নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলতি পথের গল্পঃ এক

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:০৪


পানি, প্রতিফলন ও পত্রপল্লব....পানির উপরে প্রতিফলন, পত্রপল্লবের ফাঁক দিয়ে দেখা।
২১ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০২টা ০২ মিনিট

আমাদের এলাকার মাসজিদে যখনই নামায পড়ি, প্রতিটি নামাযের পর মাসজিদের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত পুকুরটার চারপাশে দু'তিনটা চক্কর দিয়ে বাড়ি ফেরাটা আমার এখন নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দু'বার চক্কর দিলেই ১.১ কি.মি. পথ হাঁটা হয়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে যোহর, মাগরিব আর এশার নামায প্রায় প্রতিদিনই মাসজিদে পড়ি। মাঝে মাঝে ফজর এবং আসরের নামাযও পড়া হয়। যোহর ছাড়া বাকী ওয়াক্তের পর আমি হাঁটার উদ্দেশ্যেই হাঁটি, ফিটনেস কনসার্ন থেকে। তখন brisk walk করি। কিন্তু যোহরের পরে যে হাঁটাটা হাঁটি, সেটা আপন খেয়ালে, ধীর লয়ে, কোন ফিটনেস কনসার্ন থেকে নয়। মধ্যাহ্ন হলেও, পুরো ওয়াকওয়ের ধারে প্রচুর গাছপালা থাকায় এখনকার ঋতুতে এ সময়টাতে গরম সহনীয় পর্যায়ে থাকে। আবার নামাযের পর পর সবাই যার যার বাড়ি ফিরে যায় বলে পথটা বেশ নিরিবিলি হয়ে যায়। হাঁটতে হাঁটতে একটা জায়গায় এসে প্রতিদিন একটা ঘুঘুর ডাক শুনতে পাই। এই অলস মধ্যাহ্নে একই জায়গা থেকে ডাকটা শোনা যায় বলে অনুমান করে নেই, সেখানকার কোন গাছের ডালে হয়তো কোন ঘুঘু দম্পতি বাসা বেঁধেছে। ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি থেকে, বসন্ত ঋতু শুরু হবার বেশ আগে থেকেই, কোকিলের ডাকও শোনা যায় এখানে প্রতিবছর।

আমি হাঁটি আর চারপাশের গাছ-গাছালি, মানুষ আর বাতাসে হিল্লোলিত পুকুরের জলে মৃদু তরঙ্গের খেলা দেখি। দেখতে ভালো লাগে। শিশুপার্কটা মধ্যাহ্নে শিশুবিহীন থাকে বলে সেখানে দেখার মত কিছু থাকেনা, তবে অন্য সময় শিশু ও তাদের মা/বাবা/পরিচর্যাকারীদের উপস্থি্তিতে পার্কটা বেশ সরগরম থাকে। পার্কের পাশ দিয়ে যাওয়া সদ্য উন্মুক্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে ছুটে চলা গাড়ি দেখি। সেটার নীচেই আমাদের এলাকার কম্পাউন্ড ওয়াল। একদিন দেখি কাচ্চা বাচ্চা নিয়ে সেটার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে শতাধিক বানর বানরীর দল। সংখ্যাটা আমি মোটেও বাড়িয়ে বলছিনা। এ পথে বানরের দলের আসা যাওয়া আমি এর আগেও দেখেছি, কিন্তু এত অধিক সংখ্যায় আর কখনো দেখিনি। একজন তরুণ সিকিউরিটি গার্ডকে দেখলাম লাঠি হাতে ওদেরকে তাড়া করতে। কিন্তু ওরা সেটা আমলে না নিয়ে একটু দৌড়ে সামনে এগিয়ে পেছন ভিড়ে ভেংচি কাটছিল। বুঝলাম, এসব দাবড়ানিতে ওরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে, যেমন হয়েছে প্রতিদিনকার পেশাদার ভিক্ষুকের দল। ওরা ভেংচি কাটার সাহস পায় না বটে, তবে ওদেরকেও এক জায়গা থেকে তাড়িয়ে দিলে অন্য রাস্তার মোড়ে ঘাঁটি গেড়ে বসে।

