![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্মৃতি নিয়ে চলেছে দিগন্ত ছাড়িয়ে, মহাকালে রেখে দেওয়া সেই মুহূর্তগুলোর কাছে। বিনি সুতার বাঁধনে, ডানা মেলা রোদ্দুরে ফলসার ঝোপ ছাড়িয়ে নাও ভাঙা চরে, নীলাকাশ ছাড়িয়ে কাশবনের হাওয়ায় অথবা বকুলের মালায়, সেসব দিনের কথা, সেসব কথা মনে পড়ে………https://www.facebook.com/profile.php?id=100008069776412
"মায়ের পুত্র এবং বউয়ের স্বামী"
……………………মোঃইয়া আমিন আলী
গ্রামের নির্জন পরিবেশ সবারই ভালো লাগে।গ্রামের বিশুদ্ধ বাতাস, ধানের মাঠ,আর মেঠো পথ অন্তরে এক প্রশান্তির ছায়া এনে দেয়। গ্রামের সব থেকে ভাল লাগার মাঝে যে সময়টি আসে নিতান্তই শরৎকাল।
শরৎকালে বিশাল রাস্তার দুপাশ ঘেঁষে কাশবনের কাশফুলে ভরা, যেদিকেই তাকাই চোখ ধাঁধানো শুভ্রতা চোখে লাগে। বিশাল আকাশের বিশালতা আরো বেশিই মনে হয় এখানে। মেঘে ভরা নীল-সাদা চমৎকার আকাশের রং মিলিয়ে গ্রামের সৌন্দর্য আরো কয়েক গুণ বেড়ে যায়। শরৎকালে গ্রাম দেখতে এই জন্য কমবেশি সবারোই ভালো লাগে।
এই রকম এক সৌন্দর্য মণ্ডিত গ্রামের ছেলে সেলিম মিয়া।সহজ সরল একটা ছেলে। গায়ের সবাই যেনো তার অন্তরের ভালবাসার মানুষ। সুখে দুঃখে ভাল মন্দে গ্রামের সবাই সেলিমের কাছে ছুটে আসে।
খুব ছোট বেলায় সেলিমের বাবা মারা যায়।কিন্তু মা ছাড়া আর কেউ ছিল না সংসারে, হাল ধরার মত সংসারে শুধু সেলিম ছাড়া আর কেউ নেই। এই জন্য বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সংসারের যাবতীয় বোঝা সেলিমের কাঁধে এসে পরে। সব সমস্যা উপেক্ষা করে সেলিম এগিয়ে চলতে শুরু করে।সঙ্গে ছিলো মায়ের দোয়া ও ভালোবাসা।
সে ছিলো বেশ গায়ে খাটা মানুষ, বাবার জমি ছিল বিঘা-তিনেক, নিজে গায়ে খেটে চাষ-বাস করে সোনার ফসল ফলাত। সে জন্য লেখা পড়ার সুযোগ তার হয়ে উঠেনি । শিক্ষিত না হলে কি হবে সেলিম খুবই বুদ্ধিমান ছেলে ছিলেন। গ্রামে সবাই তার তারিফ করতেন।
এপর্যন্ত গায়ে খেটে সংসার টাকে দাঁড় করিয়েছে সে। এদিকে মায়ের সেবায় কোনো ত্রুটি করেনি। ইদানীং মায়ের শরীর ভালো যাচ্ছে না প্রায় কিছু না কিছু একটা অসুস্থতার মাঝে থাকতে হয় তার মাকে। সে জন্য মা জেদ ধরেছে এবার সেলিম কে বিয়ে করাবেই।বয়স শেষের দিকে, মৃত্যুর আগে তিনি নাতি নাতিন দেখে যদি মরতে পারে, সেই আশাই ব্যক্ত করলো সেলিমের কাছে।
সেলিম একটু অসম্মতি প্রকাশ করে কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি, শেষ পর্যন্ত মায়ের জেদের কাছে বিয়ের পিড়িতে গিয়ে বসতেই হয়েছে। বিয়ের ধুম পড়াতেই পাত্রীর অভাব নেই। তিন-চার গায়ের মধ্যে ভাল ছেলে থাকলে কেউ কি আর ছাড়তে চায়।
তাই তো পাশের গায়ের সিরাজ মাতব্বরের সুন্দর মেয়েকে করিমের সাথে বিয়ে দিতে ভুল করলেন না তিনি। খুব ধুম ধাম করে দশ গায়ের মানুষকে দাওয়াত করে বিয়ে দিল মাতব্বর সাহেব,নিজের মেয়ের। বিয়েতে আনন্দ উল্লাস আর কম হলো না যে যার মত আনন্দ করেছে। বিয়ে করে বউকে নিজ বাড়িতে নিয়েছে সে।বউয়ের নাম ছিলো শামিমা, দেখতে সুন্দরী বেশ।গায়ের সবাই বউ দেখে মুখে বলতে শুরু করেছে, সেলিম মিয়ার বউ একখান মাশা আল্লাহ্। এ গ্রামে এরকম সুন্দরী মাইয়া আর একটাও নাই।
