![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালো লাগে লেখা পড়তে,সামান্য কিছু লিখতে...আমার আমিতে বেশি ভালো থাকি।
ছোট বেলায় এরকম গরমে মা পাউডার দিয়ে দিতো গলায়,পিঠে! সেই সময় পাউডার রাখার জন্য এক ধরণের গোলাকার পাউডারদানী ছিল সাথে একটা পাউডার মুছনি।
সকাল বেলা গোসল করে কপালে একটা কালো টিপ এবং পাউডার দিয়ে সাদা একটা সেন্ডো গেঞ্জি গায়ে দিয়ে ছেড়ে দিতো খেলা করতে! সেই সময় হাফ প্যান্ট পড়ে পকেটে হাত দিয়ে বাবুগিরি দেখাইতাম আমরাও! মায়ের সেই পাউডারদানীর কথা আজও মনে আছে।
সরিষার তেল চুলে দিয়ে মাথায় চিরুনী করে দিতো থুতনি ধরে। এখনকার মায়েরা এসব করে না! সেই গোলাকার পাউডারদানী গুলোও হারিয়ে গেছে! এখন প্রচন্ড গরমে সন্তানরা বৈদ্যুতিক পাখার নিচে বসে থাকে আর বিদ্যুৎ না থাকলে বাইরে বসে থাকে।
দিন বদলের সাথে সাথে অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে আমাদের সংস্কৃতি থেকে। পরিবর্তনশীল সংস্কৃতির নিত্যনতুন আবির্ভাব আমাদের পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে! আমরাও এসবের সাথে তাল মিলিয়ে আজকে নিজেদের আধুনিক বলে দাবী করছি!!
একটা সময় আমরা হাফ প্যান্ট পড়েছি আর বর্তমানে ছেলেরা থ্রি-কোয়ার্টার পড়ে! আমরা গাদন,কিতকিত,চিবুড়ি, কানামাছি এসব খেলা খেলেছি আর এখনকার আধুনিক যুগের ছেলে মেয়ে মোবাইলে সাপ খেলা, টেম্পলরান, লুডু,বাইক রেস ইত্যাদি খেলা খেলা! আমরা খেলার ছলেই এক প্রকার শারীরিক পরিশ্রমে অভ্যস্ত ছিলাম আর এখনকার ছেলে মেয়েরা খেলার ছলে মানসিক পরিশ্রমে অভ্যস্ত হচ্ছে!!
নিত্যনতুন আবিষ্কার যেমন আমাদের উচ্চাভিলাষী করেছে তেমনি তৈরি হয়েছে সমাজে পুঁজিবাদী এলিট শ্রেণি এবং নিম্মবিত্ত শ্রেণি!! যদিও সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ কয়েক শ্রেণিতে বিভক্ত হয়েছে! বিশেষ করে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পর এর প্রকাপ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়! মানে মানুষ এবং সমাজের শ্রেণিবদ্ধতা!
সংস্কৃতির আগ্রাসনে এবং আকাশ সংস্কৃতির ফলে আমরা হারিয়েছি আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা! পশ্চিমা আর পার্শ্ববর্তী সংস্কৃতির ব্যবহারে আমরা এখন অর্থও ব্যয় করছি এসব সংস্কৃতির পেছনে!! পাশাপাশি পশ্চিমা এবং পার্শ্ববর্তী সংস্কৃতি খুব নিখুতভাবে আমাদের মগজ ধোলাই করে তাদের দেশের নাম,ডাক ঢুকিয়ে দিচ্ছে আমাদের ছেলে মেয়েদের মাথায়!!
আমরা লাভবান হওয়ার থেকে ক্ষতির পরিমাণ তাড়াচ্ছে বেশি! শুধু কি সংস্কৃতিই পরিবর্তনশীল? আমরা জানি,সভ্যতা,সংস্কৃতি,মানুষ,সমাজ,পরিবেশ এসব কিছুই নিয়মিতই পরিবর্তনশীল! এই যে এখন যেমন প্রচন্ড গরম সহ্য করতে হচ্ছে আমাদেরকে। আগে কি এরকম লাগাতার গরম হয়েছে কখনো?
অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি এসবও পরিবর্তন হচ্ছে দিনকে দিন! আমাদের একটা শ্রেণি এই গরমে যদিও আমাদের আবিষ্কৃত আধুনিক রুমে বসে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেমালুম গরমকে ঠান্ডা এবং ঠান্ডাকে গরম বানিয়ে দিচ্ছে! কিন্তু আমি ভাবছি ঐসব শ্রেণির কথা,যাদের বাড়িতে একটা বৈদ্যুতিক পাখাও নাই! যাদের টিনের চালার গরমে ঘরসহ পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থায় থাকে! এসব শ্রেণির পরিবর্তন হয়,পরিবর্তন হয় বলেই হয়ত আজকে এই পুঁজিবাদী সমাজে এলিট শ্রেণিরা এসি রুমে বসে ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগাতে পারে!!
