নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
অপেক্ষা...
চা গবেষণা ইন্সটিটিউট, শ্রীমঙ্গল
১২ নভেম্বর ২০২২, ১১-০২ পূর্বাহ্ন
প্রথম পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ শ্রীমঙ্গলে আড়াই দিন - প্রথম পর্ব (ছবি ব্লগ)
পরদিন সকালে রওনা হ’লাম মাধবকুণ্ডের উদ্দেশ্যে। সেখানেও এর আগে কয়েকবার গিয়েছি। কিন্তু এবারে পথ ঘাটের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নত দেখতে পেলাম। মাত্র ছয় মাস আগে প্রয়াত মায়ের কথা মনে পড়ে যাওয়াতে মনটা কিছুক্ষণ ভারাক্রান্ত হয়ে রইলো। আজ থেকে ২২ বছর আগে মাকে এখানে বেড়াতে নিয়ে এসেছিলাম। দিনটা বৃষ্টিস্নাত ছিল, ফলে ভরা প্রপাতের গর্জন বেশ দূর থেকেই শোনা যাচ্ছিল। তখন রাস্তাটা কাঁচা ও পিচ্ছিল ছিল, এখনকার মত কোন রেলিঙও ছিল না। আমার দুই ছেলে ওদের ৭০ বছর বয়স্কা (তখনকার বয়স) দাদীর দুই হাত ধরে অতি ধীরে ধীরে প্রপাত পতনের জায়গাটা পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। মা অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর সে মুগ্ধ মুখটা মনের পর্দায় ভেসে উঠলো!
আগের চেয়ে দর্শনার্থীদের ভিড় এখন অনেক বেশি। বয়সের পার্থক্যের কারণে গ্রুপের সদস্যদের সেখানে পৌঁছাতে সময়েরও তারতম্য ঘটেছিল। কম বয়েসীরা আগে পৌঁছেছিল, বয়স্করা কিছুটা পরে। যাহোক, একসময় সবাই একত্রিত হওয়ার পর সেখানে একটা গ্রুপ-ছবি তোলা হলো। যে যার মত ছবি তোলার পর হাকালুকি হাওড় দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হ’লাম। পথিমধ্যে ‘বড়লেখা’য় একটা রেস্টুরেন্টে বসে সবাই লাঞ্চ সেরে নিলাম। আমরা যে চারজন এক টেবিলে বসেছিলাম, আমরা সবাই ছিলাম মাছ-খেকো। অন্যরা কেউ কেউ মুরগি বা অন্য কিছু নিয়েছিলেন। আমাদের চারজনের মধ্যে তিনজন নিলেন বোয়াল মাছ। মাছের বাকি অপশনগুলোর মধ্য থেকে আমি বাছাই করলাম বাইম মাছ ভুনা। ভেবেছিলাম, হাওড় এলাকার কাছাকাছি এ হোটেলের বাইম মাছ নিশ্চয়ই খুব মজা হবে। আর তাছাড়া এ মাছটা বাসায় সাধারণতঃ আনা হয় না। কিন্তু “প্রথমে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারি” বলে কথা। যখন প্লেট দিয়ে গেল, দেখলাম বাইম মাছের পরিমাণটা খুবই অল্প ছিল। ইচ্ছে করলে সেটা বদলে আমিও তখনো বোয়াল মাছ নিতে পারতাম, কিন্তু ইচ্ছে করলো না। যাহোক, ক্ষুধার্ত পেটে ওটুকু দিয়েই যথেষ্ট খেলাম। কিন্তু আমার মাছের প্লেটটার দিকে সহযাত্রী সাজন ইসলাম খেয়াল করেছিলেন। তিনি বললেন, “ভাই, আমাদের বোয়াল মাছের পিসগুলো বেশ বড় ছিল। আপনি একটু টেস্ট করে দেখেন”। এই বলে তিনি তার পিস থেকে একটি অংশ আলাদা করে আমার আপত্তি আমলে না নিয়ে জোর করেই আমার প্লেটে তুলে দিলেন। আমি তার এই সৌহার্দ্যে শুধু মুগ্ধই হ’লাম না, অভিভূতও হ’লাম।