এমন উদ্দেশ্যহীন পায়চারির সময় আমি আশেপাশের মানুষদেরকেও দেখি; বিশেষ করে সরোবরের আশেপাশে বসার বেঞ্চিগুলোতে বসে থাকা মানুষগুলোকে। কেউ কেউ হাতে মোবাইল নিয়ে উচ্চঃস্বরে কারও সাথে কথা বলছে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পড়ে বুঝতে পারি তার ঘরে শান্তি নেই, মনেও নেই! কেউ বসে বসে আপন মনে পুকুরের, চারপাশের প্রকৃতির এবং মাঝে মাঝে মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া ঢাউস ঢাউস প্লেনের ছবি তুলছে। আমাদের এলাকাটি বিমানবন্দর থেকে টেক-অফ করা বিমানগুলোর গতিপথের সরাসরি নীচে বলে সদ্য টেক-অফ করা বিমানগুলোকে অনেক বড় দেখা যায়। মধ্যাহ্নে এলাকাটি বেশ নিরিবিলি থাকে বলে আশেপাশের বাসাগুলো থেকে আসা বুয়ারা এ সময়টিকেই বেছে নেয় বেঞ্চিতে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার জন্য। দিনের এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বুয়াদের পুকুর পাড়ে এসে বসে বিশ্রাম নেয়ার ফুরসৎ থাকার কথা নয়। তবে শিশু পরিচর্যায় নিয়োজিত কিছু কিছু বুয়া শিশুদেরকে একটু 'ঘুরিয়ে আনার ছলে' পার্কে আসার, বেঞ্চিতে বসার এবং দোলনায় বসে দোল খাওয়ার সুযোগ নিয়ে থাকে। কমবয়সীরা চাঞ্চল্যের সাথে একবার এ বেঞ্চে আরেকবার ও বেঞ্চে, একবার এ দোলনায় আরেকবার ও দোলনায় ঘোরাঘুরি করে শিশুকে নিয়ে। কয়েকজন বয়স্কা বুয়াও মাঝে মাঝে এসে বেঞ্চিতে বসে পুকুরের জলের দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকেন। বাসা থেকে মুখে পুরে আনা পান ধীরে ধীরে চিবোতে থাকেন। কেউ কেউ আঁচলেও পান-শুপারি-চুন বেঁধে নিয়ে আসেন। তারা দোলনায় বসেন না; বেঞ্চিতেই বসেন। তাদের আচরণে সাধারণতঃ কোন প্রাণচাঞ্চল্য থাকে না, চেহারায় থাকে একটা নিরালা জায়গায় বসে একান্তে একটু স্মৃতির জাবর কাটার তৃপ্তি। কমবয়সী, বেশি বয়সী সব বুয়ারাই অবশ্য সিকিউরিটি গার্ডদের ভয়ে সতর্ক থাকে, কারণ গার্ডরা মাঝে মাঝে এসে ওদেরকে উঠিয়ে দেয়।

গত কয়েকদিন ধরে দেখছি পুকুরের পশ্চিম পাড়ের একটা নির্দিষ্ট বেঞ্চে একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি একাকী বসে থাকেন। তিনি মোবাইলেও কথা বলেন না, ছবিও তুলেন না, প্লেনের দিকেও তাকান না। শুধুই জলের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তিনি যে জায়গাটায় বসে থাকেন, সেটা পুকুরের জল, উন্মুক্ত আকাশ আর আশেপাশের গাছপালা দেখার জন্য একটি সুন্দর জায়গা। আমিও একদিন আমার নাতনিকে নিয়ে সেই জায়গাটার দোলনায় বসে দোল খাচ্ছিলাম। হাঁটতে আসা আমার এক বন্ধু আমাদের দোল খাওয়ার সে দৃশ্যের ছবি তুলে হোয়াটসএ্যাপে পাঠিয়েছিল। দু'দিন আগে আমি সেই ভদ্রলোকের আসনটির সামনে গিয়ে পুকুরের কয়েকটি ছবি তুললাম। তিনি শুধু একবার আমার দিকে তাকালেন। পা তুলে বসেছিলেন, আমাকে দেখে পা নামিয়ে সৌজন্য প্রদর্শন করলেন। মুখে কেউ কিছু বললাম না, আমি ছবি তুলে চলে এলাম। আজ আবার সেই ভদ্রলোককে একই জায়গায় দেখে এগিয়ে গেলাম। তাকে দেখে খুব ভারাক্রান্ত মনে হচ্ছিল। নিজেকে ইন্ট্রোডিউস করে তিনি কিছু আলাপচারিতায় রাজী আছেন কিনা জিজ্ঞেস করলাম। আমার ধারণা ছিল, তিনি যদি সত্যিই ভারাক্রান্ত হয়ে থাকেন, আলাপচারিতার পর তিনি কিছুটা ভারমুক্ত বোধ করতে পারেন। তিনি সানন্দে রাজী হলেন। আরেকদিন রাতে এশার নামাযের পর হাঁটার সময় দেখি, পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের এক বেঞ্চিতে বসে ২২/২৩ বছরের এক যুবক উদাস চোখে জলের উপর কম্পমান আলোর প্রতিফলনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে একজন মেহনতি মানুষ, ঢাকার পূর্বাচলে তার বাড়ী। নিজস্ব তাঁত আছে, সেখান থেকে সে দুই একটা করে জামদানি সিল্ক শাড়ি বুনে ঢাকায় এনে বিক্রয়ের মাধ্যমে অন্ন সংস্থান করে। সেদিন এখানকার কোন এক ম্যাডাম তার কাছ থেকে শাড়ি কিনবেন বলে তাকে আসতে বলেছিলেন। সে বিকেল পাঁচটায় এসে ফোন দিলে ম্যাডাম বাইরে আছেন বলে তাকে পুকুর পাড়ে বসে থাকতে বলেন। রাত আটটায়ও তিনি ফিরে না আসাতে ছেলেটির মুখে চিন্তার রেখা দেখা দিয়েছিল। আমার সাথে কিছুক্ষণ আলাপচারিতার পর ছেলেটি আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে, আলাপের পর তার ভালো লাগছিল। সেই কথাটি মনে করেই আমি এই ভদ্রলোকের সাথে আলাপ জুড়ে দিলাম।

