নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামু র বয় বৃদ্ধার ব্লগ
আমাদের বাঙালির রান্নাঘরে পঞ্চ ব্যাঞ্জন আয়োজন নিয়োজন করেন মা দাদী নানীরা কিন্তু কোন মাছের সাথে কোন সবজী যায় ,মাংসের ঝোলে কতটা গাঢ় হবে সেটুকু নির্ধারণ করেন আমাদের বাবা দাদা ভাইরা। সত্যি আমার মনে হয় এই শৌখিন্য টুকু নিশ্চয়ই বংশানুক্রমিক !! নিত্যকার বাজার সদাই থেকে শুরু করে, সকাল দুপুর রাতে কত পদে দস্তরখানা সাজবে সে চর্চা চলে সমস্ত দিন। খুব বেশি দূরে যেতে হবে না , আমার বন্ধু তালিকাতেই এমন ভোজন রসিক মিলবে কুরি বিশ বাইশ। বাদলা হওয়ায়, ঘন কুয়াশায় আর শীতার্ত রাতে' র ফেসবুক স্ট্যাটাস গুলো তা জানান দেয়। আর তীব্র গরমে চৈত্রের কাঠফাটা রোদ্দুরে তাদের সবুজ চুড়ি পরা হাতের বরফকুচি মেশানো পানির কল্পনায় ভাসা! হ্যাঁ আয়েশ করে লেখাই বলে সে তালিকায় তিক্ত কটু অম্ল মধুর লবন কষায়; সকল কিছুর সমন্বয় ঘটবে।
আর এই বসু তো আবার আরেক কাঁঠি সরেস বিক্রমপুরের মালখাঁনগরের বসুঠাকুর। যে জন্য এত কথা বললাম সে হচ্ছে -
পড়া শেষ করলাম নদী - স্বপ্ন কবিতার সেই মেঘনা-পদ্মা-শোন বেড়াতে চাওয়া " আমারে আমারে চেনো না? মোর নাম খোকা, ছোকানু আমার বোন" পরিচয় দেয়া । বুদ্ধদেব বসুর লেখা এক্কেবারে আনকোরা " ভোজন শিল্পী বাঙালী" বইখানি। মাত্র ৪০ পৃষ্ঠার এই বইয়ের পাতায় পাতায় লেখক নিজের সেই " মালখাঁনগরের বসুঠাকুর" সত্ত্বার পরিচয় তুলে এনেছেন। যেমন লিখেছিলেন -
উচ্ছে আর মৌরলা মাছের তেতো চচ্চড়ি, তারপর ডালের সাথে পটল ভাজা আর মুড়মুড়ে কাচকি মাছের ঝুড়ি, তারপর কুচকুচে কালো কৈ মাছ আবির্ভূত হল, টুকটুকে লাল তেলের বিছানায় ফুলকপির বালিশের উপর শোয়ানো। শেষ পর্যন্ত ইলিশ ভাজা, সর্ষেতে ভাপানো, কলাপাতায় পোড়া পোড়া পাতুরি। কচি কুমড়োর সাথে কালোজিরের ঝোল। কোনোদিন রুই মাছের মুড়ো দিয়ে রাঁধা মুগডাল, নারকোল চিংড়ি, চিতলের পেটি। ---- বুদ্ধদেব বসু (গোলাপ কেন কালো)
অল্প ক'পাতার এই বইতে বাঙালির ভোজন বিলাসিতার সাহিত্য সাক্ষ্য থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন লিখেছিলেন " কুমড়ো ফুল নিয়ে কবিতা লেখা যায় না , যেহেতু রান্না ঘর তার জাত মেরেছে। সেই একই রবী বাবু আবার কিভাবে কুমড়ো ফুলের চেয়ে সাধারণ খাদ্য কে কবিতার রাজ্যে তুলে এনেছেন। সেসব কথা লিপিবদ্ধ করেছেন আনায়েসে।
চণ্ডী মঙ্গল কাব্যে যেটুকু পাইঃ
আছয়ে তোমার সই বিমলার মাতা
লইয়া সাজারু ভেট যাহ তুমি তথা।
খুদ কিছু ধার লহ সখীর ভবনে
কাঁচড়া খুদের জাউ রান্ধিও যতনে।
রান্ধিও নালিতা শাক হাঁড়ি দুই তিন
লবণের তরে চারি কড়া কর ঋণ।
সখীর উপরে দেহ তন্ডুলের ভার
তোমার বদলে আমি করিব পসার।
গোধিকা রাখ্যাছি বান্ধি দিয়া জাল-দড়া
ছাল উতারিয়া প্রিয়ে কর শিক-পোড়া।
আহা শিক- পোড়া !! শিক কাবাব !
