নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Miles to go... before I sleep!

আমি খুবই ভাল, সেইসাথে চরম ভদ্র এবং গোছালো একটা ছেলে। কি বিশ্বাস হইল বিশ্বাস না হইলে ঠিকই ধরছেন, আমি পুরাই উল্টা!!! নিজের সম্পর্কে কিছু কথা যদি বলতেই হয় তাহলে প্রথমেই যে কথাটি বলব তা হলো- আমি নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে। ছোটবেলা থেকেই অনেক আদর-আল

সাজ্জাদ মণি

আমি খুবই ভাল, সেইসাথে চরম ভদ্র এবং গোছালো একটা ছেলে।\nকি বিশ্বাস হইল বিশ্বাস না হইলে ঠিকই ধরছেন, আমি পুরাই\nউল্টা!!!\nনিজের সম্পর্কে কিছু কথা যদি বলতেই হয় তাহলে প্রথমেই\nযে কথাটি বলব তা হলো- আমি নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের\nএকটি ছেলে। ছোটবেলা থেকেই অনেক আদর-আল্হাদে বড়\nহয়েছি এবং এখনও হচ্ছি।বাবা-মা আমার কাছ থেকে অনেক\nকিছু আশা করে।যদিও তাদের আশা আমি পূরন করতে পারব\nকিনা জানিনা।

সাজ্জাদ মণি › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবাক জোছনা...

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

তাকে কে বোঝাবে ভালবাসার জোছনা শেষ হয়না। আজকে শেষ হলে কাল আবার আসবে।
কোনো এক অব্যক্ত ভাললাগার কারনেই হয়তো সৌরভকে সহ্য করে চলেছে মহুয়া। হয়তো সহ্য করে চলেছিল, অন্যথা নিজের ইচ্ছেকেই গুরুত্ব দিচ্ছিল সে। তচে সৌরভ মহুয়াকে ভালবাসে, এটা মহুয়ার অজানা না। তবে জেনে শুনে অজ্ঞ থাকাটা মহুয়ার কষ্টার্জিত স্বভাব।

"গন্তব্য স্হির থাকলে আর সময়ের খুব বেশি তাড়া না থাকলে পৌঁছানো সুনিশ্চিত হয়ে থাকে।"

কিন্তু সব পথের শেষ থাকেনা। কারণ পৃথিবী গোলাকার, সরলপথে হেঁটে গোলাকার পৃথিবীর শেষ খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য। সৌরভের ক্ষেত্রে এই দুঃসাধ্য গন্তব্যের নাম মহুয়া। লক্ষে পৌছঁতে হলে অনেক কাঠখড় পোহাতে হবে তাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হচ্ছে মহুয়ার সম্মতি। কারণ, এ এমন এক গন্তব্য যা নিজ থেকে ধরা না দিলে, তার কাছে পৌছাঁনো অসম্ভব। তবে পথ চলাতে সৌরভের ছিল এক অপরিমেয় শক্তি। আর এই শক্তির নাম ভালবাসা। সৌরভ হয়তো জানেইনা ভালবাসা কি। সে শুধু জানে ভালবাসা-ই সব। ভালবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করে নিতেই সৌরভের নিরন্তর প্রচেষ্টা।
অসংখ্যবার তার এই চেষ্টা পরিণত হয়েছে অরন্য রোদনে। কিন্তু তবুও সে স্বপ্ন দেখে, আশায় বুক বাঁধে। ভালবাসাকে পুঁজি করে অপেক্ষার প্রহর কাটায়। হয়তো সৌরভের এই অপেক্ষা মহুয়াকে কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছিল। তবে আপাতদৃষ্টিতে কিছুই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল না। আসলে অন্ধকার রাতের মতোই অসচ্ছতায় ঘেরা ছিল মহুয়ার মনোজগৎ। সেখানে প্রবেশ করা সৌরভের জন্য অত্যন্ত দুরূহ। তবে এমনও হতে পারে সেই জগতে সৌরভ ইতিমধ্যেই স্থান করে নিয়েছে।
সত্যি বলতে কি, অনিশ্চয়তার মধ্যেও ইতিবাচক প্রত্যাশা করা সৌরভের দুর্বোধ্য বৈশিষ্ট্য। আজ সৌরভ মহুয়ার সাথে ফোনে কথা বলছে। তবে প্রথম... দ্বিতীয়... তৃতীয়.... নাহ, কততম বার সেটা জরুরি নয়। জরুরি বিষয়টা হচ্ছে মহুয়া কিছুটা বিরক্তি বোধ করছিল। সৌরভের ভালবাসা মহুয়া বুঝেও বোঝেনা। অথবা বুঝলেেও তা প্রকাশ হতে দেয়না। বিরক্ত হলেও তাই ফোনটা রাখতে পারেনা মহুয়া। সৌরভের হঠাৎ অহেতুক প্রশ্নে ও বিরক্তির মিশ্রনে মহুয়া সামান্য রেগেই ছিল। সৌরভ বলে, তুমি কি শুয়ে আছো, নাকি বসে আছো?
দাঁড়িয়ে আছি - মহুয়া জবাব দেয়।

