নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসি ট্রেন, ভালোবাসি ট্রেন নিয়ে কথকতা

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৯


কুউউউউ ঝিকঝিক....

আমার ছোটবেলা থেকে আমি বাড়ি থেকে ঢাকা কিংবা ঢাকা থেকে বাড়ি ট্রেনে করেই বেশি যাতায়াত করেছি। কারণ আমাদের বাড়ি থেকে সে সময়ে ট্রেনে যাতায়াতই সুবিধেজনক ছিল। সড়কপথে সুবিধে হয়েছে ১৯৯০ এর পর থেকে। সেই ছোটবেলা থেকেই সেজন্য ট্রেন জার্নি আমার খুবই প্রিয়। ট্রেনে শুধু যাতায়াত করাই নয়, এমন কি কাছে বা দূরে থেকে চলন্ত ট্রেনের ছুটে চলা দেখতে আমি ভালবাসতাম, এখনো ভালবাসি। আমাদের গ্রামের বাড়ির উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছিল 'বিন্যাগাড়ীর বিল'। সে বিলটিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত এবং শীতকালে অসংখ্য পাখি এসে বসত বলে বিলটি সে সময়ে শিকারিদের কাছে বিখ্যাত ছিল, পছন্দনীয়ও ছিল। বিলের উত্তর প্রান্ত ঘেঁষে পূবে-পশ্চিমে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল লাইন চলে গিয়েছে, সেটা দিয়ে প্রতিদিন ও রাত মিলিয়ে ৩টি ৩টি করে মোট ৬টি ট্রেন আপ-ডাউন করতো। ট্রেন আসার শব্দ পেলেই আমি বিলের এ প্রান্তে দাঁড়িয়ে পিলপিল করে চলা ট্রেনের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। 'পিলপিল' করে যেত, কারণ কাছেই একটা স্টেশন ছিল। হয় ট্রেনগুলো স্টেশন থেকে ছেড়ে যেত, নয়তো স্টেশনে এসে থামতো। উভয় কারণে বিলের ওপারের স্থানটিতে ট্রেনের গতি খুব শ্লথ থাকতো। তাই সেগুলো ঠিক ছুটে চলতো না, বরং পিলপিল করে আসতো। কি মধুর সেসব স্মৃতি। এখন বিলটি ভরাট করে মানুষজন ঘরবাড়ি বানিয়েছে, বিলের উপর দিয়ে পাকা সড়ক চলে গেছে। সেই সাথে চিরতরে হারিয়ে গেছে 'মধুর সেসব স্মৃতি'!

রাতের বেলায় ট্রেনগুলো দেখতে বেশি সুন্দর লাগতো। বিলে পানি থাকলে ট্রেন চলাচলের শব্দ অনেক দূর থেকে/পর্যন্ত শোনা যেত। ঘন আঁধারের মাঝে নিকটস্থ বাঁশ ঝাড়ের ফাঁক ফোকর দিয়ে জোনাকি পোকার ঝিকিমিকি আলো দেখা যেত, আরেকটু দূরে পাটক্ষেতের কাছাকাছি শেয়ালের হুক্কা হয়া ডাক শোনা যেত। আরও কিছুটা দূরে বিলের জলের ওপারে শুধু আবছা স্কাইলাইনটা ছাড়া আর কিছু দেখা যেত না, কেবলমাত্র ট্রেন চলাচলের সময় ম্যাচবক্সসদৃশ ট্রেনের চলমান কামরাগুলোর আলোকিত জানালাগুলো এক এক করে চলে যেত, আর তা দেখে আমি মুগ্ধ হ’তাম, এবং সে মুগ্ধতা থেকে অনেক ভাবনা মনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তো। এসব নিয়ে ভাবতে খুব ভালো লাগতো। রাত এগার/বারটার দিকে দিনের শেষ ট্রেনটি বুড়িমারীর দিকে যেত, ভোর পাঁচ/ছয়টার দিকে সেটা আবার ফিরে এসে লালমনিরহাটের দিকে যেত। এ দুটো ট্রেন চলার ঘরঘর শব্দ এবং ডিজেল ইঞ্জিনের ‘ভেঁপু’র আওয়াজ বিছানায় শায়িত থেকেই বেশিরভাগ সময় শুনতাম। ট্রেন চলে যাবার আধা ঘণ্টা খানেক পর আমাদের বাড়ির পাশের মাত্র পঞ্চাশ গজ দক্ষিণে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তা ধরে মহিষখোঁচা কিংবা পশ্চিমের অন্যান্য এলাকাগামী পায়ে হাঁটা কিংবা গরুরগাড়িতে আসীন যাত্রীদের গলার আওয়াজ শোনা যেত। তারা নানা রকমের গল্প করতে করতে পথ চলতো। গরুরগাড়ির গারোয়ানদের কেউ কেউ গলা ছেড়ে ভাওয়াইয়া গান গাইতে গাইতে চলে যেত। সে গানের সুরে আচ্ছন্ন হয়ে একসময় ঘুমিয়ে পড়তাম।

