![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব
-----------------------------
যদি আমি নিজের গালে নিজে কষে থাপড়াতে অপারক হই, অন্যদেরকে দিয়ে নিজেকে লাথি-গুড়ি খাইয়ে নিজেকে অপদস্থ করাতে চাইলে তবেই আমি আমার কোনো প্রতিনিধির অপরাধে অন্যের কাছে অভিযোগ করতে পারি।
আমার অন্যান্য অধীনস্ত এবং আমার পোষ্যদের ব্যাপারেও আমার এটাই অভিন্ন সিদ্ধান্ত।
(সমাধানটি যখন নিজের কাছেই, নিজেকে অপদস্থ করার জন্যে অন্যদেরকে নিজেদের ঘরোয়া ব্যাপারে অভিযোগ শুনিয়ে শুনিয়ে বিচার চাওয়াতে, গণতন্ত্রে, সাধারণ গণমালিকের তথা জনসাধারণের মর্যাদাহীনতাই প্রকাশ পায়।)
কোনো স্বেচ্ছাচারীর সাথে আমার সম্পর্ক ছিন্ন করার অধিকারটুকু আজও কেউ কেড়ে নিতে পারেনি।
##########################################
নির্দোষ স্বেচ্ছাচারিতা
-----------------------------------
যে ব্যক্তিটি আমার চড়-থাপ্পড়ের ভয়ে ভীত নয়,- এমন কোনো ব্যক্তিকে যদি আমি আমার প্রতিনিধি বানাই, তবে তো আমার মাথার ওপরে তার চ’ড়ে বসাটাকেও আমি সহ্য ক’রে যেতে বাধ্য।
নিশ্চয়ই, নিজেদের কোনো প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অন্য কারো কাছে অভিযোগ করা কখনোই কোনো সভ্য সমাজে শোভনীয় নয়। বরং, প্রতিনিধিকে নিরাপত্তা দেওয়াই মালিকদের কর্তব্য।
যে ব্যক্তিটি তোমাদের ভয়ে ভীত নয়,- তাকে তোমরা প্রতিনিধি বানালে পরে, সে যদি তোমাদের ওপর মালিক সেজে বসে, আর, তোমাদেরকে আতঙ্কের মধ্যে ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশেও সেই প্রতিনিধি যদি কিছু নরাধমকে ক্যাডার-ক্রীতদাস রূপে সঙ্গে রেখে তার স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে পারে, তবে সে তো দোষীও নয়, এমনকী নিজের যোগ্যতায় কারো ওপর ক্ষমতাধারীও সে নয়,- বরং, এর পেছনে স্মরণীয় দুটো ঘটনা সমান গুরুত্বে দর্শনীয়,-
এক : তোমাদেরই পছন্দে তোমরা তাকে প্রতিনিধি বানাচ্ছো।
দুই : তোমাদের সন্তানদের মধ্যেই কেউ কেউ তার ক্রীতদাস।
##########################################
মনোনয়ন সভায় মনোনীতের প্রতি
-------------------------------------------------------------------------------
তুমি যে আমাদের ভালো চাও, তা’ আর বলতে হবে না, আমরা তো শুনে বুঝেই তোমাকে ডেকে এনেছি। এখানে তোমার যা’ চাওয়ার আছে, আমাদের কাছে চাইবে, পারলে আমরাই তা’ দিতে পারবো। অন্যের কাছে কিছু চাইতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে এনো না।
তোমাকে আমাদের কোনো ভালো করতে হবে না। নিজের ভালোর দিকে লক্ষ্য রাখবে, এটাই তোমার কর্তব্য জেনো।
