নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
উপরে যে কয়েকটি গুণাবলীর কথা উল্লেখ করলাম, তার মধ্যে প্রথম তিনটি যাদের মধ্যে আছে, শেষেরটিও তাদের মধ্যে অবশ্যই পাওয়া যাবে। অর্থাৎ যিনি অপরের প্রতি সৌজন্য, সহযোগিতা এবং সুআচরণ প্রদর্শন করে থাকেন, তিনি অপরকে অবশ্যই সম্মানও করে থাকেন, এবং এ কারণে নিজেকেও অপরের নিকট সম্মানীয় করে তোলেন। মেলবোর্নে এটা আমার তৃতীয় সফর। প্রতিবারে আমি এখানকার পথে ঘাটে, ট্রামে বাসে ট্রেনে, শপিং মলে, রেস্তোরাঁয় এখানকার মানুষের মাঝে এই গুণগুলোর পরিচয় পেয়েছি। প্রায় সব ধরণের লোকের কাছ থেকেই পেয়েছি; তা সে মূলধারার অজি হোক কিংবা অন্য কোনদেশের মাইগ্র্যান্ট হোক। পথে মুখোমুখি অতিক্রম করার সময় একটি ছোট্ট ‘হাই’ এবং সেই সাথে একটি নির্মল হাসি এদেরকে পর্যটকদের কাছে খুব সহজেই এ্যাপ্রোচেবল করে তোলে। কেউ যদি বলে, ‘আমি তোমাদের দেশে একজন পর্যটক, আমার এই তথ্যটুকু জানা প্রয়োজন। কোন সাহায্য করতে পারবে কি’? ব্যস, অমনি সে উঠে পড়ে লাগবে আপনাকে সাহায্য করতে, আর তা করতে না পারলে নিদেনপক্ষে কোথায় গেলে আপনি সাহায্যটুকু নির্বিঘ্নে পেতে পারেন, খুব যত্ন করে সে পথ বাৎলে দেবে। যদি শোনে যে আপনি একজন পর্যটক এবং আপনি একা ঘুরতে বের হয়েছেন, তবে সে তো জিজ্ঞাসিত পথটুকু বাৎলে দিবেই, সেখান থেকে আপনি একা ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে চাইবে।
অন্যান্য সভ্য দেশের মত এখানেও ট্রামে বাসে ট্রেনে কয়েক ধরণের যাত্রীদের জন্য আসন সংরক্ষিত থাকে। যেমন, সিনিয়র সিটিজেন, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, স্ট্রলারে শিশু বহন করা মহিলা, হুইলচেয়ারে আসীন কোন ব্যক্তি কিংবা অন্য কোন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। এদের জন্য সংরক্ষিত আসনে যদি এর বাইরের কোন যাত্রী বসেও থাকেন, এদেরকে দেখা মাত্র তারা উঠে দাঁড়িয়ে যান এবং তাদেরকে সংরক্ষিত আসনে বসতে সাহায্য করেন। হুইল চেয়ার এবং স্ট্রলার নিয়ে সরাসরি ট্রামে বাসে ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ করা যায়। এমনকি সংরক্ষিত আসনে বসা একজন সিনিয়র সিটিজেন তার চেয়েও দুর্বল কিংবা বেশি সিনিয়র সিটিজেন কে প্রবেশ করতে দেখলে স্বেচ্ছায় আসন ছেড়ে দেন এবং নিজে দাঁড়িয়ে যান, যতক্ষণ পর্যন্ত না আরেকটি সংরক্ষিত আসন খালি হয়। এখানে ট্রেনে চলাচলের সময় ট্রেনের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে কম্পিউটারাইজড ভয়েসে যেসব ঘোষণা দেয়া হয়, যেমন এখন ট্রেন থামছে কোন স্টেশনে, তার পরের স্টেশন কী, কোথায় ট্রেন বদল করে অন্য লাইনের ট্রেনে উঠতে হবে ইত্যাদি, তার সবই আমি খুব সহজেই বুঝতে পারি। কিন্তু মুশকিল হয় তখন, যখন ট্রেনের ড্রাইভার সরাসরি কোন ঘোষণা দেন। সাধারণতঃ কোন জরুরি কারণেই তারা এমন ঘোষণা দিয়ে থাকেন; যেমন, সামনের কোন স্টেশনে অপ্রত্যাশিত বিলম্বের সম্ভাবনা থাকলে, কোন কারণে ট্রেন আর যাবে না- এমন কোন সম্ভাবনা থাকলে এবং নির্ধারিত সূচীর বাইরে কোথাও কোন ট্রেন বদল করতে হলে সে ক্ষেত্রে বদলি বাসের ব্যবস্থা কোথায় কিভাবে পাওয়া যাবে, ইত্যাদি।