বিয়ের পর চলতে থাকে তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন। দাম্পত্য জীবনকে সুখী করার জন্য সে দিন রাত পরিশ্রম করতে লাগলো , বউয়ের সব চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে। তবে মায়ের দিকেও যথেষ্ট খেয়াল রাখে, প্রতিদিন কাজ থেকে এসে, মায়ের কাছে সুখ দুঃখের গল্প আলাপ চারিতা করে। মা তাতেই অনেক সন্তুষ্ট।
সে মূর্খ মানুষ দু-চার কলম পড়া লেখা করেছে কিনা সন্দেহ আছে। তবে তার মনে সব সময় একটা প্রবল জাগ্রত ইচ্ছা কাজ করতো । তবে ইচ্ছা পুরো করতে গিয়ে কখনো সে নিজেকে কোন সময় ছোট করে দেখেনি। ইচ্ছা ছিলো সে তার বাবার নামে একটা স্কুল করে দেবে গ্রামে।
যেখানে প্রতিটি শিশু যেনো ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠে। শিশু যোগ্য মানুষ ,নৈতিক চরিত্র গঠন শিখবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটাই ছিলো লক্ষ্য। তার কথাও যেমন কাজও তেমন, খুব অল্প সময়ের সে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলে। এখন তার বাবার নামে করা স্কুলটিতে শ'খানেক ছোট ছেলেমেয়ে পড়া লেখা করে।
এদিকে খুবই সুন্দর ভাবে সেলিমের সংসার চলতে থাকে, তাদের কোল জুড়ে একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান আসে। সন্তান ও বড় হতে থাকে। সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলবে,সেই আশা বুকের মধ্যে লালিত করে সে।
ইদানীং তার বউ, এখন সংসারের কাজ কর্মে মনোযোগ আর দিচ্ছে না । উঠতে বসতে তার শাশুড়ির সাথে ঝগড়া বেধে দেয়।যখন সেলিম বাসায় ফিরে আসে সাথেই সাথেই একঝুড়ি নালিশ করতো মায়ের নামে। নিশ্চুপ কোনো কথা না বলেই সেলিম শুনেই যেতে থাকে। এমনটা চলতে চলতে সংসারে একটা অশান্তি সৃষ্টি করে ফেললো সে , এ বাড়িতে নাকি আর এক মুহুর্ত থাকবেনা, বলে শামিমা। হয় তার শাশুড়ি থাকবে নয় সে থাকবে।
বউ-শাশুড়ি দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ে সেলিমের প্রাণ যায় যায়, তিনি যে একই সঙ্গে মায়ের পুত্র এবং বউয়ের স্বামী। মায়ের সঙ্গে সেলিমের নাড়িছেঁড়া সম্পর্ক—অবিচ্ছেদ্য ও চিরন্তন। আর বউয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা নির্ভরতার—চিরকালীন ও আমৃত্যু। তাঁর কাছে দুটো সম্পর্কই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
এমন অবস্থায় কোনো ঘটনায় ছেলে যদি মায়ের পক্ষ নেয়, বউয়ের মুখজুড়ে অন্ধকার। আর বউয়ের পক্ষ নিলে মায়ের মনে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস। দিন যায়, ক্ষোভ বাড়ে, জন্ম নেয় ঝামেলা সেলিমের মনে।
৩১ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৩২
অনুতপ্ত হৃদয় বলেছেন: কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম চেঞ্চ করে সেলিম রেখেছি কিছু সমস্যার কারনে
ধন্যবাদ ভাই।
২| ৩১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪৭
প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল।
০৪ ঠা জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২১
অনুতপ্ত হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:৫১
উদাস মাঝি বলেছেন: অসাধারন লেগেছে । গ্রামের কথা, মনে করিয়ে দিলেন ।

আপনি চালায়ে যান, হবে আপনার
বউ শাশুড়ির এই দন্দ চিরকালীন সমস্যা ।
বেচারা করিম