আমরা তোমাকে আমাদের ওপর মালিক বা অভিভাবক বানাচ্ছি না। ভুলে যেয়ো না, প্রতিনিধি বানাচ্ছি আমরা তোমাকে।
আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু সাময়িক সীমাবদ্ধ দায়ভার তোমাকে দেবো, যা’ দীর্ঘমেয়াদি দাসত্বের বন্দিত্ব নয় কোনো বেতনজীবীর চাকুরির মতো।
তুমি যেখানে যার প্রতিনিধি, সে-ই সেখানে তোমার মালিক কিম্বা অভিভাবক। এখানে তোমাকে প্রতিনিধি বানাতে পারলে, মনে রেখো, আমরাই তোমার অভিভাবক হয়ে থাকবো। তোমাকে অন্য কারো কাছে করুণাপ্রার্থী হওয়া থেকে মুক্ত রাখবো, এ আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্ত প্রতিজ্ঞা। (ভুলে যেয়ো না, তোমাদের যেকোনো ধরণের পিতা বা পুত্র, গণতন্ত্রে, সাধারণের সন্তান। ‘আমরা’ কোনো একক ব্যক্তি নই, বরং বহুজনের সমষ্টি আমরাই মালিক, -এখানে রাষ্ট্রের জনসাধারণ।) আমাদেরকে অগ্রাহ্য ক’রে আত্মঘাতী হবার ঝুঁকি নিয়ো না।
নিশ্চয়ই তুমি চাইবে না আমরা লজ্জিত হই। --আত্মরক্ষাকে তোমার কর্তব্য হিসেবে গণ্য করেই তুমি দায়ভারমুক্ত হবে, এর চে’ বেশি প্রত্যাশা নেই আমাদের, আগেও ছিল না।
তোমার নিজের ভালো করতে গিয়ে তুমি আমাদের কোনো ক্ষতি না-করলে, ওতেই আমরা মেনে নেবো তুমি আমাদের জন্যে ভালো কিছু করেছো।
যতটুকু দায়ভার আমরা চাপিয়ে দেবো, সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়েও বহন করতে না-পেরে তুমি সসম্মানে স’রে গেলে, সেটাও তোমার জন্যে ভালো, দায়িত্বের চে’ বেশি কিছু করার চেষ্টা যদি তুমি চালাও, নিশ্চয়ই তা’ অবাধ্য ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা। কোনো স্বেচ্ছাচারীকে কেউ পছন্দ করে না, এ তোমার অজানা নয়, তোমার নিজের জানাটাকেই স্মরণে রেখো।
অতীতে যারা ছিল, তাদের মতো আবারো তুমি যদি সব ভুলে যাও তো, বার বার ভদ্রভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তোমাকে সতর্ক করা এবং সুরক্ষিত রাখা আমাদেরই কর্তব্য।
তোমাকে সসম্মানে ডেকে এনে জনসাধারণের মুক্ত সমাবেশে এতটুকু শুনিয়ে দেওয়াটা আমাদের গণদায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। ভয় পেয়ো না। নির্ভয়ে এগিয়ে যাও। যেকোনো সংকটকালে তুমি চাইলেই আমাদেরকে তোমার নিকটতম উদ্ধারকর্মী রূপে পাবে। আমাদের ওপর আস্থা রেখে নির্ভর করতে কখনো লজ্জা পেয়ো না।
সার্বক্ষণিক প্রহরীরূপে দুর্ভেদ্য প্রাচীরের মতো, আমাদের মনোনীতদের যোগ্য অভিভাবক আমরাই এখানে, দণ্ডায়মান থাকবো, যেমন ছিলাম বিগতকালেও।
(রঙ্গপুর থেকে পরিবেশিত গণকরণিকা)
##########################################
সক্রিয় জনগণের অবর্তমানে
