| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল টিভির খবরে বিজ্ঞজনেদের আলোচনা দেখলাম ভূমিকম্প বিষয়ক। একজন উপদেষ্টা অমূল্য কথা বললেন, "আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আমাদের এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।"
ঢাকাবাসী ব্যক্তিগতভাবে কীভাবে সচেতন হবেন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে, সে বিষয়ে উপদেষ্টা ম্যাডাম কিছু বলেন নি।! তিনি বললেন, "পুরানো ঢাকার শতকরা ৯০ ভাগ বাড়ি বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি করা হয়নি। এগুলো ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাবার ঝুঁকিতে আছে।"
এটা আমরা জানি। আরও জানি, কেবল পুরানো ঢাকা না, পুরো ঢাকাতেই অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে। নির্মাতারা ভূমিকম্প সহনশীল করে বাড়ি তৈরি করেন না অর্থ বাঁচানোর জন্য, আবার রাজউক এইসব অবৈধ বাড়ি অনুমোদন করে অর্থের বিনিময়ে। তাই ঢাকা শহরের আমরা প্রায় সবাই ঝুঁকিতে আছি, কেবল মিন্টো রোডের দোতলা বাড়ির অধিবাসীরা ছাড়া। গতকালের পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতি তেমন হয়নি, এটা দেখে স্বস্তি পাবার কিছু নেই!! এমন ছোট ছোট ভূমিকম্প এখন প্রায়ই হচ্ছে, এগুলো সঙ্কেত দেয় যে একটা বড় ভূমিকম্প আসছে! বিগত বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরে ঘটা এমন ভূমিকম্পের সংখ্যা তার আগের বছরের সংখ্যার চাইতে বেড়ে যাচ্ছে। রিখটার স্কেলে ১ মাত্রা বাড়লে ভূমিকম্পের শক্তি প্রায় ৩২ গুণ বাড়ে, আর ২ মাত্রা বাড়লে শক্তি প্রায় ১০০০ গুণ বাড়ে! তাই কেবলমাত্র সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেই সেটা হবে অনেক শক্তিশালী আর অনেক ধ্বংসাত্মক।
বুয়েটের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেছেন, ঢাকা থেকে একশো কিলোমিটার দূরত্বের এপিসেন্টারে সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ঢাকার এক তৃতীয়াংশ বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে পড়বে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে তিনি কিছু ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথমে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা ভবন চিহ্নিত করা, তারপর সেগুলোকে ভূমিকম্প সহনশীল করা। এই ধরণের কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে আমাদের, রানা প্লাজা ধ্বংসের পর নিরাপদ ভবন চিহ্নিতকরণে পঞ্চাশটা কোম্পানির কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। ভবনের নিরাপত্তা পরীক্ষার পর পুরো নিরাপদ ভবনকে সবুজ, মোটামুটি নিরাপদ ভবনকে হলুদ এবং ও নিরাপদ ভবনকে লাল রঙের প্লাকার্ড দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। লাল চিহ্নিত ভবনগুলোর বসবাসরতদের ভবন থেকে সরিয়ে ভবনগুলোর কাঠামো উন্নয়ন করা হয় যাতে সেগুলো ভূমিকম্পে নিরাপত্তা দিতে পারে। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য সারা বিশ্বে এটা একটা স্বীকৃত পদ্ধতি। ২০১৫ সালে বিশ্ব ব্যাংক রাজউককে অর্থায়ন করে এই বিষয়ে কাজ করার জন্য। এ কাজ করার জন্য রাজউক নয়, বরং আলাদা একটা ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। সেই ইনস্টিটিউটের জন্য দশতলা একটি ভবনও নির্মিত হয়, ৮০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতিও কেনা হয়, কিন্তু তারপর সবকিছু স্থবির হয়ে যায়। গত দশ বছরে এই ব্যাপারে কোন কাজ হয়নি। অদ্ভুত ব্যাপার।
অধ্যাপক আনসারী বলছেন, অবিলম্বে তিনটি কাজ শুরু করতে হবে যেন ভবিষ্যতে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়:
১) ভূমিকম্পের ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করে তিন ক্যাটাগরির ভবন চিহ্নিতকরণ, যেটা করার প্রশিক্ষিত লোকবল আছে আমাদের।
