![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক.
সময়টা এপ্রিলের মাঝামাঝি, প্রচন্ড গরম পড়ছে। মাঝে মাঝে আকাশে কালো মেঘ জমছে, কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না। শহরে এই সময়ে লোড শেডিং এ জীবন একেবারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। ফ্রীজ থেকে পানির ঠান্ডা বোতলটা বের করে একটা স্যালাইন মিশাতে যাব এমন সময় মোবাইলে মেসেজ আসল। মোবাইলের লক খুলে মেসেজটা পড়লাম।
" কাল সকাল দশটার বাসে কুমিল্লা চলে আসবি।বিয়ের দাওয়াত আছে।" আর কোন কিছু লেখা নেই।
আমার বন্ধু গোয়েন্দা ডাক্তার মুহিব ফয়সাল এই মেসেজে পাঠিয়েছে। ওর সাথে দিন দশেকের মত কোন যোগাযোগ নেই। মেসেজটা যেহেতু পাঠিয়েছে সেহেতু কোন কারন ছাড়া পাঠায়নি। ও আবার কারন ছাড়া কোন কাজ করে না। কোন সময়ে কি কাজ করে বেড়ায় তার ও ঠিক ঠিকানা নেই। এই তো কয়েকদিন আগের ঘটনা, রাস্তায় হাটছি এমন সময় হঠাৎ এক বাদামওয়ালা মুখের কাছে এসে 'এই বাদাম, এই বাদাম' বলে চিৎকার করতে লাগল। এমনিতে মাইগ্রেনের ব্যথা হচ্ছিল, তার সাথে এমন চিৎকার অসহ্য লাগছিল। ঝারি দিতেই বাদামওয়ালা হেসে দিয়ে বলল "বন্ধুবর, এত রাগ করলে কি হয়।" কোনো এক মাদক ব্যবসায়ী চক্রের প্রধানকে ধরার জন্য তার এই ছদ্দবেশ। মাঝে মাঝে নিরুদ্দেশ ও হয়ে যায়।
হঠাৎ করে মেসেজ পাওয়ার পর নতুন চিন্তা মাথায় ঘুরতে লাগল। আমাকে একা যেতে হবে, এর আগে আমি কোথাও একা যাইনি। মুহিবের নাম্বারে ফোন দিতেই বন্ধ দেখাল।
পরের দিন দুপুর দুইটার মধ্যে আমি কুমিল্লা চলে আসলাম। রাস্তা এখন চার লেনের হওয়াতে বেশি সময় লাগেনি। বাস থেকে নামতেই এক ভদ্রলোক আমার দিকে এগিয়ে আসলেন।
" আপনি মনে হয় ফাহিম?" প্রশ্নটা করে আমার মুখের দিকে তারপর তার হাতে থাকা মোবাইলের দিকে তাকাল। লোকটা মাঝবয়সী, একটা শার্ট আর ফরমাল প্যান্ট পড়া। মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি আছে। গোফটা রেখেছে স্টাইলিস ভাবে। হাতের মোবাইলটা পকেটে রেখে পার্কিং করা একটা গাড়ি দেখিয়ে সেটায় গিয়ে বসতে বলল। কালো রঙের বিএমডাব্লিউ গাড়ি। বছর খানেক হবে মনে হয় ব্যবহার করছে।
" হ্যা, কিন্তু আপনি? " কাপা কাপা কন্ঠে প্রশ্ন করলাম আমি।
" আমি আপনাকে নেওয়ার জন্যই এসেছি, এডভোকেট হায়দার সাহেব পাঠিয়েছেন। গাড়িতে উঠে বসুন।" আমাকে কথাটা বলেই সে ড্রাইবিং সিটে গিয়ে বসল।
আমি কি করব বুঝতেছি না। কে এই হায়দার, নাকি কোনো চক্রের হাতে পড়লাম। মুহিবের ফোন এখন ও বন্ধ। কেউ কি মুহিবকে আটকে রেখে আমাকে তার মোবাইল দিয়ে মেসেজ পাঠাল কিনা।এইসব চিন্তা মনে ঘুরপাক খেতে লাগল।
আমার দিকে তাকিয়ে আবার সে বলল, " ভয় নেই স্যার, আমি আপনাকে নেওয়ার জন্য এসেছি।" কথাটা বলেই গাড়ি স্টার্ট করল।
আমি তার পাশের সিটে বসলাম। সে আমার সাথে আর কোন কথাই বলেনি। শুধু মাঝখানে একটা সিগারেট ধরিয়েছে, আমাকে ও দিতে চেয়েছে কিন্তু আমি নিষেধ করেছি। নতুন কোথাও গেলে আমি চারপাশে তাকিয়ে সব কিছু দেখি কিন্তু আজকে আর তাকাতে ইচ্ছা হচ্ছে না। অজানা এক গন্তব্যের দিকে অজানা এক মানুষের সাথে যাচ্ছি, জানি না কপালে কি আছে।