৪৬ বছর বয়স্ক এই ভদ্রলোকের নাম শরীফ আহসান, বাড়ি সাতক্ষীরায়। তার বাবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাকাউন্টস শাখার একজন কর্মচারী ছিলেন। বাবার চাকুরীর সুবাদে তিনি একটানা ২২/২৩ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পাউন্ডের ভেতরে বাস করেছিলেন। সেখান থেকেই তিনি এসএসসি, এইচএসসি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ অনার্স সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি আহসানিয়া মিশনে চাকুরি জীবন শুরু করেন। অর্থাভাবের কারণে তখনোও তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করতে পারেন নাই, কিন্তু আহসানিয়া মিশনে চাকুরি শুরু করার পরে তিনি সেখানকার কর্তৃপক্ষের শুভদৃষ্টি লাভ করেন। একজন ম্যাডাম ছিলেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি নিজে তাকে নিয়ে আহসানহউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে এমবিএ কোর্সে ভর্তি করে দিয়ে আসেন। তার প্রতিষ্ঠান তার এমবিএ কোর্সের অর্ধেক ব্যয়ভার বহন করে। এখন তিনি একটি এ্যাগ্রোবেজড ইন্ডাস্ট্রির এ্যাডমিন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। একই মালিকের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসাও আছে। সেগুলোরও কিছু কিছু কাজ তাকে দেখতে হয়। তিনি জানালেন, এতদিন তিনি ভালোই ছিলেন। কিন্তু এখন বৈশ্বিক পরিস্থি্তির অস্থি্রতার কারণে তাদের ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দিয়েছে। বহুলোক ইতোমধ্যেই ছাঁটাই হয়েছে, তিনিও যে কোন সময়ে চাকুরিচ্যুতির আশঙ্কা করছেন। তাদের সংসারে একটি মেয়ে রয়েছে, পড়ে মিরপুরে অবস্থিত মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। মিরপুরেই তাদের বাসা, সেখান থেকে প্রতিদিন এখানে এসে অফিস করেন। অফিসের লাঞ্চ ব্রেকের সময় তিনি পুকুর পাড়ের এই জায়গাটাতে এসে বসেন। পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে নানা কিছু ভাবেন। সামনের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে কোন কূল কিনারা পান না। এই মধ্যবয়সে এসে অন্য কোথাও উপযুক্ত চাকুরির সন্ধানের কথা তিনি ভাবতে পারছেন না।

আলাপ করতে করতেই আমরা উঠলাম। পুকুরের পাড় থেকে যেখানে ওনার অফিসের দিকে যাওয়ার রাস্তা, আমি সেখান থেকে বিদায় নিতে চাইলাম। উনি বললেন, ওনার কথা বলতে খুব ভালো লাগছে। ওনার সাথে আরেকটা চক্কর হাঁটতে আমি রাজী আছি কিনা তা জিজ্ঞেস করলেন। আমি রাজী হলাম। ওনার সম্বন্ধে আরও কিছু জানা হলো। আলাপচারিতায় দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থার একটা চিত্র পেলাম, ধাবমান 'অর্থনৈতিক সুনামি'র ভয়াবহ ইঙ্গিত পেয়ে এবারে আমি নিজে চিন্তিত মনে বাড়ি ফিরে এলাম।



ঢাকা
২১ অক্টোবর ২০২৩
শব্দ সংখ্যাঃ ১১৪১


পুকুরপাড়ের ওয়াকওয়ে
১৯ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০১টা ৩৯ মিনিট


পশ্চিম ও উত্তর দিকের পুকুরপাড়
১৯ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০১টা ৪২ মিনিট


পুকুরপাড়ে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বসার কয়েকটি স্থানের মধ্যে একটি....
২২ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০১টা ৩৮ মিনিট


সবুজ পাতারা...
১১ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০১টা ৩৬ মিনিট


সবুজের বুকে জীর্ণ ঝরাপাতা....
১৯ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০১টা ৩৯ মিনিট


এই আলোর প্রতিফলনের দিকেই ছেলেটি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল।
১৩ অক্টোবর ২০২৩, রাত ০৮টা ১৭ মিনিট


"পুকুরের পশ্চিম পাড়ের একটা নির্দিষ্ট বেঞ্চে একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি একাকী বসে থাকেন। তিনি মোবাইলেও কথা বলেন না, ছবিও তুলেন না, প্লেনের দিকেও তাকান না। শুধুই জলের দিকে তাকিয়ে থাকেন"।
২১ অক্টোবর ২০২৩, দুপুর ০২টা ০১ মিনিট

