নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

এসএসসি ২০২৫ সালের ফল বিপর্যয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি দায় এড়াতে পারে ?

১১ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০২


গত ১০ই জুলাই প্রকাশিত এসএসসি ২০২৫ সালের ফলাফল বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক বিশাল ধাক্কা দিয়েছে। ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়া, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২ হাজার কমে যাওয়া প্রমাণ করে যে এটি একটি স্মরণকালের ফল বিপর্যয়। পাশের হার ৮৪ শতাংশ থেকে ৬৮ শতাংশে নেমে আসার এই ভয়াবহ চিত্র সবার মনে একটাই প্রশ্ন জাগিয়েছে এই বিপর্যয়ের পিছনে কি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায় রয়েছে ?

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে খাতা কঠিনভাবে দেখার কথা বলা হলেও এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফেল করাটা শুধু খাতা কঠিন করার ফল হতে পারে না। এর পেছনের কারণগুলো আরও গভীরে প্রোথিত, যা কোভিড-১৯ মহামারীর সময় থেকে শুরু করে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক দুর্বলতাকে তুলে ধরে।

কোভিড-১৯ মহামারীর সময়, অর্থাৎ ২০২০ ও ২০২১ সালে, যখন এই শিক্ষার্থীরা ক্লাস সিক্স ও সেভেনে পড়ছিল, তখন তাদের পড়াশোনা 'স্টাডি ফর হোম' কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। স্কুল থেকে দেওয়া তথাকথিত "বস্তাপচা অ্যাসাইনমেন্ট" এবং ইউটিউবে সেসবের সমাধান দিয়ে অসৎ শিক্ষকদের লাখ লাখ ভিউ কামানোর প্রবণতা শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অনলাইন ক্লাসে শিক্ষকরা তেমন গুরুত্ব দিয়ে না বোঝানো, পরীক্ষা ও ক্লাসের অনুপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গা ছাড়া ভাব, কেবল হাজিরা দিতে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়া, এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত "গান, কবিতা ও গল্পের আসর" এই সবকিছুই শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিকের ভিত্তি দুর্বল করে দিয়েছে।

অনলাইনে এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য অর্থের বিনিময়ে কোচিং সেন্টারগুলো শিক্ষার্থীদের অসৎ উপায়ে সাহায্য করা এবং অ্যাসাইনমেন্টেও একই রকম সহায়তা করার ঘটনাগুলো শিক্ষা ব্যবস্থার নৈতিকতাকে তলানিতে নিয়ে গেছে। বহু কোচিং শিক্ষক এবং প্রাইভেট শিক্ষক, যাদের জীবিকার কোনো নিরাপত্তা নেই, তারা নিজেদের চাকরি টিকিয়ে রাখতে এবং প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে এই অসৎ কাজে সহায়তা করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

২০২২ সালে যখন এই শিক্ষার্থীরা ক্লাস এইটে ওঠে, তাদের গণিত ও ইংরেজির মৌলিক জ্ঞান প্রায় শূন্য ছিল। লসাগু, গসাগু, উৎপাদক, জ্যামিতি কোনো কিছুতেই তাদের দক্ষতা ছিল না। অনেক স্কুল বাধ্য হয়েছিল ক্লাস সিক্স ও সেভেনের বই থেকে কিছু অংশ আলোচনা করে ক্লাস এইটের গণিত শুরু করতে। একাডেমিক বছর শেষ করার জন্য এবং করোনার আরও প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ইয়ার শেষ করে ক্লাস এইটের সবাইকে গ্রেস নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই "করোনা ব্যাচ" পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়ে ক্লাস নাইনে উঠে আসে।