" ছোকানু, চল রে, চান ক'রে আসি দিয়ে সাত-শোটা ডুব,
ঝাঁপায়ে-দাপায়ে টলটলে জলে নাইতে ফুর্তি খুব।
ইলিশ কিনলে? আঃ, বেশ বে তুমি খুব ভালো, মাঝি
উনুন ধরাও ছোকানু দেখাবে রান্নার কারসাজি "
সত্যি ফেলে দেয়া লাউয়ের খোসা, অযত্নে বেড়ে উঠা বেতের কচি ডগা মায় শুঁটকি মাছ পর্যন্ত রান্নার কারসাজিতে হয়ে উঠে উপাদেয়, লোভনীয়। এই কারসাজি শব্দটায় এই বই তে উঠে আসা আর একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে আসলো। লেখক লিখেছেন - এক হাংগেরীয় ভদ্র মহিলা কোন এক বাঙালি কবিকে বিয়ে করে এ দেশে কিছুদিন কাটাবার পর লেখক কে বলেছিলেনঃ “ আপনাদের রান্নায় বড্ড বেশি মশলার ব্যবহার , ও ভাবে রাঁধলে ছেঁড়া জুতোকেও ভোজ্য করে তোলা যায়” ।
আমাদের মা খালা ,পিসি ঠাকুমা নানী দাদী হেঁশেলের হাড়ির খবর টুকু এই প্রজন্ম না জানলেও। হুমায়ূন আহমেদ যেমন গরুর গোশত পরোটাকে শৈল্পিক খাবারে পরিণত করেছেন , ইন্দু বালা ভাতের হোটেলের কচুবাটা আর আদর্শ হিন্দু হোটেলের সেই মাটন রান্না র খবর ঠিকঠাক রাখে। বুদ্ধদেব বসুর লেখা সাথে আমি অনেক খানি ই রিলেট করতে পারি বিক্রম্পুইরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন হিসেবে।
অপেক্ষায় থাকলাম " মালখাঁনগরের বসুঠাকুর" সেই ভোজন শিল্পী- বাঙালী বই থেকে ঠিক কোন ব্যাঞ্জন প্রজন্মের মনে ধরে।
বেশ লম্বা সময় পড় লিখতে বসে এত বকবক করছি যে মূল বই এর চেয়ে আমার বকবকানি না বেশি হয়ে যায়। তাই এবারে এখানেই সমাপ্তি। বেশ দুষ্প্রাপ্য এই বই খানি পড়ার সুযোগ পেয়েছি বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী লেখক ট্রাভেলার , পাখি বিশেষজ্ঞ অণু তারেক এর ফেসবুক পেইজ থেকে।
২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হাহাহা সবই মাথার উপর দিয়ে যায় যদিও, এরপর ও কিছু অনুমান করে নিলাম আর কি।
অনেক ধন্যবাদ ছবিপু !
আপনার চা বিস্কুট বিলাস ও কিন্তু এই ভোজন বিলাসিতার অন্তর্গত।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: বুদ্ধদেব বসু উদ্ধৃতি পড়ে মুখে জল এসে গেলো।
২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: মূল বইতে ইলিশ নিয়ে ও এমন অনেক উদ্ধৃতি আছে।
ধন্যবাদ সৈয়দ রহমান।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: চা খাও এখন।
২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চা এর রঙ দেখেই তো তৃষা মিটে যায়। দুর্দান্ত !