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

সুন্দর পোস্ট।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও প্রাণিত।

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:০১

মিরোরডডল বলেছেন:




সেটাই! বিচিত্র এ জীবনে কত বিচিত্র মানুষ।

একদিন দেখি কাচ্চা বাচ্চা নিয়ে সেটার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে শতাধিক বানর বানরীর দল।

এতো ছবি দেয়া হলো কিন্তু আসল ছবিটাই দেয়া হয়নি :)


২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৪০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার চোখ তো কিছুই এড়ায় না!
তবে আপনি কিন্তু ঠিকই বলেছেন। সেদিন ওদের একটাও ছবি তুলতে না পারাতে আমারও আফসোস রয়ে গেল। ওদেরকে যত বেশি সম্ভব এক ফ্রেমে এনে একটা জুৎসই ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সিকিউরিটি গার্ডের দাবড়ানি খেয়ে ওরা কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে একটা দালানের (ফিটনেস সেন্টার) আড়ালে চলে যায়। বিরক্ত হয়ে আর ছবি তুলতে ইচ্ছা করেনি। তবে ব্যাপার না। আমার মনে হয় কিছুকাল পরপর ওদের কোন পার্বন (সেলিব্রেশন) থাকে। তখন ওরা দল বেঁধে সেই সকালে বেরিয়ে যায়, ফেরে দুপুরের পর। তখন মওকা বুঝে একদিন ছবি তুলে এই পোস্টে সংযোজন করে দিব। অন্যান্য দিন দলে এত বানর থাকে না, একসাথে বিশ পঁচিশটার মত থাকে। ওদের কিছু পুরনো ছবি আমার সংগ্রহে আছে, কিন্তু বাসি ছবি দিতে ইচ্ছে করলো না।
"বিচিত্র এ জীবনে কত বিচিত্র মানুষ"- জ্বী, তবে মানুষ বিচিত্র হলেও আমাদের মনের চাওয়া পাওয়াগুলোর ইচ্ছা, আবেগ, অনুভূতি, উল্লাস, উদ্বেগ ইত্যাদি বোধকরি একই সূত্রে গাঁথা।

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: সবুজ পল্লবে ঘেরা চমৎকার ওয়াকওয়ে। দেখলেই তো হাটার লোভ জাগে।
কত মানুষের কতরকমই না সমস্য! মধ্য বয়সে চাকুরি হারানোর বিশাল হ্যাঁপা এই দেশে। সেজন্য সরকারী চাকুরির দিকেই মধ্যবিত্তের ঝোঁক বরাবর।
আপনার মনটা বড্ড নরম। কতকিছু কত গভীরভাবেই না খেয়াল করেন আপনি।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "মধ্য বয়সে চাকুরি হারানোর বিশাল হ্যাঁপা এই দেশে" - জ্বী, কখনো কখনো ভুক্তভোগীরা একেবারে বেসামাল হয়ে পড়ে, পথে বসে যায়।
খেয়াল করার মত কতকিছুই তো থাকে আমাদের চারপাশে, তবুও তো কতকিছুই দু'চোখ এড়িয়ে যায়! যে সব বিষয় একসাথে তিনটি চোখেই ধরা পড়ে, সেগুলো নিয়েই মাঝে মাঝে লিখি।

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৯

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: খুবই সুন্দর করে আপনার পোস্টটা সাজিয়েছেন। প্রতিটি ছবিই সুন্দর। মনে হয় যেন এখনই হাটতে বের হয়ে যাই। ঐ যে লোকটি যে শুধু জলের দিকে তাকিয়ে থাকে-কে জানে তার মনে কত কথা মনের ভেতর ডুকরে কাঁদে--------।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, পোস্ট এবং পিকচার এ্যাপ্রিশিয়েট করার জন্য। প্রাণিত হ'লাম।
তার মনের সব ব্যথা ও দুশ্চিন্তার কথা হয়তো তিনি আমাকে বলেন নি, তবে মধ্যবয়সে চাকুরি হারানোর যে আশঙ্কার কথা তিনি বলেছেন, ওটুকুই একটা মানুষকে উদাস বাউল বানিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। সামনের দিনে আমাদের অর্থনীতির হাল যে কোন অবস্থায় যাবে যদি এখনই সঠিকভাবে লাগাম টেনে ধরা না হয়, সেটা নিয়ে হয়তো আমরা অনেকেই এখনও কিছু ভাবা শুরু করিনি।

৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:১৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব সুন্দর করে লিখেছেন।পড়ে অনেক ভাল লাগল।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্য ও প্লাসে প্রাণিত।

৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৪

সোনাগাজী বলেছেন:




পুকুরটা কোথায়?