আমরা যখন হাকালুকি হাওড়ে পৌঁছালাম, তখন বেলা পড়ন্ত, চারটের মত বাজে। হাওড় দেখার জন্য বছরের এ সময়টা বেস্ট সময় নয়। মাস দুয়েক আগে আসলে সবচেয়ে ভালো হতো। যাহোক, এ সময়ে যেটা দেখার জিনিস তা হলো সন্ধ্যার প্রাক্কালে দূর দূরান্ত থেকে পাখিদের দল বেঁধে আপন কুলায় ফিরে আসা। সেটা শুরু হবে সূর্যাস্তের ২০-৩০ মিনিট আগে থেকে। আমরা দেখলাম, হাওড়ের জল অনেক দূর পর্যন্ত নেমে গেছে। জল সরে যাওয়া ভূমিতে নতুন ঘাস গজিয়েছে, সেখানে ছেড়ে দেয়া শ’য়ে শ’য়ে গবাদি পশু চড়ে বেড়াচ্ছে, কয়েকটা গরু ঘাস খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে বসে আপন মনে জাবর কেটে চলেছে। তিন/চারজন জেলে তাদের ‘ঘের’ (বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি এক ধরণের ‘বাঁধ’ যা একটা নির্দিষ্ট এলাকা গোল করে ঘিরে ফেলে মাছ আটকানো হয়) রৌদ্রে শুকাতে দিয়ে নিজেরাও ঘাসের উপর শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে। তাদের একজনের নাম বিশ্বম্ভর বিশ্বাস, পাশের গ্রাম ‘কুটাউড়া’য় তার নিবাস। তিনি জানালেন, এ বছরের জন্য ঐ ‘ঘের’গুলোর ব্যবহার শেষ, তাই সেগুলোকে রৌদ্রে শুকিয়ে এবারের মত তুলে রাখবেন। আবার আগামী বছরের বর্ষা মওশুমের প্রাক্কালে নামাবেন। ঘাসের উপরে বিছানো সেই কঞ্চি-বিছানার উপর ক্লান্ত শ্রান্ত আমরা কয়েকজনও শুয়ে পড়ে খানিক জিরিয়ে নিলাম।
রোদের আলো স্তিমিত হওয়া শুরু করলে আমরা নিকটস্থ হাক্কা নামক স্থানে জড়ো হ’লাম, কুলায় প্রত্যাবর্তনরত পাখি দেখার জন্য। সেখানে বনবিভাগের অনেক গাছপালা রয়েছে, দিনশেষে পাখিরা সেখানেই ফিরে আসে। সে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা! ঝাঁকে ঝাঁকে দূর দূরান্ত থেকে পাখির দল আসতে শুরু করলো। তাদের দলের ওড়ার পৃথক পৃথক প্যাটার্ন ছিল। হাজারে হাজারে পাখি দল বেঁধে আসতেই থাকলো, দলপতিরা যে যার দল নিয়ে উড়ে এসে আমাদের মাথার উপর একটা চক্কর দিয়ে তাদের চেনা গাছে বসতে শুরু করলো। প্রথমে আসলো পানকৌড়ির দল। পরে আসলো বকের দল। তার পরে আরও অন্যান্য ছোট ছোট পাখির দল। গাছে বসে তারা সমস্বরে কলতান শুরু করলো। আমার মনে হলো, তারা স্রষ্টার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা সঙ্গীত নিবেদন করছে। ঠিক মাগরিবের আযানের আগে আগে তাদের কলতান বন্ধ হলো। আযান শুনে আমিও একটা স্থানীয় মাসজিদে প্রবেশ করে মাগরিবের নামায পড়ে নিলাম। উল্লেখ্য, পাখিদের গাছগুলোর নীচে দাঁড়িয়ে আমি সেখানে একটা শ্যাওলামাখা খুঁটির উপরে ভেজা দাগের একটা চিহ্ন দেখতে পেলাম, যা ভূমি থেকে অন্ততঃ দশ ফুট উঁচুতে হবে। স্থানীয় কয়েকজন জানালো, ওটা হাওড়ের পানির দাগ। অর্থাৎ কয়েক মাস আগেও এখানে দশ ফুটের মত পানি ছিল।
