নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Learner

কাল্পনিক জুবাই

শিক্ষার্থী

কাল্পনিক জুবাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার লেখা ছোট গল্পঃ স্বস্তির নিঃশ্বাস

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

গল্প:স্বস্তির নিঃশ্বাস
লেখা: মুহাম্মদ জোবায়ের ইসলাম (কাল্পনিক জুবাই)


সময়টা নভেম্বর মাসের শেষের দিক।চারদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশ। ঘুটঘুটে অন্ধকার।কনকনে ঠান্ডা।কোথাও কোনো শব্দ নেই।আমি শুধু চেয়ারে বসে চাদর মুড়ি দিয়ে পড়ছি।সামনে বার্ষিক পরীক্ষা।তাই এখন একটু বেশি করেই পড়ছি,যেকোনো ভাবেই হোক পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। ভাইয়া বিছানায় লেপের ভিতরে থেকে ফেসবুক চালাচ্ছে আর মাঝে মাঝে বলছে-
---ওহহো . . .
---ধ্যত . . .
---অসহ্য . . .
আমি কয়েক লাইন পড়ছি আর শুধু থামছি ,ভাবছি।'কিরে পড়' শুনে আবার পড়ছি।
ভাইয়ার বিরক্তি আর আমার বারবার থামার একটায় কারণ আর তা হলো বাইরে একটা কুকুর নির্মম সুরে কাঁদছে।চিৎকার করে বিলাপ করছে।কারো নিকটজন মারা গেলে গ্রামের মহিলারা যেভাবে কাঁদে,কুকুরটিও ঠিক সেভাবে কাঁদছে।
আমাদের বাড়ির উত্তর পাশে খড়ি রাখার জন্য যে চালা ঘরটি আছে তারই এক কোনে এই কুকুরটি কয়েকদিন আগে চারটি বাচ্ছার জন্ম দিয়েছিল।এরপর থেকে কুকুরটি আর বাচ্চার ধারে কাছে যেতে দিচ্ছে না।খড়ি আনতে গেলে কুকুরটি তেড়ে আসছে কামড়ানোর জন্য।তাই মা'র কথায় সজিব চাচ্চু বাচ্ছাগুলোকে আজ বিকেলে একটা বস্তায় ভরে অনেক দূরে কোথাও রেখে এসেছে।কুকুরটি তখন বাইরে থাকায় এটা জানতে পারেনি।


সন্ধ্যারদিকে ফিরে এসে যখন দেখে যে তার বাচ্চাগুলো নেই তখন থেকেই সে বাচ্চা গুলোর জন্য এভাবে কাঁদছে ,বাচ্চা গুলো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে। ধীরে ধীরে কুকুরটির চিৎকার চেঁচামেচি বেড়েই চলছে।এক পর্যায়ে আর সহ্য করতে না পেরে ভাইয়া বলল -
--চলতো দেখি বাচ্ছাগুলো কোথায় আছে ?
--কিন্তু পড়াশুনা . . .তাছাড়া যে ঠান্ডা . . ?
(ভাইয়া চুপ)
এক সময় আমাকেই বলতে হলো
--চল।
দু জনে দুটো লাইট আর একটা বস্তা হাতে ,বেড়িয়ে গেলাম বাচ্চা খুঁজতে।আশেপাশেরঅনেক জায়গা খোঁজাখুজির পরও কুকুরের বাচ্চাগুলোর কোনো হদিস পেলাম না। বাড়ি ফিরে আসলাম।দেখি কুকুরটি চিৎকার করেই চলেছে।এবার বাড়ির চারদিকে ঘুরছে আর করুণ সুরে চিৎকরার করছে।
--রাতে ঘুমাতে চাইলে কুকুরটিকে বাচ্চা এনে দিতে হবে।(ভাইয়া)
--হুমম . . . তাহলে কি করা যায় ?
--আচ্ছা, সজিব চাচ্চুকে ফোন দে তো ।
অবশেষে ফোন করে জানতে পারলাম যে বাড়ির পাশে যে ধান ক্ষেতগুলা আছে সেগুলার মাঝখানে আছে।প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে আরো আধা ঘন্টা খোঁজাখুজির পর বাচ্চাগুলোক পেলাম।অনেক কষ্টে বাচ্চাগুলেকে নিয়ে এলাম।কুকুরটির চিৎকার বন্ধ হলো।বাচ্চাগুলোওতাদের মায়ের কোলে ফিরে গেল।লাইটের আলোয় দেখলাম মা কুকুরটির চোখে কোণে পানি,আমাদের স্বস্তির নিঃশ্বাস.........।


গল্প:স্বস্তির নিঃশ্বাস
লেখা: মুহাম্মদ জোবায়ের ইসলাম (কাল্পনিক জুবাই)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.