নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মস্তিস্কের তাড়নায় ভাসানির ভাবনায়

এম এস আই জুেয়ল

সরল গল্প

এম এস আই জুেয়ল › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

গাজীপুর থেকে ফিরে

অফিসের একটা প্রজেক্টের কাজে এপ্রিলের শুরু থেকে সিলেটে ছিলাম।প্রথম মাসখানেক যাতায়াতের মধ্যে থাকলেও সিলেট সিটি নির্বাচন পরবর্তী তিনদিন পর্যন্ত প্রায় স্থায়ী হয়ে গিয়েছিলাম।তাই জনগণের নিরব বিপ্লব কাকে বলে সিলেটে স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য হয়েছে।সিলেটবাসীর আঞ্চলিক কথা বুঝি না।কিন্তু প্রজেক্টের লোকজন স্থানীয় হওয়ায় বুঝতে সুবিধা হ’ত।তবে বাহির থেকে যারা গিয়ে সিলেটে বসতি গড়েছে তাদের কথায় কোন যের যবর পেশ নেই।ওদের কথা শতটাই বুঝতাম।হেফাজতে ইসলামের৬ই এপ্রিলের পর সিটি কর্পোরেশনের একটা গুরুত্বপূণ কাগজের জন্য মেয়র কামরানের অফিসে যাই।দেখলাম আরও কয়েকজন এসেছে যার যার দরকারী কাজে।কিন্তু তাদের মধ্যে একজন বন্ধু গোছের লোক থাকায় রাজনীতির আলোচনা উঠে এসেছে।সহকারী এসে হাতের কাগজটি নিয়ে গেলেন যেটায় মেয়রের একটা মাত্র স্বাক্ষর দরকার।মেয়র ইশারায় বসতে বললেন।বুঝলাম সবাই এই ইশারার ফাঁদে পড়েছেন।কয়েক মিনিট চলল আলোচনা।আলোচনার ফাঁকেই দ্বিধাহীনভাবে ময়লাধূলা মাখা পোষাক পরিহিত মধ্যবয়সী এক দাঁড়িওয়ালা লোক ঢুকলেন।সহকারী এসে লোকটির কাগজে একটা সিল মারলেন।কথার ফাঁকেই মেয়র সিলের উপর বরাবর স্বাক্ষর করে দিলেন।এই হ’ল মেয়র কামরান।প্যান্ট শার্ট ওয়ালাদের চেয়ে রিক্‌সাওয়ালাদের জন্য মেয়রের কলম আগে চলে।কথাটি গল্পের মত শুনেছিলাম।বাস্তবে প্রমাণ পেলাম।লোকটির হন্‌হন্‌ করে যেমনি এসেছিলেন তেমনি বেরিয়ে গেলেন।আমরাও এমনই একটা সিল ও স্বাক্ষরের আশায় এসে মেয়রের রাজনীতি গিলছি।কিন্তু লোকটি বেরিয়ে যাবার পরেরই মেয়র একটা কথা বলে ফেললেন- “গত নির্বাচনে এই লোকদের কাছে ভোট চাওয়ার সুযোগ পাইনি, ওরাই উপযাচক হয়ে আমার জন্য ভোট চেয়েছে।এ নির্বাচনে আমার সাধ্য নেই ওদের কাছে যাবার।কারণ সরকার আমার হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে।” লোকটা দাঁড়িওয়ালা পাঞ্জাবী পরিহিত এই জন্য বললেন কিনা জানিনা।তবে হকার্সদের কাছে দেবতুল্য সেই কামরানই যখন হকার্স অধ্যুষিত বন্দর বাজার জামে মসজিদে অপমাণিত হলেন তখন মেয়রের



কথার সত্যতা পেলাম।ভোটের রেজাল্টে এ সত্যতা দেশ পেরিয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে।কেবল মেয়র নয় কাউন্সিলর পদেও সরকার সমর্থক কাউন্সিলদের ভরাডুবি।



আজ সকাল থেকেই গাজীপুর ছিলাম।বাইকে চড়ে রেইনকোট পড়ে আত্বীয়ের সাথে টোটো করে ঘুরলাম।সর্বত্রই সেই সিলেটের আবহ।শ্রমিক অধ্যুষিত গাজীপুরে সকাল বেলায়ই চাউর হয়ে গেছে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা বা জিএসপি স্থগিত করেছে মার্কিন সরকার।ওবামা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) প্রভাবিত করতে পারে।গণমাধ্যমের কল্যাণে আলোচনাটি সন্তান পেরিয়ে মুরব্বিদের টেবিলেও আলোচিত হচ্ছে।