বাংলাদেশ রেলওয়েতে ডিজেল ইঞ্জিনের সংযোজন হয় ষাটের দশকে। উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ে বিভাগগুলোতে তা যোগ হয় ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্তরের দশকের প্রথমেই। তার আগে ছিল বাষ্পীয় শকট, গনগনে আগুনে কালো কয়লাকে পুড়িয়ে সেই তাপশক্তি দিয়ে ইঞ্জিনের বয়লারের পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হতো এবং সেই বাষ্পশক্তি দিয়ে ইঞ্জিনগুলো চলতো। ডিজেল ইঞ্জিন যেমন ভারী শব্দে ‘ভেঁপু’ বাজাতো, কয়লার ইঞ্জিনগুলো তেমনটা নয়। সেগুলো ‘হুইসেল’ বাজাতো কুউউউউ শব্দ করে। ট্রেন চলা শুরু করার আগে অবশ্যই এই হুইসেল বাজানো হতো, তারপরে আস্তে আস্তে বাষ্প ছেড়ে দিলে লোহার চাকার সাথে সংযুক্ত লিভারগুলো (Lever) সামনে পেছনে চলাচল করে ট্রেনের চাকায় গতি সঞ্চার করতো। এই আস্তে আস্তে বাষ্প ছাড়ার সময় ‘ঝিক ঝিক’ করে শব্দ হতো, সেই সাথে লোহার পাতের সাথে চাকার ঘর্ষণে সেই শব্দ আরও ঘনীভূত হতো। এর থেকেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছে সেই ট্রেনগুলো ‘কুউউউউ ঝিকঝিক ট্রেন’ নামে পরিচিত ছিল। ডিজেল ইঞ্জিনের ‘ভেঁপু’র চেয়ে কালো ইঞ্জিনগুলোর এই ‘কুউউউউ ঝিকঝিক’ শব্দ মনটাকে অনেক বেশি করে টানতো। কয়লার ইঞ্জিন টানা এই কালো ট্রেনগুলো চলে যাবার পরেও ইঞ্জিন থেকে ছেড়ে দেওয়া কয়লার গুড়া মিশ্রিত কুণ্ডলীপাকানো কালো ধোঁয়া বাতাসে মিশে ভেসে ভেসে আমাদের নাকে এসে লাগতো। ট্রেন ভ্রমণের সময় জানালার বাইরে বের করা আমাদের মাথা আম্মা বারে বারে টেনে এনে ভেতরে ঢোকাতেন, যেন কয়লার গুড়ো আমাদের চোখে প্রবেশ করে কোন অঘটন না ঘটাতে পারে।

স্কুলে, খুব সম্ভবতঃ নবম/দশম শ্রেণীতে আমাদের পাঠ্য বইয়ে রবার্ট লুই স্টিভেনসন এর ‘ফ্রম আ রেলওয়ে ক্যারেজ’ (From a Railway Carriage, by Robert Louis Stevenson) কবিতাটি অন্তর্ভুক্ত ছিল। কবিতাটি আমার খুবই প্রিয় ছিল এবং বহুপঠনে তা মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল, আজ অবধি তার অনেকাংশ মুখস্ত আছে। লুই স্টিভেনসন এর এ কবিতাটি ১৮৮৫ সালে তার “A Child’s Garden of Verses” নামক বই এ প্রকাশিত হয়। ট্রেনে উঠে চাক্ষুষ যেসব দৃশ্যাবলী আমি সে সময়ে দেখতাম, কবিতাটিতে সেসবই এক এক করে বিবৃত হয়েছে দেখে কবিতাটি এত ভালো লাগতো। একসময় কবিতাটি আমি অনুবাদও করেছিলাম, সেটা দেখা যাবে এখানেঃ
ট্রেনের কামরা থেকে (অনুবাদ কবিতা)