ক্লাস নাইনে উঠে তারা তথাকাকথিত "নতুন কারিকুলাম"-এর সম্মুখীন হয়। এই নতুন কারিকুলামে পুরনো অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না দেওয়ার ফলে তাদের পাঠদানে অনীহা দেখা যায়। গণিত বইতে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্ক কমিয়ে ফেলার কারণে শিক্ষার্থীদের বুঝতে অসুবিধা হয়। অন্যান্য বিষয়েও একই অবস্থা ছিল। শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে প্রতিটি বিষয়ে প্রাইভেট টিচারদের কাছে দৌড়াতে হয়েছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মৌলিক জ্ঞান থাকুক বা না থাকুক, পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো আগে থেকে জানিয়ে দিতেন। এভাবেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী নতুন কারিকুলামকে বশে আনার জন্য "ফাঁকিঝুকি" পথ বেছে নেয়, কারণ বইয়ে সমাধানের অভাব থাকায় শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

গত বছর যখন দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল, তখন এসএসসি ’২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রি-টেস্ট চলছিল। নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের দক্ষতার অভাব থাকায় তারা নিজেরা প্রশ্ন তৈরি না করে বিভিন্ন গাইড ও প্রেসকে প্রশ্ন তৈরি করে স্কুলে সরবরাহ করার দায়িত্ব দেন। আন্দোলনের কারণে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা দেখা যায় এবং দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকে। এরপর যখন ক্লাস শুরু হয়, তার কিছুদিন পরেই টেস্ট পরীক্ষা হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা প্রি-টেস্ট পাশ না করেও টেস্ট পরীক্ষায় বসে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাদের টেস্ট পাশ করিয়ে দেওয়া হয়। কার কোথায় ঘাটতি আছে, সেটা আর বোঝা যায় না।

এই ভয়াবহ ফল বিপর্যয়ের দায় সবচেয়ে বেশি দায় শেখ হাসিনার সরকারের। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া, নতুন কারিকুলামের ত্রুটিপূর্ণ বাস্তবায়ন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অভাব, এবং কোচিং বাণিজ্য ও অসৎ উপায়ে পরীক্ষার সংস্কৃতিকে লাগামহীনভাবে চলতে দেওয়া এই সবই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত ছিল টেস্ট পরীক্ষার ফলাফলের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং কাউকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে পাশ না করানোর নির্দেশনা দেওয়া। প্রয়োজন হলে অকৃতকার্যদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আবার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে ফেলের সংখ্যা আরও কমে যেত।

সামগ্রিকভাবে, কেবল "এবার পাশ করিয়ে দেওয়া হবে না" এমন নির্দেশনা দিলেই শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে না। মানহীন প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে এসএসসি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করতে হবে, মানহীন শিক্ষকদের যাচাই করে যোগ্যদের বহাল রেখে বাকিদের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এবং শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আজকের বাবা-মায়েরাও তাদের বাবা-মায়ের দেখানো পথে হেঁটে সন্তানদের পড়াশোনায় আরও কঠোর ও মনোযোগী হতে উৎসাহিত করা উচিত। যেদিন থেকে বেত উঠে গেছে এবং সন্তানরা বাবা-মার সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করা শুরু করেছে, সেদিন থেকেই দেশের পড়াশোনার মান নিম্নগামী হয়েছে। এই বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি কার্যকর ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে শিক্ষার মান আরও তলানিতে যেতে বাধ্য।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

Sulaiman hossain বলেছেন: মোবাইলে দৈনিক ১৭ ঘন্টা ফ্রি ফায়ার খেললে সবাই A+পেত!

১১ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এতো সুযোগ কিভাবে পায় ? বেত লাগবে এদের টাইট দিতে ।

২| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

Sulaiman hossain বলেছেন: কুতুব ভাই, লেখাটা পড়লাম।আমি এই বিষয়ে যা বলতে চাই।আমাদের পাঠ্যবইগুলো যারা লেখে তারর মূলত বিষয়গুলো কঠিন করে লেখে,যদি সহজ করে লিখে বুঝিয়ে দিত, তাহলে বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ার কোনো প্রয়োজন হতোনা,অধিকাংশ ট্যালেন্ট শিক্ষার্থীরা বই থেকেই বিষয়বস্তু বুঝে নিত।আমি দেখেছি নাইন টেনের অর্থনীতি বইয়ের বাক্যগুলো কত কঠিন,শিক্ষার্থীদের দাত ভেঙে যাওয়ার মতো অবস্তা পড়তে গেলে।অথচ বইটাকে আরো সহজ করা যেত।
আমাদের স্কুল কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকরা তেমন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত না।সুধু শিক্ষকদেরই দোষ নয়,শিক্ষক ছাত্র উভয়েরই গঠনগত দিক দিয়ে অনেক ঘাটতি রয়েছে

