নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাত নিরবতায় নির্ঘূম আমি এক যুবক বসে আছি ঘুম হীন কেন তার উত্তর খুজছি

খালেদ সময়

আমি তোমার মত আপন করে আর কারে পাই বল

খালেদ সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার মা আমার সব কিছু; আমার অব্যক্ত অনুভুতি

১১ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:০৬

জীবন বহতা নদী, এর বাঁকে বাঁকে এমন কিছু স্মৃতির অভ্যুদয় ঘটে যেগুলো উত্তরকালে আমাদের Nostalgic করে তোলে। লেখালেখির একটা প্রবনতা আমাকে আন্দোলিত করলো। কি বিষয়ে লিখব তা নির্ধারণ করাটা অনেক সহজ থেকে কঠিন হয়ে গেলো। রাত নিঝুম হলে যখন লিখতে বসি তখন প্রতি পাঁচ মিনিট পর একটি করে কাগজ আমার ওয়েষ্ট পেপার বাস্কেটে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। অনেক চিন্তার পর পথ ঘেটে অবশেষে আমার দূরন্ত ঘোড়ার মত মস্তিস্ক থমকে গেল মায়ের সোহাগ মাখা শাসনের ডাকে- এখনও ঘুমোসনি, রাত অনেক হল, ঘুমিয়ে পড়। আমার চিন্তার আকাশে যেন এক ঝলক মিষ্টি রোদ হাসি দিয়ে উঠলো। পরম শ্রদ্ধাভরে তখন মায়ের প্রতি উত্তরে জবাব দিলাম- ঘুমোচ্ছি মা, আর একটু।

মা। ছোট্ট এই শব্দটির এত ক্ষমতা আছে যা সুপার পাওয়ারদের পারমানবিক বোমায়ও নেই। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সবচেয়ে প্রিয় শব্দ মা। হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত হয় মধুর আমার মায়ের হাসি/ চাঁদের মুখে ঝরে. . . । এক অনাবিল ভালোবাসায় জড়িয়ে রেখেছেন আমাকে আমার মা। মা, যেদিন পৃথিবীর হাজারো আয়োজনের মাঝে নিজের অস্তিত্ব অনুভব করেছি, সেদিন থেকেই তুমি আমার অবিচ্ছেদ্য স্বত্তায় জড়িয়ে আছো।

পুষ্প ফুটতে হলে যেমন পরাগের ডানা মেলতে হয়। তুমি ছাড়া আমার প্রস্ফুটিত হওয়া অসম্ভব তেমনই। মা, তোমার শাসন ছাড়া এই পৃথিবীতে আমার বেঁচে থাকা হবে সাফল্যহীন; সাদা-কালো সব কর্ম হবে নিস্ফল। ক্যানভাসে আল্পনা আকতে যেমন রংতুলির প্রয়োজন। তেমনি ধরনীর কণ্টকময় পথে দীপ্ততার সাথে পদচারনার জন্য প্রয়োজন তোমার প্রফুল্ল পরশ। মালীর যত্ন ছাড়া যেমন ফুটতে পারেনা সুন্দর ফুল। তেমনই দশ দিগন্তের পথে অবিরাম ছুটতে প্রয়োজন তোমাকে- হে প্রিয় মা।

ডায়রীতে অনেক সুন্দর কথার মাঝে কম শব্দের একটি কথা আমি গভীরভাবে উপলব্দি করি- যে ঘরে শিক্ষিত মা থাকে সে ঘর সভ্যতা আর মানবতার বিশ্ববিদ্যালয়। হ্যাঁ, আমার মা আমার পৃথিবী। আমার মা বিশাল ছায়া রোদ বৃষ্টিতে। মায়ের প্রতি আমরা সকলে সুবিচার করছি কি? না! দিনে ১২ ঘন্টায় ১২বার ফোন করে প্রেমিক প্রেমিকার খোজ নেই কেমন আছো? কিন্তু মাকে কতবার ফোন করি? রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে কত টাকা যে ফেক্সি লোড ও আই টপের বিল দিই কখনো কি ঘরে ফিরতে মায়ের প্রিয় খাবার বা প্রিয় বস্তুটি কিনে আনি? সুবহে সাদিকে জায়নামাজে বসে চোখ ভিজিয়ে পরম প্রভুর দরবারে মায়ের একটাই প্রার্থনা- আমার সন্তানকে তুমি সুস্থ রাখো হে প্রভু। সকল ভালো কাজে তুমি তাকে সফলতা দান কর. . . । আর আমরা সকাল ১০টায় চোখ মেলেই কল করি হ্যালো তুমি কোথায়? কখন আসছো?