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এই কয়েকদিন রান্নার কাজে নিয়োজিত ছিলাম বইন। অনেক দিন রান্না করি না। বদভ্যাস হয়ে গেছে। রান্না করতে গিয়ে দেখি এটা নাই সেটা নাই, জিনিসপত্র নিজের মত সাজানো নাই। খুব বিরক্ত নিয়া কয়দিন রানছি। যদিও রান্নার প্রশংসা পেয়েছি অনেক।
কী দিয়া কী রানমু এই চিন্তায় রাতে ঘুম কম হয়। আমি রান্না করতে গেলে এত দেরী লাগে। কিন্তু দেবরের বউ এত তাড়াতাড়ি রান্নার কাজ শেষ করে ফেলে। বুঝি না তার হাতে যাদু আছে কী না।
ইন্দু বালা , আদর্শ হিন্দু হোটেল এগুলা এই শহরে এখনো আছে নাকি?
২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনারা যেহেতু রান্না ঘরে দুজন রান্না করেন একটু অন্য রকম লাগবেই যে যার মোট করে সাজিয়েই রান্না করে। আর কষ্ট করলে তো কেষ্ট মিলবেই, প্রশংসা পাবার যোগ্য যে।
সত্যি রান্নার চাইতে কিসের সাথে এই বেলায় কি রান্না করব সেটা বেশি চিন্তার। ঐ যে অনেকদিন করেন না সে জন্য হুটহাট রান্না করতে গেলে আয়েশ করে সাজিয়ে করতে বসেন , তাতেই সময় লাগে হয়ত।
আদর্শ হিন্দু হোটেল
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী লেখা দুই বই। না এ নামে রেস্তরা নেই।
ধন্যবাদ আবারও।
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: এই কথাটা অবশ্য সত্য বলেছেন। আমাদের আর নানীর বাসা পাশাপাশি । মাঝে মাঝে মা নানীদের বাসায় গিয়ে রান্না করতেন দরকার পরলে। আমাদের বাসায় আমার মায়ের রান্নায় মাংসের ঝোলের গাঢ়ত্ব আর নানীদের বাসায় রান্না করা মাংসের ঝোলের গাঢ়ত্ব এক রকম হত না । আলাদা হত !
২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যাঁ রুচি হিসেবে রান্নার প্রকারভেদ হয়।
শুভেচ্ছা ।
৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বড় বড় কই মৎস্য, ঘন ঘন আঞ্জি
জিরা লঙ্গ মাখিয়া তুলি তৈলে ভাজি।
কাতলের কোল ভাজে, মাগুরের চাকি।
চিতলের কোল ভাজে রসবাস মাখি
ইলিশ তলিত করে, বাচা ও ভাঙ্গনা।
শউলের খণ্ড ভাজে আর শউল পোনা।।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চন্ডীমঙ্গল কাব্য !দ্বিজ চন্ডীদাস। বাকি দুলাইন হচ্ছে।
কাতলের কোল ভাঙ্গে মাগুরের চাকি ।
বড় বড় ইচা মৎস্য কৱিল তলিত ।
চিতলের কোল ভাঁজে বসবাস মাখি ॥
, রিঠা পুঠি ভাজিলেক তৈলের সহিত ।
৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৮