সরকার ক্ষমতায় আসীন হবার পর ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচন হয়।সেখানে দেখেছি বিরোধীরা সমান তালে জিতেছে।চট্রগ্রাম,কুমিল্লায় হার।নারায়নগঞ্জ জেতার স্মৃতিও সুখকর নয়।ঢাকা সিটিতে হেরে যাবে বুঝতে পেরে সরকার এখানে নির্বাচন দিচ্ছে।কথাটি আড্ডাস্থলে প্রায়ই শুনি।রাজনীতির বাইরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী আইনজীবীদের জোট সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নজিরবিহীন পরাজয় দেখেছি।সেখানে ১৪টি আসনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য



প্যানেল ১৩টি আসনে জয়ী হয়েছে।এর পর আসল সিলেট,খুলনা,রাজশাহী,বরিশালের সিটি নির্বাচন।সবগুলোতেই সরকার সমথকেরা গোহারা হেরেছে।



মেয়র কামরান দাঁড়িওয়ালাকে দিয়ে যদি হেফাজতকে বুঝিয়ে থাকেন তবে বলব সিলেটের হেফাজতের চেয়ে গাজীপুরের হেফাজত আরও শক্তিশালী।এ কথা যে কারও মানতেই হবে।আর এখানকার হেফাজতিরা কোমড় বেঁধে নেমেছেন মান্নানের পক্ষে।





জাহাঙ্গীর নাটকের ক্ষত মাঠ থেকে শুকায়নি।এত কিছুর মাঝেও জাতীয়পার্টির দূরত্ব সরকারী দল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।স্থানীয় নেতারা চক্ষুলজ্জা দূরে ফেলে হেফাজতিদের সাথে পাল্লা দিয়ে মান্নানের হয়ে কাজ করছে।আশা ছিল এরশাদ অন্তত সমর্থন দিবেন।কিন্তু শেষ মর্হুতের রাজনীতি বোধহয় এরশাদ ভালোই চালাচ্ছেন।কথাবার্তায় অন্তত তাই বোঝা যায়।





বলছিলাম জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের কথা।সিলেট সিটিতে দেখেছি জনমনে সরকারের বিরোধীতা।হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন,প্রার্থী কামরান ও আরিফ।আর রিক্স,গাড়ী,হোটেল,আড্ডায় আলোচনায় উঠে আসত সরকারের ব্যর্থতা।আগেই বলেছি গাজীপুর শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা।সরকারের অন্য সব ব্যর্থতা ছাপিয়ে সকাল থেকে শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা বা জিএসপি প্রত্যাহারের কথা।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩০

খুকু ইসলাম বলেছেন: জিএসপি প্রত্যাহারের খবর কারও জন্যই সুখের খবর নয়।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩২

কলাবাগান১ বলেছেন: খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় কলাম লিখে ছিলেন যে যাতে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়।

নিকট ভবিষ্যতে হয়ত উনি ক্ষমতায় আসবেন এবং উনি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলেন।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৮

এম এস আই জুেয়ল বলেছেন: দেশের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ জাতীয় নেতৃত্বের পরিচয় হতে পারে না।তবে একজনের কান্নায় মা দুধ দিবে এমন রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র নয়।আপন প্রয়োজন ব্যতিরেকে পশ্চিমারা সে পথ মাড়ায় না।

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৪

হাসির মানুষ বলেছেন: কলাবাগান১ বলেছেন: খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় কলাম লিখে ছিলেন যে যাতে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়।

নিকট ভবিষ্যতে হয়ত উনি ক্ষমতায় আসবেন এবং উনি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলেন।

শোনেন কলাবাগান সাহেব, খালেদা জিয়াও কম চুদুর বুদুর জানেননা। আজ পত্রিকা পড়েননাই??? জিএসপি সুবিধা বাতিল সাময়িক সময়ের জন্য। ক্ষমতায় গেলে আবার ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখে আবার জিএসপি ফিরিয়ে আনবেন। খালেদার এক কলামে যদি জিএসপি যায় তবে আরেক কলামে আবার চলে আসবে।

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৩

এম এস আই জুেয়ল বলেছেন: যাক, সমস্যা ও সমাধান একসাথে পাওয়া গেল।এক কলামে যদি জিএসপি যায় তবে আরেক কলামে আবার চলে আসবে। হা-হা-হা-হা-হা-হা।

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩০

মদন বলেছেন: খালেদার এক কলামে যদি জিএসপি যায় তবে আরেক কলামে আবার চলে আসবে।

আমি .... হয়ে গেলাম =p~

পোষ্টে +

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৩

এম এস আই জুেয়ল বলেছেন: জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা আজ রাজধানীতে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন-‘শর্ত পূর্ণ হলেই জিএসপির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার’ করা হবে।একেই বলে শিকড় কেটে গোড়ায় পানি ঢালা !!!