২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: জোয়ার সাহারা মৌজায়, র‍্যাডিসন হোটেল থেকে পূব দিকে, কয়েকশত মিটারের মধ্যে।

৭| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: ছবিগুলো খুব সুন্দর। কত মানুষ যে কত সমস্যার মধ্যে আছে বিশেষ করে এই ইনফ্লেষনের সময়ে। উন্নত দেশে পারিবারিক ইংকাম লেভেল একটু নীচে দিকে হলেই কত রকম যে বেনিফিটের ব্যবস্থা করে সরকার। আর আমাদের দেশে এই মানুষগুলোর পরিনতি কি যে হয় এক আল্লাহই জানেন।

পোস্টে +++

২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্ট পড়ে মন্তব্য এবং প্লাস রেখে যাবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। প্রীত ও প্রাণিত হলাম।

৮| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



আপনি নিজের অভিজ্ঞতার নিয়ে বই লিখেছেন?

২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: নিজের ভাবনা নিয়ে লিখেছি পাঁচটি বই।

৯| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:৫২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার পোস্টটি আমিও পড়লাম পড়ে দেখলাম আপনার উপস্থাপিত ব্যাক্তিটি আমার সম বয়সের ওর চিন্তার ভাজ পড়েছে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে। সবার জন্যই যেনো কি অপেক্ষা করছে আমাকেও ভাবতে হয়। ২৪ বছর থেকে প্রবাসে আছি। একসময় রমরমা অবস্থা ছিল এখন আগের মতো তেমন যাচ্ছে না। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু স্রষ্টার হাতে। ভরসা একমাত্র আল্লাহ কেননা রিঝিক তিঁনিই ভন্টন করেন।
আল্লাহ আপনাকে ভালো রাখুন। আমার জন্য দোয়ার আর্জি রইল।

২৫ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মনছোঁয়া এ মন্তব্যটির জন্য। অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা।
এবারের বিশ্ব পরিস্থিতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বিস্ফোরক। বৈশ্বিক পরিস্থিতি যেকোন সময়ে যেকোন দিকে মোড় নিতে পারে।

১০| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মনে হচ্ছে স্যার আপনার এই মসজিদের ছবি আগেও দেখেছি। আমরা এপারে এরকম পরিপূর্ণ মসজিদ দেখতে পাওয়ার আশা করতে পারি না। এদিক দিয়ে আপনারা ভাগ্যবান বৈকি। ভীষণ সুন্দর প্রত্যেকটা ছবি।
আজকের পোস্ট দুটি খন্ডচিত্র উঠে এসেছে।২২/২৩ বছরের গ্রাম্য যুবক দুটি শাড়ি বিক্রির আশায় শহরে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অসংখ্য করছে।প্রথমত উৎপাদককে নিজেকেই যদি বাজার খুঁজে নিতে হয় তাহলে এই শিল্প নিঃসন্দেহে রুগ্ন অবস্থায় রান করছে বলতেই হবে। দ্বিতীয়ত যিনি ওনাকে আশ্বাস দিলেন শাড়ি কিনবেন বলে তিনি যে সত্যেই জেনুইন খরিদ্দার বিষয়টি নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।গ্রাম্য সরল মানুষকে ঠকানোর মধ্যে দিয়ে একপ্রকার বিনোদন উল্লিখিত ঔ ম্যাডামের নামধারী ব্যক্তি নিচ্ছেন নাতো?

এবার আসি শরীফ আহসানের বিষয়টি নিয়ে।সত্যিই অত্যন্ত উদ্বেগের।এই ৪৬ বছর বয়সে চাকরি যাওয়া মানে জীবনে বেঁচে থাকার এক চরম যুগঃসন্ধিক্ষণে ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন।
দুটি বিষয় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পক্ষে ভীষণ উদ্বেগের।

২৫ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী, মাসজিদের পুকুরপাড়ের এবং ওয়াকওয়ের ছবি এর আগেও দিয়েছিলাম।
দুটি বিষয় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পক্ষে ভীষণ উদ্বেগের - এবং দুটো খন্ডচিত্রই দেশের বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: কি সুন্দর লিখেন আপনি!!

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৬:৫১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



পত্র পল্লবের ফাক দিয়ে নীচে পানি প্রতিফলনের দৃশ্যটি খুবই সুন্দর হয়েছে। অন্যান্য ছবিগুলিও সুন্দর ।
বরাবরের মতই আপনার এই পোষ্টটিতে থাকা ছবি ও কথামালা আমাকে নিয়ে গেছে সেই স্মৃতিমাখা
সময় ও দিনগুলিতে ।
আবহাওয়া ভাল থাকলে অমি বাসার কাছাকাছি লিন্‌ন পার্কে মাঝে মধ্যে হাটতে যাই । বিশাল আকারের পার্কটি
বেশ নির্জন । পার্কের মাঝ বরাবর একটি ছোট পাহারী নদী ( ব্রুকস হিসাবে গন্য) বয়ে গেছে । সেই ছোট নদীটির
(নদী না বলে খাল বলাই ভাল ) উপর রয়েছে ১৮৩৫ সনে নির্মিত একটি প্রাচিনতম ঢালাই লোহার ব্রীজ । ব্রীজটি
হাফ পেনী হোয়াইট ব্রীজ নামেও পরিচিত । মনে করা হয় "হাফপেনি" নামটি প্রতিটি স্প্যানের ছোট বৃত্তাকার গর্ত
থেকে এসেছে।গতকাল পড়ন্ত বিকালে সেখানে পায়চারী করার সময় পানিতে লক্ষ্য করলাম ব্রীজটির একটি
সুন্দর প্রতিফলন ।

