![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ঘুরছি আমি কোন প্রেমের ই ঘুর্নিপাকে, ইশারাতে শিষ দিয়ে কে ডাকে যে আমাকে”
পঞ্চাশ-ষাট দশকের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে স্পেনের আন্দুলুশিয়া থেকে পাশ্ববর্তী প্রদেশ কাতালুনিয়ার বার্সেলোনা শহরে এসে আশ্রয় নেয় কিছু শরনার্থী । পাহাড়ে বেষ্টিত অন্ধলটি বার্সেলোনার শহর থেকে কিছুটা দুরে যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল দুর্গম। শরণার্থীদের অবাধে আশ্রয় ঠেকাতে তৎকালীন কাতালুনিয়া সরকারের এক অদ্ভুত আইন পাশ করে। কোন শরনার্থী পরিবার যদি এক রাতের মধ্যে ঘরসহ উপরে ছাদ তুলতে পারে কেবল তখন তাকে সেখানে থাকতে দেওয়া হবে।
কিছু অধিবাসী সারারাত পরিশ্রম করে ঘর বানানোর চেষ্টা করলে ও সকাল এসে পুলিশের টহলে ছাদ না থাকার অযুহাতে বাড়িগুলো ভেংগে দিতো।।এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন......
শরণার্থীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে কাঠ, সিমেন্ট, ইটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে বিক্রি শুরু করে ব্যবসায়ীরা। এই শরনার্থীদের মধ্যে ছিল মনলো ভিটাল আর তার দুই বছরের শিশু কন্যা জোয়ানা। বারংবার বাড়ি উঠতে ব্যার্থ হওয়ায় পর মনলো বুদ্ধি করে সবাই মিলে একটি একটি বাড়ির কাজ শেষ করার!!!
মনলোর এই পরিকল্পনা কাজে দেয়; ধীরে ধীরে গড়ে উঠে "তোরে বাড়োতে" আশা শরনার্থীদের ঘর। ৭০ দশকের শেষের দিকে তোরে বারো হয়ে যায় বেশ বড় একটি কমিউনিটি, কিন্তু নাগরিক সকল রকমের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত একটি অঞ্চল। ছিল না পানি, ইলেকট্রিসিটি, যানবাহন, স্কুল বা কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থা...
মনলো কাজ করতে থাকে বার্সেলোনার শহরে পাবলিক বাসের ড্রাইভার হিসেবে; শহরে EL-47 বাসটি একটি নির্দিষ্ট রুটে......
প্রতিদিনের ৩-৪ মাইল পাহাড়ি উঁচুনিচু রাস্তা দিয়ে হেটে শহরে আসতে হয় তোরে বারো অধিবাসীদের; সাথে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে কষ্টের মাত্রার তীব্রতা। এরমধ্যেই তোরে বাড়াতো আগুন লেগে জ্বলে যায় কিছু ঘর। খাবার বিরতিতে বার্সেলোনার একটি ধনী এলাকায় মিউনিসিপ্যালিটি কলে বাচ্চাদের পানী দিয়ে খেলার করার দৃশ্য ভীষণ দাগ কাটে মনলোর!! এই পানির অভাবে চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখতে হয় বন্ধুর বাচ্চাকে..... একটি সাক্ষাৎকারে মনলো ভিটাল।
শুরু হয় মনলোর নতুন সংগ্রাম। তোরে বারোতে পাবলিক বাসের রুট স্থাপনের জন্য সে দৌড়াতে থাকে বার্সেলোনার এই অফিস সেই অফিস! বার্সেলোনা টাউনহল কর্মকর্তা, শ-খানেক আবেদন করে ব্যার্থ হয় মনলো। তোরে বারোর রাস্তা সরু, বাস চলাচলের অনুপযোগী নানা অযুহাতে এক এক করে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মনলোকে.....
এক রুটিন কাজের দিন EL-47 বাসটি কিছু যাত্রীসহ হাইজ্যাক করে মনেলো নিয়ে আসে তোরে বারোতে; হাইজ্যাকের খবর সারা বার্সেলোনাতে ছড়িয়ে পড়ে। তোরে বারোবাসী মনলোকে বাস নিয়ে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে মনলোকে থানায় নিয়ে যায়; আর তার কেস উঠে আদালতে..
