![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
ঘূর্ণিঝড় ‘সি-ত্রাং’ এর প্রভাবে আজ সারাদিন ধরে ঝিরঝিরে ঝরা বৃষ্টির প্রকোপটা বিকেল থেকে যেন বেড়ে গেল। থেকে থেকে দমকা হাওয়াও বইতে শুরু করলো। বিকেল পাঁচটার দিকে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। বাসার কিছুটা সামনে কয়েকটা বড় বৃক্ষ রয়েছে। সেগুলোর দিকে আমি প্রায়ই তাকিয়ে থেকে পাখিদের আনাগোনা দেখি। ঐসব গাছে প্রচুর টিয়া পাখি বসে। ঘন সবুজ পাতার সাথে মিশে যাওয়া টিয়া পাখিদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করি। কিন্তু কোন পাখি ওড়াউড়ি না করা পর্যন্ত তাকে চিনতে পারি না। তবে সহজে কাক চেনা যায়। সবুজের বিপরীতে কালো রঙ মিশ খায়না বলে কাক এবং বসন্তকালে কোকিলকেও বেশ চিনতে পারি। আজও সন্ধ্যায় দূর থেকে কয়েকটা ভেজা কাককে শনাক্ত করতে পেরেছি।
রাতে এশার নামায ব্যালকনি’র পাশে দাঁড়িয়েই পড়ে নিলাম। নামাযের পর জায়নামাযে বসেই কিছুক্ষণ আকাশ ও গাছপালার দিকে তাকাচ্ছিলাম। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ হচ্ছিল, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎও চমকাচ্ছিল। বৃষ্টির হাল্কা ঝাপ্টা এসে গায়ে লাগছিল, সেটা বেশ আরামদায়ক ছিল বলে স্লাইডিং ফ্রেমটাকে ইচ্ছে করেই বন্ধ করিনি। এসব দিনে, এমন পরিবেশে আমার মনটা হাল্কা মেঘের মত স্মৃতির আকাশে ভেসে বেড়ায়। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। তবে আজ আমার শৈশবের একটি দুঃখজনক স্মৃতির কথা স্মরণ করে ভারাক্রান্ত হ’লাম।
এবারে আমার শৈশবের সেই ছোট্ট গল্পটা বলি। সেটা আজ থেকে প্রায় পঞ্চান্ন বছর আগের কথা। ছোটবেলায় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার পর আমরা প্রতিবছর নানাবাড়ি-দাদাবাড়ি বেড়াতে যেতাম। রুটে প্রথমে নানাবাড়ি পড়তো, তারপরে দাদাবাড়ি। দুটোই ছিল দশ-বার কি.মি. এর মধ্যে। নানাবাড়ি ছিল লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামে, দাদাবাড়ি একই জেলার আদিতমারি উপজেলায়। আমি তখন হয়তো বড়জোর পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সেবার একই সময়ে আমার মেজ খালাও নানাবাড়ি এসেছিলেন। আমার চেয়ে দেড় বছরের ছোট এক খালাতো ভাই ছিল, তার চেয়েও দেড় বছরের ছোট এক খালাতো বোন ছিল, যার নাম ছিল রানী। অর্থাৎ রানী আমার চেয়ে বছর তিনেকের ছোট ছিল। ওরা ছাড়াও নানাবাড়িতে আমার ছোট খালাও এসেছিলেন, তার বড় ছেলেটাও আমার থেকে বছর তিনেকের ছোট ছিল । সেবারে আমরা খুব আনন্দে নানাবাড়িতে কাটিয়েছিলাম। সারাদিন ধরে নানা ধরনের খেলা খেলতাম, গাছের বড়ই পেড়ে খেতাম। পাখির বাসা খুঁজতাম, চড়ুইভাতি খেলতাম। একটা পেয়ারা গাছ ছিল যেটার ডালপালা এমনই সুবিন্যস্ত ছিল যাতে আমরা চার পাঁচজন সহজেই গাছে চড়ে একেকজন একেকটা ডালে বসতে পারতাম। আমরা ডালে বসে পেয়ারা চিবাতাম আর নানা রকমের গল্প করতাম। একদিন এ রকমের গল্প করার সময় নানার বাড়িতে আগন্তুক এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় আমাদের দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এই বানরেরা, তোরা সবাই গাছে বসে কী মীটিং করছিস”? গল্প ছাড়াও আমরা যে যার মত গলা ছেড়ে গানও গাইতাম, আবার কবিতাও আবৃত্তি করতাম। তখন 'কাজলা দিদি' কবিতাটা আমাদের সমবয়সী সবারই মুখস্থ ছিল। আমরা সুর করে কবিতাটি আওড়াতাম (‘আমরা’ আবৃত্তি করতাম বললে ভুল হবে, সেজন্যই ‘আওড়াতাম’ বললাম। আমাদের মধ্যে একমাত্র রানীই খুব সুন্দর করে আবৃত্তি করতো। বাকি আমরা যা করতাম, তা আবৃত্তি হতো না।)।