পরের দিন, অর্থাৎ ফেরার দিন সকালে আমরা গেলাম জেমস ফিনলে চা-বাগান দেখতে। একদিকে চা-বাগান, আরেকদিকে রাবার বাগান। দেখলাম, কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিক রাবার বাগানের গাছ থেকে সংগৃহীত ‘দুধ’ বা ধবধবে সাদা রস (গাছের বাকল ছেঁচে কিংবা গাছে পেরেক ঠুকিয়ে সেই ক্ষত থেকে নিঃসৃত রস) বয়ে এনে সুপারভাইজারকে দেখিয়ে তরল এ্যামোনিয়া মিশিয়ে একটা ট্রেইলারে ঢালছে। গোয়ালারা যে রকম পাত্রে দুধ বহন করে হাটে নিয়ে যায়, ওদের পাত্রগুলোও দেখতে ঠিক সে রকম ছিল। তাই আমাদের অনেকে প্রথমে রাবারের রসকে দুধ বলে ভেবেছিল। এটাই ছিল আমাদের সফরের শেষ ইভেন্ট, তাই এখানেও একটা গ্রুপ-ছবি তোলা হলো। অনেকে যে যার মত পৃথক ছবিও তুললেন। সেখানকার ঝুলন্ত সেতু থেকে দু’পাশের ছড়ার দিকে তাকিয়ে আমার তরুণ বয়সের কথা মনে পড়ে গেল। আজ থেকে ৪৭ বছর আগে ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল এলাকার বন-জঙ্গলে কয়েকটা দিন জীবনের এক কঠিন সময় পার করেছিলাম। মনে পড়ে ভাদ্র মাসের এক ভ্যাপসা দিনে এমন কিছু ছোট ছোট ছড়া থেকে অঞ্জলি ভরে ভরে শীতল পানি তুলে পান করে প্রাণ জুড়িয়েছিলাম। গরমে পাগল হয়ে পরিধেয় বস্ত্রসহ শীতল ছড়ার উপর শুয়ে থেকে শরীর জুড়িয়েছিলাম। এখনকার চেয়ে তখন ভানুগাছ ও শ্রীমঙ্গল বনাঞ্চল অনেক বেশি ঘন ও গভীর ছিল। দিনের বেলায়ও অন্ধকার লাগতো। পথ হারানোর ভয়ে আমরা দূর থেকে ভানুগাছ-শ্রীমঙ্গল রেললাইনকে চোখে চোখে রেখে আমাদের দিক-নির্দেশনা ঠিক রাখতাম।
ফেরার দিনের ট্রেনের টিকেট ক্রয় করতে আমরা বেশ অসুবিধায় পড়েছিলাম। মাত্র চারটা উচ্চশ্রেণীর টিকেট পাওয়া গিয়েছিল। তাই সবার কথা ভেবে সেগুলো ফেরত দিয়ে অনেক কষ্টে একসাথে দশটা ‘শোভনচেয়ার’ এর টিকেট সংগ্রহ করা হয়েছিল। এটা করতে গিয়ে আগের রাতে শ্রীমঙ্গল স্টেশন মাস্টারের বাসায় গিয়ে (তার সাথে সফরসঙ্গী একজনের পরিচিতির সূত্র ধরে) তার শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। তিনি রাতের বেলায় স্টেশনে এসে সাধ্যমত চেষ্টা করে দশটি টিকেটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। পরের দিন আমরা আর্লী লাঞ্চ সেরে বেলা একটায় শ্রীমঙ্গল স্টেশনে এসে পৌঁছ্লাম। ‘জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস’ নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট বিলম্বে প্ল্যাটফর্মে এসে গেলে আমরা তড়িঘড়ি করে ট্রেনে উঠে আসন গ্রহণ করলাম। স্থানীয় দু’জন সদস্য, শামীম এবং অন্তু আমাদেরকে বিদায় জানাতে এবং সাহায্য সহযোগিতা করতে স্টেশনে এসেছিল। তাড়াহুড়া করে ট্রেনে ওঠার কারণে এই দুইজন সহৃদয় ব্যক্তিকে ঠিকমত ধন্যবাদটুকুও জানাতে পারলাম না। বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন এক ঘণ্টা বিলম্বে পৌঁছলো। রাত আটটায় বাসায় এসে পৌঁছলাম, পেছনে রেখে এলাম আড়াই দিনের অনেক স্মৃতির পসরা।
ঢাকা
১৬ নভেম্বর ২০২২
জলকেলীরত রাজহংসী
ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার ( সংক্ষেপে BLC, যেখানে আমরা দু'রাত থেকেছিলাম ) এর জলাশয়ে
সকাল ৮-৪৮, ১১ নভেম্বর ২০২২
মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
১১ নভেম্বর ২০২২, সকাল ০৯-২৬
বাল্যবন্ধু ডাঃ আনিসুর রহমান (এনডক্রিনোলজিস্ট, অবসরে যাবার আগে বারডেমে ছিলেন), যার সাথে জীবনের অনেকটা পথ একসাথে হেঁটেছি। আজ থেকে ৫৫ বছর আগে থেকে স্কুল জীবনের সাথী।
