নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শৃঙ্খল ভাঙার কবি নিজেই বাঁধা পড়লেন শৃঙ্খলে !

৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮


বরের মাথায় সাদা চাদর দিয়ে পাগড়ি বাঁধা। কন্যার দেশের বাড়ি কুমিল্লায়। ধর্মে হিন্দু। নাম শ্রীমতি আশালতা সেনগুপ্তা দুলী। বিবাহ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মুসলিম পাত্রের সঙ্গে। কোলকাতার ৬ নং হাজী লেনের একটি বাসায় বাদ জুমা বিবাহের আয়োজন।
হিন্দু-মুসলিমে সিভিল-ম্যারেজ হতে পারে, তবে সিভিল-ম্যারেজ আইন অনুযায়ী বর-কনে উভয়কেই এই বলে স্বীকৃতি দিতে হয় যে, `আমি কোনও ধর্ম মানি না।`
কিন্তু পাত্র এই স্বীকৃতি দিতে নারাজ। তার কথা হলো, `আমি মুসলমান। মুসলমানি রক্ত আমার শিরায় শিরায় ধমনীতে ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে, এ আমি অস্বীকার করতে পারবো না।`
তবে কি পাত্রীকে আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে?
পাত্র বললেন, `কারুর কোনও ধর্মমত সম্বন্ধে আমার কোনও জোর নেই। ইচ্ছে করে তিনি মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করলে পরেও করতে পারবেন।

লাইব্রেরির নাম নূর লাইব্রেরি। নূর লাইব্রেরির মালিক মওলবি মঈনউদদীন হোসায়ন সাহেব বিশিষ্ট সাহিত্যিক। তিনিই হলেন এ বিয়ের কাজী। কুমিল্লার জনাব আব্দুস সালাম হলেন উকিল আর দুজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী এবং খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন হলেন সাক্ষী। এমন অভিনব পদ্ধতির বিবাহ এর আগে তারা আর দেখেননি।

কী করে দেখবেন! পাত্র যে আর কেউ নন, যুগে যুগে তো এমন মানুষ জন্মায় না! শিকল ভাঙার মন্ত্র নিয়ে যে মানুষটি দেশকে জাগিয়ে তুলতে চাইছে, সেই দুরন্ত কবি কাজী নজরুলই যে এই বিবাহের পাত্র!

বিবাহের কাজী সাহেব কনে শ্রীমতি আশালতা সেনগুপ্তার সামনে গেলেন। কনে লম্বা ঘোমটায় মুখটি ঢেকে রেখেছেন। উকিল সাহেব মুসলমানি কায়দায় জিজ্ঞেস করলেন, `বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রাম নিবাসী জনাব কাজী ফকির আহমদ সাহেবের পুত্র কাজী নজরুল ইসলাম সাহেব আপনাকে ১০০০ টাকা দেনমোহরের এওয়াজে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। আপনি তাকে শওহরীয়তে কবুল করতে রাজি আছেন?’

কনে নিশ্চুপ! ব্যাপার কি? কনে কথা বলছেন না কেন? সাক্ষীদের একজন উকিলকে বললেন, `কথাগুলো সহজ বাংলা ভাষায় বলুন। হয়তো কনের পক্ষে মুসলমানি শব্দগুলো বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে।`

উকিল সাহেব সহজ বাংলায় আবার কথাগুলো বলে শেষে বললেন, `আপনি কি কাজী নজরুল ইসলাম সাহেবকে স্বামীত্বে বরণ করতে স্বীকৃত?`

এইবার ক্ষীণকণ্ঠে জবাব পাওয়া গেলো, `হ্যাঁ, স্বীকৃত`।
-স্বীকৃত?
-হ্যাঁ, স্বীকৃত।
-স্বীকৃত?
-হ্যাঁ, স্বীকৃত।
এরপর কাজী সাহেব নজরুলের কাছ থেকেও স্বীকৃতি আদায় করে আরবি ভাষায় খুতবা পড়ে মোনাজাতের মাধ্যমে বিবাহকার্য সম্পন্ন করলেন।
১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল রোজ শুক্রবার শৃঙ্খল ভাঙ্গার কবি চির-শৃঙ্খলে বাঁধা পড়লেন।

সংগ্রহীত

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: উনার স্ত্রী কী হিন্দু্ই থেকে গেছিলেন?

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৪২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: তবে কবি সাহেব নার্গিসকে ঠকিয়েছিলেন।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৫

অগ্নিবেশ বলেছেন: ১০০টাকা দেনমোহোর?? দেনমোহোরের অর্থ যদি আশালতা দেবী জানতেন তাহলে কবির হয়ত আশাভঙ্গ হয়ে যেত।
দেনমোহর হচ্ছে নারীর লজ্জাস্থান উপভোগের মূল্য, এটা জানলে যে কোনো মর্যাদাবান নারী এর বিরোধীতা করবে।

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৮/ ত্বলাক
পরিচ্ছদঃ ৬৮/৩২. লি‘আনকারিণীর মোহর।
৫৩১১. সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমারকে জিজ্ঞেস করলাম, এক লোক তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল- (তার বিধান কী?) তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ ‘আজলানের স্বামী-স্ত্রীর দু’জনকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা জানেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাচারী। কাজেই তোমাদের কেউ তাওবাহ করতে রাযী আছ কি? তারা দু’জনেই অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন মিথ্যাচারী, সুতরাং কেউ তাওবাহ করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন মিথ্যাচারী সুতরাং কেউ তাওবাহ করতে প্রস্ত্তত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল।
এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন। আইয়ুব বলেনঃ আমাকে ‘আমর ইবনু দ্বীনার (রহ.) বললেন, এ হাদীসে আরও কিছু কথা আছে, তোমাকে তা বর্ণনা করতে দেখছি না কেন? তিনি বলেন, লোকটি বললঃ আমার (দেয়া) মালের কী হবে? তাকে বলা হল, তোমার মাল ফিরে পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, (তবুও পাবে না)। (কেননা) তুমি তার সঙ্গে সহবাস করেছ। আর যদি তুমি মিথ্যাচারী হও, তবে তা পাওয়া তো বহু দূরের ব্যাপার। (৫৩১২, ৫৩৪৯, ৫৩৫০) আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih

অর্থাৎ, একবার এক লোক তার মোহরের অর্থ ফেরত চাইলো। কিন্তু সে তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে ফেলেছে। নবীজী তাকে বললেন, যেহেতু সে সঙ্গম করে ফেলেছে, সেহেতু তার আর মোহর ফেরত পাওয়ার অধিকার নেই

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


কবি সাহের মেয়েয়লোকের উরাধুরা ছিলেন বলে মনে হয়।
এক জন মানুষের কয়টা মন থাকে?
তিনি যেন ভালোবাসার দোকান খুলে বসেছিলেন

৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:২৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:



- নজরুল সম্পর্কে আমি খুব কম জানি।

৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪

মায়াস্পর্শ বলেছেন: কবির সৃষ্টি নিয়ে আমি বরাবরই বিস্ময় প্রকাশ করি। ব্যক্তিগত জীবনে এরকম সমস্যা আসবে এটাই স্বাভাবিক।
আমাদের একটা কমন প্রব্লেম হচ্ছে কাওকে পছন্দ না করলে তার সৃষ্টিগুলোকে উপেক্ষা করে ব্যক্তি জীবন নিয়ে কামড়াকামড়ি শুরু হয়ে যায়।

৭| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ওই সময়ে এমন বিয়ে দুঃসাহসিক কাজ ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.