২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০
মো: আব্দুল মোমেন বলেছেন: আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আপনার কথা গুলো অনেক ভালো লাগলো। শুভ কামনা আপনার জন্যও।
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:২৪
ফেনা বলেছেন: পোষ্ট পোষ্টে মন্তব্য দুইজনকেই অনেক ধন্যবাদ। সুন্দর উপস্থাপনের জন্য।
আসলেই সর্বপ্রথম আমাদের নিজেদেরই সচেতন হতে হবে। নিজেদের অস্তিত্ত নিজেদেরই টিকিয়ে রাখতে হবে।
৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সাথে তো আমার অনেক মিল আছে।
আমার মা আমাকে জোর করে ধরে ডলে ডলে গোছল করিয়ে দিত। তারপর পুরো শরীরে তেল মাখিয়ে দিত। তারপর কপালে ইয়া বড় একটা কালো টিপ। উফ কি অত্যাচার টা যে সহ্য করতে হতো!!!
৪| ২১ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৪৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনকে মেনে নিতে হবেই...
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
ইদানিং "বিজাতীয় সংস্কৃতি" এবং "অপসংস্কৃতি" নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। বিজাতীয় সংস্কৃতি হচ্ছে ভাড়া করা কালচার, যা আগে কোনদিন এ অঞ্চলে ছিল না। আর অপসংস্কৃতি হলো সমাজে দীর্ঘ দিন থেকে প্রচলিত কিছু ধ্যান ধারণা ও চর্চিত বিষয় যা সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিজাতীয় সংস্কৃতি এবং অপসংস্কৃতি ভিন্ন দু'টি ধারা হলেও অনেকে না বুঝে এগুলোকে একই ধারায় গুলিয়ে ফেলেন। ধর্মভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় স্থানীয় অনেক কালচারকে বিজাতীয় ও অপসংস্কৃতি হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়। তবে এগুলোর কোনোটি হয়তো অপসংস্কৃতি হতে পারে, তবে তা বিজাতীয় সংস্কৃতি নয়।
বিশ্বায়নের এ যুগে আইন করে বা বাধ্য করে কাউকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য ইদানিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু ভাল কালচারের সাথে বেশ কিছু অপসংস্কৃতিও আমাদের সমাজটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সমাজে এমন কিছু কৃষ্টি-কালচার যুক্ত হয়েছে যা আমাদের সংস্কৃতির সাথে মানানসই নয়। বিশেষ করে তরুণ ও যুব সমাজ এর ক্ষতিকারক বিষক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে বিজাতীয়/বিদেশি যে সংস্কৃতি আমাদের সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে তা অবশ্যই গ্রহণ করা যায়। আর যা আমাদের সমাজটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে তা পরিত্যাগ করতে হবে। এগুলো অপসংস্কৃতি।
এজন্য ঢালাও ভাবে বিজাতীয়/বিদেশি সংস্কৃতি বর্জন করলে লাভের চেয়ে আমাদের ক্ষতিই বেশি হবে। বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব আমরা। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক আদান প্রদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর অপসংস্কৃতি, তা দেশী হোক অথবা বিদেশী তা অবশ্যই বর্জনীয়। যেমন- মঞ্চ নাটক আমাদের বাঙালি সমাজে দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি চর্চার একটি অংশ, কিন্তু মঞ্চ নাটকের নামে নারীদের শরীর প্রদর্শন ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করলে তা হবে অপসংস্কৃতি। দুঃখজনক হলেও সত্য ভারতীয় টিভি চ্যানেলের কিছু সিরিয়াল, অনুষ্ঠান ও আইটেম সঙ আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত ক্ষত-বিক্ষত করছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের পরিবারকেও সচেতন করা প্রয়োজন।
সুস্থ ধারার যে কোন সাংস্কৃতিক চর্চাকে আমাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এটি বিদেশি বা স্বদেশী যাই হোক না কেন। আমরা যে নীতি ও আদর্শ বিশ্বাস করি তা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার, এতে সমাজের কিছু যায় আসে না। সমস্যা দেখা দেয় তখনই যখন আমরা নিজের ইচ্ছাকে জোর করে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি। এটা অন্যায়। এতে সমাজে বিভাজন দেখা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ বেড়ে যায় ফলে সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয়। একুশ শতকের বিশ্বায়নের এ যুগে জোর করে নিজের পছন্দ-অপছন্দ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মানুষ তা শুনতে বাধ্য নয়।
কালচার/সাংস্কৃতিক চর্চাটা আসে মানুষের ভালবাসা ও দীর্ঘ দিন থেকে সমাজে প্রচলিত অভ্যাস থেকে। এজন্য জোর করে কোন কালচার/সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া যায় না, আবার জোর করে মানুষের নিজস্ব কালচার/সংস্কৃতি থেকে বের করে আনা যায় না। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিনোদন মানুষের বুদ্ধিভিক্তিক জ্ঞানকে বিকশিত করে, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক দৃঢ় করে। সমাজকে পরিশুদ্ধ করে। পৃথিবীর উন্নত ও সভ্য দেশগুলো এভাবেই আজ এগিয়ে যাচ্ছে আরো উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে। তারা নিজেদের মতামত কারো উপর চাপিয়ে দেয় না; বরং অন্যের পছন্দ অপছন্দকে সম্মান দেয়, সহযোগিতা করে। এতে সমাজে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা অটুট থাকে।।
লেখায় ভাল লাগা রইলো,
শুভ কামনা মোমেন ভাই।