আর হাইজ্যাক না করার শর্তে মনলোকে জামিন দেওয়া হয় বিপরীতে জনতার শ্রোত, পপুলিষ্ট মুভমেন্টের কারনে তোরে বারোসহ বার্সেলোনার দুর্গম এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা সহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা চালু হয়। মনলোর একটি পদক্ষেপ গোটা বার্সেলোনার জরাজীর্ণ অঞ্চলের চিত্র চিরতরে পরিবর্তন হয়ে যায়।
১০ জানুয়ারি ১৯৯৮ সালে বার্সেলোনা টাউনহল থেকে মনলোর কৃতিত্বকে সম্মান জানিয়ে স্বর্নপদক দেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২০১০ সাল পর্যন্ত মনলো তোরে বাড়োতে এ ছিলেন। তোরে বারোর এই সংগ্রাম নিয়ে EL-47 একটি জনপ্রিয় সিনেমা বানানো হয়েছে।
০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: জানাতে পেড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: বেশ কয়েক বছর আগে ডিসকভারি চ্যানেলে Torre Baro নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম। যার বিষয়বস্তুর তথ্যসারাংশ- উত্তর বার্সেলোনায় অবস্থিত। জনসংখ্যা প্রায় ৩ হাজার জন। একটি ‘অনগ্রসর’ অঞ্চল, একই সঙ্গে সংগ্রাম, ঐক্য ও পরিকল্পিত পরিবর্তনেরও গল্প। সেখানে বাস করা মানুষরা নিজেদের ইতিহাস, সমাজ ও ভবিষ্যতের জন্য অবিরত সংগ্রাম করে চলেছেন।
০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:৩৪
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: আপনি জানতেন!
আমি সবে দুই আগে ছবি দেখলাম। ছবির শেষে দেখলাম সত্যি ঘটনার উপর নির্মিত।
ছবি শেষ এ অরিজিনাল ফুটেজের কোর্ট ট্রায়াল, বাস হাইজ্যাক সহ তোরে বারোর মানুষের
অবস্থার কিছু ভিডিও আছে। পরে গুগল ইউটিউব ঘেঁটে তোরে বারোর সম্পর্কে বিষদ জানলাম।
সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তাঁদের টিকে থাকা আর অধিকার আদায় ঘটনা-
অনুপ্রেরণাদায়ক।
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৪৮
লোকমানুষ বলেছেন: আপনার বর্ণনায় দারুণ আগ্রহ পেয়েছি মুভিটি দেখবার। এক ফাঁকে দেখে নেবো। তবে যে সংগ্রামের কথা বর্ণনা করলেন সেটি সত্যিই প্রশংসনীয়। মুভিতে যদিও বেশ কিছু জিনিস অতিরঞ্জিত করে দেখায়, তবে এখন দেখবার সময় আপনার বর্ণনা গুলো মাথায় থাকবে।
শুভকামনা জানবেন।
০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:৫০
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: আমার বর্ণনার চেয়ে ছবিটি অনেক সুন্দর আরো গভীর। দেখতে পারেন, আশাকরি বিরক্ত হবেন না।
যেমন আমি মনরো স্ত্রী কেরাম্যান সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু চরিত্রের কথা কিছু লিখিনি।
সে ছিল খুবই তোরে বেরোবাসীর শিক্ষিকা।
আপনার ঠিক ধরেছেন। ঐতিহাসিক মুভিগুলো একটু রং চং মাখিয়ে উপস্থাপন করা হয়।
যেমন ভাগ মিলখা (মিলখা সিংয়ের) জীবনি নিয়ে নির্মিত ছবিটি যে দেখায় সে
অষ্ট্রেলিয়ান একটি মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। যা সম্পূর্ণ বাস্তব বহির্ভুত।
স্পেনিশ ক্লাসিক একটা মুভি; ফুটেজে ৭০-৮০ একটা ভিনটেজ ভাইব দেয়।
৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: নতুন কিছু জানলাম।