মাধবকুণ্ড, মৌলভীবাজার
১১ নভেম্বর ২০২২
হাকালুকি হাওড়ের 'কুটাউড়া' গ্রামের জেলে, বিশ্বম্ভর বিশ্বাস এর সাথে
১১ নভেম্বর ২০২২
সকালে তোলা পেছনের ব্যালকনি থেকে পশ্চিম দিকের একটি ছবি, অষ্টাদশীর চাঁদ তখনো দৃশ্যমান
সকাল ৬-২৬, ১২ নভেম্বর ২০২২
কালীঘাটের কাছে একটি ছড়া, একটি বেইলী ব্রীজে দাঁড়িয়ে তোলা
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২
এবারে ব্রীজের অপর পার্শ্ব থেকে তোলা একই জায়গার ছবি
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২
সেই "কালীঘাট সীমান্ত ফাঁড়ি বেইলী ব্রিজ" এ দাঁড়িয়ে....
১২ নভেম্বর ২০২২
জেমস ফিনলে চা বাগানে
১২ নভেম্বর ২০২২
শ্রীমঙ্গল থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে...
১২ নভেম্বর ২০২২, ০১-০৯, মধ্যাহ্ন
ট্রেন ছাড়ার দশ মিনিট পরে তোলা শ্রীমঙ্গলের একটি গ্রামের ছবি। বনের ভেতরে ঢুকে যাওয়া এরকম সরু পথ দেখতে আমার ভালো লাগে।
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২, ০২-১২, মধ্যাহ্ন
ট্রেন থেকে তোলা গ্রাম বাংলার ছবি
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৩-৩১, অপরাহ্ন
ট্রেন থেকে তোলা গ্রাম বাংলার ছবি
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৩-৪০, অপরাহ্ন
পথের পাশে গাছের সারি। হেমন্তের ধানের ক্ষেতে সোনালী রোদ আর গাছের ছায়া।
ট্রেন থেকে তোলা গ্রাম বাংলার ছবি।
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৩-৪৩, অপরাহ্ন
চা গবেষণা ইন্সটিটিউট, শ্রীমঙ্গল
১২ নভেম্বর ২০২২, ১১-০৯ পূর্বাহ্ন
ট্রেন থেকে তোলা চা বাগানের ছবি
শ্রীমঙ্গল, ১২ নভেম্বর ২০২২, ০২-৩০, মধ্যাহ্ন
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: "মাধবকুন্ডে শেষবার গিয়ে বিরক্ত হয়েছিলাম" - আমাদের দেশে সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থান অনেক আছে, কিন্তু পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলো অচিরেই নোংরা বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়ে যায়। এবারে দেখলাম, লাউয়াছড়া চা বাগানে সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে সকল প্রকার ফেরিওয়ালাকে উদ্যানের অভ্যন্তরে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফটকের বাইরেও দুই একটার বেশি বিক্রয়ওয়ালা নেই। এজন্য উদ্যান কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। পলিথিন জমে জমে ছড়াগুলোর পয়ঃপ্রণালী অকার্যকর হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল বলে জনৈক কর্মচারী জানালেন।
"বহু আগে এর পাশের এক চা বাগানে ঝড় বাদলের রাতে ভয়ঙ্কর এক এডভেঞ্চারের গল্প আছে" - সেই 'এ্যাডভেঞ্চারের গল্প' শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে রইলাম। এই পোস্টে এ যাবত আসা মাত্র ৪ জন মন্তব্যকারীর মধ্যে একজন কিন্তু ইতোমধ্যেই সে আবেদন জানিয়ে গেছেন!