স্কুল খোলার সময় হয়ে যাওয়াতে আমাদের সুখের দিনগুলো খুব দ্রুত পার হয়ে গেল। আমরা ঢাকায় ফিরে এলাম, রানীরা খালুর কর্মস্থল কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারিতে চলে গেল। এর কয়েকমাস পরে নানার চিঠিতে এক ভয়ানক দুঃসংবাদ পেলাম। তখন তো ঢাকা থেকে মফস্বল এলাকার সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি অথবা বড় জোর টেলিগ্রাম। চিঠিতে নানা জানিয়েছিলেন যে রানী হঠাৎ করে সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আমরা যখন চিঠিটি পেয়েছিলাম, ততদিনে মারা যাওয়ার দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এই দুঃসংবাদটি আমার বালক মনে গভীর রেখাপাত করেছিল। আজও মনে পড়ে সেদিন আমি খুব কেঁদেছিলাম। বেশি করে কেঁদেছিলাম নানার চিঠির ঐ অংশটুকু পড়ে, যেখানে তিনি লিখেছিলেন যে মৃত্যুশয্যায় রানী কয়েকদিন ধরে অনবরত, এমনকি ঘুমের মধ্যেও 'কাজলা দিদি' কবিতাটি আওড়াতো। এমনিতেই 'কাজলা দিদি' একটা দুঃখের কবিতা। তার উপর মৃত্যুশয্যায় রানী'র অনবরত এ কবিতাটি আওড়ানোর তথ্যটা আমার অপরিণত মানসে শেলের মত বিঁধেছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমি আর কখনো এই কবিতাটি পাঠ সম্পূর্ণ করতে পারি নাই। জীবনের এ দীর্ঘ চলার পথে অনেক সময় অনেকবার অনেক জায়গায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কণ্ঠে সুর করে এ কবিতা পাঠের শব্দ শুনে আমি থমকে দাঁড়িয়ে শুনেছি, তারপর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আবার পথ চলা শুরু করেছি। কখনো হয়তো নীরবে দু'ফোঁটা চোখের জলও ফেলে এসেছি।
ঢাকা
২৪ অক্টোবর ২০২২
শব্দসংখ্যাঃ ৬২১
২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: 'হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া' রানী'র গল্প পড়ে এত সুন্দর একটা স্বরচিত কবিতা এখানে রেখে গেলেন, এজন্য অশেষ ধন্যবাদ। কবিতাটা পোস্টের সাথে প্রাসঙ্গিক।
প্রথম মন্তব্য এবং প্রথম প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:৩৬
সোনাগাজী বলেছেন:
অনেক কষ্টকর সংবাদ ছিলো।
২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: সত্যিই তাই। অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:৪৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: ঘটনাটি সত্যিই দুঃখের। কিছু কিছু ঘটনা কখনো ভুলা যায় না। ছোট বেলায় আমাদের সাথের দুই বন্ধু মারা যায়, একজন খুব কঠিন একটি রোগে, আরেকজন সাইকেল চালাতে গিয়ে এক্সিডেন্টে, আমার প্রায় তাদের কথা মনে পরে !
আমার কাছে জসীমউদ্দীন-এর কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি ট্রাজিডি কবিতা মনে হয়, এই কবিতা শুনলে বিষণ্ণ লাগে!
২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৫৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: "কিছু কিছু ঘটনা কখনো ভুলা যায় না" - জ্বী, ঠিক বলেছেন। এটাও সে ধরণেরই একটা ঘটনা। আপনার বন্ধু দু'জনের কথা জেনেও মনটা বিষণ্ণ হলো।
"কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি ট্রাজিডি কবিতা মনে হয়" - নিঃসন্দেহে!
৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:৪৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আজকের ঝড়ে আমার একটি জামগাছ পরে গেছে।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৩৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: আবার একটা রোপণ করুন।
৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১:২৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কেমন আছেন বড় ভাই। অনেক দিন অসুস্থ ছিলাম। বারডেমে ছিলাম প্রথমে, পরে কলকাতা ফেয়ারল্যাস হাসপাতালে ছিলাম। এখন ভালো আছি। দোয়া করবেন।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১২:১১
খায়রুল আহসান বলেছেন: "অনেক দিন অসুস্থ ছিলাম" - আমার কেন যেন সেটাই সন্দেহ হচ্ছিল, যদিও বড় ধরণের কোন অসুস্থতায় পড়ার বয়স এখনও আপনার হয়নি। এর মধ্যে বহুদিন আমি আপনার ব্লগবাড়ি ঘুরে এসেছি, অনেকগুলো পোস্টে মন্তব্যও করেছি। বাংলা কবিতার আসরে আমার একটি কবিতায় সম্প্রতি আপনার একটি মন্তব্য পেয়ে মনে হয়েছিল, আপনি ভালো আছেন, তবে হয়তো কোন কারণে ব্লগ ছেড়ে সাময়িকভাবে চলে গেছেন। আজ আপনার অসুস্থতার কথা জেনে ব্যথিত হ'লাম।
বারডেমে যেহেতু ছিলেন, জিজ্ঞেস করতে পারি কি যে এটা ডায়েবিটিজ সংক্রান্ত কোন অসুখ ছিল কি না? যাই হোক, এখন ভালো আছেন, এটাই স্বস্তি। আপনার জন্য দোয়া রইলো নিরন্তর, তবে রাত জাগবেন না, যা আপনি আগে করতেন বলে লক্ষ্য করেছি।
৬| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ ভোর ৪:১৩
কামাল৮০ বলেছেন: পড়তে পড়তে শেষের দিকে এসে আমার চোখে পানি এসেগেছে।দুঃখ প্রবাহিত হয়।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: "দুঃখ প্রবাহিত হয়" - সঠিক বলেছেন। মন্তব্যের প্রথম কথাটায় আপনার কোমল হৃদয়ের পরিচয় মেলে।
সম্প্রতি আমার এবং অন্যান্য ব্লগারদের পোস্টে আপনার মন্তব্যসমূহে গুণগত মানের পরিবর্তন লক্ষ্য করে আমি মুগ্ধ।
শুভকামনা....
৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ ভোর ৬:৫৭
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আজ রানী বেচে থাকলে আপনাকে তার ছবি দিতে বলতাম।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪২
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৮:২৫
জুল ভার্ন বলেছেন: আহ কাজলা দিদি!
আমার কল্পনা বুবু.....
দলা পাকিয়ে ওঠা বিষন্নতায়, স্মৃতিকাতরতায় পোড়া প্লাস্টিকের মত শুধুই দুমড়ে মুচড়ে যেতে থাকা। কয়েলের জমে থাকা ধোঁয়ার চেয়ে, সাইনাসে গেঁড়ে বসা শ্লেষ্মার চেয়ে ভাবনা আর কাগজ কলমের মাঝখানটায় জমাট বেঁধে কুঁচকে গিয়ে থ্যাবড়ানো থ্যাতলানো শব্দগুলোই পাঁজরের ওঠানামাকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে চলছে। শুধু একটু কিছু বলার ইচ্ছে, একটু হাল্কা হওয়ার বাসনারা কখনো বদ্ধ ঘরের চারদেয়ালে, কখনো ঝকঝকে মনিটরে বিনোদনের লাস্যময়ী উপাদানে, কখনো পিছুটানের স্রোতে, পুরনো লেখালেখির আস্তাকুঁড়েতে অস্থির কড়া নাড়ে.....এ স্মৃতি খুব বেশী বেদনার, খুব কষ্টের।
ভালো থাকুক আমাদের কাজলা দিদি, রানী, আমার কল্পনা বুবু।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: অত্যন্ত মর্মস্পর্শী মন্তব্য। অভিভূত এবং বাকরুদ্ধ!
চমৎকার মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৯| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:২০
শেরজা তপন বলেছেন: @ জুলভার্ন ভাই আপনার প্রতি সহমর্মিতা জানানোর কোন ভাষা নেই! আপনার বুবুর স্মৃতি আপনাকে বড্ড কাঁদায়!