একদিন বাসা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র Flinders City তে যাব। বৌমা তার সেলফোনে এ্যাপস দেখে আমাকে পথ বাৎলে দিয়ে বললো, আমদের বাড়ির কাছের Lynbrook স্টেশনে উঠবেন, আর কোন বদলাবদলি নাই, একেবারে শেষের স্টেশন Flinders City তে সবাই নামবে, আপনারাও নামবেন। অবশ্য বৌমা আমাকে এ কথাটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল যে মাঝে মাঝে অনেক সময় পথিমধ্যে কফিল্ড স্টেশনে ট্রেন বদল করতে হয়। সে রকম যদি হয়, তবে ড্রাইভার সরাসরি ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আগেই তা জানিয়ে দেবেন। তাই কোন ঘোষণা হলে তা মন দিয়ে শুনবেন। বৌমা বলার পর আমিও ইন্টারনেট ঘেটে নিশ্চিত হ’লাম যে ট্রেনটির সরাসরিই যাবার কথা, পথে কোন ট্রেন বদল করতে হবে না। Lynbrook স্টেশনে গিয়েও ওদের schedule দেখে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হ’লাম।
ট্রেনে চলাচলের সময় আমি স্টেশনের নামগুলো খেয়াল করে থাকি। দেখতে দেখতে এখন এ লাইনের এবং আশে পাশের লাইনের সবগুলো স্টপেজের ক্রমানুযায়ী নাম আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। ট্রেনে বসে আমি জানালা দিয়ে দৃশ্যাবলী দেখছিলাম আর গিন্নীর সাথে গল্প করছিলাম। প্রথম থেকে দশটা স্টেশন পরে আসে কফিল্ড। সেখানে আসার আগে আগে ঠিকই কম্পিউটারাইজড ভয়েস থামিয়ে ড্রাইভারের কণ্ঠে একটি ঘোষণা আসতে শুরু করলো, কিন্তু আমি সে ঘোষণার কোন কিছুই বুঝতে পারলাম না। গিন্নীকে জিজ্ঞেস করলাম, সেও কিছু বুঝেনি। পাশের একজন ভারতীয় সহযাত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, সেও কিছু বুঝেনি। অন্যান্য যাত্রীদের মাঝেও কোন উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করলাম না, ফলে আমরাও নির্লিপ্ত থাকলাম। একটু পরে দেখি, ট্রেনটা যে স্টেশনে থামলো, সেটা একটু আগেই আমরা পার হয়ে কফিল্ড পৌঁছেছিলাম। বুঝলাম, ভুলটা কোথায় হয়েছে, তাই আর দেরি না করে তড়িঘড়ি করে সেই স্টেশনে নেমে পড়লাম।
২০ মিনিট পরের ট্রেনে চড়ে আমরা গন্তব্যে পৌঁছেছিলাম। ট্রেন আসার আগে একমাত্র অপেক্ষমান একজন মহিলা যাত্রীকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হয়েছিলাম যে আমরা ঠিক ট্রেনে চড়ছি কি না। উনি নিশ্চিত করে বলেছিলেন যে উনিও Flinders City তে যাচ্ছিলেন, আমরা ইচ্ছে করলে তাকে অনুসরণ করতে পারি। গন্তব্যে নামার পর উনি আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা ‘Way Out’ খুঁজে পাবো কিনা। আমি বললাম, পাবো, কারণ প্ল্যাটফর্মে নেমেই আমি আগের বারে দেখা বের হবার রাস্তা চিনে গেছি। তার পরেও উনি জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কোন এক্সিট দিয়ে বের হতে চাই। আমি বললাম, ‘Swanston Road Exit’। প্ল্যাটফর্মটি ছিল ভূতলে, এস্কেলেটর দিয়ে ওপরে উঠে গ্রাউন্ড লেভেল পাওয়া যায়। আমরা একসাথেই এস্কেলেটরে উঠলাম। নামার সময় উনি আমাকে বললেন, “এদিক দিয়ে গেলে পাবেন Swanston Road Exit, আর ওদিক দিয়ে গেলে পাবেন Elizabeth Road Exit। আপনাদের দিনটি ভালো কাটুক, মেলবোর্ন ভ্রমণ উপভোগ করুন”!