হাকালুকিতে এখন জল নেই, শুধুই সবুজ ঘাস আর গবাদি পশু। ক্যামেরা সাময়িক অকার্যকর হয়ে যাওয়াতে ছবি তুলতে পারিনি।
২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- বেশ আনন্দময় ভ্রমণ হয়েছে বুঝা গেলো।
- মাধবকুণ্ড এখন এখনতো বলা চলে খাঁচায় বন্দি।
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, ভ্রমণটা বেশ আনন্দময়ই ছিল বলা যায়। নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লেগেছে।
মাধবকুণ্ড এখন আর সেরকম নেই, এমনকি জলের যে ধারা গড়িয়ে পড়ে, সেটাও এখন (এ সীজনে) আর প্রাকৃতিক নয় বলে শুনেছি। কৃত্রিম উপায়ে পাহাড়ের উপরে পানি তুলে ছেড়ে দেয়া হয়।
৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: এত সুন্দর বর্ননা মনে হল যেন আমিই ঘুরে এলাম। মাধবকুণ্ড এবং হাকালুকি হাওড় যাওয়া হয়েছিল। ভরা বর্ষাতেই গিয়েছিলাম হাওড়ে। ফিনলে চা বাগান মনে হচ্ছে ঢাকা আসা-যাওয়ার পথে পড়তো তাই নামটা দেখে মনে হল দেখেছি!
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "এত সুন্দর বর্ননা মনে হল যেন আমিই ঘুরে এলাম" - এত সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভরা বর্ষায় গিয়ে থাকলে তো আপনি দুটো জায়গারই আসল সৌন্দর্য দেখে এসেছেন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম।
৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: @শেরজা তপন ভাইয়ার চা বাগানের এডভেঞ্চারের কথা শুনতে চাই। চা বাগানের কথা কেবল গল্প উপন্যাসেই পড়া হয়। কারো বাস্তব অভিজ্ঞতা শুনতে নিশ্চই অন্যরকম হবে।
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: যথার্থ বলেছেন। আমিও আপনার এ দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:৩০
সোনাগাজী বলেছেন:
শ্রীমংগলের মংগল হোক।
আপনি আড়াইদিন থাকার পর যতটুকু লিখেছেন, ছবি দিয়েছেন, যাঁরা আজিবন ওখানে থাকেন, তাঁরা না'জানি কতটুকু লেখেন!
২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি।
৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটা ভ্রমন কাহিনী।
সহজ সরল লেখা। লেখায় কোনো ভান বা ভনিতা নেই।
২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার লেখায় কখনো কোন ভান বা ভনিতা থাকে না।
৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৩
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা! ছবিগুলো আরও চমৎকার!!