এ পোষ্টে কিছুদুর গিয়ে দলবেদে বিচরণ করা বানর কাহিনী পাঠে মনে পড়ে যায় দলে দলে বিচরণ করা বানর কুলের কথা ।
এসব বানরের সাথে আমার পরিচয় সেই ছোটবেলাতেই ।
বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের একটি অংশ দখল করে আছে বানর। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বানরের পদচারণা
থাকলেও ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির অন্যতম এ প্রাণীটি। নগরায়ণ ও খাদ্যসংকটে এদের সংখ্যা ক্রমশ কমে
যাচ্ছে। এদের রক্ষায় নেই সরকারি বা বেসরকারি কোনো পদক্ষেপ।
দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যের অভাবে বানরগুলো অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। দিন দিন বানরের সংখ্যা কমছে। এভাবে
চলতে থাকলে একসময় হয়তো বিলুপ্তি ঘটবে প্রাণীটির। ভাগ্য ভাল যে অপনার প্রাত্যহিক বিচরণের জায়গায় মাঝে
মধ্যে এদের দলবেদে বিচরণের দৃশ্য দেখা যায় ।

এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য শীতলক্ষ্যার পারে নদীকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে রাজধানীর পাশের জেলা
গাজীপুরের শ্রীপুরে রয়েছে প্রসিদ্ধ বরমী বাজার।
কথিত আছে যে, টোকনগরে বাংলার রাজধানী থাকার সময়ে বর্মদেশীয় (মগ) জলদস্যু টোকনগর লুট করার জন্য
শীতলক্ষ্যা নদী বহিয়া অগ্রসর হচ্ছিল। মোগল বাহিনী তাদের গতিরোধ ও বন্দী করে। তাদিগকে যেখানে
আটক করে রেখেছিল । সেই স্থানের নাম বর্মী ও বাজারের নাম হয় বরমী।

একসময় মোঘলরা এই বাজা‌রে অবস্থান কর‌তেন ব‌লে মোঘল সম্রাট বাব‌রের না‌মে এই বাজা‌রের নামকরণ করা
হয় ব‌লে অনেকের ধারণা। এই বাজারকে এক সময়ে এশিয়ার সর্ববৃহৎ গ্রাম্য বাজার বলে ধারণা করা হয়। ব্রম্মপুত্র
ও শীত লক্ষা নদীর সংযোগ স্থলে অবস্থিত এই গ্রাম্য পাইকারি বাজারটি ঢাকা , গাজীপুর ও নারায়নগঞ্জ জেলার
উত্তরাঞ্চল, ময়মনসিংহ জেলার দক্ষিনাঞ্চল ও কিশোরগঞ্জ জেলার দক্ষীন পুর্বাঞ্চলের জনপদের জন্য একটি বিখ্যাত
বানিজ্য কেন্দ্র হিসাবে বিরাজমান ছিল শতাদ্বির পর শতাব্দি ধরে ।

এ বাজারের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বানরের অবাধ বিচরণের বিষয়টিও। একপাশে বিশাল ভাউয়ালের শালবন ,
আরপাশে নদী, মাঝে বিশাল ধান চালের ও আন্যন্য কৃষিজাত পণ্যের পাইকারী বাজারের উতষিষ্ট খাবারের ছড়াড়ির
কারণে সেখানে ছিল বানরের অবাধ বিচরণ, সাথে ছিল স্থানীয় জনগন ও প্রশাসনের পক্ষ হতে তাদের জন্য ভালবাসা
ও নিরাপত্তা। সময়ের বিবর্তনে জনবসতি গড়ে উঠলেও এখানকার বানর স্থান পরিবর্তন করেনি। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর
বানরগুলো দল বেঁধে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় এদিকে সেদিক। তবে অভাবে নষ্ট করে দিয়েছে কিছুটা তাদের
স্বভাব, শিখিয়েছে দক্ষ হাতসাফাই। সুযোগ পেলে বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন দোকানে ঢুকে খাবার ছিনতাই করে এরা।
এদের নেতৃত্ব দেয় সবচেয়ে প্রবীণতম বানর।

বরমী বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, খাবারের অভাবে পড়লে বানর বাজারের বিভিন্ন বাড়ি থেকে কাপড় ও হালকা জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তবে দয়াময় বানরগুলিকে আবার খাবার দিলে তারা সেগুলো ফেরত দিয়ে যায়।
বর্তমানে বরমী এলাকার বানরের সঠিক সংখ্যা জানাতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছে এখনো এই এলাকায় ৪/৫হাজার
বানর রয়েছে এবং তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে।