এর পরে আরও কয়েকদিন Flinders City তে এসেছিলাম। প্রতিবারই দেখেছি, স্টেশনের এক্সিট গেইটে এবং রাস্তার অপর পার্শ্বের ট্রাম স্টেশনে এবং ফেডারেশন স্কয়ারে বহু স্বেচ্ছাসেবক দাঁড়িয়ে থাকেন পর্যটক এবং অন্যান্য সাহায্যপ্রার্থীদেরকে সাহায্য করার জন্য। এদের বেশিরভাগই বয়স্ক লোক, অবসরের পর তারা এসব কাজ করে শান্তি পান, আনন্দও পান। বুড়োদের চেয়ে বুড়িরা সাহায্য করার ব্যাপারে বেশি স্বতঃস্ফূর্ত। এদেরকে কিছু জিজ্ঞেস করলে না বুঝা পর্যন্ত এরা হাল ছাড়ে না। এদের হাতে সিটি ম্যাপ থাকে। চাইলে ম্যাপে কলম দিয়ে এঁকে রাস্তা বুঝিয়ে দেন এবং ম্যাপটাও দিয়ে দেন। একদিন আমরা ‘সিটি সার্কেল ট্যুর’ বাসে ঘুরাঘুরি করার জন্য এসেছিলাম। স্টেশন থেকে বের হয়েই এক কোণায় দুই বুড়িকে দণ্ডায়মান দেখতে পেলাম। ওরা এক ধরণের পরিচিতিমূলক জ্যাকেট পরিহিত থাকে, দেখেই চেনা যায়। আমি তাদেরকে আমাদের উদ্দেশ্যের কথা জানালে তারা দুঃখ প্রকাশ করে জানালেন যে ঐদিন অনিবার্য কারণে আকস্মিকভাবে ‘সিটি সার্কেল ট্যুর’ বাতিল করা হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তাহলে এর পরিবর্তে আমরা কোন কোন দর্শনীয় স্থান দেখতে পারি’? ওনাদের মধ্যে একজন একটা লম্বা ফিরিস্তি দিলেন, যার মধ্যে অনেকগুলো আমরা ইতোমধ্যে দেখে ফেলেছি। তখন উনি প্রস্তাব রাখলেন, কাছেই আছে ‘স্কাই ডেক’ বিল্ডিং, সেটা দিয়ে শুরু করে আপনারা নিকটস্থ অন্যান্য স্থানগুলো দেখতে পারেন। আমি তথাস্তু বলে রওনা হ’লাম। একটু পরে দেখি, ওনাদের একজন পেছন পেছন দ্রুত হেঁটে এসে আমাদের সাথে ইয়ারা নদী পর্যন্ত এলেন এবং একটা লোহার সিঁড়িগোড়ায় দাঁড়িয়ে বললেন, এখান দিয়ে আপনারা নেমে যান, তারপর ঐ ফুটব্রীজ দিয়ে ইয়ারা নদী পার হয়ে ঐ দিকে যাবেন, সেখানেই পেয়ে যাবেন ‘স্কাই ডেক’ বিল্ডিং। পুনরায় শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বিদায় নিলেন, তাঁর এই অতিরিক্ত সৌজন্যটুকু আমাদের মনে গেঁথে রইলো। এটুকু না করলেও আমরা যেতে পারতাম ঠিকই, কিন্তু একটু বেশি ঘোরা হতো। উনি একটু অতিরিক্ত কষ্ট করে আমাদেরকে শর্টকাট রাস্তাটি চিনিয়ে দিয়েছিলেন, এবং এ কারণে আমাদের মনে একটা স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছিলেন।
আমাদের একজন আত্মীয় দম্পতি আমাদের এক মাস আগে মেলবোর্নে এসেছিলেন। ওনাদের কাছ থেকে স্থানীয়দের আরেকটি মহানুভবতার গল্প শুনেছিলাম। একদিন সকালে ওনারা আকাশ ভালো দেখে ছাতা ছাড়াই হাঁটতে বের হয়েছিলেন। হাঁটাহাটি শেষ করে ওনারা যখন বাসায় ফিরছিলেন, তখন হঠাৎ করেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। আশে পাশে কোথাও দাঁড়াবার মত কোন ছাউনি ছিল না, তাই ওনারা খুব দ্রুত হাঁটছিলেন, কারণ বাসাটা তখনও এক কিলোমিটারের মত দূরে ছিল। হাঁটা পথের একপাশে সারিবদ্ধ কিছু বাড়ি ছিল। সেখানকার একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির বারান্দায় বসে এক বয়স্কা মহিলা তাদেরকে লক্ষ্য করছিলেন। তিনি একটা ছাতা হাতে করে দোতলা থেকে নেমে ওনাদেরকে ডাকতে ডাকতে পিছু নিলেন। তাঁর ডাক শুনে ওনারা থামলেন। উনি তাদের হাতে ছাতাটি দিয়ে বললেন, “আমি জানিনা, আপনারা কত দূরে যাবেন, কিন্তু এভাবে হেঁটে গেলে আপনারা যেখানেই যান, ভিজে যাবেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ঐটা আমার বাসা, এত নম্বর। আপনাদের যদি কখনো এদিকে আবার আসার সুযোগ হয়, তবে ছাতাটি ইচ্ছে করলে ফেরত দিতে পারেন, না পারলেও মোটেই কোন সমস্যা নেই। কলিং বেল টিপে কেউ বের না হলেও ছাতাটা সামনের দরজার পাশে রেখে যেতে পারেন। আপনারা নিরাপদে বাড়ি ফিরে যান”। মহিলা একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন। আমাদের সেই আত্মীয় দম্পতি পরের দিনই নিজেদের ছাতাসহ বের হয়ে ওনাদের ছাতাটি পৌঁছে দিয়েছিলেন।
