নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো –অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে! স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়, হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়! আমি তারে পারি না এড়াতে, সে আমার হাত রাখে হাতে; সব কাজ তুচ্ছ হয়,-পণ্ড মনে হয়। -জীবনানন্দ দাশ

কুশন

আমার জন্ম ফরিদপুরের সালতা গ্রামে। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। আমার বাবা একজন কৃষক। বাবার সাথে বহুদিন অন্যের জমিতে কাজ করেছি।

কুশন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বালক টারজান

০৬ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩



জীবন সব সময় একরকম থাকে না। সময়ের সাথে সাথে সব বদলে যায়। বদলে যাওয়াই মানব জীবনের অংশ। জীবনের মোড় কখন ঘুরে যায় কেউ জানে না। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রচন্ড শীতে এক বালক রাস্তা দিয়ে একাএকা হাঁটছে। বালক জানে না তার বাবা কে, মা কে? ক্ষুধা পেলে একটা খাবার দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে কেউ কেউ তাকে- ফেলে দেওয়া খাবার খেতে দেয়। বালকটি মানুষের নষ্ট করা খাবার এক আকাশ আনন্দ নিয়ে রাস্তার পাশে বসে খায়। খাওয়ার সময় বালকটিকে অনেক আনন্দিত দেখা যায়। এই বালক একদিন দেশের মন্ত্রী হয়।

বালকটির কোনো নাম নেই। যে বালকের বাপ মায়ের ঠিক নাই- ঘটা করে কে আবার সেই বালকের নাম রাখে। তাই বালক নিজেই নিজের একটি নাম দেয়। টারজান। টারজান নাম দেওয়ার পেছনে কারন হলো- সে খুব সহজেই যে কোনো গাছে লাফ দিয়ে উঠতে পারে। এক গাছ থেকে আরেক গাছে যেতে পারে। এই কাজটি করতে তার কোনো ভয় হয়না। একদিন এক মহৎ শিক্ষকের সাথে বালকের দেখা হয়। সেই শিক্ষক বালককে বলে তোমাকে আমি খাবার দিতে পারবো না। কারন আমি দরিদ্র মানুষ। কিন্তু আমি তোমাকে শিক্ষা দিতে পারব। সেই শিক্ষক বালককে পড়াতে শুরু করে।

দেশ ভাগ হয়ে গেল, ইংরেজরা বিদায় নিলো, ভাষা নিয়ে যুদ্ধ হল, মুক্তিযুদ্ধ হল, এরশাদের পতন হলো। বালক টারজান তার কিছুই জানল না, বুঝল না। টারজান এর সব চিন্তা- শুধু তিনবেলা খাবার সংগ্রহে। এবং সন্ধ্যায় মাস্টারের কাছে পড়তে বসতে হবে। ইদানিং টারজানের সাথে একটা কালো রঙের কুকুর যুক্ত হয়েছে। ছোট বাচ্চা একটা কুকুর। টারজান বাচ্চা কুকুরটার নাম রেখেছে কাল্লু। কুকুরটা দেখতে কুচকুচে কালো রঙের, তাই নাম রাখা হয়েছে কাল্লু। কাল্লু সারাদিন টারজানের পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করে। কাল্লুর উপর মায়া পড়ে গেছে টারজানের। টারজান সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে- কাল্লুকে সে পালবে। অনেক বড় করবে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এই বালক এখন দেশের একজন মন্ত্রী। সংসদভবনে কঠিন বক্তব্য দেয়। তবে এই বালক অন্যসব মন্ত্রী এমপিদের মতো দূর্নীতিবাজ নয়। তার যা দায়িত্ব উনি সঠিকভাবে পালন করেন। এই করোনার সময়ে কোনো মন্ত্রীকে দেখা যায় না। অথচ তিনি তার অঞ্চলে গিয়ে গরীব দুঃখীদের সাহায্য সহযোগিতা করছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকজনদের করোনা সম্পর্কে জ্ঞান দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি নিজ উদ্যোগে ত্রিশ হাজার মাস্ক বিলি করেছেন। নিজে চেয়ারে বসে না থেকে এবং করোনার ভয়ে ঘরে বন্ধী না থেকে- নিজে সরকারী সাহায্য দরিদ্র মানুষদের বিলিয়েছেন।

এই মন্ত্রী প্রেম করে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ভালো রবীন্দ্রসংগীত গায়। তাদের কোনো সন্তান নেই। এই মন্ত্রী দেশের টাকা দিয়ে কখনও বিদেশ যায় নি। এমন কি সরকারি বাসভবনেও থাকেন না। সে কোনো পুলিশ গার্ড নেয় না। তার সততার কারনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাকে খুব পছন্দ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রায়ই নিজের বাসায় দাওয়াত করেন। আসলে সৎ মানুষকে সবাই ভালোবাসে, সম্মান করে। এমন কি একজন অসৎ ব্যাক্তি পর্যন্ত সৎ মানুষকে শ্রদ্ধা করে। এজন্য জীবনে সৎ থাকার মধ্যে আনন্দ আছে। কোনো ভয় থাকে না। টেনশন থাকে না। জীবন হয় আনন্দময়। দুশ্চিন্তা মুক্ত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.