২) রাজউক নয়, বিশ্ব ব্যাংকের সুপারিশ করা ইনস্টিটিউট চালু করা, যাতে তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারে।
৩) ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ করতে দেশের স্থপতি এবং প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করতে হবে।
আরেকটা জিনিস উল্লেখ করি, প্রতিবছর ঢাকার ভূমি ৩.৫ মিলিমিটার করে দেবে যাচ্ছে (তথ্যসূত্র দিয়ে আমার একটা পোস্ট আছে)view this link। কারণ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির উত্তোলন বেড়ে চলেছে, আবার এই বাড়তি জনগোষ্ঠীর জন্য বেশি বেশি ভবন নির্মাণের ফলে উন্মুক্ত ভুমি ঢেকে যাচ্ছে কংক্রিটে, ফলে বৃষ্টির পানি দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রিচার্জ হচ্ছে না, তাই ভূমির অবনমন হয়ে চলেছে। এটা ভূমিকম্পের সময় ক্ষয়ক্ষতি বাড়িয়ে দেবে। জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ এবং ভূমি যেন আরও কংক্রিটে না ঢাকে তেমন ব্যবস্থা নিলেই ভূমির অবনমন ঠেকানো যায়, কিন্তু এমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং ঢাকার জনঘনত্ব বাড়ানোর এবং আরও দালান নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে সম্প্রতি।
বলা হয়, ঢাকায় বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলেই town in inferno হয়ে যাবে (Towering inferno সিনেমাটা যারা দেখেছেন তারা বুঝতে পারবেন)। কারণ ঢাকার মাটির নিচে দিয়ে জালের মতো ছড়িয়ে আছে গ্যাস পাইপলাইন, এগুলো ফেটে একজায়গায় আগুন ধরলেই মূহুর্তে ছড়িয়ে যাবে পুরো শহরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এটাও নিরোধ করার উপায় আছে। এজন্য একধরনের মেশিন ব্যবহার করা যায়, যা মাটির নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে এবং কম্পাঙ্ক নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলেই গ্যাস সারবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। এর ফলে আগুনের থেকে শহর বাঁচবে। সমস্যা হচ্ছে, যাঁরা এটা বাস্তবায়ন করতে পারেন তাঁরা এটা করছেন না!!
আমার দুটো পোস্ট আছে ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নিয়ে। সেখানে বলা হয়েছে যে ঢাকায় এমন অপরিকল্পিত ভাবে দালানকোঠা তৈরি করা হয় যে অনেক ভবনেই অগ্নিকাণ্ড হলে নির্বাপক গাড়ি পৌঁছাতে পারবে না।
এমন ভূমিকম্পের ঝুঁকিময়তা এবং অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিময়তা যাতে আর না বাড়ে সেজন্য রাজউক ২০১০ সালে ড্যাপ নামে এমন একটি পরিকল্পনা করে যাতে বলা হয়েছিল ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা যেমন পুরনো ঢাকায় নাগরিক সুবিধা বজায় রাখার জন্য জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পুরোনো ঢাকার মতো এরকম নির্দিষ্ট কিছু এলাকার জন্য ভবনের উচ্চতা নির্দিষ্ট করে দেয়া ছিল, যেমন পুরনো ঢাকার সাত ফিট রাস্তা সংলগ্ন বাড়ির উচ্চতা হতে পারতো বড় জোর পাঁচ তলা। অথচ সম্প্রতি (১৯ অক্টোবর, ২০২৫) ড্যাপ সংশোধন করে ভবনের উচ্চতার এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়েছে, এখন পুরানো ঢাকার সরু গলিতেও ১০/১১ তলা ভবন তৈরি করা যাবে। বলা হচ্ছে, বেশি মানুষকে আবাসন সুবিধা দেবার জন্য এখন ঢাকা নগরীকে উপর দিকে বাড়ানো হবে। মূলত আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপে রাজউক এই নিয়ম করেছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন এর ফলে যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন হয়ে যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বাদ দিলেও, রাজউকের এই পরিকল্পনার ফলে বেড়ে যাবে যানজট, বায়ুদূষণ, জলাবদ্ধতা। এরপর ভূমিকম্প এবং সাথে অগ্নিকাণ্ড হলে কী হতে পারে তা অনুমান করা কঠিন!