---------------------------------------
(সচ্ছল এবং অসচ্ছলের মধ্যেকার সম্পর্কটি দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যেকার সম্পর্কটির মতো, যেখানে এক অপরকে মিত্রপক্ষ ভেবেই প্রত্যাশা করে। সচ্ছল এবং অসচ্ছলায়িতের মধ্যেকার সম্পর্কটি কখনোই সেরকম হয় না। অসচ্ছলায়িতরা যেকোনো সময়ে প্রতিশোধ নিতে পারে, সেই ভয়ে সচ্ছলেরা একা একা আতঙ্কিত আয়ুষ্কাল যাপন করে যেতে বাধ্য হয়। সচ্ছলদের জন্যে এ এক বিশাল পরাজয়।)
জনগোষ্ঠীতে জনে জনে ভিন্নতাগুলোর অহঙ্কার সমুন্নত রাখা হলে, সমস্বার্থিক সাধারণ অভিন্ন বিষয়গুলোতে একতাবদ্ধ হওয়া সহজে সম্ভব হয়ে ওঠে না। কোনো জনসমষ্টি ব্যক্তিসংখ্যার যোগফলে যত বিশালাংকের-ই হোক না কেন, পারস্পরিক সমঝোতা না থাকলে, কখনোই কেবল সংখ্যাগুণে কোথাও সক্রিয় ‘জনগণ’ বা ‘জনতা’ গড়ে ওঠে না। জনে জনে সমন্বয়হীতার সুযোগে ঐক্যবদ্ধ দলোগণ যাচ্ছেতাই করার সুযোগ পায়।
যেকোনো ভূখণ্ডে ‘নিষ্কৃয় জনগণের থাকা’ এবং ‘জনগণের না-থাকা’ সমান অর্থই বহন করে।
যেখানে জনগণ (people) আছে, কেবল সেখানেই গণতন্ত্র সংজ্ঞা অনুসারে চলতে পারে।
সচ্ছল কোনো ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠী কখনো বিপদে পড়লে সাধারণত সেখানে অসচ্ছলায়িত জনসমষ্টি থেকে কেউ সহজে তার সমব্যথী হতে পারে না।
বহু ব্যক্তিমালিকের মধ্যে কিছু ব্যক্তি নিজেদেরকে দুর্বল ভেবে কিম্বা নিজ যোগ্যতার চে’ অতিরিক্ত কিছু পাবার লোভে পারস্পরিক সহযোগিতার চুক্তিতে দলবদ্ধ হয়। ক্ষমতায় এবং শক্তিতে, ব্যক্তি শূন্যের কাছাকাছি, তবে জনগণ প্রায় অসীমের সমান, ব্যক্তি এবং জনগণের মাঝামাঝি বিভিন্ন দলগুলোর সক্রিয় অবস্থান।
দলোগণ আর জনগণ সমার্থক নয়, যদিও বিভিন্ন দলোগণ তাদের নিজেদের চাওয়াগুলোকে জনগণের চাওয়া ব’লে চালায় এবং ‘জনগণ’ শব্দটিকে আত্মরক্ষার অনিবার্যতায় দুর্ভেদ্য ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এজন্যেই যে, অনির্দিষ্ট যেকোনো সময়ে জনে জনে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিগুলোই যেকোনো বিপর্যয়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার অভিন্ন স্বার্থে ‘জনগণ’ বা ‘জনতা’ হয়ে ওঠার ক্ষমতা ধারণ করে।
##########################################
শব্দার্থ দূষণ : ০০০১ # গণতন্ত্রে ‘নেতৃত্ব’ শব্দটি অচল
------------------------------------------------------------
গণতন্ত্রে ‘নেতৃত্ব’ শব্দটি অচল। নির্বাচনের মাধ্যমে ‘নেতা বা নেত্রী’ বানানো হয় না, জনসাধারণের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যক্তিকে ‘প্রতিনিধি’ হিসেবে পছন্দ করা হয়।
গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব, নেতৃত্ব, মালিকানা সবই জনগণের, কোনো ব্যক্তি বিশেষের নয়। নির্বাচক জনগণের পক্ষ থেকে যেটুকু দায়িত্ব পায়, জনগণের প্রতিনিধি কেবল সেটুকুই পালন করে যেতে বাধ্য।
গণতন্ত্রে কোনো জনপ্রতিনিধিকে জননেত্রী, দেশনেত্রী, রাজা, মালিক, কর্তা ইত্যাদি পদবীতে ভূষিত করলে জনগণকে যেমন অপদস্থ করা হয়, তেমনি ঐ প্রতিনিধি অজ্ঞ হলে সে নিজেকে প্রভূ ভাবতে চায় এবং সে তখন জনগণকে তার শাসক হিসেবে মেনে নিতে কষ্ট পায়, জনগণের কাছে জবাবদিহি করাকে নিজের মানহানী মনে করে।
নেতা, নেত্রী, কর্তা, পতি ইত্যাদি সর্ব্বোচ্চ প্রযোজ্য শব্দগুলো কেবল দল বা গোত্রের ক্ষেত্রেই মাননীয়। নেতা, কর্তা মালিক ইত্যাদি পদভূষিত ব্যক্তিটি অধস্থনদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। তবে জনগণ হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের মালিক মানবসন্তানের সমষ্টি। জনসাধারণ বা জনগণ কোনো ব্যক্তিবিশেষ, দলবিশেষ বা গোত্রবিশেষ নয়, --তাই ‘জননেতা’ ‘দেশনেত্রী’ ইত্যাদি শব্দগুলো গণতন্ত্রে অবৈধ, অশ্লীল শোনায়।
জনগণ প্রতিনিধির কাছ থেকে কখনোই কোনো ধরনের নেতৃত্ব আশা করে না, --জনগণ তার প্রতিনিধি ব্যক্তিটির কাছ থেকে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখতে চায় এবং সেই চেষ্টায় প্রতিনিধিকে চেষ্টারত না-পেলে তাকে সরিয়ে অন্য ব্যক্তিকে প্রতিনিধি বানায়।
আমরা উন্মাদ হয়ে জনগণকে ‘ভেড়ার পাল’, ‘গোবরের পিণ্ড’, ‘ছাগলের মূত্র’ ‘আহাম্মক গর্ধব’ ইত্যাদি ব’লে ব’লে অবজ্ঞা করার চেষ্টা চালিয়ে নিজেদেরকেই কেবল অপদস্থ করতে পারি, তাতে জনগণের বিশালত্বে কোনো বিকৃতি ঘটে না। গণতন্ত্রে জনগণই রাষ্ট্রের শাসক এবং মালিক, এই মালিকানা কেউ কখনো কোনোভাবেই কেড়ে নিতে পারে না।
##########################################
দলোগণের সৎসাহসী স্বগতোক্তি
*****
‘আমি যদি জনগণকে সহ্যই করতে পারতাম, তাহলে গণতন্ত্রকেই পছন্দ করতাম এবং তোমরা আমাকে জনসাধারণের মধ্যেই দেখতে। জনগণকে আমি সহ্য করতে পারি না জন্যে, এমনকী আত্মসম্মান বিসর্জন দিতেও আমি কার্পণ্য করিনি। দলীয় বিধানকেও আমি মেনে নিতে পারি না সহজে, তবুও দলীয় বিধানের প্রতি কুর্নিশে নত হয়েছি আমি দলোগণের একজন রূপে শুধু আমার পায়ের নিচে দলকে দাবিয়ে আগামীতে একনায়কতন্ত্রে রাজা সেজে বসবার বাসনায়।’
(দলোগণের রোজনামচা থেকে সযত্নে গোপনে সংগৃহীত)
##########################################
গণতন্ত্রকে কখনো দলের ভিতরে ....
