![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাহসে পথ চলতে চাই, সকল বাধা ডিঙিয়ে ।
নকল ০১
হাসানুল হক ইনু
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশে বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন করতে চাইলে আট মাস পর নির্বাচন আছে, সেই নির্বাচনে আসুন।’
আজ বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী অভিযোগ করেন, ইসলাম বিপদে আছে—এই ধুয়া তুলে হেফাজতে ইসলাম আন্দোলন করছে। কিন্তু বাংলাদেশে ইসলাম বিপদে নেই। শুধু এখন নয়, স্বাধীনতার পর কখনো ইসলাম বিপদে ছিল না। হেফাজতে ইসলাম আসলে রাজনীতি করছে। হেফাজতের নেতারা মওদুদী ও জামায়াতি মন্ত্রকে হেফাজত করার কাজে লিপ্ত আছেন। তাঁরা ইসলাম সম্পর্কে অসত্য ও খণ্ডিত তথ্য দিচ্ছেন। তাই জনগণকে এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং তাঁদের বর্জন করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের নেতারা সংবিধান সংশোধনের দাবি তুলছেন। কিন্তু তাঁদের বলব, সামরিক বাহিনী কেবল সকাল-বিকাল সংবিধান বদল করতে পারে। তাই মিছিল, মিটিং, অবরোধ ও লংমার্চ বন্ধ করুন। আট মাস পরে নির্বাচন, আপনারা আপনাদের দাবি জনগণের কাছে তুলে ধরুন। যদি নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পান, তাহলে সংবিধান বদল করবেন। অবরোধের রাস্তা পরিহার করুন, ভোটের রাস্তায় আসুন। হুড়হাঙ্গামা করবেন না।’
নকল ০২
লাশের অপেক্ষায় স্বজনেরা
স্বজনদের কান্না থামছে না। ভারী যন্ত্রের ব্যবহারে দ্বিতীয় পর্যায়ে উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার পর এখন জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে লাশের অপেক্ষায় আছেন স্বজনেরা।
রানা প্লাজা ধসের পর জীবিতদের উদ্ধারের জন্য গত ২৪ থেকে ২৮ এপ্রিল রাত ১১টা পর্যন্ত হাতুড়ি, ড্রিল মেশিন আর হালকা যন্ত্রপাতি দিয়েই উদ্ধারকাজ চালানো হয়। ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্ধার অভিযান শুরু হয় ২৮ এপ্রিল রাত ১২টা থেকে। এরপর ২৫টি লাশ উদ্ধার করা গেছে। এই সময়ে জীবিত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।
প্রথম দিন ভবনের পেছনের অংশের বড় বড় কংক্রিট স্ল্যাব অপসারণ করা হয় দুটি বড় ক্রেন দিয়ে। ভবনের সামনের দিকে ছোট বেশ কিছু ক্রেন ও বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়।
গতকাল বড় ক্রেনগুলো সামনের দিকে স্থাপন করে ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়। এত দিন ব্র্যাক ব্যাংকের যে অংশটুকু দেখা যাচ্ছিল, সেটা টেনে নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে নয়তলা ভবনের ধসে পড়া ছাদগুলো এখনো অপসারণ করা যায়নি। নবম তলার ছাদটি এত দিন পাশের আর এস টাওয়ারের সাড়ে তিনতলা বরাবর ছিল। ক্রেন দিয়ে বিভিন্ন পাশের ধ্বংসস্তূপ সরানোর পর ছাদগুলো নিচের দিকে নেমে এখন আর এস টাওয়ারের তিনতলার নিচে নেমে গেছে।
ভবনধসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে ৩৪৩টি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে ছিল ৫২টি লাশ। গতকাল স্বজনেরা সাতটি লাশ শনাক্ত করে নিয়ে যান। পুলিশ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ক্লাবের হিসাবে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজারের বেশি।
গতকালও স্বজনদের খোঁজে আসা মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়লে লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সৈয়দ হাসান সারওয়ার্দী গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ক্যামেরাসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত দুই হাজার ৪৩৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে কংক্রিটের টুকরা বংশী নদীর তীরে ফেলার সময় অনেকেই মৃতদেহের সন্ধানে গাড়ি আটকাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁদের বলছি, জীবন ও প্রাণের মায়া ত্যাগ করে আমরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি। আমাদের একটু সহায়তা করুন। শেষ বডিটিও (মৃতদেহ) আমরা তাঁর স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই।’
এদিকে গতকাল ধ্বংসস্তূপে লাশের সন্ধানে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত কুকুর নামানো হয়েছে। এই কুকুরগুলো গন্ধ শুকে লাশ খুঁজে বের করবে বলে সেনাসদস্যরা জানিয়েছেন।
তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা বলছেন, ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে পচা লাশের গন্ধ দূর থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। জীবিত যারা বেরিয়ে এসেছেন, তাঁরাও বলেছেন ভবনের পেছন দিকে থাকা সিঁড়িতে এবং ধ্বংসস্তূপে প্রচুর লাশ পড়ে আছে। এর পরও কুকুর দিয়ে খোঁজার দরকার কি?