শুধু ট্রেনই নয়, চলমান যে কোন কিছুই দেখতে আমার ভালো লাগে। যেমন আকাশে ভাসতে ভাসতে মেঘপুঞ্জে ঢুকে যাওয়া কোন প্লেন, দূরের কোন হাইওয়ে দিয়ে ছুটে চলা যাত্রীবাহী বাস, পিকনিকের সীজনে মাইকে গান বাজিয়ে ছুটে চলা বাসের কাফেলা, নদীর বুকে পাল তোলা নৌকা, স্টীমার কিংবা লঞ্চ। সবই ভালো লাগে-- জীবন স্রোতের সাথে চলমান, জীবনবাহী যে কোন যান।

“গতির পিছু ধাওয়া করার সাধ্য আমার নেই।
মনটা পিছু নেয়, তাই গতিময় কিছু দেখলেই!”

ঢাকা
১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ৭৬০

ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে। তবে শেষের চারটে ছবি আমার ব্যক্তিগত ফটো আর্কাইভ থেকে নেয়া হয়েছে।



বহে সমান্তরাল....

- বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি বাঁক নেয়া চলমান ট্রেন, আমার ছোটবেলার আকর্ষণ। জানালা দিয়ে মাথা বের করে গুণতে চেষ্টা করতাম, মোট কয়টি বগী আছে। ভাইবোনদের মাঝে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো।

সংস্কারকৃত একটি রেলপথ.....


নীচের ছবি চারটে ২০১৭ সালের এক রোদেলা বিকেলে তোলা, ইউএসএ'র ওকলাহোমায়। বালক দু'জন আমার ভাতিজা।


মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বিলের প্রান্ত থেকে আপনার ট্রেন দেখার সাথে অপু এবং দুর্গার ট্রেন দেখার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

গ্রামের গরুর গাড়ির গাড়ওয়ানের ভাওয়াইয়া গান আপনি নিজের কানে শুনেছেন। আপনি অনেক ভাগ্যবান। এখন তো এই গান বিরল বলা যায়। ফেরদৌসি রহমানের ভাওয়াইয়া গান ভালো লাগে। নিনা হামিদের গাওয়া 'ও কি গারিয়াল ভাই' গানটা ভালো লাগে।

ট্রেনের জানালা দিয়ে মাথা বের করতে না পারলে আসলে ট্রেন ভ্রমণ সার্থক হয় না। এখন ট্রেনের এসি কামরাতে তাই ট্রেন ভ্রমণের আগের সেই মজা পাওয়া যায় না।

যখন কিশোর ছিলাম তখন আন্তঃনগর ট্রেনের এক মাথা থেকে আরেক মাথা যাওয়া করতাম বারবার। এখন এক জায়গাতেই বসে থাকি।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: "বিলের প্রান্ত থেকে আপনার ট্রেন দেখার সাথে অপু এবং দুর্গার ট্রেন দেখার মিল খুঁজে পাওয়া যায়" - পোস্ট লেখার সময় চিত্রটা আমার চোখেও ভাসছিল। কিন্তু আমার তো চেনা জানা কোন দুর্গা ছিল না, তাই আমি একা একাই ট্রেন দেখতাম।

ভাওয়াইয়া গানে একসময় ফেরদৌসি রহমান এবং তার ভাই মোস্তফা জামান আব্বাসি'র একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। পরে অবশ্য বেশ কিছু সুকণ্ঠী মেয়ে এসেছে, যাদের কণ্ঠে ভাওয়াইয়া শুনে আমার ভালো লেগেছে। রথীন্দ্রনাথ রায় এবং তার পিতা হরলাল রায়ও খুব ভালো গাইতেন।

ছোটবেলায় দেখতাম, গ্রামের হাট থেকে হাটুরেরা ফেরার সময় হাতে লণ্ঠন জ্বালিয়ে জোরে জোরে গান গেয়ে পথ চলতো। তাদের সাথে আলাপ থেকে জেনেছি, এর দুটো কারণ ছিলঃ এক, গান গাইতে গাইতে পথ চললে পথের দূরত্বটাকে কম মনে হতো এবং গানের জোশে চলতে চলতে একসময় তারা হঠাৎ দেখতো যে বাড়ি পৌঁছে গেছে। দুই, ভয় পেলে, গান গাইলে ভয় পালাতো।

