![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পিছনে বিকট একটা শব্দ হলো। সাথে সাথেই ঘুরে
তাকালাম। একটা মানুষ পড়ে আছে। পাশে দুইটা রিকশা ।
ভাবলাম রিকশা থেকে পড়ে গেছে। দৌড়ে কাছে
গেলাম। গিয়ে বুঝলাম রিকশা থেকে না, পাশের
তিনতলা বিল্ডিংয়ের উপর থেকে পড়েছে। একজন
মিস্ত্রি। কারেন্টের শক খেয়ে ছিটকে
পড়েছে। পড়তেই মস্তক ফেটে দুইভাগ হয়ে
গেলো। তার নাক থেকে এমনভাবে রক্ত
ঝরছিলো, দেখে মনে হলো কল থেকে পানি
পড়ছে। মগজগুলো ছিটকে ল্যাপ্টে আছে মাটির
সাথে। রক্তের পরিমাণ দেখে মনে হচ্ছে
কোরবানের গরু জবাই হয়েছে। কিন্তু রক্তের
পাশে গরুর বদলে ছিলো মানুষ। বয়স ২৫-৩০ এর
মধ্যে। তাড়াহুড়ো করে মেডিক্যাল পাঠানো
হলো। এতক্ষনে হয়তো মারা গেছে।
ঘটনাটা ঘটার আগ মুহূর্তেও হয়তো বেচারা বাড়িতে
রেখে আসা পরিবারের কথা ভাবছিলো। -"বাবা
সর্বক্ষণ পাশের বাড়ির লোকদের দেয়া পুরানো
লুঙ্গী জরিয়ে থাকে। তার জন্য একটা লুঙ্গী
নিতে হবে। শীতকালে মায়ের খুব কষ্ট হয়। তার
জন্য একটা ভালো চাদর দরকার।"
বিয়ে করেছে সবে চার বছর হলো। বিয়ের
একবছর পরেই শহরে চলে এসেছে কাজের
খোঁজে।
"বউয়ের জন্য একটা রঙিন সুতির কাপড় নিতে পারলে
বউয়ের মুখটা চাঁদমুখ হয়ে যেতো। একবছরের
মেয়েটাকে এখনো দেখা হয়নি। দেখার জন্যে
মন ছটফট করছে। তার জন্যেও কিছু নিতে হবে।
কি নেয়া যায়! খেলনা? না না এতো ছোট মেয়ে
খেলনা দিয়ে কি করবে! তারচে বরং ভালো
দেখে একটা শীতের কাপড় নিয়ে যাবো।"
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে হয়তো খুব হাসছিলো।
হাসতে হাসতে চোখে পানিও আসছিলো বোধয়।
কারেন্টের একটা শক সবকিছু পাল্টে দিলো। একটা
স্বপ্নকে আটা-ময়দার মতো গুঁড়িগুঁড়ি করে
ফেললো। পরিবারকে নিয়ে সকল ভাবনার সমাধি
হলো আজ..........
©somewhere in net ltd.