-----------------------------------------
‘উন্মাদ কেউ ঘাস-লতা-পাতা-সার-পানি-খড়-ভুসি খাইয়ে বলদকে আচ্ছামতো দুইয়ে দুগ্ধপ্রাপ্তির চেষ্টা চালাচ্ছে’ বিষয়টি যেমন হাস্যকর,- দলোগণের কাছ থেকে গণতন্ত্র প্রত্যাশা করাটা আরও অধিকতর জটিল আহাম্মকি। এমনকী, দলোগণের কাউকে পছন্দনীয় ভেবে পবিত্রতম জলে তাকে ধুয়ে নিয়ে মুছে নিয়ে প্রতিনিধিরূপে গণপরিষদে বসালেও।
গণতন্ত্র, দলোতন্ত্রেরও আশ্রয়দাতা। তবে, গণতন্ত্রকে কখনো দলের ভিতরে ঢুকতে দিলে কোনো দল-ই যে টিকে থাকতে পারে না, কিম্বা দলের বন্ধন ছিন্নভিন্ন হ’লে পরে দলের অস্তিত্বই হুমকির শিকারে পরিণত হয়, এটুকুও যারা বুঝতে পারে না, তারা এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের মাতৃজঠরে, তরল অন্ধকারে।
##########################################
গণতন্ত্রে দলোগণের মনোনয়নে দলীয় বিধান
*****
নিজেদের দলটির নীতি এবং গঠনতন্ত্রের স্বাতন্ত্র্য মেনে নিয়ে প্রত্যেক দলোগণ সম্মানিত। তবে দলের অস্তিত্বের স্বার্থেই সবগুলো দল সাধারণভাবে কিছু অভিন্ন নীতি মেনে চলতে বাধ্য, যেগুলোতে দলোগণের মধ্যে কোনো দলীয় পার্থক্য নেই। যেমন,-
### দলের সদস্যরা যে-কেউ চাইলেই তার বর্তমান দলটিকে স্বেচ্ছায় ত্যাগ করতে পারে এবং অন্য যেকোনো দলের বশ্যতা মেনে নিয়ে ঐ দলে যুক্ত হ’তে পারে। তবে, কোনো দল থেকে বিতাড়িত কোনো সদস্যকে অন্য কোনো দলের দলনেতাগণ সজ্ঞানে জেনেবুঝে তাদের দলে ঢুকতে দেয় না।
### কোনো দলের অবাধ্য কেউ ঐ দলে থাকতে পারে না। দল থেকে বহিষ্কৃত কোনো ব্যক্তি যদি স্বাতন্ত্র্য নিয়ে একা থাকার চেয়ে দলবদ্ধ থাকাকেই পছন্দ করে, তবে তাকে নিজেকেই একটা দল গ’ড়ে তুলতে হয়।
### দলভুক্ত থাকাকালে, স্বেচ্ছাচারী কেউ দলের অসম্মতিতে, দলীয় পরিচয় নিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্যে মনোনয়ন পেতে পারে না।
### দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে কোনো ব্যক্তি নিজেকে মুক্ত রাখতে না-পারলে, গণতন্ত্রের বিধানে ঐ ব্যক্তি জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করতে পারে না।
### দলীয় সম্মতি না-পেয়েই দলের কেউ জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পেলে পরে তার দল তাকে দল থেকে বের ক’রে দিতে বাধ্য হয়।
কোনো দলীয় পরিচয় বহনকালে কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের ভালোর স্বার্থে কিছু করতে চাইলেও এক-ই নিয়মে দলের অস্তিত্বের স্বার্থে ঐ ব্যক্তিকে দল থেকে তাড়ানোটাই রীতি।
### দলের অনুসারী অনুগত দলোগণের কেউ দলের সম্মতিতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হ’লে পরে, দল থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হয় না, তবে জনপ্রতিনিধিত্বের মেয়াদকালে ঐ ব্যক্তি তার দলের দায়িত্বশীল কোনো পদে থাকতে পারে না। দলীয় রীতিতেই ঐ ব্যক্তিকে তার দলীয় পদটির দায়ভার তার দলের পছন্দের অন্য কারো ওপর চাপিয়ে দিয়ে দল থেকে সাময়িকভাবে বের হ’য়ে যেতে হয়।
### গণতন্ত্রের বিধানে জনপ্রতিনিধি রূপে দায়িত্ব পালনকালে কেউ কখনো দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়াতে পারে না।
##########################################
মুক্তাঙ্গনে মুক্তভাষণ
----------------------------
আপনারাই, গণতন্ত্রে, গণমালিক জনসাধারণ।
কারোই তো অজানা নয় যে,- যেখানে যেমন জনগণ, সেখানে প্রতিনিধিরো তেমন-ই আচরণ।
নিজের কোনো দোষে অন্যকে দোষীরূপে দেখানোর চেষ্টা চালানোটা, নিশ্চয়ই অসভ্য, নির্লজ্জ কিম্বা কোনো অজ্ঞের আচরণেই শোভনীয়।
জনপ্রতিনিধিরা তো আপনাদের উপরে নয়, বরং অনেক নিচে,- গণফুৎকারেই তারা উড়ে গিয়ে দূরে ছিট্কে পড়ে। নিজে নিজে উঠে দাঁড়াবে যে,- ঐ সাধ্যটুকুও কোনো প্রতিনিধির নেই।
ভুলে যাবেন না,- সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতাও কিন্তু এই আপনারাই। ওরা তো আপনাদেরই কারো কারো সন্তান, নিকটাত্মীয়।
সাধে কি আর জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাসীদেরকে পুষতে বাধ্য হয়?