কাজলাদিদি কবিতাটি সুর দিয়ে একটা বাংলা ছবিতে সংযোজন করা হয়েছিল। সেই ফিল্মে বোন হারানোর মত চরম বিয়োগান্তক দৃশ্য ছিল।
ছেলেবেলায় সেই ছবি দেখে আমার শিশু মনে এতটাই রেখাপাত করেছিল যে আমি আজও এই কবিতাটা আবৃতি করতে ভয় পাই।
আর আপনার মনের ব্যাথা আমি অনুভব করার চেষ্টা করছি।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৫৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আর আপনার মনের ব্যাথা আমি অনুভব করার চেষ্টা করছি" - অনেক ধন্যবাদ, এ সহমর্মিতার জন্য।
প্লাসে অনুপ্রাণিত।
১০| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১২:৪২
শোভন শামস বলেছেন: দুঃখ জাগানিয়া স্মৃতিগুলো মাঝে মাঝে মনকে ভারাক্রান্ত করে, সুন্দর আবেগময় প্রকাশ। ধন্যবাদ।
২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, একটি প্রেরণাদায়ক মন্তব্য এখানে রেখে যাবার জন্য।
শুভেচ্ছা জানবেন।
১১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট পরে বুকের মধ্যে হাহাকার করে উঠলো।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৩৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ অনুভূতি যথার্থ। বুক হাহাকার করে ওঠার মতই মর্মন্তুদ এ স্মৃতি।
১২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: শৈশবের মৃত্যুগুলো ভীষণ প্রভাব ফেলে মনে, খেলার সাথী হলে তো বলাই বাহুল্য।
আপনার স্মৃতিকথা মন ছুঁয়ে গেলো, কাজলাদিদি কবিতার মায়ার কাজল মেখে আছে লেখায়।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "শৈশবের মৃত্যুগুলো ভীষণ প্রভাব ফেলে মনে, খেলার সাথী হলে তো বলাই বাহুল্য" - একদম ঠিক কথা বলেছেন। এ কাহিনীতে দুটোই বর্তমান ছিল; শৈশব এবং খেলার সাথী।
"কাজলাদিদি কবিতার মায়ার কাজল মেখে আছে লেখায়" - অসাধারণ মায়াময় একটি পর্যবেক্ষণ! অনেক, অনেক ধন্যবাদ, এমন মন্তব্য এবং 'প্লাস' এর জন্য।
১৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভীষণ বিষন্নের লেখা। শৈশবের সেই হাহাকার আজ পরিণত বয়সেও জগদ্দল পাথরের মত আপনার হৃদয়কে ভারাক্লান্ত করে রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে এমন গভীর মর্মানুভবের লেখা।
জুল ভার্ন ভাইয়ের কমেন্টটিও ভারাক্রান্ত হৃদয়ের ফলশ্রুতি।
পোস্টে বিষণ্ন ভালো লাগা রইলো।
শুভেচ্ছা স্যার আপনাকে।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: "যার ফলশ্রুতিতে এমন গভীর মর্মানুভবের লেখা" - সঠিক পর্যবেক্ষণ।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
জুল ভার্ন এর মন্তব্যটা সত্যিই অত্যন্ত মর্মস্পর্শী।
১৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪১
আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,
"কাজলা দিদি" পড়ে চোখ ভেজেনি এমন মানুষের দেখা পা্ওয়াই ভার!