সৌরভঃ এতো রাতে!! দাঁড়িয়ে আছো ?? কি করছো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ??
মহুয়াঃ তোমার সাথে কথা বলছি, অপদার্থ।
সৌরভঃ ঘুমাওনি?
মহুয়াঃ আমি আরও পরে ঘুমাই। (মিথ্যে বলে মহুয়া)
সৌরভঃ তার মানে আমি তোমাকে বিরক্তি করিনি? আমিতো ভয়ে ছিলাম, ভেবেছি তুমি ঘুমাচ্ছো। আমার ফোনে বিরক্ত হয়ে আমাকে বকেটকে দিবে!!
মহুয়াঃ বকেছি তো... অপদার্থ বললাম না!!
সৌরভঃ ওটা ভূল বলেছ, আমি অপদার্থ নই।
মহুয়াঃ তাহলে?
সৌরভঃ তোমাদের বারান্দা থেকে কি আকাশ দেখা যায়?
মহুয়াঃ কি প্রশ্নের কি জবাব!!
সৌরভঃ বলোনা, প্লিজ।
মহুয়াঃ যায়। কেন?
সৌরভঃ যাবে একটু?
মহুয়াঃ কেন?
সৌরভঃ যাওনা, এমনি।
মহুয়াঃ আচ্ছা।
মহুয়া রুম লাগোয়া বারান্দার দিকে হাঁটতে থাকে। সামান্য কয়েক পা, তবুও সৌরভের প্রতি বিরক্তি যেন বেড়েই চলেছে।
ওপাশ থেকে সৌরভ বলে, এসেছো?
মহুয়া একটা ঢোঁক গিলে কাঁপা গলায় বলে, হ্যাঁ এসেছি।

সৌরভঃ আকাশের দিকে তাকাও।
মহুয়াঃ কি সুন্দর জোছনা!! কতদিন জোছনা দেখিনা।
একথা বলেই হঠাৎ চুপ হয়ে যায় মহুয়া। ফোনটা ধরাই থাকে। একটা দীর্ঘশ্বাসকে গলায় আটকে রাখতে চায়। রাতের গভীরতা বাড়তেই থাকে। দীর্ঘশ্বাসটাকে আজ আর আটকে রাখতে পারেনা, বেরিয়ে যায়। দীর্ঘশ্বাসটা ওপাশ থেকে শুনতে পায় সৌরভ। কিছুক্ষণ নীরব থেকে প্রশ্ন করে,

সৌরভঃ মন খারাপ তোমার?
মহুয়াঃ নাহ! মন ভালো।
সৌরভঃ তাহলে দীর্ঘশ্বাস কেন?
মহুয়াঃ ওটা ভালো লাগার দীর্ঘশ্বাস।
সৌরভঃ কেমন ভালো লাগা?
মহুয়াঃ তোমাকে ধন্যবাদ এমন সুন্দর জোছনার খোঁজ দেওয়ার জন্য।
সৌরভঃ ধন্যবাদেই শেষ?
মহুয়াঃ আর?
সৌরভঃ আরও কিছু বলো?

মহুয়া কিছুক্ষন ভেবে বলে,
মহুয়াঃ আচ্ছা একটা গল্প শুনবে?
সৌরভঃ গল্প!! নিশ্চয়ই শুনবো। (আগ্রহের সুরে সৌরভ জবাব দেয়)
মহুয়া বলতে শুরু করে...
:: এক স্বপ্নপ্রেমী পরী একটা হাতের খোঁজ করে দীর্ঘদিন ধরে। সে হাতটার অস্তিত্বও টের পায়। অথচ স্পষ্ট দেখতে পায়না। কারণ চারপাশে তখন বিদঘুটে অন্ধকার। সেই পরী স্বপ্ন দেখে অবাক হতে চায়। একদিন অপেক্ষার সেই রাতের আগমন ঘটল। জোছনায় সেই পরী তার স্বপ্নের হাত'টির দেখা পেল। হাত'টি তার খুব কাছে।
সৌরভ বললো, হাত'টি ধরলেই পারে।
মহুয়া শুনতে পায়নি সৌরভের কথা। সে বলতে থাকে...
একদিন সে হাত'টি খুঁজে পায়।
:: তাহলে? সৌরভের কৌতূহল ভরা প্রশ্ন।
মহুয়াঃ সেটাই তো গল্প।
সৌরভঃ বলো
মহুয়াঃ জোছনা দেখতে দেখতে তার বুকটা কেঁপে ওঠে। জোছনা থাকতে থাকতে সে হাত'টি ধরতে পারবেতো!!
সৌরভঃ তারপর?
মহুয়াঃ আজ রাতের জোছনায় সে হাত'টি ধরবে। সে অবাক হয়, স্বপ্ন দেখে। আজ রাতে সে অবাক জোছনা দেখবে।
সৌরভঃ তারপর?
মহুয়াঃ তুমি হাতটা সরিয়ে নেবে নাতো?
সৌরভ অবাক না হয়ে পারেনা। তবুও বলে...
সৌরভঃ মানে?
মহুয়াঃ বলো না?
সৌরভঃ সরিয়ে নেবো বলেতো হাত বাড়াইনি। হাত বাড়িয়েছি হাত ধরবো বলে। আর সেই হাত ধরে একসাথে পথ চলবো বলে।
মহুয়াঃ কখনো পাল্টে যাবেনাতো???
সৌরভ বলে, সকাল হয়ে গেছে। আবার কি জোছনার অপেক্ষা করতে হবে?
মহুয়াঃ নাহ...
সৌরভঃ সত্যি বলছো? ( তার কন্ঠে তীব্র উৎসাহ)
" ভালবাসার জোছনা শেষ হয়না। আজকে শেষ হলে কাল আবার আসবে।" মহুয়া প্রফুল্ল স্বরে বলে।

তারপর দুজনেই স্বর্গীয় সুখের আবেশে মৃদু হাসির সন্ধান পেল। ভালবাসার যুগলযাত্রা হয়তো গন্তব্য খুঁজে পেল। সারারাত ঘুম হয়নি। তাই সৌরভ ও মহুয়া পরস্পর থেকে বিদায় নিয়ে নিয়েছে, তবে সাময়িক। জোছনা তো ফুরিয়ে যায়না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.