নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলম চোর পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি নিজের ব্যাপারে উদাসিন, অন্যের ব্যাপারে সচেতন, এবং দেশের ব্যাপারে বেশি সচেতন।

কলম চোর

কলম চোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পালিয়ে বিয়ে করার ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন??

২৭ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪



আমার এই লেখার উদ্দেশ্য পালিয়ে বিয়ে করতে উৎসাহিত করা নয়, বরং পালিয়ে বিয়ে করার পর আইনি ঝামেলা সম্বন্ধে সাবধান করা।
পালিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি যদিও সমাজ স্বীকৃত নয় তারপরও অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে পালিয়ে বিয়ে করার সময়ে কিছু প্রস্তুতি এবং সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আসুন এই বিষয়ে সংক্ষেপে জেনে নিই।

অনেকে ভাবেন এসব ক্ষেত্রে হয়ত কোর্ট ম্যারেজ করতে হবে। কোর্ট ম্যারেজ টার্মটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু এটা নিয়ে অনেকের একটু ভুল ধারনা আছে। অনেকে যারা অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বা পালিয়ে বিয়ে করতে চায় তারা কোর্ট মারেজ করতে যায় বা করতে চায়।

অনেকে মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ হয়তো কোর্টে গিয়ে বিয়ে করা। অথবা মাজিস্ট্রেট-এর সামনে বিয়ে করা। আসলে তা নয়। কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে যেতে হবে কোন নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে। তিনি (বর কনেকে) ২০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করাবেন যাতে লিখা থাকবে আমরা প্রাপ্তবয়স্ক এবং সজ্ঞ্যানে সেচ্ছায় বিয়ে করেছেন।

বিয়ে কাজী অফিসে রেজিস্ট্রী কাবিনমুলে করতে হবে। কাজী অফিসে কাবিননামায় সই করতে হবে । কাজি সাহেবকে বর কনের এস এস সি-এর সার্টিফিকেট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স প্রমাণের জন্য। বয়স অবশ্যই আঠারো (মেয়ে) ও একুশ (ছেলে) হতে হবে। আর লাগবে দুইজন সাক্ষী। আর ঐ কাবিননামাই আপনাদের বিয়ের প্রধান আইনী দলিল। আর নোটারী পাবলিকের কাছে গিয়ে শুধু ঐ দলিলের আরও একটা সম্পূরক আইনী দলিল করে রাখলে ভবিষ্যতে মামলা টামলায় একটু সুবিধা পাওয়া যায়।
তবে জেনে রাখবেন, নোটারী পাবলিকের কাছে করা হলফনামার কোনো দাম নেই যদি কাবিননামা না থাকে। কাবিননামা থাকলে বিয়ের পক্ষে আর কোনো ডকুমেন্টই লাগবেনা। কাবিননামাই সব।
এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধর্মের হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই বিয়ে করা সম্ভব। বিয়ে হয়ে গেলে অনেকসময় পরে দুই পক্ষের বাবা মা-রা মেনে নেয়, অনেক সময় মেনে নেয়না। অনেকসময় মেয়ের বাবা ক্ষেপে গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে। মামলাগুলো হয় সাধারণত অপহরণপূরবক ধর্ষনের। এই মামলাগুলোর জামিন বা রিমান্ড শুনানী এবং বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। মামলার ধারাগুলো জামিন-অযোগ্য এবং আমলযোগ্য, মানে পুলিশ এসব ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের পারমিশন ছাড়াই আসামিকে অ্যারেস্ট করতে পারে। তাই যখন শুনবেন মামলা হয়ে সে তখন থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকতে হবে কারণ পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কিন্তু প্রথমেই জামিন হবেনা।

এমন সময়ে বর কনে উভয়কেই মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। কেননা মামলা (উক্তরূপ) হবার পর তদন্ত শুরু হয়। ভিকটিম (মেয়ের বাবার চোখে মেয়েটি এখানে ভিকটিম)-এর জবানবন্দী দিতে হবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে। এটি ২২ ধারার জবানবন্দি, ম্যাজিস্ট্রেট-এর চেম্বারে হয়। কেউ কোন প্রভাব খাটাতে পারেনা। এখানে মেয়েকে বলতে হবে, “আমি সেচ্ছায় বিয়ে করেছি। আমাকে কেউ অপহরন করেনি।“ ব্যাস। তাহলে মামলায় পুলিশ আর চার্জশীট দেবেনা। আসামি (ছেলে) অব্যাহতি পাবে।
সতর্কতা :

বাবা মা কে কষ্ট দিয়ে যদিও পালিয়ে বিয়ে করা একেবারেই উচিত না তারপরও অনেকেই এই কাজটি করে থাকেন। কারণ হয়তবা বাবা মায়েরা তাদের ভালোবাসার গভীরতাটি বুঝতে পারেন না। এক্ষেত্রে দুই পক্ষেরই ভূমিকা রয়েছে বিষয়টি না ঘটানোর পক্ষে। যেমন ধরুন ছেলে মেয়েরা যদি তাদের ভালোবাসার বিষয়টি বাবা মাকে বুঝিয়ে বলেন এবং তাদের অনুমতি চেয়ে থাকেন আবার অন্যদিকে বাবা মা বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই না করেই সন্তানদের যদি না জানিয়ে দেন যে তাদের এই বিষয়ে কোনো অনুমতি নেই তাহলেই পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি ঘটে না। তাই দুই পক্ষেরই সমঝোতার মধ্য দিয়ে বিষয়টিকে সমাজ বা পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা উচিত

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: আইনের ব্যাপারটা ভালো লিখেছেন। কোর্ট ম্যারেজ করার পরেও কাজী অফিসে গিয়ে আবার কাবিন করতে হয়, বিয়ে মোল্লা দিয়ে বিয়ে পড়াতে হয় এটা অনেকেই জানে না। সবাই মনে করে কোর্ট ম্যারেজ করলেই সব হয়ে যায় বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল। যত কোর্ট ম্যারেজই করেন না কেন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কাবিন বাধ্যতামূলক এবং ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ইসলামী নিয়মে বিয়ে পড়ানো বাধ্যতামূলক। কোর্ট ম্যারেজ হলো সাবালক নারী পুরুষের বিয়ের অনুমতি মাত্র।

২| ২৭ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:৫২

কলম চোর বলেছেন: জি মি.প্রামানিক, আপনি সঠিক বলেছেন।

৩| ২৭ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

কলম চোর বলেছেন: কষাই বাবু আমি কিন্তু এত এজেড না আপনি যতটা ভাবছেন। হয়তো আপনারই বয়সি।

৪| ২৭ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:২১

বিজন রয় বলেছেন: পালিয়ে বিয়ে করা ভাল না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.