Click This Link

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

খিয়ারি বলেছেন: আসুন ঝালাই করি Click This Link

২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৩

এম এস আই জুেয়ল বলেছেন: ধন্যবাদ।তবে গলাবাজি করে লাভ নেই।কারণ আগেই বলেছি- ‘একজনের কান্নায় মা দুধ দিবে এমন রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র নয়।আপন প্রয়োজন ব্যতিরেকে পশ্চিমারা সে পথ মাড়ায় না।’শ্রমিক স্বার্থ ও কারখানার পরিবেশ ইস্যুতেই জেনারেলাইজড সিস্টেমস অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়া হয়েছে। গত এপ্রিলে সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১১শ’র বেশি পোশাককর্মীর প্রাণহানির পর কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় উঠে আসে। এরপর বেশ কয়েকটি ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর পরই জিএসপি সুবিধা বাতিলের বিষয়ে আলোচনা উঠে আসে।খালেদা জিয়ার নিবন্ধের কথা মানলাম।পোষাক কারখানায় একের পর এক দূর্ঘটনা ঘটে চলেছে।এই পৈশাচিকতা কেবল একটা নিবন্ধের উপর ছেড়ে দিয়ে জনরোষ থেকে বাঁচা যাবে না।

২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:১৭

এম এস আই জুেয়ল বলেছেন: স্থগিতের সিদ্ধান্ত আচমকা নয়

মানবজমিন অনলাইন ডেস্ক-শনিবার, ২৯ জুন ২০১৩

বিশেষ প্রতিনিধি: দুঃসংবাদটি যখন এসে পৌঁছায় ঢাকায় তখন গভীর রাত। দু’টার এদিক-ওদিক। জানা গেলো, বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট
বারাক ওবামার সিদ্ধান্তটি আচমকা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে দেনদরবার চলছিল বাংলাদেশের। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাও গত এক বছর ধরে বারবার সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে আসছিলেন। তাগাদা দিচ্ছিলেন শ্রম পরিবেশ উন্নয়নের। এতে কাজ তো হয়ইনি উল্টো শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকারের পক্ষে বক্তব্য দেয়ার তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। মজিনাকে চিঠি লিখেই তিনি জানতে চেয়েছিলেন, আপনি বলার কে? এটা সত্য, রানা প্লাজায় ভয়াবহ ধস এবং তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ত্বরান্বিত হয়েছে। কিন্তু সরকারের কূটনীতিক ব্যর্থতা কি এতে ঢাকা পড়ে যাবে? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আর ব্যবসায়ী নেতাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর কোন সুফল বয়ে আনেনি। তাদের লবিং শেষ পর্যন্ত কোন কাজই দেয়নি। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করেছে। দোষ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের একাংশকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিএসপি স্থগিতের দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্তের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার জানতে পেরেছে। অবশ্য দেশের ভেতরে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কিছু লোক আগে থেকেই ওই সুবিধা বাতিলের দাবিতে চেষ্টায় ছিল। প্রসঙ্গত, সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলা হলেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা গত আট মাস চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পাননি। জিএসপি স্থগিতের মার্কিন সিদ্ধান্ত নিয়ে গতকাল দিনভরই বাংলাদেশের সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সরকারের ব্যর্থতার কথা বলেছেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী সরকারের ব্যর্থতা অস্বীকার করেছেন। যদিও আগামী ছয় মাস সময় কাজে লাগিয়ে শ্রম পরিবেশ উন্নতির কথা বলেছেন তিনি। জিএসপি সুবিধা স্থগিতের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, এ সিদ্ধান্তে প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ জিএসপির আওতায় যে রপ্তানি হয় তা মোট রপ্তানির দুই শতাংশের নিচে। তবে আশঙ্কার দিক হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই পথে হাঁটে কি-না। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্ত ইউরোপের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা যাবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে পোশাক খাতে আমাদের রপ্তানিতে বড় কোন প্রভাব পড়বে না। তবে, এর একটা প্রভাবশালী বার্তা আছে। ভাবমূর্তির সঙ্কটটা এখানে একটা বড় বিষয়। এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্ত অবশ্যই দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে স্থগিতের মেয়াদ যখন ৬ মাসের মধ্যে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ শর্ত পূরণে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী তিনি।
যেভাবে জিএসপি সুবিধা
স্থগিত হলো
