নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সুন্দর করে সাজাও । আমি নারী তাই কথাও বলি নারীদের নিয়ে।

কামরুননাহার কলি

আমার নাম কামরুননাহার কলি, আমি একজন ভার্সিটির ছাত্রী। আমার সখ লেখালেখি আর বই পড়া। আমি দেশকে ভালোবাসি, ভালোবাসি দেশের মানুষদের।

কামরুননাহার কলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

“ক্রিকেটের ইতিহাস”

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮



ভারতীয় উপমহাদেশে ৭ম শতাব্দীতে ব্যাটবল নামে একটি খেলার প্রচলন ছিলো। ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে দোয়াব এলাকার মানুষ সর্বপ্রথম ব্যাট বল নামক একটি খেলার প্রচালন করে। এরপর এই অঞ্চলের ৮ম শতাব্দীর শেষদিকে খেলাটি পারস্যের দিকে ছড়িয়ে পড়ে । ইউরোপে ক্রিকেটের-ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায় ৮ম এবং ৯ম শতাব্দীর শেষ দিকে। ভারত অঞ্চলের মরুভূমিতে বসবাসকারী নরড্যামিক জিপসি’রা ঐ অঞ্চল ছেড়ে তুরস্ক চলে যেতো। আর তাদের সাথে খেলাটিও ইউরোপে ছড়িয়ে পরে। তখন বিভিন্ন অঞ্চলে শুধু বল দিয়েই খেলা হতো। কিন্তু একমাত্র শুধু দক্ষিণভারতের মানুষ ব্যাটেবলে খেলতো। ৯ম দশকেও ক্রিকেটের কোন উন্নতি হয়নি এক নিয়মেই চলতে থাকে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। তারপর ১০৬৬ খ্রীষ্টাব্দে ইংল্যান্ড বিজয়ের পর নরম্যানরা তাদের বিনোদনের জন্য ব্যাট-বলের খেলা প্রচলন করে। সেই সময় বিনোদনের জন্য সপ্তাহে একদিন অর্থাৎ রবিবার এই খেলাটির অনুষ্ঠিত হতো। তখন এই খেলাটির নাম তারা ক্রিঘ এবং ক্রিকে দেয়।

ইংল্যান্ডের মানুষের কাছে এই খেলার নিয়ম ছিলো অন্যরকম যেমন- একটি বল একজন ব্যাটসম্যানের দিকে ছুড়ে মারা হতো। ব্যাটসম্যানের ঠিক পেছনেই এক ধরনের কাঠামো বা ডান্ডা দাড় করে রাখা হতো। ব্যাটসম্যান সেই কাঠামো বা ডান্ডটির সাথে বলটিকে আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য কাঠের তক্তা দিয়ে বাড়ি মারতো। এবং ব্যাটসম্যার বাড়ি মারার সঙ্গে সঙ্গে বিরুধী দলের ছড়িয়ে থাকা ফিল্ডারা ধরার জন্য ছুটতো। এই ভাবেই ক্রিকেট খেলার গোড়াপত্তন হয়।

কিন্তু ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড এই খেলাটি নিষিদ্ধ করে দেয়। কারণ সেই সময়ের রাজার নেশা ছিলো রাজ্য জয় করার। ক্রিকেট খেলার কারণে যুদ্ধের জন্যে পর্যাপ্ত সৈনিক পাওয়া যাচ্ছিলো না বলে রাজা এই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কেউ যদি অমান্য করতে তাহলে তার জন্য থাকতো শাস্তি।


