নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসরিন সুলতানা লোপা

আমি অসাধারণ মানুষের ভিড়ে খুবই সাধারণ একজন মানুষ।

নাসরিন সুলতানা লোপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনসূয়ার পাপ!!

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮

১.
"কি আশ্চর্য!!!! আমার কথা কারো বিশ্বাসই হচ্ছে না! বারবার একই প্রশ্ন শুনতে আর জবাব দিতে এতোই বিরক্ত লাগছে যে ইচ্ছে হচ্ছে এখনই একটা প্রেম করি আর তাঁদেরকে বলি যে হ্যা,আমার পছন্দের ছেলে আছে!" বারান্দার গ্রিলে কপাল চেপে ধরে এসব ভাবছিলো রাগে লাল হয়ে যাওয়া অনসূয়া। হঠাত ফোনের আওয়াজে চিন্তায় ছেদ পড়লো..এসএমএস এসেছে...বিরক্ত হয়ে চেক করতে গেলো অনসূয়া।
"তুমি কি দূর থেকেই আমাকে দেখবে?
আজ বাইরে কি অপূর্ব জোছনা।
সে আলোয় তুমি এবং আমি কখনো কি
নিজেদের দেখবো না?"
এমনিতেই রেগে ছিলো অনসূয়া,এসএমএসটা পড়ে রাগ আরো বেড়ে গেলো। একগাদা বকা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কল দিলো নাম্বারটিতে। এক রিংয়েই রিসিভ করে অনসূয়াকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বলতে লাগলো "জানি বকা দিতেই কল দিয়েছো। বকাটা কাল দিলে কেমন হয়? আজ কিন্তু পূর্ণিমা। বাইরে গিয়ে জোছনাস্নান করো,মন ভালো হয়ে যাবে।" এবং সে রেখে দিলো।
"আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়লাম তো...কয়েকদিন পরপরই কবিতা পাঠায়...বেছেবেছে সেসবদিনেই পাঠায় যেদিন আমার মেজাজ খারাপ থাকে। জানে কি করে সে? আশেপাশেই থাকে নাকি?" আনমনে ভাবতে থাকে অনসূয়া এবং একসময় আবিষ্কার করে তার মন ভালো হয়ে গিয়েছে জোছনায় বসে থেকে! B:-)

২.
অনসূয়ার আজ বিয়ে। বহু কষ্টে অনসূয়াকে রাজি করানো হয়েছে বিয়েতে। ছেলে আমেরিকাপ্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার,তাই তারা তাড়াহুড়ো করেই বিয়েটা করাচ্ছে। "অনেকদিন হলো সে কোনো কবিতা পাঠায়নি। আজ কি পাঠাবে? আজতো আমার অনেক মন খারাপ। সে কি জানে? সে কি আসবে?" খোঁপায় শেষ গোলাপটি আটকাতে আটকাতে ভাবছিলো অনসূয়া। কিছুক্ষণ পরেই ডাক পড়লো অনসূয়ার। কাজী সাহেব এসেছেন। শেষবার কবুল বলার আগে একবার চারপাশে তাকালো অনসূয়া.. নাহ অপরিচিত কাউকে তো দেখছিনা..সে আসেনি..ফোনটাও চেক করলো..নাহ কোনো কবিতা/কল নেই এবং অনসূয়া অপরিচিত এক ব্যক্তির পরিচিত হওয়ার উদ্দেশ্যে 'কবুল' বলে ফেললো।
শেষবারের মতো নিজের রুমে একা বসে ছিলো অনসূয়া.. চারিদিকে কেমন যেনো এক অসহ্য নীরবতা... এসএমএস এর তীব্র শব্দ সেই নীরবতাকে চূর্ণ করে দিলো..
'আজ এই বসন্তের দিনে আকাশ এমন মেঘলা কেন?
আকাশ কি আমার কষ্ট বুঝে ফেললো?
তা কেমন করে হয়?
আমার যে কি কষ্ট তা তো আমি নিজেই জানি না
আকাশ কি করে জানবে? ---রাহাত"
রাহাত!!!! আকাশ ভেংগে পড়লো যেনো অনসূয়ার মাথায়!! এতোদিন রাহাত কবিতা পাঠিয়েছে!! এই কি সেই রাহাত!!!

৩.
চার বছর আগের কথা। রাহাত কলেজের পরিচিত মুখ। পিকনিক এর আয়োজন থেকে শুরু করে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সবখানে রাহাতকে চাই-ই সবার। রাহাত খুব ভালো কবিতা লিখতে..আবৃত্তিও করতো কিন্তু শুধুই নিজের কবিতা। অনসূয়া একসময় নিজে থেকেই আগ বাড়িয়ে বন্ধুত্ব করে রাহাতের সাথে...ধীরে ধীরে রাহাত-অনসূয়া প্রেমকথা পুরো কলেজেই ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু একদিন অনসূয়া এসে বলে "রাহাত আমরা কিন্তু শুধুই বন্ধু.. কলেজে যা-ই ছড়িয়ে পড়ুক না কেন" "তা তো অবশ্যই" দীর্ঘশ্বাসটা চেপে রেখে বলে রাহাত। একসময় দূরত্ব বাড়তে থাকে...এবং এক বিকেলে কথাচ্ছলে অনসূয়ার ধাক্কায় কলেজের সিঁড়ি থেকে পড়ে যায় রাহাত..অনসূয়া ভেবেছিল রাহাতের ফাজলামি.. তাই ঘুরেও তাকায়নি চলে এসেছিলো। ঘুরে তাকালে হয়তো দেখতে পেতো প্রাণবন্ত এক ছেলেকে সারাজীবনের জন্য খোঁড়া করে দিয়েছে সে....

রাজকন্যার বেশে স্বামীর গাড়িতে বসে ভাবছিলো এসব অনসূয়া.. দেবে কি একবার রাহাতকে ফোন?? নাহ,থাক..কিছু ভুলের ক্ষমা চাইতে হয় না...কিছু ভুল ভুল না..পাপ!!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:



বিয়ের আগে কি রাহাতকে ফোন দেয়া যেত না ?

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫২

নাসরিন সুলতানা লোপা বলেছেন: ঐ যে কিছু ভুল ভুল না,পাপ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.