মাস শেষ, বেতন নেই: আজ মে দিবস। মাসের ১ তারিখ। যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতার দাবির ওপর ভিত্তি করে মে দিবস, সেই শ্রমিকেরাই এখন বিপন্ন। ভবনধসে প্রাণ গেছে। জীবিত যাঁরা আছেন, তাঁদেরও অনেকেই হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর।
জীবিত ও মৃত শ্রমিকের স্বজনেরা বেতন পাবেন কি না। পেলে কার কাছে পাবেন, এটা তাঁরা জানেন না। গতকাল সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এবং ধসে পড়া ভবনের সামনে অনেক স্বজনকে বেতনের আশায় ঘুরতে দেখা গেছে।
রুনা রানী দাস, তাঁর মেয়ে সমাপ্তি রানী দাস ও আরেক মেয়ে প্রীতি রানী দাস ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় কাজ করতেন। রুনা জানান, তিনি ও ছোট মেয়ে জীবিত বের হয়ে আসেন। রুনার হাতে এখনো সামান্য আঘাতের চিহ্ন আছে। কিন্তু সমাপ্তি বের হতে পারেননি। এখনো তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ফজলে রাব্বি পঞ্চম তলায় কাজ করতেন। ভবনধসের চার দিন পর লাশ পাওয়া গেছে। মা রাহেলা খানম গতকাল অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে বলেন, গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে ছেলেকে দাফন করেছেন। এখন ছেলের বেতন কবে দেওয়া হবে জানতে এসেছেন। কিন্তু কেউ সঠিক উত্তর দিতে পারছেন না।
আলেয়া বেগমের চাচি মনোয়ারা ধসে পড়া ভবনের সামনে এসে বিভিন্ন লোকের কাছে জানতে চান, তাঁর ভাশুরের মেয়ে কবে বেতন পাবেন। তিনি জানান, আলেয়া ষষ্ঠ তলায় কাজ করতেন। জীবিত উদ্ধার হলেও আহত হয়ে এখন হাসপাতালের বিছানায়।
লাশ নেই, ছবিতে ছেয়ে গেছে: অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে অন্তত ৫০টি কফিন সাজানো। মাঠের দেয়ালের কোথাও এক ইঞ্চি ফাঁকা নেই। নিখোঁজ ব্যক্তিদের ঠিকানা ও ছবিসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে। স্বজনেরা শুধু দেয়ালে পোস্টার টাঙিয়েই আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না। অনেকে বুকে ঝুলিয়ে ঘুরছেন। কিন্তু সারা দিনে লাশ এসেছে মাত্র তিনটি। গত কয়েক দিনের মতো লাশের পচা গন্ধও কমে এসেছে। ফলে লাশের খোঁজে স্বজনদের কান্না থামছে না।
রেহানা আক্তার তৃতীয় তলায় পোশাক কারখানার অপারেটর ছিলেন। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে তাঁর বাড়ি। বড় বোন আয়শা বেগম গতকাল বিদ্যালয়ের মাঠে বলেন, ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল, ধসে পড়া ভবনের সামনে এবং স্কুলের মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখন হয়রান হয়ে গেছেন। কোথায় গেলে, কার কাছে গেলে বোনের সন্ধান পাবেন বুঝতে পারছেন না।
গতকাল সকাল আটটায় বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে দুটি বাসে করে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৫২টি লাশের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। সম্ভাব্য স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত স্বজনদের মধ্যে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
গুজব, আনন্দ, হতাশা: সোমবার রাতে ১০টা ৫৫ মিনিট। দক্ষিণ দিকে ধ্বংসস্তূপের অবশিষ্ট অংশ ক্রেন দিয়ে সরানোর কাজ চলছিল। এ সময় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি সুড়ঙ্গের মতো বের হয়। এর ভেতরে উদ্ধারকর্মীরা ঢুকে প্রাণের স্পন্দন পাওয়া গেছে বলে জানান। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ বন্ধ রাখা হয়। এ সময় উপস্থিত স্বজনহারা ব্যক্তি, উদ্ধারকর্মীসহ সবাই উল্লাস প্রকাশ করে প্রার্থনা করেন, যাতে জীবিত উদ্ধার করা যায়। ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। পৌনে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সেখানে কোনো প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায়নি। এ সময় উপস্থিত লোকজন হতাশায় ডুবে যান।
(প্রথম আলো থেকে নেওয়া)
আসল :
আমি বুঝি কম বলি বেশী
জ্বর হলেই বলি কাশি,
ধর্ম আর লাশ নাই
সব জায়গায় রাজনীতি চাই,
রাজনীতির মালা তার গলে
যে বেশী মিথ্যা বলে।
©somewhere in net ltd.