প্রামানিক বলেছেন: আহা বুদ্ধদেব বসুর অম্বলের কথা মনে হলে জিহ্বে জল এসে যায়, আমার মাও ভালো চুকাই শাক রান্না করতো। ১৯৮৩ সালে ভারতের রেপতি দাদার বৌদির হাতের চুকাই শাক খেয়েছিলাম এখন তো চুকাই শাকের গন্ধও খুঁজে পাই না।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রামাণিক ভাই , আপনি যে কয়েকদিন আগে বিয়ে বাড়ির ভোজের স্মৃতিচারণ করেছেন, সেইটা পড়েই তো কুপকাত আমি । সত্যি বলেছেন কিছুকিছু খাবার করো হাতে শিল্পের মর্যাদা পায় । এরপর সমস্ত জীবন কেবল সেটার স্বাদ মুখে রয়ে যায়।
৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বুদ্ধদেব বসুর খাবারের বর্ণনা শুনে ভরা পেটেও খিদে লেগে গেছে আমার। উনি লেখক হওয়ার আগে মনে হয় ভালো কোন রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি ছিলেন।
আপনি পোস্টে কোন ছবি দেন নাই। কিন্তু এই পোস্ট আমাদের শায়মামণি দিলে লেখার চেয়ে থালা, বাটি আর পায়েসের ছবি বেশী থাকতো।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: তা যা বলেছেন, বাঙালী বাবুরা সবাই শেফ। বইটা পড়লে আরও দুর্দান্ত কিছু বর্ণনা পাবেন।
আমি তো নিজের রান্না করে পোষ্ট দেই নাই , শায়মামণি তো নিজের সবুজ পায়েস হলুদ জদ্দা পদ্দা র ছবি দেয় নিজের রান্না করা। সেই প্রমাণ না দিলে তো আবার আপনারই বলবেন কোথাও থেকে কপি করেছে। বুঝেছি এইবারের আমসত্ত্ব আর আঁচার না পেয়ে হিংসায় এসব বলছেন।
৯| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
পোস্টের লেখার সাথে আপনার বাড়ীর কাছের বুদ্ধদেব বসুর পুস্তকের মুল্যবান প্রচ্ছদ চিত্র কর্মটির দিকে
তাকিয়ে থেকে ঝিমিয়ে পড়া মনটাকে চাঙ্গা করে দিল দারুন ভাবে ।
ছবিটি সত্যিই ঐতিহ্যবাহী বাংলা চিত্রশিল্পের রূপক প্রকাশ। এতে ফুটে উঠেছে বাংলার ভোজনসংস্কৃতি ও
জীবনযাত্রার সহজ-সরল কিন্তু সুসমৃদ্ধ আভিজাত্য। শিল্পটি আলপনার আঙ্গিকে আঁকা, যা একাধারে রঙিন,
প্রাণবন্ত এবং নস্টালজিক।
খাবারের আসরে বসে রয়েছেন ভোজন রসিক , সামনে সাজানো বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু বাঙালি খাবার। ছবির
বাঁদিকে এক নারীর প্রতিকৃতি যার হাতে একটি পাখা, যা গ্রাম বাংলার অতিথিপরায়ণতার প্রতীক। ত পোশাক
এবং অলংকারে গ্রামীণ বাঙালিয়ানার এক নিখুঁত ছাপ। ছবির রঙের উষ্ণতা বাঙালির আন্তরিকতার প্রতীক। কমলা
এবং হলুদাভ পটভূমি যেন সূর্যের আলোয় স্নান করা বাংলা গ্রামের এক স্নিগ্ধ সকালে আমাদেরকেআর নিয়ে যায়।
আর এই পোস্টের লেখাতেও যেন ফুটে উঠেছে ভোজনের আসরে বসে হাসি মুখে বাংলা গানের সুর যেন যেতেছে