নিশ্চয়ই, আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার প্রত্যেকের আছে। প্রতিনিধিরাও আত্মরক্ষার সম-অধিকারের বাইরে নয়।
আপনারা যদি আপনাদের প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দিয়ে দিয়ে যেতে পারেন তো এটাও দেখতে পাবেন যে, সন্ত্রাসীরা তাদের আতঙ্কবাদি কীর্তিকলাপ বন্ধ রেখে অন্য সকল ভদ্র মানবসন্তানদের মতোই নিজেদের ঘরে ঘরে ফিরে যেতে বাধ্য হবে।
##########################################
প্রসঙ্গ : গণতন্ত্র (দলান্ধদের জন্যে নিবেদিত করণিকা)
*****
‘সমাজ’ কেবল কিছু জড় বস্তুর সমষ্টি নয় জন্যেই পদার্থবিজ্ঞান বা গণিতের সূত্র মেনে মেনে কখনো সমাজ চলে না বা চলতে পারে না।
যেকোনো ভূখণ্ডে ‘নিষ্কৃয় জনগণের থাকা’ এবং ‘জনগণের না-থাকা’ সমান অর্থই বহন করে।
যেখানে জনগণ (people) আছে, কেবল সেখানেই গণতন্ত্র সংজ্ঞা অনুসারে চলতে পারে।
-----------------------------------------------------------------------
‘যদি না-থাকে কোনো দল, -গণতন্ত্র অচল’- ধরণের কিছু শিশুতোষ ধারণা দলান্ধরা তাদের জ্ঞান-থলিতে ঢুকিয়ে নিয়ে, ঐ থলির মুখটা এমন শক্ত গিঁটে বেঁধে রেখেছে যে, ঐ গিঁট সহজে খোলা সম্ভব নয়।
‘আগামীতে জনসাধারণ কোন্ দলকে বেছে নিয়ে প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বভার দেবে? অমুক দলকে না-কি তমুক দলকে?’ এমন প্রশ্ন দলোমুখাপেক্ষীদের মুখেই মানানসই। তাদের কেউ কেউ ফেইসবুকেও জরিপ চালানোর চেষ্টা করে এবং পোস্ট-পোস্টার দেয়।
এ ধরণের বালখিল্য তাদের পোষ্টগুলোর দুর্বলতা এখানেই যে, দলসর্বশ দলোগণ ছাড়াও তো অনেক কিছুই থাকতে পারে, অথচ সেগুলোকে তারা বিবেচনায় রাখতে পারে না।
যেমন, ‘স্বতন্ত্র’ বা ‘এক-এগারো’ বা ‘আত্মরক্ষা বাহিনী’ কিম্বা নাটোরের মতো চাঁদাখোর নিয়ন্ত্রণে কোনো ‘বাঁশি লাঠি রেডি’ মার্কা কিছু যে থাকতেও পারে এবং পছন্দকারী গণমালিকেরা সেগুলো থেকেও তো পছন্দ করতে পারে, এবং নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরকে বেছে নিয়ে তাদের ওপর প্রতিনিধির দায়িত্ব পালনের দায়ভার চাপিয়ে দিতে পারে,- দলান্ধরা কখনোই তা’ ভাবতেও পারে না তাদের চেতনা-থলির শক্ত গিঁট এবং জ্ঞানের অন্ধত্বের কারণে। ফলে, ‘দলোগণীয়’ জরিপকালে অনেক কিছুই দলান্ধ দলোগণের গনণার বাইরেই থেকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
##########################################
অত সহজে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি .. ..