ড্যাপ বা ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানিং নামক উদ্ভট পরিকল্পনা সম্পর্কে ডিটেইলে বলতে পারলাম না লেখা বড় হয়ে গেছে দেখে। এটুকুই বলি, আমি অবাক হলাম দেখে যে রাজধানীকে দুর্যোগের মধ্যে ফেলে দেবার এই সংশোধিত ড্যাপকে অনুমোদন দিলেন আমাদের পরিবেশ উপদেষ্টা!!!
তথ্য সূত্র: ১) দ্বিগুণেরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ দিয়ে ড্যাপ সংশোধন, ঢাকার বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
বাংলাদেশ view this link
২) আকাশছোঁয়া ভবনে ছেয়ে যাবে ঢাকা। view this link
২|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৮
জুন বলেছেন: করুনাধারা অনেক কষ্ট করে লেখাটি লিখেছো। বহু বছর ধরেই শুনে আসছি বড় একটা ভুমিকম্প হলে আমাদের দেশের বিশেষ করে ঢাকা শহরের কি অবস্থা হিবে। তারপর ও আমাদের চৈতন্যদয় হয় না। বেআইনী ভাবে কি ভাবে কোন দিক দিয়ে আধা হাত বাড়ানো যায়? সানসেটের উপরে একটা খুপরি বানিয়ে ভাড়া দেয়া যায় এটাই আমাদের চিন্তা। প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া মনোমালিন্য কিন্ত বাড়ী বানানোর সময় তার সাথে গা ঘেষাঘেষি করতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নাই। কিছু কিছু বাড়ি দেখলে মনে হয় জোড়া বাড়ি।
যাইহোক এই মাত্র পড়লাম বাংলাদেশ বার্মা প্লেট, ইন্ডিয়ান প্লেট আর ইউরেশিয়ান প্লেটের উপর দন্ডায়মান। আমাদের মনে রাখতে হবে এই প্লেট নড়াচড়া করে খাবার পরিবেশন করবেনা করবে ৮ মাত্রার ভুমিকম্পের সৃষ্টি।
আল্লাহ জানে ভাগ্যে কি আছে। গতকাল তো আমার পেন্সিল সদৃশ্য বুয়া আমাকে জাপটে ধরে আল্লাগো মাগো মাবুদগো করে চিল্লায়া বাড়ি মাথায় করছে। আট মাত্রা দূরে থাক ৬ হলেই সবার চিল্লানো চিরতরে বন্ধ। তবে দোয়া কইরো যেন স্ল্যাব চাপা পড়ে উদ্ধারের আশায় পরে না থাকি। সাথে সাথেই যেন মৃত্যু হয়। কারণ আমাদের উদ্ধার করার ব্যবস্থা সেই রকম।
অনেক আজাইরা প্যাচাল পারলাম, আশাকরি কিছু মনে করবে না। ভুমিকম্প আমার আউলানো মাথাটা আরও আউলায় দিয়ে গেছে। সারাক্ষণ মনে হচ্ছে নৌকায় বসে আছি
ভালোলাগা রইলো ![]()
৩|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৭
মেঠোপথ২৩ বলেছেন:
আপু, খুব ভাল পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ভবিষ্যতের সরকার সেগুলো বাস্তবায়ন করবে তেমন আশা করতেও ভয় লাগে। এই দেশে যে যায় লঙ্গকায় সেই হয় রাবন। আপাতত উপড়ের ছবিটার দেখুন। জাপানে একে বলে বেস আইসোলেশন । বিল্ডিংকে মাটির সাথে শক্ত করে না বাঁধা, তার নিচে শত শত বিশেষ রাবার-লেডের বেয়ারিং বসানো হয়। ভূমিকম্প এলে মাটি যত জোরে কাঁপে, উপরের বিল্ডিংটা ততটা কাঁপে না – শুধু