আমি এখনো ট্রেনভ্রমণ করলে এসিতে চলাচল করি না। জানালা দিয়ে ফ্রেশ বাতাস এসে চোখে মুখে শান্তির পরশ বুলিয়ে না দিলে কিসের আবার ট্রেনভ্রমণ! তাছাড়া চলতি পথে ছবি তুলতে ভালবাসি। এসি কোচের জানালা ফিক্সড থাকে, তাই ভালো ছবি তোলা যায় না।

আমার ক্যামেরায় তোলা একটি শাখা লাইনের রেল-স্টেশনের ছবি দিলামঃ

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৫

অপ্‌সরা বলেছেন: আমার ছোটবেলায় আমি বলতে গেলে সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি। বেশিভাগই প্রাইভেট কারে, মাঝে মাঝে ট্রেইন বা প্লেনে। ট্রেন যাত্রায় এক রকমের মাদকতা আছে তবে শুধু ট্রেইনই না গাড়িতে ছুটে যাবার সময়ও নানা দৃশ্য নানা ছবি আজও গেঁথে আছে মনে। আমি যে কত ভাবুক ছিলাম সেটা এখন বুঝি.....

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমি যে কত ভাবুক ছিলাম সেটা এখন বুঝি....." - আপনার পাঠক হিসেবে আমরাও সেটা বুঝি।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৩

মিরোরডডল বলেছেন:





শুধু ট্রেনই নয়, চলমান যে কোন কিছুই দেখতে আমার ভালো লাগে। যেমন আকাশে ভাসতে ভাসতে মেঘপুঞ্জে ঢুকে যাওয়া কোন প্লেন, দূরের কোন হাইওয়ে দিয়ে ছুটে চলা যাত্রীবাহী বাস, পিকনিকের সীজনে মাইকে গান বাজিয়ে ছুটে চলা বাসের কাফেলা, নদীর বুকে পাল তোলা নৌকা, স্টীমার কিংবা লঞ্চ। সবই ভালো লাগে, জীবন স্রোতের সাথে চলমান জীবনবাহী যে কোন যান।

সবচেয়ে ভালো লাগে চলমান জীবন, যার কাছে সকল গতি ও যান হার মানে ।
বহতাময় জীবনের অস্থির চলা, এক মুহূর্তের জন্যও যাকে ধরে রাখা যায় না ।


১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট থেকে উদ্ধৃতির জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
শেষের কথাদুটো খুব সুন্দর বলেছেন, এবং সঠিক উপলব্ধি।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৭

জুল ভার্ন বলেছেন: কী সুন্দর করে বর্ননা করেছেন- মনে হচ্ছে আপনার চোখ দিয়ে আমিই বিলের পাড়ে দাঁড়িয়ে ট্রেন চলাচল দেখছি। আমিই যেনো গরুর গাড়ির গাড়োয়ানের কন্ঠে ভাওয়াইয়া গান শুনছি- "ও কি গাড়িয়াল ভাই/ হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে...."!

ট্রেন ভ্রমণ নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি আছে.....; সময় যায় স্মৃতির পাতা ভারি হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মুখোমুখি হয়েছি নানান অভিজ্ঞতার; নিজের নিউরনে সঞ্চিত হয় অম্ল মধুর স্মৃতিকথা! এসব স্মৃতিময় অনুভূতি নিজেই রোমন্থন করি, নিজেই রোমাঞ্চিত হই, আত্মহারা হই, কখনো বিষাদে আপ্লূত হই।

ট্রেন দেখা, ট্রেনে চড়া সে তো আমাদের কাছে একটা স্বপ্নিল ব্যাপার ছিল। আমার ছেলেবেলায় ঢাকার রেলস্টেশন ছিলো ফুলবাড়িয়া। তখন পর্যন্ত আমার ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ হয়নি। তমসাবৃত রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে ট্রেনের হুইসেলের শব্দ আমাকে খুব আকর্ষণ করতো.....সেই হুইসেলের আবাহনও আমার মনকে আবেগময় করে তুলতো, মোহাবিষ্ট হতাম কাঙ্খিত সেই স্বপ্নের রেলগাড়িতে চড়ার জন্যে।

