নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
ওদের “শিখা অনির্বাণ” (‘Perpetual Flame’) এ পুষ্পস্তবক অর্পণের দৃশ্য
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার মাত্র তিন বছর আগে, ১০ জুলাই ১৯১১ তারিখে অস্ট্রেলীয় রাজকীয় নৌবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। গত ১৫ মে ২০২২ ছিল এ বাহিনীর জন্য একটি বিশেষ শোকের দিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এ বাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ শত্রুবাহিনীর আঘাতে ডুবে যায় এবং এতে জাহাজে কর্মরত অফিসার এবং নাবিকদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের সম্মানে এবং তাদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্মরণে দিনটিকে অস্ট্রেলীয় রাজকীয় নৌবাহিনীর ভিক্টোরিয়া ফ্লীট প্রতিবছর মে মাসের তৃতীয় রবিবারে “শ্রাইনস অভ রিমেম্ব্র্যান্স” এ একটি ক্ষুদ্র কিন্তু ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে থাকে। ফ্রান্সের Villers-Brotonneux এবং অন্যান্য কিছু এলাকার জনগণ এবং স্থানীয় সরকার এখনও অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রদেশের জনগণ ও স্থানীয় সরকারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সে নিহত অস্ট্রেলীয় সেনাদের প্রাণোৎসর্গকে সম্মান জানিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ‘ভিক্টোরিয়া বোটানিক গার্ডেন’ এ যাবার পথে প্রধান সড়ক সন্নিহিত এলাকায় এতদুপলক্ষে “শ্রাইনস অভ রিমেম্ব্র্যান্স” (Shrines of Remembrance) বা ‘পুণ্যস্মৃতির স্মরণ-সমাধি’ নির্মাণ করা হয়েছে।
গিন্নীকে নিয়ে সেদিন ভিক্টোরিয়া বোটানিক গার্ডেন দেখতে গিয়েছিলাম। ট্রাম স্টেশন থেকে নেমে সেখানে যেতে হলে এবং সেখান থেকে পুনরায় ট্রাম স্টেশনে ফেরত আসতে হলে দুই বিশ্বযুদ্ধে অস্ট্রেলীয় সশস্ত্র বাহিনীর নিহত বীরযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত এই গুচ্ছ স্মৃতিসৌধ বা “শ্রাইনস অভ রিমেম্ব্র্যান্স” অতিক্রম করে যাওয়া আসা করতে হয়। যাবার সময় কিছু লক্ষ্য করিনি, কিন্তু বিকেলে ফেরার সময় বিউগল ধ্বনির শব্দ পেয়ে তাকিয়ে দেখলাম, সেখানে আনুষ্ঠানিক পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য একটা ক্ষুদ্র সেনাদলের মহড়া চলছে। বাদকদল বিউগলে ‘রিট্রীট’ এবং ‘দ্য লাস্ট পোস্ট’ বাজানোর অনুশীলন করছে। কয়েকজন বয়স্ক ব্যক্তি চেয়ারে বসে আছেন। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে তাদের একজনের কাছে জানতে চাইলাম, সেখানে কী হচ্ছে। উনি সেই স্মরণসভার একটা সংক্ষিপ্ত পটভূমি আমাকে জানালেন, যা এই পোস্টের প্রথম তিনটে বাক্যে বলা হয়েছে।
দেখলাম, সেখানে ‘নিরাপত্তা চেকিং’ এর কোন বালাই ছিল না। “শ্রাইনস অভ রিমেম্ব্র্যান্স” এবং বোটানিকাল গার্ডেন দেখতে আসা যেসব দর্শক ইতস্ততঃ ঘোরাঘুরি করছিলেন, তাদেরও সেখানে উপস্থিত থাকাতে কোন বাধা ছিল না। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠান শুরু হলো। স্থানীয় নৌ ফর্মেশনের একজন উচ্চপদস্থ মহিলা অফিসার প্রধান অতিথি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন। তারপর ‘দ্য লাস্ট পোস্ট’ বেজে উঠলো, সেই সাথে কন্টিনজেন্ট কমাণ্ডারকে সাথে নিয়ে তিনি (তাদের) “শিখা অনির্বাণ” এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করলেন। আমাদের দেশে আমরা ‘শিখা অনির্বাণ’ কে ইংরেজীতে ‘Eternal Flame’ বলি। এদের এখানে দেখলাম, এরা এটাকে ‘Perpetual Flame’ বলে। তারপরে বিউগলে ‘রিট্রীট’ ধ্বনি বেজে উঠলো, পতাকা নামানো শুরু হলো। সামরিক ইউনিফর্মধারী ব্যক্তিগণ এ্যাটেনশন পজিশনে স্যালুট দিলেন, অস্ত্রধারী ক্ষুদ্রদল সশস্ত্র সালাম জানালো, বেসামরিক পোশাকে উপস্থিত অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিগন পতাকা নামানো পর্যন্ত নীরবে দাঁড়িয়ে থাকলেন, সশ্রদ্ধচিত্তে।
‘ভিক্টোরিয়া বোটানিক গার্ডেন’ দেখতে এসে সেই সাথে এদের Shrines of Remembrance, ‘Perpetual Flame’ এবং সেখানে অনুষ্ঠিত একটি ক্ষুদ্র কিন্তু ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠান দৈবাৎ সশরীরে উপস্থিত থেকে চাক্ষুষ দেখে আসতে পেরে আমিও অত্যন্ত মুগ্ধ হ’লাম এবং সন্তুষ্টচিত্তে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে এলাম।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
১৯ জুলাই ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ৪৩০
(আরও কিছু ছবি সংযোজনের/ সম্পাদনার প্রক্রিয়া চলছে)
কোন যতিচিহ্ন ছাড়াই এখানে লেখা আছেঃ “THIS HOLY PLACE COMMEMORATES VICTORIA’S GLORIOUS DEAD THEY GAVE THEIR ALL EVEN LIFE ITSELF THAT OTHERS MIGHT LIVE IN FREEDOM AND PEACE FORGET THEM NOT” (ছবিটা যেহেতু অস্পষ্ট এসেছে, সেহেতু লেখাগুলোকে হুবহু উদ্ধৃত করলাম)
কমরেডশীপ
ওদের ‘শিখা অনির্বাণ’ বা ‘Perpetual Flame’
They call it "The Perpetual Flame" (our equivalent of শিখা অনির্বাণ or the Eternal Flame)
151627 June 2022
This plaque commemorates the contribution of:
The Royal Australian Air Force, UK, Europe, Atlantic, Middle East, East Indies, South East Asia, New Guinea and the South West Pacific in the World War
Picture taken at the 'Shrines of Remembrance', Victoria, on 151621 May 2022.
