নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোখ, অভিজ্ঞতা আর হৃদয়—শি জিনপিংয়ের জীবনের তিন পাঠ !

২০ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৮


আমার জীবনে যে তিনটি শিক্ষা আমাকে আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছে, সেগুলো আমি পেয়েছি আমার বাবার কাছ থেকে। তিনটি রাতের তিনটি ন্যুডলসের থালা আর তার ভেতরে লুকিয়ে থাকা জীবনের অমূল্য সত্যগুলো আজও আমি ভুলিনি - শি জিনপিং, চীনের প্রেসিডেন্ট।

সে এক নির্ভেজাল সন্ধ্যা। শৈশবে বাড়ি ফিরে দেখি, বাবা অপেক্ষা করছেন খাবার টেবিলে। টেবিলে রাখা দুটি বাটি—উষ্ণ ন্যুডলসে ভরা। একটিতে সবার চোখে পড়ার মতো একটি সেদ্ধ ডিম শোভা পাচ্ছে ওপরে, আরেকটি নিঃসঙ্গ ন্যুডলস, ডিমহীন। বাবা বললেন, “যেকোনো একটি বেছে নাও।” আমি চোখের দেখায় লোভনীয় মনে হওয়া, ডিমসহ বাটিটাই তুলে নিলাম। তখনকার দিনে চীনে ডিম ছিল যেন সোনার ডিম—উৎসব ছাড়া সাধারণ পরিবারের তা পাওয়াই দুর্লভ। খেতে শুরু করার পর দেখি, বাবার বাটির ন্যুডলসের নিচে লুকিয়ে রয়েছে দুটো সেদ্ধ ডিম।

আমার শিশুমনে বিষাদের ঢেউ বয়ে গেল। কেন যে এমন তাড়াহুড়ো করে বেছে নিলাম! বাবা যেন সব বুঝে ফেললেন। খাওয়ার পর মৃদু হেসে তিনি বললেন, "মনে রেখো, চোখ যা দেখে, সব সময় তা-ই সত্য নয়। মানুষ বা পরিস্থিতিকে শুধু চোখে দেখে বিচার করলে অনেক সময় ভুল করবে। ঠকে যাবে। জীবন অনেক গভীর, তার সত্য বোঝা সহজ নয়।"

পরদিন আবারও সেই টেবিল, সেই দুই বাটি ন্যুডলস। আগের দিনের মতোই, একটিতে ডিম দৃশ্যমান, আরেকটি নিঃসাড়, ডিমহীন। এবার আমি অভিজ্ঞতার আলোকে বেছে নিলাম সেই বাটি, যেটিতে বাইরে থেকে কিছু নেই। ভেবেছিলাম, হয়তো এর নিচেই লুকিয়ে আছে ডিম—যেমনটা আগেরদিন হয়েছিল। কিন্তু না, এবার সত্যিই কোনো ডিম নেই !

বাবা এবারও তাকিয়ে হাসলেন। কিন্তু সে হাসির ভেতর ছিল এক গভীর বার্তা। তিনি বললেন: “অভিজ্ঞতা সব সময় সঠিক পথ দেখায় না। জীবন নিজের নিয়মে চলে। সব সময় ফলাফল আমাদের অনুমান মতো হয় না। অনেক সময় মরীচিকার পেছনে ছুটতে হয়, ভ্রম হয়, ব্যথা হয়। কিন্তু এটিই জীবন। তুমি অভিজ্ঞতা থেকে শিখবে, তবে মনে রেখো—জীবনই শেষ কথা বলে।”

তৃতীয় দিন, আবার একই চিত্রনাট্য। একই দুই বাটি। আমি এবার থেমে গেলাম। বাবার দিকে তাকিয়ে বললাম : “আজ তুমি আগে নাও, বাবা। তুমি এই সংসারের কর্ণধার, এই খাবারটাও তোমারই ঘামের ফল। তোমার প্রাপ্য আগে।”বাবা কিছু না বলে নিজের জন্য একটি বাটি তুলে নিলেন। আমি নিই আরেকটি। খেতে বসে দেখি—আমার বাটির নিচে দুটো ডিম । এবার আর বিষাদ নয়, চোখে জল আসে—কৃতজ্ঞতার, শ্রদ্ধার। খাওয়ার পর বাবা আমার হাত চেপে ধরে বললেন : “জীবনের সবচেয়ে বড় ধর্ম হলো কৃতজ্ঞতা। যে দিতে জানে, তাকেই জীবন বহুগুণে ফিরিয়ে দেয়। কৃতজ্ঞ হও, দায়িত্বশীল হও। তুমি যদি জীবনে অন্যকে মূল্য দাও, অন্যকে স্মরণ রাখো, জীবনও তোমার কথা মনে রাখবে।”

চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আজ যে উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছেন, সেই পথের প্রাথমিক তিনটি সিঁড়ি ছিল এই তিন রাতের ছোট ছোট ঘটনার মধ্যেই। বাবার দেওয়া এই তিনটি শিক্ষা তিনি আজও মনে গেঁথে রেখেছেন:

১. দৃষ্টিতে ধোঁকা থাকতে পারে—চোখ যা দেখে, সব সময় সত্য নয়।
২. অভিজ্ঞতাও ভুল করতে পারে—শেষ সত্য বলে জীবন নিজেই।
৩. যা দাও, তা-ই ফিরে আসবে—কৃতজ্ঞতা আর মানবিকতা জীবনকে সমৃদ্ধ করে।

এই তিনটি শিক্ষা শুধু এক রাষ্ট্রপ্রধান নয়, যেকোনো মানুষকে গড়ে তুলতে পারে ভিত থেকে। শি জিনপিংয়ের জীবনের গল্প আমাদেরও শেখায়—কখনো শুধু দেখে নয়, কখনো শুধু পেছনের অভিজ্ঞতায় নয়—জীবন বুঝে নিতে হয় হৃদয় দিয়ে, আর সম্পর্কগুলো রচনা করতে হয় কৃতজ্ঞতা দিয়ে।

সংগ্রহীত


মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:১৫

কামাল১৮ বলেছেন: এটাই মার্ক্সবাদের শিক্ষা।সমস্যার গভীরে প্রবেশ কর।সমস্যাকে চারপাশথেকে দেখ ।উপর নিচ থেকেও দেখ।তবেই সঠিক সমাধান পাবে।ভাসা ভাসা ভাবে দেখা না দেখারই সামিল।
মাও সে তুং বলেছেন এই ভাবে।ঘোড়া থেকে নামো,জনগনের সাথে মেশো,তাদের সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোন,তবেই সঠিক সমাধান দিতে পারবে।

২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:২৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের যে সমস্যা মার্ক্স এবং মাও যদি এই সমাজে জন্মাতেন তবে পাগল হয়ে যেতেন।

২| ২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: যখন অনেক গুলি সমস্যা থাকে তখন একটি সমস্যা থাকে প্রধান।প্রধান সমস্যার সমাধান করলে অন্যান্য সমস্যা গুলি পর্যায়ক্রমে সমাধান সহজ হয়ে যায়।৭১ থেকে এই কাজটিই আমরা করতে পারি নাই।আমরা শুধু সমস্যা ঝট পাকিয়েছি।হাজারো সমস্যা এখন আমাদের ঘিরে ধরেছে।
আশার কথা হলো এটা অনন্তকাল থাকবে না।একদিন একটা সঠিক দল আসবে।তারা প্রধান সমসযাটি বের করতে পারবে এবং জনগনকে মুক্তি দিবে।

২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:৪৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা কি বলে আপনি মনে করেন ? আমার মতে আপনার সেই আকাঙ্খিত দলের প্রধান কাজ হবে দার্শনিক নিৎসের মতো ঘোষণা দেয়া, "পুরাতন ভাবনা চিন্তার কবর দেয়া জরুরি "।

৩| ২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:১৯

কামাল১৮ বলেছেন: সকল দলের অংশগ্রহনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।নির্বাচিত সরকার পরবর্তি সমস্যা গুলির সমাধান করবে।৭৩ এর নির্বাচন সম্পুর্ন সঠিক হয় নি। পরবর্তিগুলো নির্বাচনের নামে কলঙ্ক।

২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৩০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: নির্বাচন হলে সব কিছু ঠিক কি করে হবে ? আমাদের প্রধান সমস্যা নির্বাচন নয়। আমাদের সমস্যা কুশিক্ষা, কুসংস্কার ও রাজনৈতিক নির্লিপ্ততা। সাথে আছে উগ্রবাদ ও লোক ঠকানো সরকারি আমলা-ব্যবসায়ী !

৪| ২০ শে মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৮

কামাল১৮ বলেছেন: আপনিতো অনেক গুলি সমস্যার কথা বললেন?

২০ শে মে, ২০২৫ রাত ১০:০৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এজন্যই তো বললাম মার্ক্স ও মাও পাগল হয়ে যেতেন। গা ভরি ক্ষত ঔষুধ দিবেন কত ? তবে সবাই মিলে চাইলে প্রধান সমস্যা হয়তো খুজে বের করা যাবে।

৫| ২০ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:১৫

কামাল১৮ বলেছেন: নির্বাচন ছাড়া সবাই মিলে চাওয়ার আর কোন বিকল্প নাই।নির্বাচিতরাই সবার প্রতিনিধিত্ব করে।গনতন্ত্রের এটাই সৌন্দর্য।

২০ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৬

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরত যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপকার দেখছি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.