ঠিক এ রকমেরই একটা ঘটনা গত পরশুদিন আমাদের সাথেও হয়েছিল। আমরা যাব লিনব্রুক স্টেশনে, সেখান থেকে ট্রেনে করে প্যাকেনহামে। কাপড় চোপড় পরে যখন তৈরী হচ্ছিলাম, জানালা দিয়ে পাশের বাড়ির ছাদে রোদের ঝিলিক দেখতে পেলাম। রেডী হয়ে যখন বের হ’লাম, তখন আকাশের দিকে খেয়াল করি নাই, কিন্তু একটু এগোতেই হাতের কব্জির নীচে এক ফোঁটা পানির স্পর্শ পেলাম। পুরো শরীরের মধ্যে কেবল ঐ অংশটুকুই অনাবৃত ছিল, তাই সেখানে পানি স্পর্শ করাতে টের পেয়েছিলাম। পরে তাকিয়ে দেখি জ্যাকেটেও অনেক পানির ফোঁটা। দ্রুত হাঁটতে লাগলাম, যেন বাস আসা মাত্রই বাসে উঠতে পারি। কিন্তু আমাদের সেদিন দুর্ভাগ্য ছিল, বাসটা আসতে আট মিনিট দেরি করেছিল। এখানে খুবই কদাচিৎ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট লেট করে, বরং সাধারণতঃ দুই এক মিনিট আগেই আসে। বাস স্ট্যাণ্ডে পৌঁছে দেখি, ছাতা হাতে এক মহিলা বাসের জন্য অপেক্ষমান। আমাদেরকে দেখে তিনি তার হাতে ধরা ছাতাটা এগিয়ে দিলেন। আমি নিতে অস্বীকার করলাম। তিনি বললেন, আমার বয়স কম, ভিজলে আমার কিছু হবে না, আপনারা বয়স্ক মানুষ, আপনারা ভিজলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। আমরা কিছুতেই নেব না, উনিও কিছুতেই ছাড়ার পাত্র নন। শেষ পর্যন্ত একই ছাতার নীচে তিনজন দাঁড়াতে একটা দফা রফা হলো। বাসে উঠেও তিনি তার ছাতাটি আমাদেরকে দিয়ে দিতে চাইলেন কারণ আমাদের ফেরার সময়েও বৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করলেন। এক ছাতার নীচে তিনজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করার সময় টুকটাক পরিচিতি পর্ব সেরেছিলাম। তিনি নিকটেই একটা বাসায় থেকে পড়াশুনা করছেন, এডুকেশনে মাস্টার্স করছেন। প্রতিদিন এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি Flinders City তে গিয়ে আবার ট্রামে করে একটি ইউনিতে যান। সেখানে ক্লাশ করে আবার উল্টোপথে বাড়ি ফিরে আসেন। তিনিও ভারতীয় বংশোদ্ভূত, পাঞ্জাবের। এক পর্যায়ে আমাদের সাথে তিনি হিন্দীতে কথা বলা শুরু করেছিলেন, যদিও আমি হিন্দী তেমন জানিনা বলে ইংরেজীতেই বলছিলাম। আমাদেরকে ছাতা দেয়ার ইচ্ছেটা কথার কথা ছিল না, খুবই আন্তরিক ছিল। বারবার বলছিলেন, লে লো না, লে লো না। বাসে উঠে লক্ষ্য করলাম, তিনি একটা টিস্যু পেপারে মোড়ানো কিছু নাস্তা বের করে খাচ্ছেন। বুঝতে পারলাম, উনি বাসা থেকে খেয়ে বের হতে পারেন নি। এটা দেখে ওনার প্রতি আমার খুবই মায়া হলো। ট্রেন থেকে নামার সময় আমরা তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানিয়ে হাসিমুখে বিদায় নিলাম।
উপরে যতগুলো ঘটনার কথা বললাম, তার প্রত্যেকটিই সৌজন্যবোধ, সহযোগিতা এবং সুআচরণ এর পরিচায়ক। চমৎকার এসব চারিত্রিক গুণাবলীর দ্বারা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তিই আমার নিকট শ্রদ্ধার পাত্র, সম্মানের পাত্র হিসেবে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
১৪ জুলাই ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ১৫৯৭
১৫ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ৮:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: "পারস্পরিক সৌজন্যবোধ, শ্রদ্ধাবোধ আমরা শিখতে পারিনি" - শিখতে এবং উত্তরসূরীদের শেখাতে না পারাটা আমাদেরই তো ব্যর্থতা!