পৃথিবীতে একজন মানুষের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্খী তার মা। জাহাজডুবীর পর সমুদ্রের উত্তাল স্রোতে মা তার ছোট্ট কলিজার টুকরো মানিককে এক হাতে উপরে উঠিয়ে রাখার দৃষ্টান্তও আমাদের সভ্যতার ইতিহাসকে আলোড়িত করেছে। মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে মা তার সন্তানকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন বাজি রাখার যে দূর্লভ সাহস দেখান তা পৃথিবীর অন্য কোন পরমাত্মীয় পারবেন কিনা সন্দেহ। পৃথিবীতে যারা খ্যাতিমান হয়েছেন, জীবনে উন্নতির জন্য মায়ের ঋণের কথা স্বীকার করেছেন অকুন্ঠ চিত্তে। আমাদের প্রিয় রাসুল (সাঃ) বলেছেন, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।

আব্রাহাম লিংকন বলেছেন, আমি যা হয়েছি বা হতে চাই তার সবটুকুর জন্যই আমি আমার মাযের কাছে ঋণী। আমার মায়ের প্রার্থনাগুলো সারা জীবন আমাকে জড়িয়ে ছিল। ভিক্টর হুগো বলেছেন, মায়েদের হাতগুলো কোমলতা দিয়ে তৈরী এবং সন্তানেরা সেখানে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে।

জর্জ ওয়াশিংটন বলেছেন, আমি যত মহিলাদের দেখেছি তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর আমার মা। আমার সব কিছুর জন্য আমি মায়েরা কাছ ঋণী। নেপোলিয়ান বলেছেন, ১টি দেশের পুনরুজ্জীবনের জন্য বিশেষ কিছুরই দরকার হয় না। কেবলমাত্র দরকার হয়ে কিছু সংখ্যক সু’মাতার।

এই পৃথিবীর উজ্জল ডায়রীতে যে সকল মানুষ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলা মায়েদের দৈনন্দিন কিছু কথা- পল রিভারের মা বলেন, তোমার কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা সে সম্পর্কে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই । কিন্তু মনে রেখো মাঝরাতের পরেই তোমার জন্য কার্ফ্যু। কলম্বাসের মা, তুমি কি জিনিস আবিস্কার করেছো সেটা আমি জানতে চাই না, ক্রিষ্টোফার। কিন্তু এখন লাইট বন্ধ করে ঘুমোতে যাও।

সত্য চেনাবার জন্য মায়ের চাইতে বড় ভুমিকা কেউ রাখতে পারে না। কিন্তু আজ আমাদের মায়েরা তথা সমস্ত নারীরাই অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। তথাকথিত নারীবাদী চিন্তা চেতনার ফলে প্রগতির ধারক বাহক হতে গিয়ে তারা আজ ফ্যাশন সচেতন। আদর্শ নিয়ে তারা ভাবতেও চান না। অথচ সমাজ পরিবর্তনে মায়েরাই রাখতে পারেন অগ্রণী ভুমিকা। মায়ের আদর্শ চিন্তা দৃষ্টির মাধ্যমেই সম্ভব একটি সুন্দর সোনালী সমাজ গঠন।

না জেনে না বুঝে তোমার সাথে অনেক কটু ব্যবহার করেছি, মাগো আমায় তুমি ক্ষমা করো। তোমার ভালোবাসা বুকে নিয়ে এ পৃথিবীতে আমার পথ চলা শুরু। তোমার ভালোবাসা যেন আগলে রাখতে পারি প্রতিটি সময়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:৪০

শাফ্‌ক্বাত বলেছেন: সত্যি কী বলে যে আপনার এই লেখাকে সাধুবাদ জানাবো, জানিনা।সমস্ত আবদার, আহ্লাদি, অবহেলা করি মা-কেই। অথচ মায়ের ভালোবাসা যে কত বেশি বেশি স্বার্থহীন সেটা কে না জানে?
একজন মা হয়ে আমি আপনাকে সকল মায়ের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।

১১ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:৪৬

খালেদ সময় বলেছেন: আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.