| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দ কুতুব
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
'দেশি মুরগি খেতে পারি না' এই কথা শুনে প্রথমে চোখ জলে ভরে গিয়েছিল। কত নিদারুণ এক শোচনীয় চিত্র! একজন শিক্ষিকা, যিনি নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলছেন, তিনি নিজেই দেশি মুরগির স্বপ্ন দেখছেন। এত বড় একটা কষ্ট! এত বড় একটা অন্যায়! আমার হৃদয় সত্যিই ভেঙে গেছে। তারপর খোঁজ নিয়ে যখন জানলাম যে এই শোচনীয় শিক্ষিকার নিজ এলাকায় পাকা বাড়ি আছে, কুমিল্লায় দুইতলা ভবন আছে, হাজীগঞ্জে ছয়তলা নিজস্ব বিল্ডিং আছে এবং একটি বিউটি পার্লারও চলাচ্ছেন, তখন আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা সত্যিই একটা শোচনীয় ঘটনা।
শোচনীয় না বলে আর কী বলব? একটা শিক্ষিকা, যার তিনটি বাড়ি আছে, যিনি একটা ব্যবসা পরিচালনা করছেন, যার স্বামী প্রধান শিক্ষক এবং সম্ভবত মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকার উপরে, তিনি বলছেন দেশি মুরগি খেতে পারেন না! কী দারুণ একটা কাকতালীয় সমাপতন! কী অসাধারণ একটা কমেডি! দেশি মুরগি যেন হয়ে গেছে লাক্সারি আইটেম, প্রথাগত সোনার চেয়েও মূল্যবান! বাজারে ৫০০ টাকার দেশি মুরগি হয়েছে ৫০,০০০ টাকার হীরা!
অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছি এই সৃজনশীল রূপকের প্রয়োগে। একজন শিক্ষক প্রতিনিধি যখন বলেন সব শিক্ষকদের কষ্টের কথা বলতে চেয়েছেন, তখন তিনি একটি চমৎকার পন্থা বেছে নিয়েছেন। তিনি বেছে নিয়েছেন এমন একটি উদাহরণ যা তার নিজের জীবনযাত্রার সাথে পুরোপুরি বেমানান। এটা যেন কোনো এক মহান শিল্পী যিনি অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করছেন। বলছেন: হ্যাঁ, আমিও তারা, আমিও দুঃখী, আমিও ভুক্তভোগী। কিন্তু আমার ছয়তলা বাড়ি আছে, তাই বুঝবেন, আমার দুঃখ কত গভীর!
একটা সরল হিসাব করে দেখুন। যদি কোনো সাধারণ প্রাথমিক শিক্ষিকা মাসে ২৩ হাজার টাকা পান এবং সেই অর্থ দিয়ে একটি পরিবার চালান, তাহলে দেশি মুরগি কেনার ক্ষমতা থাকবে কিনা এটা আসল প্রশ্ন। কিন্তু যখন শিক্ষিকার সরকারি বেতন ২৩ হাজার, এর সাথে স্বামীর আয়, বিউটি পার্লারের মুনাফা, এবং সম্ভবত আরও অনেক কিছু যোগ হয় তখন সেটা হয়ে যায় বিশাল এক রাজস্ব প্রবাহ। তারপর দেশি মুরগি খেতে পারা বা না পারার কথা বলা মানে হল জনগণকে নির্বোধ মনে করা।
এই শিক্ষিকা নিশ্চয়ই অত্যন্ত দক্ষ একজন অভিনেত্রী হতে পারতেন। তিনি যেভাবে নিজের বাস্তবতা ভুলে গিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের মুখোশ পরে কথা বলছেন, তা দেখে মন হয় বলিউড অডিশন দিয়ে আসতে। এমন একটি অভিনয় যা একই সাথে বাস্তবতা এবং কল্পনাকে এত নিখুঁতভাবে মিশিয়ে দেয়, তা খুব কম মানুষই করতে পারে। তিনি বলেছেন শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সব শিক্ষকদের কথা বলছেন। দারুণ! সত্যিই দারুণ এক প্রতিনিধিত্ব! যে প্রতিনিধি নিজে বিশেষ সুবিধাভোগী তিনি সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা বলছেন, এটা যেন গল্পের রাজা ভিখারির জামা পরে ভিক্ষা চাইছেন।
আর যখন প্রকৃত দারিদ্র্যে থাকা শিক্ষিকারা বলছেন তারা ২০ বছর চাকরি করেও দেশি মুরগি কিনতে পারেননি, তখন সেটা একটা পুরো ভিন্ন ধরনের বাস্তবতা। সেটা সত্যিকারের অভাব, সত্যিকারের আর্তনাদ। কিন্তু সেই কণ্ঠস্বর হারিয়ে যাচ্ছে এই ছয়তলার শোরগোলে। এটা যেন এক ধরনের কণ্ঠস্বর চুরি, সত্যিকারের দুর্বলদের প্রতিনিধিত্ব করে তাদের অধিকার নিজে আত্মসাৎ করা।