"অনেকেই আরও বেশি মন্দত্ব অর্জন করে!" - কয়লার ময়লা না যায় ধুলে।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৫
সোনাগাজী বলেছেন:
অন্যে কতটুকু সৌজন্যবোধ দেখাচ্ছে, সেটা অনুভব করার বিষয়; নিজে কতটুকু সৌজন্যতা দোখচ্ছে, সেটা গণনার বিষয়।
১৫ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৭
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: জাতি হিসেবে আমাদের এখনো শেখার অনেক বাকি আছে। প্রবাসে এসে মানুষের সৌজন্যবোধ যেমন দেখেছি বা শিখেছি, তেমনি অসৌজন্যবোধও দেখেছি। তবে কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই বলতে হচ্ছে, আমার অভিজ্ঞতায় এই অসৌজন্যবোধ আচরণ যারা করেন, তাদের বেশীর ভাগই মূলত বাদামী এবং কালো রং এর মানুষ। জানি, কথাগুলো শুনতে বা মেনে নিতে অনেকের খারাপ লাগবে কিন্তু ব্যাপারটা অসত্য নয়, অন্তত আমার কাছে।
উন্নত দেশের গণযোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে সিনিয়র সিটিজেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও গর্ভবতীদের জন্য আলাদা সিট বরাদ্দ থাকে। বেশীরভাগ মানুষই সেটা মেনে চলেন। বিষয়টা আমি আমেরিকায় আসার পরই ভালোভাবে খেয়াল করেছি। আপনার মূল্যবান অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনার আর আপনার পরিবারের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। ধন্যবাদ।
১৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: এত কিছু ভালোর মাঝে খারাপ কিছুও যে দুই একটা চোখে পড়ে নাই, তা নয়। তবে ইতিবাচক আচরণগুলোই আমার মনে দাগ কাটে। সেজন্য, সেগুলোই মাঝে মাঝে আপনাদের সাথে শেয়ার করি। এমন আরও অনেক অভিজ্ঞতার কথা আমার সঞ্চয়ে আছে। পরে সময় করে বলবো। আর, এত কিছু লিখতেও তো সময় লাগে! এখন দু'চোখে শুধু দেখে যাচ্ছি, পরে সময় করে লিখবো বলে আশা রাখি, ইন শা আল্লাহ।
"তবে কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই বলতে হচ্ছে, আমার অভিজ্ঞতায় এই অসৌজন্যবোধ আচরণ যারা করেন, তাদের বেশীর ভাগই মূলত বাদামী এবং কালো রং এর মানুষ। জানি, কথাগুলো শুনতে বা মেনে নিতে অনেকের খারাপ লাগবে কিন্তু ব্যাপারটা অসত্য নয়, অন্তত আমার কাছে" - না, সেটা অসত্য নয় আমার কাছেও। আমার ছোটভাই আমেরিকায় থাকে। নয় বছর আগে সে দেশ সফর করার সময় একই বিষয় আমি নিজেও প্রত্যক্ষ করি এবং খারাপ ব্যবহারের সম্মুখীন হই। আমার ভাইও আপনার মতই তার অভিজ্ঞতার কথা বলে থাকে।
সদয় মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১৪ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১০:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লেখা।
আপনার এই লেখাতে অনেক কিছু বুঝার আছে। জানার আছে।
জাতি হিসেবে আমরা আকি খুব খারাপ? ১৯৭১ এ বাঙ্গালী জাত্তি কাঁধে ক্কাধ মিলিয়ে ছিলো। তাহলে আজ কেন এই অবস্থা?