১১ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ভালো বলেছেন । আরো উদাহরণ এড করা উচিত ।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:০৭

শায়মা বলেছেন: হায় হায় এই ফল বিপর্যয় কেনো!!!

আমার ধারণা আন্দোলনের জোয়ারে ভেসে পড়ালেখাই করেনি তারা... X((

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:১২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দিনাজপুরে ৪৮০০০ গণিতে ফেইল , ১৮০০০ হাজার ইংরেজিতে। ৩০ জন সুইসাইড করেছে।

৪| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৩৩

শায়মা বলেছেন: সুইসাইড করার কি হয় তাদের বুঝি না।

পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করাতে হবে।

জীবনের জন্য পড়ালেখা, পড়ালেখার জন্য জীবন নয় ......

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৪৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের জেন-জিরা ইমোশনাল ফুল।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫০

অপু তানভীর বলেছেন: আমি তো বলব এটাই বরং ঠিক আছে। আপার আমলে যখন স্যারদের বোর্ড পরীক্ষার খাতা দেওয়া হত তখন তাদের এই নির্দেশনা দেওয়া হত যেন উদার ভাবে নম্বর দেওয়া হয়। ২৮/২৯ পেলেও পাশ নম্বর দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ ছিল। ছাত্র অবস্থায় আমি দীর্ঘদিন একটা কোচিংয়ের সাথে যুক্ত ছিলাম, সেই সময়ে দেখেছি কিভাবে পড়াশোনা না করেই পোলাপাইন এ প্লাস পেয়ে গেছে।

২০২৬ সালের এসএসসির ফল আরও খারাপ হওয়ার সম্ভবনা আছে! এঈ ব্যাচটা একদম পড়াশোনা করে নি। তার উপর, তারা সিক্স থেকেই নতুন কারিকুলাম পড়ে এসেছে। মাত্র এই ক্লাস টেন তারা পড়ছে পুরান কারিকুলাম।
আপার অবদানের ভেতরে অন্যতম হচ্ছে এই শিক্ষা ব্যবস্থার তেস মেরে দেওয়া। এর থেকে বের হতে কত বছর লাগবে কে জানে!

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: প ৬ লাখ আবার যে এক্সামে বসবে তার কোনো শিওরিটি নেই। টেসট এক্সাম থেকে কড়াকড়ি করলে আরো পাশ বেশি হতো।

৬| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫৬

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: এখন আর প্রশ্ন ফাস নাই, ইচ্ছেমত মার্ক্স বাড়িয়ে পাশের হার বেশি দেখানোর সুযোগ নাই । বছরের পর বছর ভুয়া রেজাল্ট শিক্ষার মেরুদন্ডই ভেঙ্গে দিয়েছিল।এই সরকারের অন্যতম একটা বড় সাফল্য হচ্ছে শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হওয়া।

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:১২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ৬ লাখ ফাইনাল এক্সামে ফেইল না করিয়ে আগেই ওয়ারনিং দিলে ভালো হতো। পড়াশোনার ঘাটতির দায় একক ভাবে ফেইল করাদের দেয়া ঠিক নয় ।

৭| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:২৩

কামাল১৮ বলেছেন: পড়াশুনা করে ছেলে মেয়েরা।পরীক্ষা দেয় চেলে নেয়েরা।খাতাদেখে শিক্ষক।সরকার কেন দায়ী হবে।

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:২৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: একটি ফ্যাশন কোম্পানির (যেমন Zara) দায়ভার কি শুধুই চূড়ান্ত পণ্যের গুণমান ও প্রভাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ, নাকি তাদের উৎপাদন, বিপণন ও অপারেশনাল পর্যায়ের সাথেও নৈতিক ও সামাজিক দায় জড়িত?