ভাসি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের মায়া বোনা হাতে, এঁকেছেন ভোজন শির্পী বাঙালীর প্রাণ বাংলার মাঠের মত এই
সামুর বুকে । তৃষ্ণা মেটে না শুধু আহারেতে, স্মৃতি খুঁজে ফেরে ছবি এই প্রাঙ্গণে। পাখার বাতাসের মত পোস্টের
মনোরম লেখাটি জুড়ায় প্রাণের তৃষা, ভোজনশিল্পী বাংলার ইতিহাসের মত ।
এই লেখাটি ও অনবদ্য শিল্পের মতো। এটি কেবল একটি বর্ণনা নয়, বরং আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য, খাদ্যরসিকতা,
এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার এক জীবন্ত চিত্র। আপনি নীজেইততো এক কুশলী শিল্পী,শব্দের ক্যানভাসে
আমাদের রান্নাঘরের সুগন্ধ, স্বাদ, আর অনুভূতিগুলো চিত্রিত করেছেন।
লেখার শুরুতেই পঞ্চব্যাঞ্জন আয়োজনের সূক্ষ্ম বৈচিত্র্য তুলে ধরেছেন দারুনভাবে। যেভাবে মা-দাদীরা স্বাদ-গন্ধের
ভারসাম্য রক্ষা করেন, আর বাবা-দাদারা রন্ধনশৈলীতে শৌখিনতার ছোঁয়া দেন, তা একেবারেই আমাদের চেনা
গল্প।লেখায় পরিবারের যৌথ ভূমিকার এই অনুপম প্রকাশ যেন বাঙালি পরিবারের মায়াময় বন্ধন স্পষ্ট করে তুলে ।
বুদ্ধদেব বসুর "ভোজন শিল্পী বাঙালী" বইটির উল্লেখ এই লেখার আকর্ষণকে বহুগুণ বাড়িয়েছে। বাঙালির ভোজন
রসিকতা যে কতটা গভীরে প্রোথিত, তা দারুনভাবে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। উচ্ছে-মৌরলা থেকে ইলিশ পাতুরি,
শুঁটকি থেকে লাউয়ের খোসা—এ যেন এক স্বাদের রাজ্য, যা কেবল বাঙালির মাটিতেই এতটা জীবন্ত।
রবীন্দ্রনাথের কুমড়ো ফুল নিয়ে কবিতা, কিংবা চণ্ডী মঙ্গলের রান্নার রূপকথা যোগ করেছে ঐতিহ্যের সুর।
লেখার সবচেয়ে মুগ্ধকর অংশ হলো আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি আর স্মৃতির সঙ্গে ঐতিহাসিক এবং সাহিত্যিক
প্রসঙ্গের মেলবন্ধন। এটি শুধু এক খাঁটি বাঙালির কণ্ঠ নয়, বরং এক গভীর চিন্তাশীল লেখিকার হৃদয়ের অভিব্যক্তি।
লেখার শেষে "মালখাঁনগরের বসুঠাকুর" থেকে আগামী প্রজন্মের প্রতি প্রত্যাশা আমাদের শিকড়ের প্রতি দায়বদ্ধতা
মনে করিয়ে দেয়। লেখাটি নিসন্দেহে আমাদের সকলের মনে এক গভীর তৃপ্তির অনুভূতি এনে দিবে।
এক কথায়, এটি বাঙালির ভোজন বিলাসী শিল্প ঐতিহ্যের প্রতি এক অকৃত্রিম শ্রদ্ধাঞ্জলি
শুভেচ্ছা রইল
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর করে আমার লেখাকে বিশ্লেষণ করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া ! আশা করছি ভালো আছেন !
সময় থাকলে বই টি পড়ে দেখতে পারেন, পাঠে তৃপ্ত হবেন।
১০| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬
শায়মা বলেছেন: বাপরে!!!