১৬ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৩:৪৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ প্রশ্নের উত্তরটা আমার জানা নেই। রাষ্ট্রনীতি ও সমাজবিদ্যা নিয়ে যারা পড়াশুনা ও গবেষণা করেন, তারা হয়তো এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারবেন। আমি শুধু অনুমান করতে পারি। অনুমাননির্ভর কোন আলোচনা ফলপ্রসূ হয় না।
তবে জাতি হিসেবে আমরা 'খুব খারাপ', বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া বৈঠকে আমাদের জাতিগত কিছু বদ অভ্যাসের সমালোচনা করলেও, এমন কথা আমার কখনো মনে হয় নি। জাতি হিসেবে আমরাও যথেষ্ট মানবিক, সংবেদনশীল এবং একের প্রয়োজনে অপরে সাড়া দেওয়া জাতি। ক্রাইসিস সময়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে জানি।
৫| ১৪ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:১৮
শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার লেখাটা খুব ভাল লাগলো খায়রুল আহসান ভাই।
কানাডাতেও মানুষের সৌজন্যবোধ প্রায় একই রকম। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমার চেষ্টা করা উচিত ভদ্রতায় এদের সাথে পাল্লা দিতে, নিজে যে নিকৃষ্ট নই, জাতি হিসেবে অভদ্র নই, তা অন্তত নিজের কাছে হলেও প্রমাণ করা দকরার! যদিও একেবারেই পারি না, বরং মাঝে মাঝে নিজের আচরণের জন্য লজ্জিত হতে হয়। এই যেমন গত মাসে আমাদের তিন বন্ধুর পরিবার একটা পাহাড়ী ছোট শহরে বেড়াতে গিয়েছিলাম, সেখানে রাস্তা ঘাট চিনিনা বলে আমরা এক বন্ধুর গাড়িকে ফলো করছিলাম। ঘোরাঘুরি করে আমরা যাচ্ছি দুপুরের খাবার খেতে একটা ফাস্টফুডের দোকানে। ছোট শহরের ডাউন-টাউন এলাকায় আমরা গাড়ি চালাচ্ছি, সরু রাস্তা এবং রাস্তায় বেশ অনেক লোক হাটছে, অনেকেই রাস্তা পার হচ্ছে। আমি যখন একটা ক্রসিং পার হচ্ছি, তখন একদল লোক রাস্তা পার হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি গাড়ি থামিয়ে তাদের রাস্তা পার হবার সুযোগ না দিয়েই, বন্ধুর গাড়ি ফলো করে ধপ করে ক্রসিং পার হয়ে গেলাম। পথচারী, যারা রাস্তা পার হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তারা আমার আচরণে বিরক্ত হলো, একজন শুধু একটু কাধ নাড়িয়ে বিরক্তটিতা একটু প্রকাশ করলো । মনে ভাবলাম, আসলে অনেক আচরণ একেবারে ছোট বেলা থেকে না শিখলে পেরে ওঠা মুসকিল বটে!!!