কমলাপুর স্টেশন থেকেই স্বপ্নের ট্রেন ভ্রমণ করেছিলাম সেই সময়ের সব চাইতে দ্রুতগামী এবং অভিজাত ট্রেন 'গ্রীনয়্যারো' তে- সেই স্মৃতি ঝাপসা মনে আছে। +

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টে অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক একটি মন্তব্য এবং প্লাস রেখে যাবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

"ও কি গাড়িয়াল ভাই/ হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে...."! - মনে হয়, মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকে এ গানটি শুনে আসছি। যার কণ্ঠেই শুনি না কেন, কখনোই খারাপ লাগেনি। রেডিও শিল্পীদের গলায় যেমন শুনতে ভালো লাগতো, গাড়োয়ানদের খালি গলায় গাওয়া এই গানটা শুনতে তার চেয়ে মোটেও খারাপ লাগতো না। আমাদের এলাকায় সাধারণতঃ গরুর গাড়ি চালকদেরকে গাড়োয়ান আর মহিষের গাড়ি চালকদেরকে 'মইশাল' নামে ডাকা হয়। ছোটবেলায় স্কুলের বাৎসরিক ছুটির সময় যখন নানাবাড়ি-দাদাবাড়িতে বেড়াতে যেতাম, তখন প্রায় মাসখানেক সেখানে থাকতাম। সে সময়ে মাঠ থেকে ধানের আঁটি কিংবা পোয়ালের পুঁজ গরুর গাড়িতে করে ঘরে আনা হতো। আমিও সেই গাড়িতে চড়ে বসতাম এবং সে সময়ে গাড়োয়ান যেসব গান গলা ছেড়ে গাইতো, তা আমি মনযোগ দিয়ে শুনতাম। তাদের কণ্ঠে অনেক দরদ এবং আবেগ প্রকাশ পেত।

১৯৭০ সালের আগে পর্যন্ত আমিও ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশন (এখনকার নবাবপুরের কাছে) থেকে রংপুর/লালমনিরহাট যাতায়াত করতাম। সে সময়ে উত্তরবঙ্গের মেল ট্রেনগুলো ঢাকা নয়, নারায়নগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু করতো। বড়ভাইদের মধ্যে কেউ একজন নারায়নগঞ্জ চলে যেত 'সীট দখল' করে আনার জন্য। আমরা ফুলবাড়িয়া থেকে উঠতাম।

হ্যাঁ, সে সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী 'গ্রীন এ্যারো'ই ছিল সবচেয়ে দ্রুতগামী এবং অভিজাত ট্রেন। এর পরে ছিল 'উল্কা'। উত্তরবঙ্গের জন্য ছিল সকালে 'দ্রুতযান এক্সপ্রেস' আর রাতে 'নর্থ বেঙ্গল মেইল'

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,



"কুউউউ... ঝিকঝিক" এর কৌশলী ব্যাখ্যা দিয়ে গেলেন!

ট্রেনে ভ্রমন আমারও পছন্দের। দুলুনীর সাথে পিছে ছিটকে পড়া মাঠ-ঘাট, শষ্যখেত, খাল-বিল, গাছগাছালির ঐক্যতান যেন মোহাবিষ্ট করে রাখে। যাত্রার বেশীর ভাগ সময়ই আমি তাই দরজার কাছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনের মাঝে গেয়ে ওঠা কুউউউ... ঝিকঝিক শুনি! ভালো লাগে তখন বিশ্ব চরাচর।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: "দুলুনীর সাথে পিছে ছিটকে পড়া মাঠ-ঘাট, শষ্যখেত, খাল-বিল, গাছগাছালির ঐক্যতান যেন মোহাবিষ্ট করে রাখে" - এগুলোর দ্বারা মোহাবিষ্ট হয়েই লুই স্টিভেনসন এ কবিতাটি লিখেছিলেন, সেগুলোকে স্মরণ করে আমিও এ পোস্টটা লিখলাম।

"ভালো লাগে তখন বিশ্ব চরাচর" - আসলেই তাই। খুব ভালো লাগে।

পোস্ট ভিজিট করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০

শেরজা তপন বলেছেন: আমার বাড়ির পাশেই এমন ট্রেন লাইন ছিল। একসময় ওখান থেকে শিলিগুড়িতে ট্রেন যেত। যদিও বহু আগে বন্ধ হয়ে গেছে তবুও তার নাম ছিল শিলিগিড়ি ট্রেন। রাতে ঘাটে ওই ট্রেন ভিড়লে ঘাট আর বাজার ফের জেগে উঠত। রাত চারটার দিকে সেই ট্রেন ছেড়ে যেত। শেষ্রাতে বহুবার সেই ট্রেন শব্দে ঘুম ভেঙ্গে কু ঝিক ঝিক তালে তালে মনটা চলে যেত দূর বহুদুর...