ধীরে ধীরে দোলে। ফলে ভেতরের মানুষ, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি – সবই প্রায় অক্ষত থাকে। জাপানের প্রতিটি নতুন টাওয়ার, বিল্ডিং , হাসপাতাল, স্কুল, ডেটা সেন্টারে এই সিস্টেম বাধ্যতামূলক। এমনকি ৪০-৫০ বছরের পুরোনো ভবনগুলোকেও কেটে-কেটে এই সিস্টেম বসিয়ে নতুন করে বাঁচিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জাপান আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ভবনেও বেস আইসোলেশন স্থাপন করেছে।। রূপপুর নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট, মেট্রোরেলের কিছু স্টেশন, কয়েকটা নতুন টাওয়ারে এই একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে যার বহুতল বিল্ডিং এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে এই প্রযুক্তি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে।
৪|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৯
মেঠোপথ২৩ বলেছেন:
আহকাল হাইরাইজ বিল্ডং এর নীচতলাটা কার পার্কিং এর জন্য ফাকা থাকে। এই ফাকা স্থানেই এই প্রযুক্তি প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
৫|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০৭
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ২০১৫ সালে বিশ্ব ব্যাংক রাজউককে অর্থায়ন করে এই বিষয়ে কাজ করার জন্য। এ কাজ করার জন্য রাজউক নয়, বরং আলাদা একটা ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। সেই ইনস্টিটিউটের জন্য দশতলা একটি ভবনও নির্মিত হয়, ৮০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতিও কেনা হয়, কিন্তু তারপর সবকিছু স্থবির হয়ে যায়। গত দশ বছরে এই ব্যাপারে কোন কাজ হয়নি। অদ্ভুত ব্যাপার। ব্যাপারটা আপনার কাছে অদ্ভুত লাগলেও আমার কাছে লাগছে না। ভবন নির্মান আর যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে, লুটপাট আর কমিশন বানিজ্য হয়েছে। কাম খতম, পয়সা হজম!!!!
অথচ সম্প্রতি (১৯ অক্টোবর, ২০২৫) ড্যাপ সংশোধন করে ভবনের উচ্চতার এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়েছে, এখন পুরানো ঢাকার সরু গলিতেও ১০/১১ তলা ভবন তৈরি করা যাবে। বলা হচ্ছে, বেশি মানুষকে আবাসন সুবিধা দেবার জন্য এখন ঢাকা নগরীকে উপর দিকে বাড়ানো হবে। মূলত আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপে রাজউক এই নিয়ম করেছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন এর ফলে যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন হয়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন হলে হোক না!!! ঘুষ আর দূর্নীতি বানিজ্য যারা করে, তাদের কি আসে যায়?