কাউসার মুমিন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জানান, অবশেষে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত হলো যুক্তরাষ্ট্রে এবং তা অনির্দিষ্টকালের জন্য। শ্রম অধিকার এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ওবামা আফ্রিকা সফরে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে তিনটায় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় থেকে সরাসরি সমপ্রচারিত এক কন্‌ফারেন্স কলের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়। প্রেসিডেন্টের পক্ষে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিতের (সাসপেনশন) এই ঘোষণা দেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অ্যাম্বাসাডর মাইকেল ফ্রোমেন। অ্যাম্বাসাডর মাইকেল ফ্রমেন টেলিফোন কনফারেন্সে কলের মাধ্যমে তার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত সাংবাদিকদের সম্মুখে এ ঘোষণা দেন। সরাসরি কনফারেন্স কলে মানবজমিনের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিসহ যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের বিখ্যাত মিডিয়াগুলোর প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা’র জিএসপি পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই কনফারেন্সে সংক্ষিপ্ত ঘোষণার পর ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, ওয়াশিংটন টাইমস, ব্লুমবার্গ নিউজ, বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এপি ও মানবজমিন প্রতিনিধিকে প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হয়। এর আগে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের পাবলিক এফেয়ার্স ও মিডিয়া বিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যারোল গাত্রী সাংবাদিকদের কাছে নবনিযুক্ত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অ্যাম্বাসাডর মাইকেল ফ্রোমেনকে পরিচয় করিয়ে দেন।
মানবজমিনের প্রশ্ন, ফ্রোমেনের উত্তর
জিএসপিবিষয়ক সিদ্ধান্ত ঘোষণা সংক্রান্ত টেলিফোন কনফারেন্সে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাইকেল ফ্রমেনের নিকট মানবজমিনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার শেষের দিকে এসে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় এবং শ্রমিকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এ সকল বিষয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অনেক প্রশংসা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত না করে বাংলাদেশকে আরও কিছু সময় দেয়া যেত কি না। এর ফলে বাংলাদেশের শ্রমিক নিরাপত্তায় চলমান সরকারী প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হতে পারে কি? জবাবে অ্যাম্বাসেডর মাইকেল ফ্রোমেন বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে বেশ কয়েকবার শুনানি হয়েছে, অনেক সময় পেয়েছে বাংলাদেশ। অনেক কংগ্রেসম্যান ও সিনেটর বাংলাদেশের শ্রমিক ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জিএসপি সাব-কমিটিও বিষয়টি নিয়ে ভেবেছে। তবে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে এনগেইজড থাকবে। কবে নাগাদ বাংলাদেশ তার জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে পারে, সাসপেনশনের কোন নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে কি না’ এ বিষয়ক ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাম্বাসেডর মাইকেল ফ্রোমেন টেলিফোন কনফারেন্সে জানান, ‘আনফরচুনেটলি এ স্থগিত ঘোষণার কোন নির্ধারিত সময়সীমা নেই। কবে নাগাদ বাংলাদেশ তার জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে পারে সে বিষয়টিও এখনই স্পষ্ট নয়। তবে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। পোশাক খাতে কাজের পরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত ফ্রোমেন বলেন, বাংলাদেশের জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্তটি খুব হালকাভাবে নেয়া কোন সিদ্ধান্ত নয়। আমাদের লক্ষ্য শুধু এটা দেখাই নয় যে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা ফেরত পাবে কিভাবে। বরং, বাংলাদেশের শ্রমিকরা নিরাপদ ও উপযুক্ত পরিবেশে কাজ করছে কি না তা-ই আমরা দেখব।’ তিনি বলেন, ‘জিএসপির আওতায় বাংলাদেশ খুব অল্প সংখ্যক পণ্য রপ্তানি করলেও বাংলাদেশী কর্মকর্তারা এই কর্মসূচিতে থাকার জন্য খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে। শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের কার্যক্রম তদারকের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সরাসরি ও ধারাবাহিকভাবে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলবো। আমরা যথা সময়ে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবো।
এদিকে, বাংলাদেশের জিএসপি বাতিলের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক সংগঠনগুলোর বৃহত্তম এলায়েন্স এএফএল-সিআইও। এএফএল-সিআইও-র আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক পরিচালক ক্যাথি ফাইনগোল্ড মানবজমিনকে দেয়া এক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাংলাদেশের জিএসপি স্থগিতের ঘোষণাটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার রক্ষায় একটি অনেক বড় অগ্রগতি। ‘জিএসপি ফিরে পেতে এখন বাংলাদেশের কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন’- এমন প্রশ্নের জবাবে ক্যাথি ফাইনগোল্ড বলেন, এটা ঠিক সামপ্রতিক সময়ে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার রক্ষায় অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বিষয়টি আমি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অনেকবার বলেছি। বাংলাদেশের এখন উচিত হবে বিদ্যমান আইনগুলো বাস্তবায়নে আরও মনোযোগী হওয়া এবং আন্তর্জাতিক মহলকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পালনে আন্তরিক হওয়া। বার্তা সংস্থা এপির এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অ্যাম্বাসেডর মাইকেল ফ্রোমেন বলেন, জিএসপির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলদেশের ৫ হাজারেরও বেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পুনর্বহাল করার পূর্বশর্ত হিসেবে বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করবে।