তাদের রান্না বান্নার বাহার শুনলে মানে আগের দিনের মানুষদের রান্নাবান্নার বাহার শুনলে সেস ব রন্ধনের ঘরটিকে রান্নাঘর না রান্না বান্নার ফ্যাক্টরী মনে হয়।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আসলে ইচ্ছে করেই এমন ফ্যাক্টরী বানিয়ে রাখতেন পরিবারের প্রধানরা। আমি সুনীলের একা এবং কয়েকজন উপন্যাসে বাদলের বর্ণনায় পড়েছি। তার ঠাকুরদাদা স্বল্পাহারী ছিলেন কিন্তু সামনে ৫২ পদ রাখতে হত সাজিয়ে, পছন্দ মত দু একটা চেখে দেখতেন। উনার ভাষ্য অনুযায়ী মেয়েদের যদি রান্না'র কাজে ব্যস্ত না রাখা হয় তাহলে তারা অন্য দিকে ঝুঁকে পরবে, এবং দু এক পদের বেশি রান্না করবে না এতে করে বাড়ির আশ্রিত আর দরিদ্ররা খাবার পাবে না।
১১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৩৬
জুন বলেছেন: সে যুগে মা খালাদের একটা বিলাস ব্যাসন ছিল কত ভাবে কি কি রান্না করা যায়। এখন হইলে বসু বাবু লিখতো ডাল ভাত মাছ বা মাংসের তরকারি খুব বিলাসিতা হলে একটা ভর্তা বা ভাজি
এই অবস্থা হলে তুমি এ নিয়ে কি লিখতে মনিরা অবশ্য তখন বসু বাবুও কিছু লিখতেন কি না সন্দেহ
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আসলেই আপু কত ধরনের পিঠাপুলি করা যায় , ভর্তার রকমফের। এমন সব নিয়েই দিন কাটত, বলা চলে কাটাতে হত। এখনকার বসুবাবুরা ও কম যান না কিন্তু সুযোগ্যার অভাবে লিখতে পারছেন না। আমি তো বই পড়েই অল্পটুকু ি লিখতাম আর কি
১২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: দারুণ লিখা ।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠে এবং মন্তব্যে।
১৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৩
শায়মা বলেছেন: কি শয়তানী চিন্তা করেছো???
মেয়েদেরকে কোথায় সাজুগুজুতে ব্যস্ত থাকতে বলবে তা না রান্নাঘরের গরমে ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ে থাকায় ব্যস্ত রাখা!!!
আর মেয়েরাও কত গাধা ছিলো বুঝো তাইলে.......
যদিও খানা দানা সুন্দর করে নান্না বান্না করে সাজিয়ে গুছিয়ে ফটো তুলতে কি মজা সেটা তাহারা জানতো!!!!!!!!!!
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আসলে মেয়েরাও যে সবসময় আনন্দ নিয়ে করত তাও নয়। বসু বাবুর বই এর শেষ অংশে, উনার মেয়ে দময়ন্তী বসু সেন যে নিজেই এই বই এর প্রকাশক উনি লিখেছেন "আমার বাবা ছিলেন মাল খাঁনগরের বোস ঠাকুর - খাদ্য বিষয়ে যাদের উৎসাহ রীতিমত গল্প কথা। ভোজন বিষয়ে ওই বংশের অত্যুৎসাহ এবং খেতেখেতে আরও খাবারের কথা বলার স্বাভাব আমার মাকে কুপিত করতো। মা বলতেন “হকাই “
‘হকাই আছে রোচ নাই
দাড়ি আছে মোচ নাই’
ভোজ্যে অত্যুৎসাহী বাবা ভোজনে নেহাৎ অপারঙ্গম ছিলেন বলেই এই মশকরা।
হ্যাঁ এই সাজিয়ে গুছিয়ে ফোট তোলার মজাটাই তাহারা পেলো না। তখন ফেসবুক ছিল না যে।
১৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৫
এসো চিন্তা করি বলেছেন: সুন্দর লেখা আপু ।
আমার লেখাগুলো পড়ার আমন্ত্রণ রইলো ☺️
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে আমার লেখায় মন্তব্য করার জন্য।
সময় করে অবশ্যই যাবো।
১৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৬
মেহবুবা বলেছেন: উচ্ছে আর মৌরলা মাছের চচ্চড়ি, মুচমুচে কাচকি মাছের ঝুরি, নারকেল চিংড়ী খুব মজা।
আমি ভাবছি মালখাননগরে কোন একজন বিখ্যাত সাহিত্যিকের বাড়ী, মনে করতে পারছি না।
একবার অনেক দিন আগে একটা লেখায় পড়েছিলাম, প্রয়াত লেখক শামসুল হক উল্লেখ করেছিলেন তদানীন্তন গোয়ালন্দ ঘাটের বিভিন্ন খাবার হোটেলের নানান পদ বিশেষ করে নদীর তাজা মাছের কথা। উনি লিখেছিলেন যে এত মুখরোচক বিভিন্ন তরকারী তুলনাহীন। যখন ফেরী ছিল পারাপারের জন্য।
আমি খেয়েছি অনেক আগে এবং সত্যি অতুলনীয় নদীর তাজা মাছ, শিল নোড়ায় বাটা মশলা, কাঠের চুলায় নদী পারের বাতাসে রান্না করা তরকারী মজা না হয়ে পারেই না।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যাঁ নিঃসন্দেহে মজা এই খাবার গুলো। মালখাননগর অবশ্য উঠে এসছে পূর্ব পশ্চিম উপন্যাসে - মজুমদার বাড়ি। সমরেশ বসু ও বিক্রমপুরের।
হ্যাঁ বহু লেখকের লেখায় উঠে এসছে পদ্মানদীর কথা, আর নদী থেকে সদ্য তোলা মাছ ফ্রেশ সবজি খাবার স্বাদ গন্ধ পালটে দেয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
১৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪
shubh+r বলেছেন: এক্কেবারে সরেস লেখা। নতুন সবজির মতো টাকটা, শেষ পাতের দৈ এর মতো পরিতৃপ্তি পেলাম।
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আহা শীতের সব্জি আর দৈ !!!