আপনার লেখা ও কবিতা মন ছুঁয়ে গেল!

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: "রাতে ঘাটে ওই ট্রেন ভিড়লে ঘাট আর বাজার ফের জেগে উঠত" - এ কথাটা পড়ে আমার বাহাদুরাবাদ ঘাট আর তিস্তামুখ/ফুলছড়ি ঘাট এর কথা মনে পড়ে গেল। মধ্যরাতে ফেরী পারাপারের সময় দেখতাম হঠাৎ কি করে ঘুমন্ত ঘাটগুলো জেগে উঠতো, ফেরী চলে গেলে আবার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়তো।

আপনার লেখা ও কবিতা মন ছুঁয়ে গেল! - অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম।

৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৫

কামাল৮০ বলেছেন: এখন ট্রেন অনেক আধুনিক।আমাদের বড় বেলায়ও কয়লায় চলতো ট্রেন।ভ্রমন আনন্দের ছিল কিন্তু কয়লার গুড়ো চোখে ঢুকে আনন্দ মাটি করে দিতো।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "ভ্রমন আনন্দের ছিল কিন্তু কয়লার গুড়ো চোখে ঢুকে আনন্দ মাটি করে দিতো" - হ্যাঁ, এরকমটি প্রায়ই ঘটতো।

৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০২

শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল লাগলো ট্রেনের গল্প । দেশে তেমন একটা ট্রেনের গল্প নেই । চীনে ট্রেনে টানা ৭৪ ঘণ্টা জার্নির গল্প আছে ।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "চীনে ট্রেনে টানা ৭৪ ঘণ্টা জার্নির গল্প আছে" - সেই জার্নির গল্পগুলোই কিছু কিছু করে বের করতে থাকুন!
ভাল লাগলো ট্রেনের গল্প - অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা....

৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ছবিগুলো সুন্দর !!!
ট্রেন ! চলমান ট্রেন ! এবং কু উ উ উ ঝিক ঝিক সব মিলিয়ে দারুণ ফ্যান্টাসি! আমার তো মনে হয় এই ট্রেন রেললাইন হুইসেল দিয়ে ছোটা, আগের দিনের ধোঁয়া ছড়িয়ে ট্রেনের চলে যাওয়া সবকিছু তে কান্ট্রি রোড বেয়ে নিজের হোমে ফেরার একটা আবেশ , থাকে ছুটির একটা আমেজ থাকে।

চমৎকার স্মৃতির মিশেলে ট্রেন কথন।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমার তো মনে হয় এই ট্রেন রেললাইন হুইসেল দিয়ে ছোটা, আগের দিনের ধোঁয়া ছড়িয়ে ট্রেনের চলে যাওয়া সবকিছু তে কান্ট্রি রোড বেয়ে নিজের হোমে ফেরার একটা আবেশ , থাকে ছুটির একটা আমেজ থাকে" - জ্বী হ্যাঁ, আপনার ধারণাটা মোটেই অমূলক নয়। একসময় আমারও সেরকমই মনে হতো। কখনো সেটা মনে হতো আ হ্যন্ড্রেড মাইলস, কখনো থ্রী হান্ড্রেড মাইলস।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমি এখন পর্যন্ত মোট তিনবার ট্রেন ভ্রমন করেছি। একবার সিলেট যাওয়া আসা আর একদিন এয়ারপোর্ট রেল স্টেশন টু কমলাপুর।
সিলেট ট্যুরটা মজার ছিল। রেল লাইন দেখলে আমার গা ছমছম করে; চিকন দুটি পাতের উপর দিয়ে লং দুরত্বের রাস্তায় এত বড় ট্রেন কিভাবে যায়, যে কোন একটি পাত মাত্র এক ইঞ্চি এদিক সেদিক হলেই তো কম্ম শ্যাষ, তা ভেবে।