এই জাতির দুর্ভাগ্য যে, তারা কোন দেশপ্রেমিক শাসক পায় নাই। আমাদের শাসকরা চেতনার আফিম খাইয়ে গত ৫৫ বছর দেশ শাসন করেছে। তাই আমরা আজও চেতনার ব্যবসায়ীদের চেতনার দন্ড নিয়ে নাড়াচাড়া করে দিনাতিপাত করছি। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথ্যা নাই। কে রাজাকার আর কে দেশপ্রেমিক, কে ভারতের আর কে পাকিস্তানের দালাল, এসবই আমাদের বিবেচ্য বিষয়।
একটা বড় ভুমিকম্প হয়ে সব ধ্বংস হয়ে যাক। কার কি আসে যায়? তার আগ পর্যন্ত অবৈধ সম্পদ অর্জনই মুখ্য বিষয়।
৬|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
উপস্থাপিত লেখাটি ঢাকার ভূমিকম্প সংক্রান্ত ঝুঁকি, নগর পরিকল্পনার দুর্বলতা এবং সাম্প্রতিক ড্যাপ (ডিটেইল্ড এরিয়া
প্ল্যান) সংশোধনের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক সুন্দর করে তুলে ধরেছে। আপনার বক্তব্যে থাকা
সতর্কতা সমুহ প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক ধারণা এবং বিশেষজ্ঞ মতামতের ওপর ভিত্তি করে দেয়া হয়েছে ।
তবে বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়নের জন্য কয়েকটি দিক আলাদা করে দেখা জরুরি বলে মনে করি ।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাস্তব এবং প্রমাণসমর্থিত, কেননা ঢাকা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত এটি ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র,
গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে বহুবার উঠে এসেছে।
বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মাণের ব্যাপকতা সত্যিই একটি বাস্তবস সমস্যা । রিখটার স্কেলে মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে শক্তির
বহুগুণ বৃদ্ধি বিজ্ঞানসম্মত তথ্য। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের
মতামত দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় আছে কিন্তু গরুত্ব পাচ্ছেনা ।
এখানে আপনি মূলত সাধারণ মানুষকে হুঁশিয়ার করছেন, তবে একই সঙ্গে এটা সত্য যে নাগরিক পর্যায়ে প্রস্তুতির
সীমা খুবই সংকীর্ণ এটির প্রতিও আরো গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি ।
ভবন মূল্যায়ন, রেট্রোফিটিং এবং প্রশাসনিক স্থবিরতা বিষযটিগুরুত্বপুর্ণ একটি দিক ।
লেখাটিতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়িত ভবন মূল্যায়ন প্রকল্পের কার্যক্রম স্থবির হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ঝুঁকি নিরূপণ. ট্রোফিটিং আর নিরাপদ ভবন চিহ্নিতকরণ
এই তিনটি বিষয়ই আন্তর্জাতিক ভূমিকম্প ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মূল স্তম্ভ।
ইনস্টিটিউট তৈরি হলেও কার্যক্রম বন্ধ থাকা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রশাসনিক অদক্ষতার ইঙ্গিত দেয়।
নীতিনির্ধারকদের কাছে এ বিষয়ে আরও প্রমাণ-সংবলিত জবাবদিহি প্রয়োজন।
ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং ভূমি দেবে যাওয়া তথ্যসমর্থিত ।
ঢাকার ভূমি দেবে যাওয়ার হার এবং তার কারণ সম্পর্কে উল্লেখিত তথ্য আন্তর্জাতিক গবেষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
লেখাটিতে বিষয়গুলো উপস্থাপিত হয়েছে সংকট ঘোষণার মতো করে। আমার কাছে মনে হয় বিকল্প সমাধান
(যেমন রিচার্জ ওয়েল, স্টর্মওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, স্যাটেলাইট শহর তথা উপশহড় উন্নয়ন এখন গুতুত্ব
পাওযার দাবী রাখে , পারলে রাজধানীকে বিকেন্দ্রিকরণ আশু প্রয়োজন।