শ্রীপুরের শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় ঘেঁষে প্রাচীন এই বরমী বাজারে একসময় হাজার হাজার বানর বসবাস করলেও
দেখভালের অভাবে এ সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এখানকার বানরগুলো হারিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ।
খাদ্য ও বাসস্থানের অভাব, বানরের অত্যাচার থেকে মুক্ত পেতে খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যা এবং এলোমেলো বৈদ্যুতিক
তারে জড়িয়েও মারা যাওয়া বানর বিলুপ্তির অন্যতম কারন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে স্থানীয়দের ভাষ্য মূলত
খাবারের অভাবেই গত দুই যুগে চারশোর বেশি বানর মারা গেছে।

বানর সংরক্ষনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহন এখন সময়ের দাবী ।

পোষ্টটির শেষাংষে এসে দেখা পাওয়া যাওয়া চাকুরী জীবনের মধ্য গগনে থাকা শরীফ আহসানের বিষয়টি সত্যিই
অত্যন্ত উদ্বেগের।কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক সন্মান ও এমবিএ ডিগ্রীদারী ও একটি বেসরকারী বানিজ্যিক ফার্মে ভাল
চাকুরী জিবী একজন মানুষেরই যদি জীবন এমনতর উদ্বেগের হয় তাহলে সাম্প্রতিক সময়ে বিবিধ কারণে নীজ দেশ
সহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির কবলে পরে অন্যান্য সাধারণ চাকুরীজিবীগন যে কতটা উদ্বেগের মধ্যে
অছেন তা ভাবলেও কষ্ট হয় ।

যাহোক, কামনা করি কেও যেন কোন দুরাবস্থার কবলে না পড়েন । সকলের জীবন হোক সুখ ও শান্তিময় ।

শুভেচ্ছা রইল

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার এ পোস্টটি পড়ে আপনার স্মৃতিমাখা সময় ও দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
নির্জন লিন্‌ন পার্কের মাঝ বরাবর ছোট পাহাড়ি নদীটির উপর ১৮৩৫ সনে নির্মিত ঢালাই লোহার ব্রীজটির "হাফপেনি" নামটি যথার্থ হয়েছে বলে মনে করি। প্রতিটি স্প্যানের ছোট বৃত্তাকার গর্তগুলোকে ছবিতে ফুটোর মতই মনে হচ্ছে, যা আমাদের দেশের পাকিস্তানি আমলের এক পয়সার মুদ্রার ফুটোর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

বরমী বাজার এর নামকরণের এবং প্রসিদ্ধির ইতিহাস জেনে ভালো লাগল।
তবে দয়াময় বানরগুলিকে আবার খাবার দিলে তারা সেগুলো ফেরত দিয়ে যায় - বাহ, ওদের মনেও কত দয়ামায়া! মানুষের জন্য শিক্ষণীয়।

১৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:৩৫

সোহানী বলেছেন: ঢাকা শহরে ঘুঘু, কোকিল, বানর আছে?? বলেন কি!!! আমিতো ভেবেছি মানুষ ছাড়া আর সব বিলুপ্ত ;)

এভাবে অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলাটা, বিশাল গুনের অধিকারী আপনি। কিছুক্ষনের মাঝে তার আস্থা অর্জন, সহজ কাজ নয়। আমি কখনই তা পারি না।

দেশের ইকোনম্ই শুধু নয়, সারা বিশ্বের একই অবস্থা। যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো কিছু আনে না, কিন্তু কেউতো তা বোঝে না। হিটলারীয় মানসিকতা। শুধু আমার চাই চাই।

কানাডা আমেরিকার মতো রাস্ট্র হিমসিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদশেতো আরাে ভুগবে। তার উপর যদি একের পর এক স্যাংসানের পাল্লায় পড়ে তাহলেতো আরো খারাপ হবে। তবে ভুগবেতো শুধু সাধারন এ মানুষগুলো। উপরতলাদেরতো গায়েই লাগবে না। সেকেন্ডে হােমে চলে যাবে।

দিনলিপিতে ভালোলাগা।

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের এখান এখনও ওদের দেখা পাওয়া যায়।
আমি আলাপী মানুষ, আলাপ আমার ভালো লাগে।
"যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো কিছু আনে না, কিন্তু কেউতো তা বোঝে না" - সেটাই! চারিদিক থেকে আসা যুদ্ধবাজদের বীভৎসতা ও নৃশংসতার পোস্ট দেখে দেখে আমি ক্লান্ত! কেউ যদি বিশ্বব্যাপী শান্তির কপোত উড়িয়ে দিতে পারতো!
একমাত্র মানুষ ছাড়া পৃথিবীর কোন প্রজাতির প্রাণী এভাবে একে অপরের প্রাণ সংহার করে না।

মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:৩১

ক্লোন রাফা বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষন ক্ষমতা বেশ প্রখর । আমার মধ্যেও কিছুটা আছে।আমিও পারিপার্শক পরিবেশ ও মানুষ পর্যবেক্ষন করি। এটা অনেকটা গেমের মত মনে হয়

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: দু'চোখ খোলা রেখে চারপাশটা একটু দেখি, এই আর কি! চোখ ও মনের সমন্বয় হলে লেখার বিষয় পেয়ে যাই। তখন কলমও কথা বলে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ক্লো. রাফা।

১৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:২৫

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: সালাম জানবেন, স্যার। কলমের তুলিতে শান্ত দুপুর দারুন প্রানবন্ত হয়ে ধরা দিয়েছে। লেখাটা পড়ে কাজের ক্লান্ত খানিকটা হলেও দূর হল।
সারাদিনের ভেতর মাঝ-দুপুরটা সবচেয়ে আকর্ষনীয় লাগে। শুনশান নীরবতার একটা নিজস্ব সুর বাজে একমনে।
মাঝবয়েসী ভদ্রলোকের দুশ্চিন্তার পাল্লা হালকা হতে দেখে খুব ভাল লাগলো। সম্পূর্ণ অপরিচিতের কাছে অনায়াসে অনেক জমানো কথা বলা যায়, যা কিনা কাছের লোককেও বলতে দ্বিধা হয়।
আগামী পর্ব পড়ার আগ্রহে রইলাম।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেকদিন পরে আমার পোস্টে আপনার উজ্জ্বল উপস্থিতিতে আমি প্রীত ও প্রাণিত। অনেক ধন্যবাদ।

"সারাদিনের ভেতর মাঝ-দুপুরটা সবচেয়ে আকর্ষনীয় লাগে। শুনশান নীরবতার একটা নিজস্ব সুর বাজে একমনে" একদম ঠিক কথা! আমি সে সুরের নীরব শ্রোতা।

"সম্পূর্ণ অপরিচিতের কাছে অনায়াসে অনেক জমানো কথা বলা যায়, যা কিনা কাছের লোককেও বলতে দ্বিধা হয়" - জ্বী, সেজন্যেই বোধকরি ভদ্রলোক খোলা মনে কথা বলেছেন।

ব্লগ ছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে আমি আপনার লেখালেখির সাথে পরিচিত। প্রবাসে আপনার কঠিন কিন্তু প্রাণবন্ত, উচ্ছাসময় এবং সাহসী জীবন যাপন প্রণালীর কিছু কিছু পরিচয় পেয়ে আমি মুগ্ধ হই। আপনার প্রবাস (এখন হয়তো স্বদেশ) জীবন নানা সাফল্যে সমৃদ্ধ হোক; ভালো থাকুন সপরিবারে, সুস্বাস্থ্যে।

১৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২১

জাহিদ অনিক বলেছেন: ভালো লাগলো পড়তে-
পুকুর পাড়, গাছ বৃক্ষ, মাঠ, মানুষের জীবন - এসবকিছুই যেন জীবনের অংশ।
মানুষের জীবন পার হয়ে যাচ্ছে নানাভাবে, নানা কিছুর মধ্যে দিয়ে। কেউ সেসব দেখতে পায়, কেউবা দেখার মত সময়ে নেই।
এত মানুষ দুনিয়ায়, সবারই কোনও না কোনও গল্প আছে, কবিতা আছে। আপনি যেন সেসব মানুষের কথাই নিজের মত করে, নিজের আঙ্গিকে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। জীবনের কথা, মানুষের কথা - ভালোই লাগলো পড়তে, বুঝতে।

চলতি পথের গল, এভাবেই এগিয়ে যায়।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: "মানুষের জীবন পার হয়ে যাচ্ছে নানাভাবে, নানা কিছুর মধ্যে দিয়ে। কেউ সেসব দেখতে পায়, কেউবা দেখার মত সময়ে নেই" - চমৎকার বলেছেন কথাটা। এই ভাবনাটা আমার মনেও মাঝে মধ্যেই আসে।
"এত মানুষ দুনিয়ায়, সবারই কোনও না কোনও গল্প আছে, কবিতা আছে" - ঠিক তাই। কিন্তু সবাই তো সেসব গল্প, কবিতা বা অভিজ্ঞতার কথা লিখে প্রকাশ করতে পারে না, মুখেও গুছিয়ে বলতে পারে না। কবি সাহিত্যিকগণ তাদের হয়ে সে কাজটিই করে যান। তাদের গল্প, কবিতা বা অভিজ্ঞতার কথাগুলো তাদের জবান থেকে তুলে এনে বিশ্বব্যাপী পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের মন ও মননকে আলোকিত করেন, আলোড়িত করেন।
"চলতি পথের গল, এভাবেই এগিয়ে যায়" - জ্বী, অনেক ধন্যবাদ। সুন্দর মন্তব্য এবং প্লাসে প্রাণিত হলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.