পোস্ট এ ++
২১ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: বর্ণনা এবং ছবিগুলোর প্রশংসায় প্রাণিত হ'লাম। পোস্ট এ ++ এর জন্য ধন্যবাদ।
৮| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট শুভ কামনা আপনার জন্য।
২১ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার জন্যেও অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইলো।
৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:০৭
সোহানী বলেছেন: চা বাগান আমার অনেক অনেক ভালোলাগে। সবকিছু এতো এতো গোছানো যেন ছবির মতো।
ছবিগুলোতো ভালোলাগা তবে চা বাগানের আশা করেছিলাম।
বোয়াল মাছ আর বাইম মাছের গল্পে মজা পেলাম। এটাইতো আমাদের বৈশিষ্ট্য......
শেরজা তপন ভাইয়ের গল্প শোনার অপেক্ষায়।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: "ছবিগুলোতো ভালোলাগা তবে চা বাগানের আশা করেছিলাম" - ঠিকই বলেছেন, দেওয়া উচিত ছিল। দুটো ছবি দিয়েওছিলাম। ছবির আধিক্য দেখে পরে বোধহয় সে দুটো কাট করে দিয়েছি। এখন এ মন্তব্যটা পড়ে আবার দুটো ছবি সবার শেষে যোগ করে দিলাম।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "বোয়াল মাছ আর বাইম মাছের গল্পে মজা পেলাম" - দ্বিধান্বিত ছিলাম, বিষয়টি নিয়ে লিখবো কিনা। আপাতঃদৃষ্টিতে নিতান্তই অগুরুত্বপূর্ণ এমন একটি প্রসঙ্গের হাল্কা উল্লেখ করেছি শুধু এটা হাইলাইট করার জন্য যে জীবনে চলার পথে আমরা অপ্রত্যাশিতভাবে কতজনের মায়া ভালবাসায় সিক্ত হই! ভদ্রলোক আমার চেয়ে বছর দুই তিনেকের বড় হবেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করা। বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করে এখন পুরোপুরি অবসরে। ফটোগ্রাফী তার নেশা, এবং মৌলিক একটা সখ। খুব সুন্দর ছবি তোলেন, ভিডিওচিত্র ধারণ করে কোথাও কোথাও পোস্ট করেন। সেদিন নিয়ে তার সাথে আমার পরিচিতিটা ছিল মাত্র দেড় দিনের। এরই মধ্যে তার বেশ কিছু ভালো গুণের পরিচয় পেয়েছিলাম।
মায়া ভালোবাসার মহোত্তম প্রকাশ হচ্ছে কাউকে খাওয়ানো। এ জন্যেই মা নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাইয়ে তৃপ্তি পান। আমাদের ধর্মেও টাকা পয়সা দেয়ার বদলে একজন অভুক্তকে কিংবা দরিদ্রকে 'খাওয়ানো'র নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্যই সেদিনের বোয়াল মাছের টুকরোগুলো বেশ বড় ছিল। যত বড়ই হোক, সেখান থেকে ভাগ করে একটি অংশ কাউকে দিতে গেলেও বড় হৃদয়ের প্রয়োজন হয়। মাত্র দেড় দিনের সখ্যে কাউরো জন্য এ ত্যাগ স্বীকার, কিংবা আপন ভেবে এমন একটা প্রস্তাবনা দেওয়াটাও অনেক বড় হৃদয়ের পরিচয় দেয়। এজন্য ইসলামে সফরের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সফর করে প্রকৃতির মাঝে স্রষ্টার অপার সৌন্দর্য দেখে যেমন মুগ্ধ হতে হয়, স্রষ্টার সম্বন্ধে ভাবতে হয়, অজানা অচেনা মানুষের সহৃদয় আচরণ দেখেও বিস্মিত হতে হয় এবং সেখান থেকে অনেক শিক্ষাও আহরণ করা যায়।
এত বড় একটা লেখা থেকে অনেক দ্বিধা সংশয়ে লেখা আমার ঐ ক'টা লাইন যে আপনাকে 'মজা দিয়েছে' সেটা জেনে আমিও মজা পেলাম।
১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১৫
শোভন শামস বলেছেন: সাবলীল প্রকাশ, সুন্দর ছবি। আপনার অবসর আনন্দময় হয়ে উঠুক। সাথে আমাদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ
২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে, পোস্ট পড়ে এমন একটি প্রেরণাদায়ক মন্তব্য এখানে রেখে যাওয়ার জন্য। লেখা ও ছবির প্রশংসা, প্লাস এবং শুভকামনা পেয়ে প্রীত ও প্রাণিত হ'লাম।
১১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২২
মিরোরডডল বলেছেন:
আজ থেকে ৫৫ বছর আগে থেকে স্কুল জীবনের সাথী।
এত বছর পরও বন্ধুত্ব ধরে রাখা একটা বিশাল পাওয়া ।
খুব ভালো লাগলো দেখে ।
আমাদের চা বাগান সত্যিই অনিন্দ্য সুন্দর !