আপনার স্মৃতিকথা ভালো লেগেছে।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার স্মৃতিকথা ভালো লেগেছে" - অনেক ধন্যবাদ, স্মৃতিকথাটি পড়ার জন্য। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

১১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৩:৪০

কালো যাদুকর বলেছেন: অসাধারন কর্ণনা ট্রেনের ও সমান্তরাল পথের ' ৷ ধন্যবাদ

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম।

১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭

স্বদেশ১ বলেছেন: স্মৃতি রোমন্থন ভালো লাগলো।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।

১৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আমার ভীষণ ইচ্ছে ছিল ট্রেনে উঠবো । কিন্তু সেই অভিজ্ঞতায় গ্যাপ ছিল দীর্ঘ বছর । । চাকুরীতে যোগ দিলাম। আহা কিন্তু ট্রেনে আর উঠা হলো না। একবার একট সংস্থা হতে বিদায় নিয়ে অন্য আরো একটা সংস্থায় যোগ দিতে যাব। বসসহ আমার সহকর্মীরা আমাকে অনেক দামী গিফট দিতে চাইলো। আমি বললাম ঐ দামী গিফট দিতে হবে না-- আমাকে ট্রেনে ঘুরালেই আমি ভীষণ খুশি হবো। --২০০৬ সালের জুলাই মাসে আমার সেই ট্রেনে উঠার ইচ্ছা পূরণ হলো। তারপর আরো কয়েকবার উঠেছি--কিন্তু সেই প্রথম ওঠার যে আনন্দ সেটা এখনো ভুলি নাই -------
আপনার লেখাটা প্রাণ ছুঁয়ে গেল --- অনেক সুন্দর করে লিখেছেন ---

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: যাক, অনেকদিন পরে হলেও, আপনার সেই ট্রেনে উঠার ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছিল জেনে প্রীত হ'লাম।
পোস্ট পড়ে অনেক প্রশংসা করে গেলেন, অনেক প্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন।

১৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বরাবরের মতোই রোমাঞ্চকর, বর্ণিল ঋদ্ধ লেখনি।

ট্রেনের জানালায় বসে সরে যাওয়া ছবির মতো দ্রুততায় স্মৃতির ঘরে টেনে নিয়ে গেলো পলকে!

আহা! কত স্মৃতি।
স্কুল ছুটির পর ট্রেন দেখতে আসা দল বেঁধে। ট্রেনের পাতে কান পেতে দূরাগত ট্রেনের শব্দ শোনা!
হাতে হাত ধরে লাইন ধরে হাটা! একা একা কে কতদূর যেতে পারে তার প্রতিযোগিতা।
আর আর একটু বড় হবার পর, দূরন্ত পনা!
রেলব্রীজের পালকিতে দাড়িয়ে ট্রেনে যাবার রোমাঞ্চ! টেলিগ্রাফের লাইনে দাড়িয়ে ট্রেনেরে দুলুনি অনুভব! নীচে গহীন নদী।
আহা!
অত:পর আরো একধাপ এগিয়ে- রেল লাইন থেকে ঝাপিয়ে পড়া নদীর জলে!!!

কত কত মধুর স্মৃতি জাগিয়ে দিলেন ভায়া

+++

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫০

খায়রুল আহসান বলেছেন: "ট্রেনের পাতে কান পেতে দূরাগত ট্রেনের শব্দ শোনা! হাতে হাত ধরে লাইন ধরে হাটা! একা একা কে কতদূর যেতে পারে তার প্রতিযোগিতা" - এ কাজগুলো আমিও আমার কাজিনদের সাথে করতাম। ট্রেন আসার আগে আগে রেলের পাতে দুই পয়সার মুদ্রা রেখে দিতাম। কে যেন বলেছিল, ট্রেন চলে যাবার পর রেলের চাকার ঘর্ষণে মুদ্রাটি চুম্বকে পরিণত হবে। সেটা সত্য হয় কিনা তা দেখার আশায় এ কাজটা করতাম।

রেল লাইন থেকে ঝাপিয়ে পড়া নদীর জলে!!! - আপনার এ দুরন্তপনার কথাটি আগেও আমি আপনার কোন এক লেখায় পড়েছিলাম।

মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

১৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪০

করুণাধারা বলেছেন: ট্রেন আমারও খুব প্রিয় বাহন। ট্রেন নিয়ে আপনার স্মৃতিচারণ, আর সেই সাথে স্টিম ইঞ্জিন আর ডিজেল নিয়ে আলোচনা (যার অনেক কিছুই জানা ছিল না) পড়তে খুব ভালো লাগলো। ছোটবেলায় ট্রেনে উঠে একটা ছড়া পড়তাম,

ক ঝিকঝিক কু ঝিকঝিক
লম্বা গাড়ি রেল,
উল্কা ছাড়ে সকালবেলায়
সন্ধ্যাবেলায় মেল।

আপনার অনুদিত কবিতাটি, বরাবরের মতই চমৎকার হয়েছে। এটি আমারও প্রিয় কবিতা। শেষ চারটি ছবিও খুব ঝকঝকে!

শুধু ট্রেনই নয়, চলমান যে কোন কিছুই দেখতে আমার ভালো লাগে। যেমন আকাশে ভাসতে ভাসতে মেঘপুঞ্জে ঢুকে যাওয়া কোন প্লেন, দূরের কোন হাইওয়ে দিয়ে ছুটে চলা যাত্রীবাহী বাস, পিকনিকের সিজনে মাইকে গান বাজিয়ে ছুটে চলা বাসের কাফেলা, নদীর বুকে পাল তোলা নৌকা, স্টিমার কিংবা লঞ্চ। সবই ভালো লাগে, জীবন স্রোতের সাথে চলমান জীবনবাহী যে কোন যান।

চমৎকার উপলব্ধি! পোস্টে প্লাস।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: ছোটবেলায় ট্রেনে চড়ে আমরা যে ছড়াটি কাটতাম, তা হলোঃ 'রেলগাড়ী ঝমাঝম, পা পিছলে আলুর দম'
এ ছাড়া আমরা ছড়া আকারে যা কিছুই বলতাম, তা রেলের শব্দের সাথে মিল খায় কিনা, তা পরখ করে দেখতাম।
চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৪

সোহানী বলেছেন: ট্রেন নিয়ে সম্ভবত: আপনার আরো লিখা পড়েছি।

ট্রেনও আমার অসম্ভব পছন্দ। বলেছি মনে হয় আগে, সুইজারল্যান্ড থেকে জার্মানে গেছি আমি ট্রেনে বাড়তি টাকা গচ্চা দিয়ে। সে জার্নি ছিল অসাধারন। ছোটবেলায় দাদার বাড়ি যেতাম ট্রেনে চড়ে। সে আনন্দের কোন তুলনা ছিল না। এখন কানাডার ট্রেনে চলি যখন তখন। চমৎকার সে ছোট ছোট জার্নি।

চলন্ত কিছু বা গতিময় কিছু দেখার আনন্দই অন্যরকম।

ভালো লাগলো ছবি সহ লিখাটা। কানাডায় আসলে ট্রেন এ করে অন্য প্রভিন্সে যেতে পারেন। খুব ভালো সুবিধা সেখানে।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: "ট্রেন নিয়ে সম্ভবত: আপনার আরো লিখা পড়েছি" - আমি আগেও বহুবার বলেছি, আপনার স্মরণ শক্তি খুবই প্রখর। জ্বী হ্যাঁ, ট্রেন নিয়ে আমার লেখা আপনি আগেও পড়েছেন। ট্রেনভ্রমণ আমার একটি প্রিয় বিষয়, যা নিয়ে আমি লিখতে ভালবাসি এবং প্রায়ই লিখি।

"ছোটবেলায় দাদার বাড়ি যেতাম ট্রেনে চড়ে" - আমরাও দাদাবাড়ি-নানাবাড়ি দুটোই যেতাম ট্রেনে চড়ে। দুটোর অবস্থান ছিল মাত্র ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে।

"কানাডায় আসলে ট্রেন এ করে অন্য প্রভিন্সে যেতে পারেন" - খুব ভালো একটা আইডিয়া দিলেন। অনেক ধন্যবাদ। আগামী গ্রীষ্মে যাবার সম্ভাবনা আছে, ইন শা আল্লাহ! এ বিষয়টা ভেবে দেখবো, ছেলেকেও জানিয়েছি।

আন্তরিক মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.