![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
জুলাই অভ্যুত্থান মূলত ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত বাঙালি তরুণেরা শাসকের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে নিজের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ছিলো। একদিকে দূর্বিসহ লুটপাটে যেমন দেশের অর্থনীতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে, প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে দলীয় লোকজন নিয়োগের ফলে মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছিল সেই প্রক্রিয়াকে আরো এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা পুনরায় সরকারি চাকুরিতে কোটাপ্রথা চালু করেন। দেশে প্রায় ২৬ লাখ বেকার, প্রাইভেট সেক্টরে কর্মসংস্থান গড়ে না তোলা, বিদেশি বিভিন্ন প্রজেক্টে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে না তোলার কারণে ভারতীয়, চীন ও রাশিয়ার লোকজন দেশে কাজ করছে কিন্তু বাঙালিরা বেকার থাকছে এসব থেকে মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার পতনে ছাত্র ও বেকার সমাজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। যারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের কে অধিকাংশ তরুণ সমাজ চিনতো না। কিন্তু সাহস করে আবু সাইদ বুক পেতে দিলে বাকি তরুণদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। এইভাবে সৃষ্ট হয় গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট এবং অবসান ঘটে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের।
আজ যখন ব্লগে লিখছি তখন জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রায় ছয়মাস পার হয়ে গেছে। ইন্টেরিম সরকার নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে বলে সবাই আশাবাদী। এই সরকারের প্রধান বিশ্ববিখ্যাত নোবেল লরিয়েট ড. মোহাম্মদ ইউনূস যখন দায়িত্ব নিবেন বলে খবরে সংবাদ প্রচার হলো শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান বাঙালিরা কিছুটা হা্ঁফ ছেড়ে বাঁচলো। আবার কোন ১/১১ সরকার ক্ষমতা দখল করে কিনা তা নিয়ে ব্যবসায়ী হতে সাধারণ মানুষ সবার মধ্যে উৎকন্ঠা ছিলো। ড. ইউনূসের তাই শাসনভার গ্রহণ করা নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত ছিলো না। তবে বাকি উপদেষ্টাদের নিয়োগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিলো। অনেকে আবার সরকারে ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়োগ নিয়ে খুশি ছিলেন না। আগস্ট মাসের দশ তারিখ থেকে এই সরকার যাত্রা শুরু করে। ইন্টেরিম সরকার কে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আশা আকাঙ্খা ছিলো তা ছয় মাস পর অনেকটাই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ছে। এর পিছনে সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক সহ বিবিধ কারণ রয়েছে:
অর্থনীতি সংস্কারে ধীর গতি: বিগত শেখের আমলে দেশের অর্থনীতিকে এমন খারাপ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা থেকে যে কোন সরকারের পক্ষে উত্তরণ কঠিন। ইন্টেরিম সরকার কোন রাজনৈতিক সরকার নয় তাই নিজ দলের প্রতি বা দেশের মানুষের ভোটের প্রতি কোন আগ্রহ থাকার কথা নয়। তাই যে কোন ধরণের বোল্ড ডিসিশন নিতে পারতো। কিন্তু সরকার সে পথে না হেঁটে ২০০৬/০৭ সালের পথ অনুসরণ করা শুরু করলো। ঋণখেলাপি ও ক্রিমিনাল অনেক ব্যবসায়ী যারা লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলো তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলো। তাদের জেলে পাঠানো হলো। এতে ক্রিমিনাল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। অনেক ব্যবসায়ীরা সরকারের নিকট অনুরোধ জানিয়েছিল যাতে তাদের বৈদিশিক ঋণপত্র খোলার জন্য অনুমতি দেওয়া হয় । বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোনের ব্যবস্থা করতে সরকারকে অনুরোধ জানানো হলেও তেমন কোন ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। এতে অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশে যেহেতু ব্যবসায়ীরা অধিকাংশ ক্রিমিনাল ও দলবাজিতে জড়িত থাকে তাদের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ যতদূর আদায় করা যায় তার দিকে সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিত ছিলো। কিন্তু সরকার রিসিভার নিয়োগ ব্যতীত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেনি। বৈদেশিক বিনিয়োগ তাই দেশে প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে ধীরে ধীরে। সরকার এগারোটি সংস্কার কমিশন গঠন করলেও অর্থনীতির জন্য কোন সংস্কার কমিশন গঠন করেনি। গাজীপুর, সাভারে তাই অর্ধলক্ষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। তাদের নিকট জুলাই মাসের ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের স্মৃতি কেবল আরেকটি জাতীয় ঘটনা।
কর্মসংস্থানের অভাব : ভেঙে পড়েছে বিপ্লবীদের স্বপ্ন বেকারত্বের চাপে শীর্ষক প্রতিবেদন করেছে এএফপি। সেখানে বলা হয়েছে দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে সরকারি বেসরকারি চাকুরির সারকুলার প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। ইন্টেরিম সরকার দেশের বিভিন্ন গোলযোগের কারণে নষ্ট হওয়া সময় ফিরিয়ে দিতে চাকুরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি করেছে। বেকারদের পকেটের অবস্থা চিন্তা করে সরকারি চাকুরির ফি ২০০ টাকা করা হয়েছে। এসবে তরুণরা খুশি হলেও সকল নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় তারা পুনরায় হতাশার মধ্যে চলে যাচ্ছে। তরুণদের প্রাণের আন্দোলন এখন তরুণদের নিকট গলার ফাঁস হিসাবে মনে হচ্ছে । যাদের চাকুরিতে আবেদনের বয়স প্রায় শেষ তাদের নিকট প্রতিটি দিন যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বারবার দেশে বিভিন্ন আন্দোলন ও গোলোযোগের কারণে সবাই হতাশ।
আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি: শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের পর এবং ইন্টেরিম সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে কয়েকদিন দেশের ক্ষমতা প্রত্যক্ষ ভাবে সেনাবাহিনীর হাতে ছিলো। কিন্তু তাদের দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে ঢিলেমি জনগণকে অবাক করেছিল। পুলিশের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের আতঙ্ক কাজ করায় তারা সবাই নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েছিলো। দেশের অনেক শিল্পকারখানা লুট হয়েছে দিনের পর দিন।। এতে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। দেশে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় থানা থেকে ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসীরা দেশকে ক্রমান্বয়ে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। খুন, রাহাজানি, ছিনতাই বেড়ে গিয়েছে শতগুণ। অন্যদিকে মেরুদন্ডহীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্বিকার আচরণ মানুষের মধ্যে প্রচুর ক্ষোভের সঞ্চার করছে। জেলে ভেঙে আসামি পালানো, ৭০০ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে জামিনে মুক্তি দেয়া, শীর্ষ চরমপন্থীদের মুক্ত দেয়া সহ নানা বিষয় জনগণের মধ্যে উৎকন্ঠা বাড়িয়ে তুলছে।
অতি বিপ্লবী মনোভাব: ইন্টেরিম সরকারের মধ্য থাকা ছাত্র প্রতিনিধি এবং সমন্বয়ক ছাত্রদের মধ্যে প্রায়শই অতি বিপ্লবী মনোভাব দেখা যায় যা সাধারণ ছাত্র এবং জনগণের মধ্যে উৎকন্ঠা বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে সদ্য বিপ্লব থেকে ঘরে ফেরা সাধারণ ছাত্ররা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আন্দোলন, নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। এতে ভারত ও আওয়ামী লীগের এজেন্ট প্রবেশ করে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। সরকারের ছাত্র উপদেষ্টাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা অতি বিপ্লবী কথাবার্তা দেশে বিদেশে অসন্তোষ ও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় প্রোপাগাণ্ডা মেশিন গোদী মিডিয়া ছাত্রদের অরাজনৈতিক সংগঠন কে তালেবান, হিজবুত তাহরীর, জঙ্গী ট্যাগ দিয়ে আসছিল।আওয়ামী লীগের দালাল ইউটিউবার গণ অতি বিপ্লবীদের জোশে বলা কথাবার্তা বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সাধারণ জনগণের সামনে বিপ্লবীদের এসব জোশে বলা বক্তব্য যখন ধরা পড়ছে তখন প্যানিক সৃষ্টি হচ্ছে। ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্রমাগত আক্রমণ, নির্বাচন হতে না দেওয়ার হুমকি, সবাইকে ফ্যাসিবাদের দোসর উপাধি দেওয়া সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে তারা । জুলাই অভ্যুত্থানে মানসিক ভাবে সাপোর্ট দেয়া বিভিন্ন সচেতন নাগরিক অতি বিপ্লবী চেতনাকে ভিন্ন কোন শক্তি চরমপন্থার দিকে ধাবিত করছে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এইভাবে বিপ্লবীদের প্রতি সমাজে বিরূপ ধারণা বেড়ে চলেছে যা,জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের বিপক্ষে যাচ্ছে।
ইন্টেরিম সরকার আরো বছর খানেক সময় দেশের ক্ষমতায় আছেন সে যতই প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হোক। যদি ছিদ্র হয়ে যাওয়া দেশের কোন একটি ফুটো সরকার মেরামত করে যেতে পারে তবে সকলের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা থাকবে সরকার ও জুলাই বিপ্লবীদের প্রতি। সবার এখন একটাই আশা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরত নিয়ে গিয়ে সম্মানের সাথে উপদেষ্টারা প্রস্থান করবেন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কিসের ফাঁকি? আওয়ামী লীগ কে সাধু ছিলো নাকি! ফাঁকি কে ফাঁকি দিয়ে সরাতে হয়। পরাণ যায় সাধারণের।
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫৪
কামাল১৮ বলেছেন: আপনার পোষ্টে আছে অনেক ধোঁকাবাজী।এসব ছাড়েন।সত্য লিখুন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সত্য কথাই লিখেছি। আমি যে ভাবে সমন্বয়কদের ও আন্দোলন কে প্রত্যক্ষ করেছি তাই লিখেছি।
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:০৩
আহরণ বলেছেন: ভাইয়া, টোকাইদের চেতনা???
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:৪০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: হেলমেট বাহিনীদের থেকে শিখেছে।
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১২
রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ ৭১ এর কথা ভুলে যায়, আর এটা তো সামান্য জুলাই এর ঘটণা।
৭১ এর ঘটনা বিশাল। জুলাইয়ের ঘটনা সাজানো।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সাজানো ছিলো না। মানুষ মধ্যে স্বৈরাচার পতনের আকাঙ্খা ছিলো। কিন্তু একটি দল সব কিছু শেষ করে দিচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫১
কামাল১৮ বলেছেন: আস্তে আস্তে মানুষ ফাকিটা বুঝতে পারছে।সবটাই ছিলো ইউনুস ও সমন্বয়কদের ধোঁকাবাজী।এখনো ধোঁকাবাজী করেই চলছে।