বাজেট বাড়ে, জিডিপি বাড়ে, আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছি বলে শোনি। কিন্তু এই উন্নয়নের ভাগীদার কী সেই শিক্ষিকা যিনি সত্যিই দারিদ্র্যে আছেন? নাকি সেই শিক্ষিকা যার ছয়তলা বাড়ি এবং ব্যবসা আছে? সত্যিকারের অন্যায় এটাই যে যারা প্রকৃত নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা হলেন বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত মানুষ, এবং তারা সাধারণ মানুষের ভাষা ব্যবহার করে তাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। দেশি মুরগি হয়ে উঠেছে এক মহান প্রতীক যেখানে মূল বিষয়টা হারিয়ে গেছে সম্পূর্ণভাবে।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: টিচারদের মানুষ আগের মতো ভালো পায় না ।
২|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৭
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
এইসব জানোয়াররা ঘুষ দিয়ে চাকুরী নিয়েছে, পড়ালেখা কিছুই জানে না।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এইচএসসি পাশ হবেন তিনি।
৩|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:২৬
শ্রাবণধারা বলেছেন: হা হা
মজাই লাগলো এই মহিলার দুঃখের কথা পড়ে।
কিন্তু সকল শিক্ষকের অবস্থা তো এই শিক্ষিকার মত ভাল নয়। অধিকাংশ শিক্ষকের একার রোজগারে সংসার চলে - আমার পরিচিত প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে এমন সংখ্যাই বেশি।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যারা অভাবে আছেন তাদের কে সাধারণ শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি করলে ভালো হয়।
৪|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৩৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার মাসিক ইনকাম কত?
আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে কোন রকম একটা বাসাও পাইনি।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমরা আজীবন মিরপুর এলাকায় থেকেছি৷ ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে অনায়াসে মাস চলে। ব্যবসা আমাদের ও ছিলো।
৫|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে মহিলা সমবেদনা পাওয়ার জন্য মিথ্যা বলেছেন।
এরকম অনেকেই করেন। কিন্তু অনেক দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ দেশী মূরগী এবং গরুর মাংস কিনে খেতে পারেন না।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এটা রাষ্ট্রের জন্য খারাপ যে যারা বিশেষ সুবিধাবাদী তারাই আজ জনতার কন্ঠস্বর। রাজনীতিবিদদের কথাই চিন্তা করে দেখেন।
৬|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০৪
একজন নিষ্ঠাবান বলেছেন: দেশি মুরগীই যে খেতে হবে তার কোন মানে আছে?
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাউরে আমি ন জানি। টিচারের সাধ হতি পারে না যে দেশি মুরগির সালুন খেতে ?
৭|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২১
কামাল১৮ বলেছেন: আমরা যারা বিদেশে আছি তারা দেশি মুরগি পাবো কোথায়।বাধ্যহয়ে বিদেশি মুরগী খেতে হয়।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কেমন লাগে বিদেশি মুরগির সালুন ?
৮|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পাঙাস মাস্টার আর এই মহিলা শিক্ষক সমাজের ইজ্জত মেরে দিয়েছেন।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সঠিক বলেছেন ।
৯|
১৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য পেয়েছেন সেটা জানতে।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পাক সার জমিন বাদ ।
১০|
১৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৪
নতুন বলেছেন: মিথাবাদীরা শিক্ষকতা করার অধিকার রাখে না। তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা উচিত।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: তাহলে ঠগ বাছতে গা উজাড় হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৬
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
এসব ইডিয়ট বাচ্চাদের কিছু পড়ায় না।