-------------------------------------
কোনো দলীয় নীতিমালাতে এমন কোনো নিয়ম বা বিধান নেই যে, জেনে বুঝে দলীয় বিধানে কোনো প্রতারককে দলে দলভুক্ত ক’রে নিতে পারবে কিম্বা দলোগণের মধ্যে এমন কোনো ব্যক্তিও নেই যে, সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় দলভুক্ত ঐ ব্যক্তিটি প্রতারকদের তালিকাভুক্ত রূপে নিজেকে দেখতে চায়।
দলোগণ যদি গণতন্ত্র বুঝতো, তাহলে অত সহজে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি মুখে উচ্চারণ করতে পারতো না।
##########################################
গণতন্ত্রকে সাদামাটাভাবে উদার মনে হ’লেও--
--------------------------------------------------
রাজতন্ত্রে, এমনকী বিজয়ী রাজার কাছ থেকেও পরাজিত কোনো রাজা একজন রাজার প্রাপ্য মর্যাদাটুকু প্রত্যাশা করতে পারে সসম্মানে। তবে, গণতন্ত্রে, অমন উদারতা প্রদর্শনের সুযোগ রাখার নিয়মটাই নেই।
গণতন্ত্রকে সাদামাটাভাবে উদার মনে হ’লেও, কারো কারো জীবদ্দশায় প্রত্যক্ষজ্ঞানে ঐ গণতন্ত্রকেই নিষ্ঠুরতমের চেয়েও বেশি কিছু মনে হওয়াটাও স্বাভাবিক।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী যে ব্যক্তিটি গণতন্ত্রের আঘাত সহ্য ক’রেও টিকে থাকতে পেরেছে, সে-ই জানে গণতন্ত্রের শিকারে পরিণত হওয়ার বিড়ম্বনা। অন্যকে বোঝাতে না-পারলেও, সে নিশ্চিতভাবেই জানে, - গণতন্ত্রে কখনো এখানে কেউ রাজা সাজতে চাইলে, তার দুর্ভোগের অবর্ণনীয় দশা সে তো জানে এবং জানা অর্থে যথার্থেই সে জানে।
কেবল অসভ্য জনগোষ্ঠীতেই অজ্ঞদের ওপর ধুরন্ধর কিম্বা বিচক্ষণ কেউ যদি চায় তো সাময়িকভাবে রাজাগিরি ফলাতে পারে। তবে গণতন্ত্রে, প্রত্যেকেই সাধারণ, প্রত্যেকে সম-মর্যাদায় সম-অধিকারে ‘সদস্য’ অর্থাৎ ‘সভ্য’ হিসেবেই বিবেচিতরূপে গণ্য।
গণতন্ত্রে, উচ্চাকাঙ্ক্ষী কেউ রাজাও হ’তে পারে না, জনসাধারণের সাথে মিশে সম-গতিক হয়ে চলতেও পারে না, সে এক ভীষণ তামাশার ঘোরপ্যাঁচে পড়ার দশা!-- গণতন্ত্রের গণমালিকদের মতো সাধারণ কেউ নয় সে তখন, রাজতন্ত্রের কোনো প্রজাও নয়, সে কেবল মানবসন্তান জন্যে তাকে দেখতে কিছুটা মানুষের মতো সাধারণ মনে হ’তে পারে,- স্বভাবে আচরণে প্রকাশমান সেয়ানা সে যেন তখন উদ্ভট একটা মানবাকৃতির হাস্যজনক প্রাণী, উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রায়শ্চিত্তে রত উদ্ভ্রান্ত কোনো আজব জীব।
##########################################
*****
কেউ জানে না তা’ নয়, বরং, অনেকেই অনেক বেশি জানে। কেউ-বা প্রকাশ করে, কেউ বা করে না,- এতটুকুই পার্থক্য। তারাই প্রকাশ করে, যারা জানে না যে, অন্যেরাও জানে। তারাই প্রকাশ করতে চায় না, যারা বিজ্ঞ সেজে থাকাকেই বেশি পছন্দ করে।
গণকরণিক : আখতার২৩৯
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৪:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি মনে হয়, সক্রেটিসের পরে, একমাত্র ব্যক্তি যিনি "গণতন্ত্রের জনক" বলে দাবী করা উচিত।