![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই ভাল, সেইসাথে চরম ভদ্র এবং গোছালো একটা ছেলে।\nকি বিশ্বাস হইল বিশ্বাস না হইলে ঠিকই ধরছেন, আমি পুরাই\nউল্টা!!!\nনিজের সম্পর্কে কিছু কথা যদি বলতেই হয় তাহলে প্রথমেই\nযে কথাটি বলব তা হলো- আমি নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের\nএকটি ছেলে। ছোটবেলা থেকেই অনেক আদর-আল্হাদে বড়\nহয়েছি এবং এখনও হচ্ছি।বাবা-মা আমার কাছ থেকে অনেক\nকিছু আশা করে।যদিও তাদের আশা আমি পূরন করতে পারব\nকিনা জানিনা।
প্রথম কোনো একটা পাবলিক পরীক্ষা ছিল বলে নতুন জায়গায় নিজেকে উপস্থাপন করার জন্যে মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েই গিয়েছিলাম। হুম ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আমাদের এস এস সি পরীক্ষা শুরু হয়। নিতান্তই ভাল ছাত্র হিসেবে পরীক্ষা নিয়ে মোটেও দুঃশ্চিন্তা করিনি, ছিলাম একদম স্বাভাবিক। মহুয়ার সাথে সেদিনই প্রথম দেখা। আমাদের স্কুলের সাথে মহুয়াদের স্কুল মিলে একটা কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছিল। ওকে প্রথম দেখেই খুব ভাল লাগলো, আমিতো বেশ কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই ছিলাম। পরে সবাই রোল অনুযায়ী কক্ষ খুজে নিতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। কাংখিত কক্ষ খুঁজে নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম কখন শুরু হবে পরীক্ষা। একটু এদিক ওদিক তাকাতেই হঠাৎ মহুয়ার চোখে চোখ পড়লো। সাথে সাথেই অপ্রস্তুত আমি অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।
এভাবেই প্রতিটা পরীক্ষাতেই আড়চোখে দেখাদেখিটা চলতো। মহুয়ার চোখের সাথে আমার চোখের একটা সখ্যতা গড়ে ওঠে। মহুয়ার নামটাও সরাসরি জানতে চাইতে পারিনি, তবে ওর বান্ধবীদের মুখ থেকেই শুনে নিয়েছি। যেদিন আমাদের শেষ প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা, মহুয়ার সাথে কথা বলবো প্রতিগ্গা করে বাসা থেকে বের হলাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখি তাদের পরীক্ষা সকালের ব্যাচে হয়ে গেছে। খুব খারাপ লাগলো, রাগ ও হচ্ছিল। মহুয়াটাও কেমন জানি। একটু অপেক্ষা করলে কি এমন হতো!! তবে কেনইবা অপেক্ষা করবে সে। তারপর কিছুদিন মনে ছিল এরপর ঠিকই ভূলে গিয়েছিলাম।
খুব সম্ভবত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আমাদের এস এস সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়, তারপর পুরো জুন মাস জুড়ে কলেজে ভর্তির ব্যস্ততা। কলেজের ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের কথা আমি কখনোই ভুলতে পারবোনা। কয়েকটা বন্ধুসহ রুমের সামনের সারিতে বসলাম। শিক্ষকদের দেয়া বক্তব্য খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। ভাবছিলাম কিভাবে পড়াশুনা করবো, নিয়মমাফিক জীবনযাপন করবো ইত্যাদি ইত্যাদি। সব মিলিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। অনুষ্ঠান শেষ করে একেক করে সবাই বের হচ্ছিল। ঠিক তখনই হঠাৎ ভীড়ের মধ্যে একজোড়া চোখ খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছিল। হুম কয়েক মুহুর্তেই মনে পড়ল এ যে মহুয়া। আবারও দেখতে চাইলাম নিশ্চিত হওয়ার জন্য, কিন্তু আবারও দেরী করে ফেললাম। ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল সে। তবে আমার মধ্যে একটা ভাল লাগা কাজ করছিল এই ভেবে যে কলেজের দুটো বছর এক সাথেই কাটাতে পারবো। এই কথাগুলো মহুয়াকে বলা হয়নি কখনো।
কিছুদিন যেতেই মহুয়াই কথোপকথনের সূচনা ঘটাল। "কেমন আছো? আমাকে চিনছো?" এই দুটো প্রশ্ন দিয়েই মহুয়ার সাথে পথচলা শুরু। কলেজের দিনগুলোকে এখন অনেক মিস করি। মহুয়ার সাথে বন্ধুত্বটা খুব বেশী স্থায়ীত্ব পায়নি। কারণ,মহুয়া শুধুমাত্র আমার বন্ধুই না, সে আমার সবকিছু। চোখের ভাষা বুঝতাম আগে থেকেই। ধীরে ধীরে মনের দূরত্বটাও শূন্যের কোঠাতে নেমে যায়। সেদিন যখন মহুয়াকে প্রেম নিবেদন করেছিলাম, খুব ভয় হচ্ছিল। যদি সে না বলে দেয়, যদি সে রাগ করে...!! কিন্তু নাহ। বরং সে খুব শান্তভাবে আমার প্রেম নিবেদন শুনেছিল। তখন তার অস্তমিত চোখজোড়াতেই আমি আমার ভালবাসা খুঁজে পেলাম। আমার প্রতি মহুয়ার ভালবাসার তীব্রতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
সেদিন মহুয়ার একটা প্রশ্ন শুনে দারুন অবাক হলাম, প্রশ্নটা ছিল এরকমঃ
" আচ্ছা সাজ্জাদ, একটা ব্যাপারে আমি এখনও চিন্তা করে পাইনা। সেটা হল তুমি কি করে জানছো আমি এই কলেজেই ভর্তি হবো? আর আমাদের বাসাটা এদিকেই?"
আমি আমার মতো করে মহুয়াকে বুঝিয়েছি, ভাগ্যের নির্ধারন করা রহস্যের কারনেই আমাদের পুনরায় একত্রিত হওয়া, তবে এ বিষয়টা মহুয়া বুঝতেই পারলো না। সে ভাবছে আমি তার সম্পর্কে খোঁজ রাখতাম, আর এটা নাকি তার ভালই লাগছে।
আমি আর কথা বাড়াইনি। আমার "রাব নে বানাদি জোড়ি" কাহিনীকে সে বুঝলোইনা, এটা ভেবে একটু আক্ষেপ হলো। কিন্তু আমার ভালবাসার মানুষটা আমাকে অনেক ভালবাসে, কাছের মানুষের এতটা কাছে থাকাটা সৌভাগ্যের। ভালবাসার পথটায় মাঝে মাঝে ক্রসিং আর মোড় এসে পড়ে, তখনই ভালবাসা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। সব ভালবাসা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়না। হার মেনে নেয়, পাল্টে নেয় চলার পথ।
তবে আমি আর মহুয়া এ পর্যন্ত ভালবাসার বেশ কিছু পরীক্ষা সাফল্যের সাথে উতরে এসেছি। সামনে আরও একটা পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। এবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরুর তারিখটা ১৪ ফেব্রুয়ারী, এও আমাদের একটা পরীক্ষা। সবাই নিশ্চয় পরীক্ষার বিষয়টা বুঝতে পারছেন। ভালবাসা দিবসে নয়, আমাদের ভালবাসার ওপর আমার যথেষ্ট ভরসা আছে। তাই আসতে দাও পরীক্ষারে, আমরা ভয় করিনা।
©somewhere in net ltd.