১৭ ই জুলাই, ২০২২ ভোর ৪:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: "মনে ভাবলাম, আসলে অনেক আচরণ একেবারে ছোট বেলা থেকে না শিখলে পেরে ওঠা মুসকিল বটে!!!" - কথাটা ঠিকই বটে! পথ-ঘাটের সৌজন্যটুকু এরা খুব সাবলীল ভাবেই পথচারীদের দেখিয়ে যায়, যেন এটাই ওদের রীতি ও প্রথা। প্রথম প্রথম এসব দেখে আমিও খুব অবাক হয়ে যেতাম। অবশ্য এদের মাঝেও ব্যতিক্রম যে একেবারেই নেই, তাও নয়। তবে আমি সেগুলোকে ব্যতিক্রম হিসেবেই দেখে থাকি।
পোস্ট পড়ে নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা এখানে জানিয়ে যাবার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার 'নিক'টা খুব সুন্দর, @শ্রাবনধারা! দেশে তো শ্রাবন মাস শুরু হয়ে গেল! আমার ভালো লাগা সুন্দর কিছু ব্লগ নিকের নাম এর একটি অর্ধসমাপ্ত তালিকা এই ব্লগে বছর চারেক আগে প্রকাশ করেছিলাম এই পোস্টে। সে তালিকায় আজ আপনার 'নিক'টাকেও সংযুক্ত করে দিলাম।
৬| ১৫ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:২৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
সৌজন্যবোধ, সহযোগিতা এবং সুআচরণ পড়তে ভালো লেগেছে, কিন্তু বাংলাদেশে এগুলার লেসমাত্র নেই।
১৮ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ৮:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "সৌজন্যবোধ, সহযোগিতা এবং সুআচরণ পড়তে ভালো লেগেছে, কিন্তু বাংলাদেশে এগুলার লেসমাত্র নেই" - আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা সেভাবে নিজেরাও গড়ে উঠিনি, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও গড়ে তুলিনি।
তবে সামনে ভালো দিন আসবে বলে এখনও আশা রাখি।
৭| ১৫ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:৫৬
ঢুকিচেপা বলেছেন: মানুষ মানুষের সঙ্গে যখন ভাল ব্যবহার করে তখন পৃথিবীটাকেই অসম্ভব সুন্দর মনে হয়।
“কিন্তু আমাদের সেদিন দুর্ভাগ্য ছিল, বাসটা আসতে আট মিনিট দেরি করেছিল।”
এটা আর এখন দুর্ভাগ্য রইল না। অচেনা সুন্দর মনের মানুষের কাছ থেকে সম্মান ও সহানুভূতি পাওয়া একটা প্রাপ্তি।
সম্পূর্ণ লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো।
১৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: "মানুষ মানুষের সঙ্গে যখন ভাল ব্যবহার করে তখন পৃথিবীটাকেই অসম্ভব সুন্দর মনে হয়" - খুবই সত্য একটা কথা বলেছেন। আমার কাছেও সেরকমই মনে হয়।
"এটা আর এখন দুর্ভাগ্য রইল না। অচেনা সুন্দর মনের মানুষের কাছ থেকে সম্মান ও সহানুভূতি পাওয়া একটা প্রাপ্তি" - চমৎকার বলেছেন। এ লাইনটা পড়ে এখন আর সেই বিলম্বটাকে দুর্ভাগ্য বলে মনে হচ্ছে না।
আন্তরিক মন্তব্য এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
৮| ১৫ ই জুলাই, ২০২২ রাত ২:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: আপনার এই অভিজ্ঞতা আমার কাছে সত্যিই যেন রূপকথার মত মনে । সত্যিই রূপকথার মতই লাগলো । এসব আমি বাস্তবে চোখে কোন দিন দেখি আর দেখবোও না হয়তো কোন দিন এই দেশে!
১৮ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার কেন যেন মনে হয়, আমরা দিনে দিনে নিজেরা যেমন অস্থির স্বভাবের আচরণ করছি, তেমনি অন্যের অস্থিরতা দেখেও অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম একটি নিঃসঙ্গতাকামী, বিবিক্ত, ক্রোধান্বিত, রাতজাগা জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠছে আমাদের চোখের সামনে দিয়েই, অথচ আমরা নির্বিকার!
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
৯| ১৬ ই জুলাই, ২০২২ রাত ২:৫১
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: @শ্রাবণধারা: আপনার শেষের কথাগুলোর সাথে আমার অভিজ্ঞতার বেশ মিল আছে। নিউ ইয়র্কের ৫০% এর বেশী ট্যাক্সি ড্রাইভার বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত। ওয়াকিং সাইন দেখার পরেও ট্যাক্সি নিয়ে হুড়োহুড়ি করে চলে যাওয়া তাদের নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। শুধু সেখানেই লোকজন ক্ষান্ত হচ্ছে না। বেশীরভাগ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর লোকজনের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা ভয়ানক রকমের।
১৮ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আশাকরি, @শ্রাবণধারা আপনার এ মন্তব্যটি দেখবেন।
পুনঃমন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। মন্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করার কোন অবকাশ নেই।
১০| ১৬ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৩৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: কী সুন্দর ঘটনাগুলো। অপু তানভীরের মতই বলতে হয় যে এদেশে বসে এসব রূপকথার মতই লাগে! চাইলেও সাহায্য পাওয়া কঠিন আবার যেচে কেউ সাহায্য করতে চাইলেও সন্দেহ হয়।
আল্লাহ অনেক দিন সুস্থ রাখুন আপনাদের, এরকম আরো সুন্দর সুন্দর অভিজ্ঞতা জানতে পারবো আমরা।
১৯ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪০
খায়রুল আহসান বলেছেন: "চাইলেও সাহায্য পাওয়া কঠিন আবার যেচে কেউ সাহায্য করতে চাইলেও সন্দেহ হয়" - জ্বী, এটাও আমাদের দেশে এক সমস্যা বটে। দেশ ও সমাজে সুআচরণ আনতে চাইলে প্রত্যেকের নিজ পরিবার থেকেই কাজটা শুরু করতে হবে।
দোয়া এবং আন্তরিক মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। প্লাসে প্রাণিত।
১১| ১৮ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ ! মানুষের মানবিকতার গল্প শুনলে ও ভালো লাগে।
মানবিক মানুষ গুলো কে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুক।
১৯ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য এবং পাঠ শেষে আন্তরিক মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভালো থাকবেন, শুভকামনা.....