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, বলা যায় আজীবনের বন্ধু। আমার বন্ধু ফাহিয়ান (ফাহিয়ানের গল্প) ছিল তার চেয়েও দু'বছরের বেশি পুরনো। তবে সে দুই বছর আগে প্রয়াণ করায় তার সাথেও আমার বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব পঞ্চান্ন বছরই ছিল।
১২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: স্যার আমি ভ্রমণ কাহিনী পড়ার আগে আপনার ছবিগুলো আজ আবার দেখছিলাম কি অপূর্ব ছবিগুলো। দেখেই লোভ হচ্ছে যাওয়ার কিন্তু সবার পক্ষে তো সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়। হাওর হাকালুকি এই শব্দগুলি আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন। ছবি দেখে বুঝতে পারছি অসাধারণ সুন্দর জায়গাটা। বাস্তবে দেখলে কতইনা ভালো লাগতো....
আমি উত্তরবঙ্গ গিয়ে বোরিলি মাছ খাওয়ার বায়না করেছিলাম। কিন্তু কি জানি কেমন হবে আমার গিন্নী রাজি হয়নি। উত্তরবঙ্গ সফর খুব সুন্দরভাবে সমাধান করলেও বোরোলি মাছ না খাওয়ার অতৃপ্তি আজও আমার হৃদয়ে রয়ে গেছে।
যেকারণে স্যার আপনি পরিমাণে অল্প হলেও বাইম মাছের ভুনা নিয়ে ঠিক কাজই করেছেন।বোয়াল মাছ আপনি বাসায় পেয়ে যাবেন। কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে বুঝলাম বাইইম মাছ শহরে মেলে না। যাইহোক একসময় মায়ের সঙ্গে দুই শিশুপুত্রকে হাত ধরে যে হাওড় দেখে মুগ্ধ হয়েছেন আজ সেই দুই জেনারেল কাছে নেই। একজন পরপাড়ে অন্ দুইজন দেশে বা প্রবাসে আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার পাশের সমীকরণ যে বদলে যায় সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। দূর থেকে পরামর্শ দেবো স্যার মন খারাপ না করে শরীরের যত্ন নিন।ওনারা যেখানে আছেন বা থাকুন ভালো থাকুন কামনা করি।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫১
খায়রুল আহসান বলেছেন: ছবির প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ। একদিনে আমার অনেকগুলো পোস্টে মন্তব্য করে গেলেনঃ অশেষ কৃতজ্ঞতা।
শেষের কথাগুলো মন ছুঁয়ে গেল! অভিভূত হ'লাম।
নিরন্তর শুভকামনা। ভালো থাকুন সপরিবারে, সুস্বাস্থ্যে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: এ পর্বটা দারুণ লাগল
জেমস ফিনলের চা বাগানে আমি গিয়েছিলাম ৯৬ সালে।
মাধবকুন্ডে শেষবার গিয়ে বিরক্ত হয়েছিলাম! বহু আগে এর পাশের এক চা বাগানে ঝড় বাদলের রাতে ভয়ঙ্কর এক এডভেঞ্চারের গল্প আছে।
হাকালুকির ছবি বেশী পেলাম না যে?