গ্যাসলাইন বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাস্তব । ভুমিকম্পের সময় ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য।
সস্যাটি সমাধানে একাধিক সংস্থার সমন্বয় প্রয়োজন যা বাস্তবিকপক্ষে দীর্ঘমেয়াদি নীতি।
ড্যাপ সংশোধনে পলিসি বিশ্লেষণের দৃষ্টিকোণ থেকে যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন। পুরনো ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও
অগ্নিপ্রবণ এলাকায় উচ্চতর ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলেই ঝুঁকি বাড়বে এটি শহর পরিকল্পনার মৌলিক নীতি।
তবে পোস্টে ড্যাপ সংশোধনের বিরোধিতা যুক্তিযুক্ত হলেও, রাজধাণিতে আবাসন সংকট, ঘনবসতির কেন্দ্র
থেকে মানুষকে স্থানান্তর না করার বাস্তব সমস্যা বহুমাত্রিক হতে পারে ।
শহরের উচ্চতা বৃদ্ধি বনাম প্রান্তিক হরাই জন্টাল বিস্তারের নীতি এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে একটি তুণনামুলক
মূল্যায়ন লেখাটিকে আরো সমৃদ্ধ করত বলে মনে করি ।।
নীতিনির্ধারণে একাধিক স্বার্থ ( vested interest ) জড়িত এটিও বিবেচনার দাবিদার।
পোস্টের লেখাটির সামগ্রিক বক্তব্য যৌক্তিক সতর্কতাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে ।
লেখাটি তাই সংস্লিষ্ট কতৃপক্ষসহ পাঠককে সচেতন করতে অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে
শুভেচ্ছা রইল
৭|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৫৯
আরোগ্য বলেছেন: কোরআনে আগেরকার কাফেরদের আচরণ দেখবেন, তাদের আজাবের ভয় দেখালে বলতো, কই কোন তো আযাব দেখছি না অতঃপর হুট করেই একদিন সব শেষ হয়ে যায়। গতকাল আর আজ সন্ধ্যায় ভূকম্প অনুভব করে দুদিন ধরে এই বিষয়টিই মনে হচ্ছে। আমাদের পুরান ঢাকাবাসীদের আচরণও একই। দশক বছর আগে থেকেই ভূমিকম্পের সতর্ক বার্তা দেয়া হচ্ছে কিন্তু কারো কোন পাত্তা নেই। তিন তলার ফাউন্ডেশনে কয়তলা যে গড়ে তার হিসাব কে কাকে দেয়। অধিকাংশ বাড়ির মাঝে কোন স্পেস নেই। বংশালের যে দুর্ঘটনা তা একটা সতর্কবাণী যে এমন পরিবেশে দৌড়ে নিচে নামতে চাওয়াও বিপদ। আমার অভিজ্ঞতা মতে এটাই পুরান ঢাকার সবচেয়ে ঘিঞ্জি এলাকা। জ্যামে বসে থাকলেও ভারী অসহ্য বোধ হয়। কি পরিমাণ অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা আর সরু গলি কিন্তু এসব এলাকার মানুষদের আবার বেশ গর্ব। এরা খাস ঢাকাইয়া, নিজেদের বাড়ি থাকলেই এরা নিজেদের জমিদার ভাবে । সত্যি যদি কোন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয় বাজেয়াপ্ত ঘোষণা ছাড়া কিছু করার থাকবে না। অপরপক্ষে রাজউকের কোন ভ্রুক্ষেপ আছে বলে মনে হয়। রাস্তাঘাটে বিশ্রী অবস্থা। আমার এক আত্মীয় বলে রিকশায় চড়লে মনে হয় মুড়ির ডিব্বায় ভরে মুখ বন্ধ করে কেউ ঝাঁকাচ্ছে। আর আমার মনে হয় আমরা হয়তো গবাদি পশু যার কারণে সরকার পুরান ঢাকার দিকে নজর দেয় না।
জানিনা ভাগ্য কি আছে তবে ঈমান নিয়ে মরতে পারলেই এই জীবনের সার্থকতা। আবার ব্লগে কোন মন্তব্য করার সুযোগ পাবো কি না কে জানে। আল্লাহ সবার সহায় হোন।
৮|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৪৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,
সচেতনতামূলক একটি পোস্ট। কিন্তু হায়রে! ওসব ভাবার সময় আছে কার বা কোন কর্তৃপক্ষের ? জনঘনত্ব কমাবেন কি ভাবে? ঢাকার রাস্তাঘাটের প্রশস্ততা আর ঘরবাড়ীর যে গাদাগাদি অবস্থা সেখানে কোন প্রযুক্তি কাজে লাগবে? একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেলে উদ্ধারকাজ চলবে কিভাবে? ঢাকা তো 'সমস্ত সতর্কতার উর্দ্ধে!!!!!!!!!!!
