নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেগম রোকেয়ার \'অবরোধ প্রথা\' ও আফগানিস্তানে নারীদের মৃত্যুর ঝুঁকি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬


বেগম রোকেয়া তাঁর 'অবরোধবাসিনী' বইয়ে তৎকালীন মুসলিম নারীদের জীবনের বাস্তব কিছু ঘটনা তুলে ধরেছেন। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের নতুন শিক্ষাক্রমে বেগম রোকেয়ার 'অবরোধবাসিনী' বই থেকে তিনটি গল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই গল্পগুলো পড়লে বোঝা যায় যে অবরোধ প্রথা কীভাবে নারীদের জীবনকে সীমিত ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছিল।

অবরোধবাসিনী - ১৪: এই গল্পে একজন মামীশাশুড়ি তার পরিচারিকার সঙ্গে ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন। ট্রেন বদলের সময় তিনি তার বোরকায় জড়িয়ে ট্রেন এবং প্লাটফর্মের মাঝখানে পড়ে যান। তার পরিচারিকা বারবার চিৎকার করে বলে, "খবরদার! কেউ বিবি সাহেবের গায়ে হাত দিও না।" ফলে অন্য পুরুষরা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। পরিচারিকা একাই অনেক চেষ্টা করেও তাকে তুলতে পারেনি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ট্রেন চলে গেলে তিনি ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে মারা যান। অবরোধ প্রথার কারণে তার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

অবরোধ বাসিনী - ৮: এই গল্পে বলা হয়েছে যে এক বাড়িতে আগুন লেগে গিয়েছিল। বাড়ির গৃহিণী তার বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সব গয়না একটি বাক্সে ভরে ঘর থেকে বের হন। তিনি যখন দেখেন যে পুরুষেরা আগুন নেভানোর জন্য ছুটে এসেছেন, তখন তিনি তাদের সামনে বের হতে লজ্জা পান। কারণ, সেই সময়ে নারীরা বাড়ির পুরুষদের সামনে সরাসরি আসতেন না। তাদের সামনে নিজেকে প্রকাশ না করে গৃহিণী গয়নার বাক্স হাতে নিয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি আগুনে পুড়ে মারা যান, কিন্তু পুরুষদের সামনে বের হয়ে নিজের সম্ভ্রম নষ্ট করেন না।

অবরোধ বাসিনী - ৩ : প্রায় ৪০/৪৫ বৎসর পূর্ব্বের ঘটনা-কয়েক ঘর সম্ভ্রান্ত জমিদারের মাতা, মাসী, পিসী, কন্যা ইত্যাদি একত্র হও করিয়া কার্য্যোপলক্ষে অন্যত্র গিয়াছিলেন। তাঁহারা কলিকাতায় রেলওয়ে ট্রেন পৌঁছিলে পর সসৈন্য পুরুষ প্রভুগণ কার্য্যোপলক্ষে অন্যত্র গিয়াছিলেন। বেগম সাহেবাদিগকে একজন বিশ্বস্ত আত্মীয় পুরুষের হেফাজতে রাখা হয়। সে ভদ্রলোকটীকে লোকে হাজী সাহেব বলিত, আমরাও তাহাই বলিব। হাজী সাহেব বেগম সাহেবাদের ওয়েটিং রুমে বসাইতে সাহস পাইলেন না।

তাঁহারা উপদেশে মতে বিবি সাহেবারা প্রত্যেক মোটা মোটা কাপড়ের পরিয়া ষ্টেশনের প্লাটফরমে উবু হইয়া (Squat) বসিলেন। হাজী সাহেব মস্ত একটা ভারী শতরঞ্জি তাঁহাদের উপর চাকিয়া দিলেন। অবস্থায় বেচারীগণ এক একটা বোচকা বা বস্তার মত দেখাইতেছিলেন। তাঁহাদিগকে এইরূপে চাকিয়া রাখিয়া হাজী সাহেব এক এক দাঁড়াইয়া খাড়া পাহারা দিতেছিলেন। একমাত্র আল্লাহ জানেন, লজ্জাবতী বিবিগণ এ অবস্থায় কয় ঘন্টা অপেক্ষা করিতেছিলেন-আর ইহা কেবল আল্লাহতালারই মহিমা যে তাঁহারা দম আট্কাইয়া মরেন নাই।

ট্রেন আসিবার সময় জনৈক ইংরাজ কর্মচারী ডাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দিতে হাজী সাহেবকে বলিলেন, "মুণ্ডি! তোমারা আসবাব হয়াসে হটা লো। আভি ট্রেন আবেগা-প্লাটফরম পর খালি রাহেনা-আসবাব নেই রেহেগা।" হাজী সাহেব ঘোড়ঘেৎকে বলিলেন, "হুজুর, এ সব আসবাব নাহি-আওরত হয়া।" কর্ম্মচারিটি পুনরায় একটা "ঝড়া" জুতার ঠকর মারিয়া বলিলেন, "হাঁ, হা-এই সব আসবাব হটা লো।" বিবিরা পর্দ্দার অনুরোধে জুতার গুঁতা খাইয়াও টু শব্দটি করেন নাই।

এই গল্পগুলো যখন শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হলো, তখন কিছু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এর প্রতিবাদ জানান। তাদের মতে, এসব গল্প ইসলামকে হেয় করে এবং ইসলামে পর্দার যে মূল উদ্দেশ্য, সেটিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। তারা শেখ হাসিনার সরকারকে ইসলামবিরোধী বলে অভিযোগ করেছিলেন । পরে বই থেকে এসব গল্প বাদ দেয়া হয় । আধুনিক সমাজে বসে এইসব ঘটনা পড়লে যে কারো অবাক লাগতে পারে, কিন্তু ১৮–১৯ শতকের নারীদের জীবন কেমন ছিল, তা আমরা বেগম রোকেয়ার লেখা হতে জানতে পারি ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১০

কামাল১৮ বলেছেন: ইসলামের দৃষ্টিতে ঠিকই আছে।দুই জন নারী সাক্ষী একজন পুরুষ সাক্ষীর সমান।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জীবন ও মরণের প্রশ্নে ইসলামে ছাড় আছে।

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২১

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



৪৭টি মুসলিম দেশে বেদুইন সংস্কৃতি চলছে

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনার নামে সবধরনের অপবাদ দেওয়া যায়, কিন্তু স্বীকার করতেই হবে তার আমলে নারীরা যথেষ্ট এগিয়েছে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ২৯ শতাংশ নারী কাজ করছে। অবশ্য কিছু অভিযোগ আছে যেমন পর্দানশীন নারীদের ভাইভাতে বাদ দেয়া , মেধার ভিত্তিতে চাকরি না হওয়া, কিংবা জামাত-শিবির লিংক আছে বলে বাদ দেয়া । তবুও মেয়েরা ভালো চাকুরি পেয়েছে।
সমস্যা হয়েছে চাকরিতে প্রবেশের পর। সরকারি হোক কিংবা বেসরকারি : নারীদের সুরক্ষার জন্য কঠোর শৃঙ্খলা কমিটি থাকা দরকার ছিল। অনেক সময় উচ্চপদস্থ পুরুষ কর্মকর্তারা নানা রকম চাপ সৃষ্টি করেছে, অথবা প্রলুব্ধ করে পরকীয়ায় জড়িয়েছে। এ ধরনের কর্মকর্তাদের অনেকে আবার শেখ হাসিনার অপকর্মের ডানহাত ছিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা হতো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও এখনো তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.