১২| ১৮ ই জুলাই, ২০২২ রাত ৮:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওদের দেশে মনে হয় কোন দুঃখ নাই। সব কিছুই সুশৃঙ্খল। আমাদের দেশের মানুষ কবে মানবিক হবে।
২০ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৬:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: "ওদের দেশে মনে হয় কোন দুঃখ নাই" - সব দেশেই, সব জাতিরই কিছু দুঃখের ইতিহাস আছে, থাকে। দুঃখকে অতিক্রম করে সুখের অনুসন্ধান কাজেই মানুষ সদা ব্যাপৃত। সদাচারণ এবং সৎ চারিত্রিক গুণাবলী মানুষের এ কাজকে অনেকটা সহজ করে দেয়। ভুটানিজদেরকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী জাতি বলা হয়ে থাকে। অথচ পাহাড় ঘেরা দেশ (ল্যাণ্ড লকড কান্ট্রি) হিসেবে ওদের ব্যবসা বাণিজ্য বলতে তেমন কিছুই নেই। প্রাকৃতিক সম্পদও উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু নেই। তবে ওদের সরকার ও শাসক গণবান্ধব, এমন কি ওদের 'মিনিস্ট্রি অভ হ্যাপিনেস' (সুখ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) নামে একটি মন্ত্রণালয়ও রয়েছে।
জন্মের পর থেকে আমরা 'চিটিংবাজি' শিখি। এমনকি আমাদের মা-বাবারাও সেই ছোট্ট বেলা থেকেই আমাদের শিখিয়েছেঃ 'ওখানে যেও না, ভুত আছে', কিংবা 'ওর কাছে যেও না, কামড়ে দেবে', অথবা 'তুমি যদি এ খাবারটুকু ঠিকমত খেয়ে নাও, তাহলে আমি তোমাকে এটা দেব, ওটা দেব' ইত্যাদি মিথ্যে কথা। অথচ মিথ্যে হলো সব মন্দ কাজের প্রসূতি।
পোস্টের ( এ যাবত পাওয়া) সর্বশেষ মন্তব্য এবং প্লাসটির জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ২০ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৫৭
ফয়সাল রকি বলেছেন: এই চারটা গুণাবলির শিক্ষা ছোটকাল থেকেই দিতে হবে। আমারো দুটো শিশু সন্তান আছে, জানি না ওদের কতটুকু শেখাতে পারবো। দোয়া করবেন।
লেখায় +++
২০ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: "এই চারটা গুণাবলির শিক্ষা ছোটকাল থেকেই দিতে হবে" - জ্বী, অবশ্যই!
শিশুরা প্রথম শিক্ষাটা পায় মা-বাবার কাছ থেকে, তারপরে স্কুলের শিক্ষক ও সেসব বন্ধুদের কাছ থেকে, যারা মা-বাবার কাছ থেকে পরিবারে সুশিক্ষা পাচ্ছে এবং তার পর সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে। কাজেই দেখা যাচ্ছে, মা-বাবারা নিজের সন্তানকে সুশিক্ষা দিয়ে যেমন সমাজে অবদান রাখছেন, অন্যের সন্তানকেও তার কিছুটা হলেও অংশীদার করে তুলতে পারেন।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানবেন।
আপনার সন্তানদের এবং পরিবারের জন্য দোয়া এবং শুভকামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ভাইজান। পারস্পরিক সৌজন্যবোধ, শ্রদ্ধাবোধ আমরা শিখতে পারিনি। কিন্তু কাউকে অসম্মান করতে আমাদের জুড়ি নাই! আমাদের দেশ থেকে উন্নত দেশে যেয়ে অনেকের চারিত্রিক নৈতিক উন্নতি হয় কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা হচ্ছে - অনেকেই আরও বেশি মন্দত্ব অর্জন করে!