নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনন্দের জন্য লেখা

MMohin

মহিউদ্দিন

MMohin › বিস্তারিত পোস্টঃ

পানি ভাত ( ছোট গল্প)

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৪৪

আজকে পহেলা বৈশাখ, বাংলা বছরের প্রথম দিন। বৈশাখের সাজে সেজেছে বাংলাদেশের বিখ্যাত একটি মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস। একাডেমিক ভবনের সামনে প্যান্ডেল করা হয়েছে, উপরে সামিয়ানা টানানো। ছেলেরা সবাই পাঞ্জাবি পড়ে এসেছে। মেয়েরা লাল-সাদা শাড়ি পড়ে মাথায় ফুল দিয়ে বৈশাখের সাজে সেজেছে। সূর্য তার যৌবনের তেজ ছড়িয়ে সেটাকে আর ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ছেলে-মেয়েরা পান্তা খাচ্ছে, কেউ আবার সেলফি নিয়ে ব্যস্ত। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের স্যারেরা তাদের ফ্যামিলি নিয়ে আসতেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পান্তা খাচ্ছেন, একটু আড্ডা দিচ্ছেন আবার চলে যাচ্ছেন।

এসব জিনিস প্যান্ডেলের এক কর্ণারে দাড়িয়ে দেখছিল শামীম, সাত কি আট বছর বয়স হবে । তার মা পাশে যে নতুন হাসপাতাল হচ্ছে সেখানের দিন মজুর হিসেবে কাজ করছে। একটু পর দৌড়িয়ে এসে তার মায়ের কাছে দাঁড়াল।

- মা, আইজকা কি ঈদ?

- না বাবা, আইজকা বাংলা মাসের প্রথম দিন।

- সবাই দেখছ কি সুন্দর জামা গায়ে দিছে। আমারে একটা কিন্না দেও না, আমি ও পালন করুম।

- আমাগো জন্য পহেলা বৈশাখ না রে বাবা।

- হেরা ও তো সবাই গরিব মা।

- কেন? দেখস না, সুন্দর সুন্দর গাড়ি নিয়া আইতাছে সবাই।

- হেরা বড় লোক অইলে যে আমাগো মত পানি ভাত খাইতাছে। তাও আবার মাটির থালে খাইতাছে।


এ কথা বলেই শামীম খিলখিলিয়ে হাসি শুরু করল।

- তোরে না কইলাম প্যান্ডেলের ভিতরে না যাইতে।

- আমি দুরে দাঁড়াইয়া দেখছি মা। পানি ভাত, পেয়াইজ, কাঁচা মরিচ আর মাছ দিয়া খাইতাছে।

- এই দিনে সবাই এইডায় খায় বাপ, এইডাই আমাগো বাঙালীগো ঐতিহ্য।

- আমরাতো তাইলে প্রত্তিদিন ঐতিহ্য পালন করি, খালি মাছডা থাহে না। তাই না মা?

- হ বাবা।

শামীম আবার খিলখিলিয়ে হাসতে থাকে।

সাউন্ড বক্সে গান বাজানো শুরু হয়েছে " মেলায় যাইরে"। গানের আওয়াজ শুনে লাফাতে লাফাতে এক দৌড়ে সেখানে চলে যায় শামীম। ছেলের খুশি দেখে মায়ের চোখে পানি ছলছল করতে থাকে। সে চোখের পানিতে লুকিয়ে আছে অনেক কষ্ট। হাতের উল্টোপিঠে পানি গুলো মুছে আবার কাজে চলে যায় সে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.