৮| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:২৩

কামাল১৮ বলেছেন: তারা কোন কিছুই উৎপাদন করে না।তাদের বেশির ভাগ মাল বাংলাদেশে উত্পাদিত পন্য।প্রতিটা মলে জারার বড় বড় শোরুম আছে।

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কোমলমতিরা ফাইনাল পণ্য।

৯| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৫৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: কারিকুলাম, সিস্টেম পরিবর্তন ইত্যাদি এগুলো কোন বিষয় নয়। বইয়ের সাথে এদের সম্পর্ক ভালো নয়। এরা ফোন নিয়ে পড়ে থাকে। রাস্তা-ঘাটে ফোনে চোখ রেখে চলা পোলাপাইন দেখে আফসোস হয়। অচিরেই পৃথিবীর বাস্তবতা টের পাবে।

১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বেতানো লাগবে ।

১০| ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

নিমো বলেছেন: আহা! বেচারারা সেই সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন, অবশেষে জুলাই অভ্যুথ্থান করে জুলাই যোদ্ধা হয়েছে। এদের ফেল করানো ঠিক হয় নি। জুলাই যোদ্ধা কোটা, জেনজি কোটা অথবা কোমলমতি বয়সের কোটায় পাশ দেয়া দরকার ছিল।

১২ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:০৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ফেইল করানো ঠিক হয়েছে বাট এতো মাস ভলিউমে না । ঝরে যাবে অনেকে । মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাবে।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৫:৪১

ছয়েতেবারো বলেছেন: আপনার করা কয়েকটা মন্তব্যের বিরোধিতা না করে পারছি না। দেখলাম আপনি সমানে মন্তব্য করছেন; বেতানো লাগবে শিক্ষার্থীদের। বেতিয়ে আপনি কয়জনকে ঠিক করবেন? আর আপনি যে বেতানোর কথা বলছেন, এতে যে হিতে বিপরীত হতে পারে সেটা আপনি ভেবে দেখেননি? এই যুগে এসে বেতানোর কথা বলাটা ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত? সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আপনি নতুন সমস্যা তৈরি করতে বলছেন। একজন শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়ার পিছনে কিছু কারণ অবশ্যই আছে। যেমন আপনি বললেন, পাঠ্য বইয়ের ভাষা কঠিন, বেসরকারি স্কুলের প্রতি অভিবাবকদের ঝোঁক, অযোগ্য শিক্ষক এবং সার্বিকভাবে শিক্ষার মানের অবনতি—এগুলু আগে সমাধান করুন, দেখবেন শিক্ষার্থীরা আগের থেকে অনেক মনোযোগী হয়েছে।

(i) বইয়ের ভাষা কঠিন, কথাটা কতটা সত্য জানিনা। আমি এই কারিকুলাম পড়ে এসেছি। কখনো ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়নি ভাষা কঠিন। যদি কারো মনে হয় ভাষা কঠিন তাহলে খুব সম্ভবত তার পূর্বের পড়ায় কমতি আছে। কঠিন ভাষা শিখা দরকার, তা না হলে আরো উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা তারা কিভাবে অর্জন করবে? এর সমাধান অবশ্য সহজ। প্রতিটা পথের শেষে শব্দার্থ ও টিকা সংযুজন করা। শিক্ষার্থীরা পাঠটি পড়ার আগে অথবা পরে যদি এইগুলু পড়ে তাহলেই আর কঠিন শব্দে আশাকরি সমস্যা হবে না। এইটা অলরেডি বাংলা সাহিত্য বইগুলিতে আছে। • তাছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিটা পাঠের শেষে একটি করে QR কোড এড করতে পারে। যেটা তাদের ইউটিউবে একটি অনলাইন ক্লাসে নিয়ে যাবে। এই ক্লাসে বইয়ের সেই পাঠটি ভালো করে সুক্ষ্মভাবে পড়ানো হবে। সরকার চাইলেই এমন কোনো একটা ফিচার এড করতে পারে।