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, গতকালের এ সিদ্ধান্ত বিগত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ সংগ্রামের অংশ। এ ছাড়া এ বিষয়ে দ্রুত কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে আমেরিকার শ্রমিক সংগঠনগুলোর বাইরেও মার্কিন আইন প্রণেতাদের পক্ষ থেকে বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট দলীয় কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরদের পক্ষ থেকে প্রচুর চাপে ছিল ওবামা প্রশাসন। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বিধান মোতাবেক যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করনের স্বার্থে জিএসপি সুবিধা দিয়ে থেকে। বাংলাদেশে তার বৃহত্তম রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের মত রপ্তানি করে যার শতকরা মাত্র ১ ভাগ জিএসপি’র আওতায় রপ্তানি হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সরাসরি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বাংলাদেশী পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ইমেজ সংকটে পড়বে, এমনকি মার্কিন বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। এ ছাড়া মার্কিন সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহ দিতে পারে, যেখানে বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির শতকরা ৬০ ভাগের বাজার রয়েছে।
লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, গতকাল বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিতের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটদলীয় কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরগণ যারা এতদিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে চাপ দিয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কের ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যান ও মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাংলাদেশে সামপ্রতিক ট্র্যাজেডিগুলোর আলোকে জিএসপি স্থগিতকরণের এ সিদ্ধান্ত অনিবার্য ছিল। তিনি বলেন, আমি আশা করি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা এখন এমন একটি পরিষ্কার নীতিমালা গ্রহণ করবেন যাতে দেশটির সকল শ্রমিকের নিরাপত্তা সুরক্ষিত হয়।’ সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নিউজার্সির ডেমোক্র্যাটদলীয় সিনেটর রবার্ট মেনেন্দেজ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অনেক আগেই বাংলাদেশের শ্রমিক আইন পরিবর্তন এবং শ্রমিক অধিকারের বাস্তবায়ন জরুরি ছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসায়িক অংশীদার। কিন্তু দেশটির পোশাক শ্রমিকেরা যখন নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে তখন আমরা অন্যত্র দৃষ্টি সরিয়ে নিত পারি না এবং আমরা তা পারবও না। কেউই মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা পোশাক পরিধান করবে না, যদি তা শ্রমিকের রক্তের দামে তৈরী হয়’ বলে মন্তব্য করে সিনেটর মেনেন্দেজ তার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশে কর্মরত মার্কিন কোম্পানিগুলোকে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা বিধানে এগিয়ে আসার এবং ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর মতো বিশ্বমানের নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলোর নেতৃত্ব দেয়ার এখনই সময়।
আন্তর্জাতিক লেবার ফোরামের লিগ্যাল অ্যান্ড পলিসি বিষয়ক পরিচালক ব্রায়ান ক্যাম্পবেল মনে করেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সিম্বলিক মেসেজ দেয়া হলো মাত্র। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে বলে দিলো যে শ্রমিক পরিস্থিতির উন্নয়নে অত্যন্ত মনোযোগী না হলে আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেটদলীয় কংগ্রেসম্যান জর্জ মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের ভয়াবহ শ্রমিক পরিস্থিতির বিবেচনায় জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্তটি যথোপযুক্ত এবং স্বাগত জানানোর মতো একটি বিষয়। বাংলাদেশকে অবশ্যই পোশাক কারখানায় গ্রহণযোগ্য কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার যেন শ্রমিকদের থাকে এবং কাজে যোগ না দেয়ার জন্য তাদের বেতন যেন কাটা না যায় বাংলাদেশে সে ধরনের শ্রমিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।’

Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.