তারপর বহু বছর পর অর্থাৎ ১৫০০ খ্রিষ্ট্রব্দে ক্রিকেট পুনরায় জন্ম হয়। কারণ তখন ইউরোপে রাজ্য জয়ের যু্দ্ধ শেষ হয়ে যায়। ১৫০০ খ্রিষ্ট্রা্ব্দের আগের যে ক্রিঘ এবং ক্রিকে নাম ছিলো সেটার নাম বদলিয়ে ১৬০০ খ্রিষ্ট্রব্দে ক্রিকেট হিসেবে পরিচিত লাভ করে। তখনও কিন্তু এই খেলার উপর নিষিদ্ধ ছিলো কিন্তু ইউরোপের জনগণ সেটাকে অমান্য করেই খেলাটি চালিয়ে যায়। মোটা অংকের টাকা দিযে জুয়ারিরা জুয়া খেলতো এই খেলাটি নিয়ে। তখন ধর্মযাজকরা এর জন্য ঘোর আপত্তি করলো। ধর্মযজকরা বলতো ক্রিকেট খেলা নাকি অলস, অকর্মন্য আর জুয়ারিদের খেলা। তারা এর বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থাও করলো। তবে কোনো বাধা এসে থামাতে পারেনি ক্রিকেট চলার পথ।

আস্তে আস্তে ক্রিকেট খেলা জনপ্রিয় হতে লাগলো। ১৭১৯ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দল ও বর্তমান কাউন্টি দল কেন্টের মধ্যকার ম্যাচটির জন্য। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানিটি ১৭২১ সালে আধুনিক ক্রিকেটের প্রচলন শুরু করে। তবে ১৭৪৪ সালের আগে ক্রিকেটের জগত ভালোভাবে আধুনিক হয়ে উঠেনি। কারণ ১৭৪৪ সালের আগে কোন নিয়ম-কানুন মেনে ক্রিকেট খেলতো না। এরপর ১৭৪৪ সালে এসে ক্রিকেটের অনেক নিয়ম-কানুন অনুযায়ী খেলাটি শুরু হয়।

১৮৭৭ সাল থেকে আন্তর্জাকিভাবে ক্রিকেট খেলা শুরু হয় বর্তমানে ৪২টি নিয়ম মেনে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রোলিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। তাই ক্রিকেটের জনক হিসেবে ইংল্যান্ডের নাম বলা হলেও টেস্ট ম্যাচের জয় হয় অষ্ট্রোলিয়া। মেলবোর্নে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে অষ্ট্রোলিয়া। তখন ৪বলে ওভার ছিলো এবং ম্যাচের নিদির্ষ্ট কোন সময় ছিলো না। অস্টোলিয়া প্রথম ইনিংসে ২৪৫ রান করে যার মধ্যে ওপেনার চার্লস ব্যানারম্যান একাই ১৬৫ রান করেন। তখনকার সময় ওপেনার চার্লস ব্যানারম্যান অস্টোলিয়ার সেরা ব্যাটম্যান ছিলেন, তার এই জয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় তার নামটি দখলে থাকবে আজীবন। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১৯৬ রান হেরে গিয়ে ৪৯ রানের লিড পায় অস্ট্রেলিয়া। ২য় ইনিংসে ইংল্যান্ড বোলাররা অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১০৪ রানে অলআউট করে ব্যাটসম্যানদের জয়ের জন্য ১৫৪ রানের পাহাড়চূড়ায় দাঁড় করায়। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হেরে যায়, ১৫৪ রান করতেও ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৮ রানে অলআউট হয়ে ৪৫ রানে পরাজিত হয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে।

কালের বির্বতনে বদলাতে থাকে বিশ্ব, সেই সাথে আধুনিক অনেক কিছু, সাথে সাথে ক্রিকেটও। আরো উন্নত হতে থাকে ক্রিকেটের জগত সব আইনকানুন, বিধিনিষেধ পিছনে ফেলে ঠিক করা হয় বিশ্ব ক্রিকেট সর্বোচ্চ সংস্থা ১৯০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স’ যা পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯৫৬ সালে ইম্পেরিয়াল শব্দটি পাল্টিয়ে রাখা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল কথাটি যার পুরো নাম হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’, যার সংক্ষিপ্ত নাম আইসিসি। আর বর্তমানে ক্রিকেট জগতের সব নিয়মকানুন আইসিসি দ্বারা নির্ধারিত করা হয়।

ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা দিন-দিন বাড়তে থাকে। ভাবতে থাকে নতুন অধ্যায় ক্রিকেট তারকারা। কিভাবে দর্শক আনা যা, কিভাবে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় সেই বিষয়। এই জন্য রাগনেল হার্ভের উদ্যোগে রথম্যানস কো. ৪০ ওভারের একটি টুর্নামেন্ট আয়েজন করে, এটিও রবিবার অনুষ্ঠিত হতো। এরপর থেকেই ক্রিকেটের আরো জৌলুশ ফিসে আসে। ১৯৬৩ সালে জিলেট কাপ নামে ৬০ ওভারের একটি টুর্নামেন্টর আয়োজন করে ইংল্যান্ড বাসি। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে টুর্নামেন্ট ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি নামে পরিচিত হয়।

এভাবেই মোড় ঘোরতে থাকে ক্রিকেট জগতের। তারপর ১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টে খেলতে যেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে যায়, তখন তারা সেটা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে, এরপর একদিনের জন্য ম্যাচটি আবারও খেলে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড। প্রথম একদিনের ম্যাচেও মেলবোর্ন ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয়। টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া, সেখানেও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে জয় লাভ করে অস্ট্রোলিয়া।

১৯৭৫ সালে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারপর ২০০৫ সালে যাত্রা হয় টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচ কারণ একটাই! ব্যবসায় সফল ও জনপ্রিয়তা বাড়ানো জন্য। ক্রিকেটের আরো জনপ্রিয়তা বাড়াতে এবং ব্যবসা সফল করার তাগিদে টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ম্যাচের যাত্রা শুরু হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচেও মুখোমুখি হয় দুই দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। এবারও টেস্ট এবং ওডিয়াইয়ের মতো প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচেও জয় করে অস্ট্রেলিয়া। টি-টুয়েন্টি ম্যাচে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, আর সাথে আর্থিক সহযোগিতাও বাড়তে থাকে। সেই জন্য ২০০৭ সালে সারা বিশ্বে আয়োজন করা হয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচ।সাউথ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টুয়েন্টিতে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ভারতবর্ষ।

বাংলাদেশেও কিন্তু কোনদিনক থেকে কম যায়নি ঐ প্রভাবটি পরে এসে বাংলাদেশের উপর। তবে স্বাধীন বাংলাদেশে ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয় ১৯৭২ সালে। ১৯৭২ সালে নিজস্ব ক্রিকেটের আয়োজন গড়ে তুলে, আর তখনি বাংলাদেশে ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে ১৯৭৪-১৯৭৫ সালে জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু করে। এরপর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আত্মজীবন পায়। তারপর পাল্টে যায় বাংলাদেশের জীবনবৃত্তন্তর, ইংল্যান্ড অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফিতে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ বিশ্বেরমাঝে জন্ম নেয় নতুন এক নক্ষত্র, যার নাম বাংলাদেশ। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলে। এবং ১৯৯৭ সালে কেনিয়াকে হারিয়ে শেষ বলে জিতে নেয় বাংলাদেশিরা ট্রফি। তারপর মোড় ঘুরে অন্যদিকে, সালটা ছিলো ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সুযোগ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ববাসিকে চমকে দেয়। এরপর আর বাংলাদেশকে ঘুরে তাকাতে হয়নি। একটার পর একটা সফলের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের জন্যপ্রিয় খেলা ছিলো কাবাডি এবং ফুটবল কিন্তু এগুলো কে আজ ছাড়িয়ে চলে এসেছে ক্রিকেট, বর্তমান এর জনপ্রিয় এবং আর্থিকখাত থেকে বেশ সফল হচ্ছে ক্রিকেট।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৮

ফেনা বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কলি আপু অনেক দিন পরে আপনাকে পেলাম।
বিস্মৃত ক্রিকেট সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:১০

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। হুম লেখা পোস্ট করি তো মাঝে মাঝে ।

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: ক্রিকেটের ইতিহাস আমি জানি। তবু আবার পড়লাম।
ভালো লেখা।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩২

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: যেহেতু আমি স্পোর্ট পাগল । তার উপর ক্রিকেট তো সেই ছোট বেলা থেকেই খেলি । বই পড়া শখ বলে এর ইতিহাস ও যেনে ফেলেছি ।

তারপর ও আবার পড়লাম ছোট আকারে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.