(ii) আজকাল আসলেই দেখতে পাচ্ছি বেসরকারি স্কুলগুলোর প্রতি অভিবাবকদের ঝোঁক বেরে গেছে। স্বাভাবিক, যেহেতু সরকারি স্কুলে, কলেজে পড়ালেখার যে কুৎসিত অবস্থা, তা দেখে সাধারণ মা বাবা এমনটাই করবে। তাই আগে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলুকে প্রতিযুগীতার মাঠে নামাতে হবে। তার জন্য স্কুলে শিক্ষকের গাফিলতি দুর করতে হবে। অযোগ্য শিক্ষকদের নির্মূল করে দিতে হবে। এরা জাতির মেরুদণ্ড ক্যান্সার স্বরুপ। সুশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করা অত্যাবশ্যক। যারা তাদের পেশার সাথে প্রাপ্ত দায়িত্ব আর কর্তব্য ভালো করে পালন করে। শিক্ষকতাকে শুধু পেশা হিসেবে দেখলে চলবে না, এটাকে দায়িত্ব হিসেবে দেখতে হবে, এর কর্তব্য পালন করতে হবে। এটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যায় বহুল হতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও এটা করা যায়। একবারে না হোক, ধাপে ধাপে হলেও করা দরকার।

(iii) কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ার চল থেকে মানুষকে ঘুরিয়ে আনতে হবে। নতুন ও যুগ্য শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি এই কোচিং সেন্টারগুলোর উপর কম বেশি ব্রেকডাউন চালাতে হবে। অভিবাবকদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে পরিবর্তনটা। এটা সরকারের দায়িত্ব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সভা সমাবেশ যাই হোক করতে হবে। সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সময় সাপেক্ষ কিন্তু দরকার। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও তাতে যে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে সেই শিক্ষকদের অবশ্যই সরকারি সনদ থাকতে হবে। প্রতিটি উপজেলার শিক্ষা অফিসকে মাসের যেকোনো একটি দিনে এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে। দিনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঠিক করা হবে এবং উপজেলার শিক্ষা অফিসকে কর্মদিবসের প্রথম ঘটিকায় তা জানানো হবে। অবশ্যই শিক্ষা অফিসকে সেই খোজ খবর নিয়ে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে রিপোর্ট করতে হবে। ছবি সংযুজন করে বিষয়টা নিশ্চিত করা যেতে পারে। আমরা যে যুগে বাস করছি সেই যুগে এইসব অবশ্যই সম্ভব আর এতে খুব বেশি বাজেট লাগার কথাও না।

এই নিয়ম না হোক, আরো অন্য অনেক নিয়ম চালু করা যায়, অনেক ব্যবস্থা নেওয়া যায় যাতে করে দেশের শিক্ষার মান উন্নত হবে। হয়তো এক লাফে বিশ্বসেরা হয়ে যাবে না। কিন্তু পরিবর্তনের শুরুটা করতে হবে। শুধু সমালোচনা না করে, সম্ভাব্য সমাধানের কথাও বলতে পারেন। শিক্ষার্থীদের যেমন দোষ আছে, শিক্ষাব্যবস্থা, রাষ্ট্র আর অভিবাবকদেরও দোষ আছে। সবগুলোকেই সমাধান করতে হবে। হয়তো একবারে হবে না, সময় লাগবে, অর্থ লাগবে। কিন্তু শিক্ষার চেয়ে মূল্যবান একটা রাষ্ট্রের কাছে আর কি হতে পারে? বিশেষ করে আমাদের মত একটা রাষ্ট্রের?

অতিরিক্ত লিখে ফেললাম মনে হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়? আমার চিন্তা কি খুব বেশি অবাস্তব?

১২ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:২১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: না । আপনার ভাবনা আপনি লিখেছেন। এখনকার বাবা-মা ছোট ছেলেমেয়েদের শাসন একেবারেই করে না। ছেলেমেয়েদের সব কথা রাখতে চায় । বেশিরভাগ ছেলেময়ে এই সুযোগ নেয় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.