আপনার এই লেখাতে মৃত্যুশয্যায় শুয়ে্ও রানী যে বারে বারে সেই কবিতাটিই আউড়ে গেছে এটা জেনে চোখ ভিজলো।
মন ভারাক্রান্ত করা লেখা।
২৭ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: "কাজলা দিদি" পড়ে চোখ ভেজেনি এমন মানুষের দেখা পা্ওয়াই ভার! - অনেক ধন্যবাদ, আপনার এ পর্যবেক্ষণটির জন্য।
এটা একটা সত্য ঘটনার স্মৃতিচারণ। এ জন্যই হয়তো পড়লে মনটা একটু বেশিই ভারাক্রান্ত হয়।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:২৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দুঃখে ভারাক্রান্ত হওয়ার মতো লেখা।
২৮ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখার সাথে একাত্ম হতে পেরেছেন বলেই ভারাক্রান্ত হয়েছেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১০:২৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: যে কোন কিছু পড়ার সময়েই আমার চোখের সামনে ছবি ভেসে ওঠর। কাকের কথা পড়ত গিয়ে মনে হল আর এক কন্যা বারান্দায় দাঁড়িয়ে খুব মনযোগ দিয়ে কাক দেখে, দুইদিন যাবত কাক্ কাক্ বলা শিখেছে।
খুব মন খারাপ হল বোনের মৃত্যুর কথা পড়ে । আমার আম্মা কন্যাদের কোলে করে এই কবিতাটা বলেন। কেন যেন যখনি বলেন "আমিও নেই দিদিও নেই কেমন মজা হবে…" মনটা হাহাকার করে ওঠে,আমার বোন নেই তাও কষ্ট লাগেয
৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমার বোন নেই তাও কষ্ট লাগে" - এটাই যতীন্দ্রনাথ বাগচী'র এ কবিতাটির একটি সার্বজনীন আবেদন; সবার মনকে বিষণ্ণ করে তোলে। এ জন্যেই যতীন্দ্রনাথ বাগচী এর উপাধি ছিল দুঃখবাদের কবি।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৭| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ ভোর ৬:৫২
সোহানী বলেছেন: মন খারাপ করা স্মৃতি।
ছোটবেলায় এমন কি বড় বেলায়ও এ কবিতাটা আমাকে কাঁদায়। কোথাও কোন দু:খের স্মৃতি ছির না তারপরও অদ্ভুতভাবে একটা বিষন্নতা ছুঁয়ে যায়।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: "ছোটবেলায় এমন কি বড় বেলায়ও এ কবিতাটা আমাকে কাঁদায়। কোথাও কোন দু:খের স্মৃতি ছিল না তারপরও অদ্ভুতভাবে একটা বিষন্নতা ছুঁয়ে যায়।" - উপরের মন্তব্যের উত্তরেই বলেছি, এই বিষণ্ণতাবোধই "যতীন্দ্রনাথ বাগচী'র এ কবিতাটির একটি সার্বজনীন আবেদন; সবার মনকে বিষণ্ণ করে তোলে। এ জন্যেই যতীন্দ্রনাথ বাগচী এর উপাধি ছিল দুঃখবাদের কবি"। আপনাকেও সেই সার্বজনীন আবেদনই স্পর্শ করে যায়।
সুন্দর মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:২৮
অপ্সরা বলেছেন: এমন করে মানুষ হঠাৎ হারিয়ে যায় ...
হঠাৎ তোমার হারিয়ে যাওয়া
নাড়িয়ে দিলো, বুকের ভেতর
বাজিয়ে গেলো বিষন্ন সুর
ফাগুন দুপুর, উদাস এখন
হাহাকারী ছন্নছাড়া....
ঠিক যেখানে দুঃখগুলো
আড়াল ছিলো, ইটের চাপায়
জীর্ণ ঘাসের ফ্যাকাশে রঙ
নিথর মায়ায়, যতন করে
লুকিয়ে রাখায়, স্মৃতির ছায়ায়....
হঠাৎ সেথায় টংকারেতে
পিনাক জাগে, পাঁজর তলে
কাঁপন লাগে, কবে কোথায়
হারিয়ে ফেলা ফুরিয়ে যাওয়া
বিষাদ কথন, শিথিল বাঁধন....
গায় সেখানে কোরাস গীতি
দুঃখ গুলো, সব হারানোর
কষ্ট গুলো কাব্য লেখে
অমিত্রাখর, ছন্দ হারায় আনন্দেরা,
বিকেলগুলো বিবর্ণ সব.........
হলুদ ফাগুন রোদন ভরা
নীলাভ স্মৃতি কাঁদন চাপা
নিঃস্বতারা সঙ্গীবিহীন
ইচ্ছেরা সব বন্দীশালায়
অনিচ্ছেদের শেকল খাঁচায়......
বন্ধনহীন বিহঙ্গ কোন
মুক্ত এখন, সীমার মাঝে
অসীম তুমি অম্বরেতে মল্লারমেঘ
বৃষ্টি ঝরাও, আমার চোখে
ঝাপসা দিঠি চিত্র আঁকে..........
তোমার স্মৃতির.........
বিষাদ জমে চোখের পাতায়
কবে কোথায় হারিয়ে ফেলা
বিদায় বেলার, ছিন্ন বাঁধন, অনেক মায়ার
মানুষগুলোর হারিয়ে যাওয়া চিরতরের......
অনেকদিন আগের লেখা এই কবিতাটা মনে পড়ে গেলো ভাইয়া।