At the memorial stone laid on 11 November 1927, by His Excellency Lieutenant Colonel the Right Hon'ble ARTHUR HERBERT TENNYSON BARON SOMERS K.C.M.G. D.S.O. M.C.
Picture taken at the 'Shrines of Remembrance', Victoria, on 151619 May 2022
These flags were lowered at the 'Retreat'
151634 June 2022
A lady and her children were keen to take a picture with the small contingent who gave the 'Guard of Honour'
151636 June 2022
A high ranking Officer reading out the eulogy at the 'Perpetual Flame' at 'The Shrines of Remembrance'.
15 May 2022
'The Legacy Garden' - a memorial garden built in joint collaboration by the people of the Victoria Province of Australia and the Villers-Brotonneux and other townships of France, in honour of the Australian soldiers who sacrificed their lives in World War One, 'which helped save their (French) townships from enemy occupation'.
Picture taken at the 'Shrines of Remembrance', Victoria, on 151526 May 2022
A stone monument titled "Remembrance" symbolizing homage paid by all the widows and children of the fallen heroes
151529 June 2022
A stone monument titled "Widow and Children" symbolizing homage paid by all the widows and children of the fallen heroes
151529 June 2022
A stone monument titled "Widow and Children" symbolizing homage paid by all the widows and children of the fallen heroes
151528 June 2022
At the "Shrines of Remembrance", Melbourne, Australia
151527 May 2022
২০ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৭:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওদের এই আড়ম্বরহীনতা আমাকে বেশ আকর্ষণ করেছিল, মুগ্ধ করেছিল। অথচ ভাবগাম্ভীর্যের কোন কমতি ছিল না। যে যার কাজ চুপচাপ করে যাচ্ছিল, কোন হাঁক ডাক ছিল না।
'বোটানিক গার্ডেন' এ যখন গিয়েছিলাম, তখন আমার সেলফোনের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ফুল হয়ে গিয়েছিল, তাই আমি তেমন কোন ছবি তুলতে পারিনি। পরে আরেকদিন আসবো, এই আশায় ফিরে এসেছিলাম তাড়াতাড়ি করে। কিন্তু সেটাও বুঝি এবারে হচ্ছে না।
প্রথম মন্তব্য এবং প্রথম প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
সুপ্রভাত এবং শুভকামনা...
২| ২০ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৩০
জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। +
২০ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৫৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: দৈবাৎ পাওয়া এ অভিজ্ঞতাটুকু শেয়ার করতে পেরে আমিও আনন্দিত কম হইনি। আর আপনাদের মত কোন পাঠক তা পড়ে মন্তব্য করলে তো আনন্দ আরও অনেকখানিই বেড়ে যায়।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৩০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এমন অনুষ্ঠান বাংলাদেশে কি কল্পনা করা যেতে পারে? ছবিগুলো দারুণ হয়েছে। মুগ্ধতা রইল।
২০ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: এমন অনুষ্ঠান বাংলাদেশেও হয়, তবে এতটা অনাড়ম্বর আর পরিপাটিভাবে নয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: দারুন অভিজ্ঞতা! নতুন কিছু জানলাম ও শিখলাম।
২১ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৬:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।
আপনার চোখের সমস্যাটা এখন কেমন অবস্থায় আছে? চোখের প্রাধিকার সবার আগে!
শুভকামনা---
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৫:৪৯
মিরোরডডল বলেছেন:
একবার এধরনের একটা প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম ।
কোন মহাআড়ম্বর নেই ।
সিম্পল এবং শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে ।
সেখানে যে কেউ ওয়েলকাম, এই বিষয়টাও ভালো লেগেছিলো ।
বোটানিক গার্ডেনের ছবি চাই ।