বহুত খুব বহুত খুব।
লেখায় স্বাগত আপনাকে। ব্লগে আপনার সময়গুলো আনন্দময় হোক।
১৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৫
মেহবুবা বলেছেন: তাই তো পূর্ব পশ্চিম উপন্যাসে, কত কি হারিয়ে যায় প্রিয় বিষয় জীবন থেকে! বাবলু, অলি কত পছন্দের চরিত্র, কিছুই হারায় না।দূরে চলে যায়। আবার ফিরেও আসে! মালখাননগর সেই নাম।
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:২০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: যা বলেছেন আপু সময়ের সাথে প্রিয় হয়ে উঠা অনেক কিছুই কখনো কখনো ধূসর হয়ে উঠে। খুঁজে পেতে সময় লাগে কিন্তু মিলে যায়। আমাদের কখনো অলস কখনো বিমর্ষ সময়ের সাথী এইসব চরিত্র। ভালোবাসা আপু।
১৮| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৪
মিরোরডডল বলেছেন:
এতোদিন পর প্রিয় মনিপু পোষ্ট নিয়ে আসলো,
মজার মজার খাবারের কথা মনে করিয়ে দিলো।
২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যালো ডল !!
ব্লগিং থেকে দূরে থাকলে তোমাদের কে মিস করি ভীষণ। কিন্তু আর উড়নচণ্ডী স্বভাব আমাকে কিছুতেই থিতু হতে দেয় না।
অনেক অনেক ভালোবাসা।
১৯| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪১
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: আহা! পড়তে গিয়েই তো স্বাদে কুপোকাত-
কে কবে চেখেছে বলুন এমন আস্বাদ!
মায়ের হাতেও যদিওবা কিছু মিলতো
পাতুরি-আর ভাপা-
সেই স্বাদ এখন পড়ে গেছে ঢাকা।
কিঞ্চিৎ স্মৃতি যখন করি রোমন্থণ
ঘরণী মোর নয় দশভূজা জানান ঠিক তখন!
ফুড পান্ডার যুগে-হুজুগে হই হন্যি
যেদিন না থাকে সদাই নিত্য আহাজারি
মায়ের হেঁশেলের আনাজেও হতো রকমারি!
এ যুগে এসে হায়-সোশ্যালে চেখে খাই-
খুঁজি, খুঁজি, রসানার স্বাধ-
নেই সেই আঘ্রাণ,
নেই সেই প্রাণ!
তাই যাপিত জীবন আজ
রসনাহীন, ব্যঞ্জনাবিহীন।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আহা! পড়তে গিয়েই তো স্বাদে কুপোকাত-
কে কবে চেখেছে বলুন এমন আস্বাদ! একদম মনের কথা বলেছেন!
মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ, সে ভোলা যায় না।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: চন্ডী মঙ্গল কাব্য কী কঠিন মাইরি
পরে আসতেছি আবার