেশি হলে চার/পাঁচ লাইনের মন্তব্যেই বেশিরভাগ পাঠক তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। আর তার চেয়েও সত্য কথা, অধিকাংশ পাঠক তো কোন মন্তব্যই করেন না!
"আপনি আপনার জীবনের সুন্দরতম সময় কাটাচ্ছেন" - আলহামদুলিল্লাহ! জ্বী, আমি আপনার সাথে একমত। আমারও মনে হয়, ব্যক্তিজীবনে এখনই আমার সবচেয়ে সুন্দরতম সময় যাচ্ছে।
"আরহাম নিজ নামের মতই হয়ে উঠুক পরম দয়ার অধিকারী" - অনেক ধন্যবাদ, আপনার এই আন্তরিক দু'য়ার জন্য।
"তার নামের সাথে মিলিয়ে সে এমন যত্ন নিতে থাকলে আপনি অবাক হবেন?" - না, আমি মোটেই অবাক হব না। আমি ইতোমধ্যেই জেনে গেছি, শিশু থেকে এখন পর্যন্ত আনায়া নিজেকে একজন ভীষণ কেয়ারিং পার্সন হিসেবে নিজের পরিচয় তুলে ধরেছে। আশাকরি, আজীবন সে এমনই থাকবে।
আপনার কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আপনার ছোটবোনগুলো আপনাকে ভীষণ ভালবাসে। আশাকরি, ভাই-বোনের মাঝে এমন স্নেহ-প্রীতি- ভালবাসার সম্পর্ক আজীবন অটুট থাকবে।
আপনার অনুভূতিপ্রবণ মনের আলো অন্য অনেক মানুষের জীবনকে আলোকিত করুক, এই দোয়া করছি। সুন্দর মন্তব্য এবং পোস্টে প্লাস দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১০| ১৩ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:০১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার এই সময়টা একজন বাবার কাছে খুবই পরিতোষ জনক। সাংসারিক মিথস্ক্রিয়ার চমৎকার একটি পোস্ট।
মেলবোর্নে বসে কানাডায় বড় ছেলের ছেলেমেয়েদের খুনসুটি বা মাত্র পাঁচ বছরের পিচ্চি আনায়ার এক অপার্থিব মায়াবলে ছোট্ট ভাইকে আগলে রাখা,পরিনত বুদ্ধির জোরে দাদা দাদিকে হাজার হাজার মাইলের ব্যবধানকে নিমেষে উধাও করে দিয়ে ঢাকা- কানাডা- ও মেলবোর্নকে এক সূত্রে বেঁধে ফেলা সবেতেই ছোট্ট হৃদয়ের এক অসম্ভব বুদ্ধিমতি ও প্রত্যুৎপন্নমতিতার ছাপ পেলাম। ছোট্ট আনায়া এভাবেই মায়ার জালে সকলকে জড়িয়ে ফেলুক।দাদা- দাদি ভুলে যাক দেশে ফিরতে হবে বলে সাময়িক বিষন্নতা। ক্যাডেট কলেজের দিনগুলো অমলিন থাকুক তবে তা স্মৃতি কাতরতায় নয়, সুখস্মৃতি হয়ে।
১৩ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: "সাংসারিক মিথস্ক্রিয়ার চমৎকার একটি পোস্ট" - অনেক ধন্যবাদ, এমন উদার একটি মূল্যায়নের জন্য।
"মাত্র পাঁচ বছরের পিচ্চি" - আনায়া মাত্র পাঁচ বছরের পিচ্চি নয়, ওর বয়স এখন ৮+। ওদের দুই ভাই বোনের বয়সের ব্যবধান প্রায় পাঁচ বছরের।
"ক্যাডেট কলেজের দিনগুলো অমলিন থাকুক তবে তা স্মৃতি কাতরতায় নয়, সুখস্মৃতি হয়ে" - সুখস্মৃতি হিসেবেই সেই দিনগুলোকে স্মরণ করি। তবে সেটা করতে গিয়ে কিছুটা স্মৃতিকাতরতায়ও আক্রান্ত হই বটে!
আন্তরিক মন্তব্য এবং পোস্টে প্লাস দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:০৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বিভিন্ন ফরম্যাটে মায়ার বহিঃপ্রকাশ,পড়ে ভালো লাগলো।