দৃষ্টি আকর্ষণঃ ভবনের নিরাপত্তা পরীক্ষা করে রঙিন প্লাকার্ড দেয়ার কথা যেখানে বলেছেন সেখানে মনে হয় খানিকটা ত্রুটি রয়ে গেছে "স্লিপ অব কী' এর কারণে। এইখানে -
..... হলুদ এবং ও নিরাপদ ভবনকে লাল রঙের..... আন্ডারলাইন করা শব্দটিতে "অ["/sb] অক্ষরটি অনুপস্থিত।
যদিও বুঝতে অসুবিধে হবার কথা নয় তবুও এমন একটি সূললিত লেখায় এটুকু ত্রুটি থাকাও কাম্য নয়।
৯|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫২
শায়মা বলেছেন: কোথায় কি করতে হবে, হয়ত তাতে বিপদ কমবে কিন্তু কালকে আমি চোখের সামনে যে কেয়ামতের আলামত দেখেছিলাম সেই দৃশ্য ভুলতেই পারছি না আপুনি।
কয়েকদিন ধরে চির পরিচিত আমি আর আমি নেই অসুখ বিসুখে বিপর্যস্ত হয়ে আমি এমনিতেই বিষন্ন হয়ে পড়ছিলাম। তারই মাঝে গতকাল যখন আচমকা ভূমিকম্প নামক দানব এসে পুরা বাড়িটাকে ধরেই ঝাঁকুনি দিলো তখন একেবারেই হতবিহ্বল ছিলাম আমি। কোথাও যাইনি, একটুকুও দৌড়াইনি। চোখে আঙ্গুল চাপা দিয়ে বসেছিলাম। ভাবলাম সব শেষ হয়ে গেলো। থামার অনেক পরে চোখ মেলে জানালা দিয়ে দেখি ছোট ছোট বাড়িগুলি টিকে আছে.......
তখন বুঝলাম আমি এখনও বেঁচে আছি।
এই দানবকে আমি এখনও ভুলতেই পারছি না .....
১০|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১২
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার পোষ্টটি গুরুত্বপূর্ন্য, ঢাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হবার সম্ববনা আছে। ঢাকায় অতিরিক্ত মানুষ আর অপরিকল্পিত বিল্ডিং বহু মানুষের জীবন নাষের কারন হতে পারে ভূমিকম্প হলে, এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।
১১|
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৩৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
সবাই বৃহত্তর স্কেলে ভাবছেন।
পরিবারগুলো নিয়ে কেউ চিন্তা করছেন না।
মানুষ বাঁচাতে কি কি করনীয়, পরিবারগুলো এই সীমিত সম্পদ আর অশেষ সীমাবদ্ধতা নিয়ে কি করতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন।
১২|
২৩ শে নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:১৮
মলাসইলমুইনা বলেছেন: প্রিয় ব্লগার করুনাধারা,
(নিচের মন্তব্যটা কপিপেস্ট করলাম আমার লেখা থেকে।আশাকরি কিছু মনে করবেন না ):
ভূমিকম্প বা এর প্রিপারেশন নিয়ে আপনার লেখাটা চমৎকার। আপনার গুণী লেখাগুলো ব্লগের গুনগত মানকে একটা স্টেপ হলেও উপরে নিয়ে যায় সব সময়ই।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৫
শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার পোস্ট দেখে খুব ভালো লাগলো। প্রয়োজনীয় বিষয়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে আমাদের কী করতে হবে তা জানা এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু করাটা নিতান্তই জরুরি।