মিনিট দশেক পরে একটা ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামল। গেটে বড় করে নিমপ্লেট লাগানো ' হায়দার ভিলা'। গেটের সামনে দু'পাশে চেয়ারে কয়েকজন পুলিশ কন্সটেবল বসে আছে। গেটের দুপাশে লম্বা দুটি নারিকেল গাছ, সাথেই কৃষ্ণচুড়া গাছ ও আছে।আমাকে বাড়ির সদর দরজা পর্যন্ত দিয়ে সে চলে গেল। গেট থেকে বাড়ির সদর দরজা পর্যন্ত সুন্দর ইট বিছানো রাস্তা। রাস্তার দু'পাশে হরেক রকম পাতা বাহার গাছের সারি। বাড়ির চারপাশে দেওয়াল করা। নতুন করে চুনকাম করা হয়েছে দেওয়ালে। পুরো বাড়ি আলোকসজ্জায় সজ্জিত। বাড়ির উত্তর পাশে ফাকা জায়গায় প্যান্ডেল আর দক্ষিন দিকটাতে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। অনেক রকম ফল গাছ আছে দেওয়াল ঘেঁষে। বাড়ির সামনের দিক থেকে পিছনের দিকে কি আছে বুঝা যাচ্ছে না। বাড়িতে অনেক লোকের সমাগম দেখলাম। পুরো বাড়ি একেবারে গিজগিজ করছে লোকে। আমি সদর দরজায় আসতেই একজন লোক আমাকে ড্রয়িং রুমে নিয়ে আসল। রুমে ঢুকে সোফাতে বসে পড়লাম। খুব পরিপাটি করে সাজানো রুম। দেওয়ালে কয়েকটা তৈলছিত্র টানানো। উত্তর দিকের দেওয়ালের সাথে বড় একটি এলইডি টিভি সেট করা। আমি খুব অস্বস্তিকর অবস্থায় আছি। মুহিবকে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু নাম্বার এখন ও বন্ধ। মেসেঞ্জার থেকে মেসেজ দিলাম কিন্তু সে অনলাইনে নেই। আমাকে কেন সে বিয়ে খাওয়ার জন্য আসতে বলল। সে নিজে না এসে আমাকে কেন পাঠাল। অথবা কেউ কি ব্লাক মেইল করছে আমাদের দু'জনকে। এসব চিন্তা এখন ও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এমন সময় বছর পঞ্চাশেকের এক ভদ্রলোক রুমে ঢুকলেন। মাথার অধিকাংশ চুলই সাদা হয়ে গেছে। দাঁড়ি নেই কিন্তু জাঁদরেলি টাইপের গোঁফ আছে। পাজামা আর পাঞ্জাবি পড়েছেন। হাতে আইফোন সেভেন। দেখে বুঝতে পারলাম খুব উচ্চ বংশের হবে। আমাকে দেখেই মুচকি হাসি দিয়ে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন।
" আপনি তাহলে ডা. মুহিবের বন্ধু ফাহিম।" কথাটা বলে উনি সামনের একটা সোফায় বসে পড়লেন।
"জ্বি।"বললাম আমি
" আমি এডভোকেট হায়দার চৌধুরী। কুমিল্লা জর্জ কোর্টে আছি। আমার একমাত্র মেয়ের বিয়ে আগামীকাল। গত কয়েকদিন ধরে অপরিচিত কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকটি মেসেজ এসেছে।আমাকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছে সে মেসেজে গুলোতে। কিন্তু কে বা কারা মেসেজ করছে সেটা জানতে পারিনি। মেসেজ দেওয়ার পর আইডিগুলো ডিএক্টিভেট করে দিচ্ছে। আমি সে জন্য আপনার ডিটেক্টিভ বন্ধু ডা. মুহিবকে ফোন করি আসার জন্য। উনি বলছেন আপনাকে পাঠাবে।" কথা গুলো বলে উনি একজনের নাম ধরে ডাক দিলেন। দ্রুত কাজের লোক এসে হাজির হল। আমার ব্যাগটা নিয়ে আমার থাকার রুম দেখিয়ে দিতে বললেন। আমাকে মেসেজগুলো দেখালেন। আমি এক নজরে দেখে নিলাম মেসেজটা।
" মেয়ের বিয়ের সাথে নিজের কুলখানির ও ব্যবস্থা কর। O.F। "
মেসেজে দেখে ওনাকে আবার মোবাইল ফেরত দিলাম।
" আচ্ছা, আপনার কাকে সন্দেহ হয়? " প্রশ্নটা করলাম আমি।
" দেখুন, আমার পেশার জন্য আমি অনেককে শত্রু বানিয়েছি। তা ছাড়া কুমিল্লা শহরের এক রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলে আমার মেয়েকে পছন্দ করে। আমি সেখানে বিয়ে দি নাই। তা ছাড়া এলাকার কিছু পাতি মাস্তান আছে, ওদেরকে আমি চাঁদা দি না। বিয়ে উপলক্ষে অনেক টাকা চাঁদা ছেয়েছিল, আমি রাজি হইনি। এখন আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না কে আমাকে হুমকি দিচ্ছে।" কথাটা বলে উনি উঠে দাঁড়ালেন।
" আপনি পুলিশে জানাননি?"
" থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি একটা। আপনি জার্নি করে এসেছেন। ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে নিন। পরে আবার কথা হবে।" কথাটা বলেই উনি চলে গেলেন।
উনি চলে যাওয়ার পর আমি কাজের লোকের সাথে আমার থাকার রুমে চলে এলাম। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার শেষ করে সামান্য বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। কিন্তু ঘুম আসছে না। মুহিবের ফোনে আবার কল দেওয়ার চেষ্টা করলাম, কিন্তু বন্ধ। হঠাৎ ওর জন্য দুশ্চিন্তা হতে লাগল। আমাকে সে এভাবে একা পাঠানোর পাত্র না, তাহলে কি শত্রু পক্ষ ওকে! না, এ আমি কি চিন্তা করছি। ভাবতেই গা শিহরিয়ে উঠল। এমন সময় হায়দার সাহেব রুমে ঢুকলেন।
হালকা কাশি দিয়ে বললেন, " ফাহিম সাহেব, আপনি শুধু একটু চোখ কান খোলা রাখবেন। বাহিরের গেটে পুলিশ আছে, ওরা বাহিরে দেখবে। আপনি শুধু ভিতরে দেখবেন। ও, আরেকটা কথা। আমার কয়েকজন ব্যবসায়িক পার্টনার আছে। গত সপ্তাহে ওরা বর্ডার দিয়ে কিছু চোরাই মাল নিয়ে এসেছে; ইয়াবা আর কিছু সোনার বার। আমি সে জন্য ওদের সাথে পার্টনারশিপ রাখব না বলে জানিয়েছি। আমি না থাকলে ওদের অনেক লস হয়ে যাবে। এখন ওরা ও এ মেসেজ গুলো দিচ্ছে কিনা বুঝতে পারছি না।"
"আপনি যাদের সন্দেহ করেছেন, তাদের কি বিয়েতে দাওয়াত করেছেন?" আমি প্রশ্ন করলাম।
"তাদের সবাইকে দাওয়াত করেছি। চক্ষু লজ্জার খাতিরে করতে হয়েছে।" বলেই আবার কাশতে শুরু করলেন হায়দার সাহেব।
" আপনি মনে হচ্ছে অসুস্থ। সিগারেটটা একটু কম খাবেন।"
" কি করব বলেন, চিন্তা কমানোর জন্যই সিগারেট খাই।" কথাটা ভালোমতো শেষ করতে পারলেন না কাঁশির জন্য। হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন তিনি।
বিকেলে বাড়ির পিছনের দিকটায় গেলাম। ছোট্ট একটা ঘর আছে সেখানে। কিন্তু বাড়ি ঢোকার সময় এটা বুঝাই যায় না। কয়েকজন কাজের লোক এখানে থাকে। এটার সাথে একটা ছোট্ট উঠান আছে , সেখানে বিশাল লাকড়ির স্তুপ। বিয়ের জন্য নতুন করে কিনেছে বুঝাই যাচ্ছে। বিভিন্ন দিক থেকে আত্নীয়স্বজন আসতেছে। বুঝতে পারছি আমার কাঁধে বিশাল দায়িত্ব। সে জন্য বাড়ির সবার উপরে নজর রাখছি। কয়েকজনের সাথে গল্প করেছি। ডেকোরেটরের সাথে পাঁচ ছয়জন বাবুর্চি ও এসেছে। তারা রান্নার আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। রাত বারটার মধ্যে গায়ে হলুদের কাজ শেষ হল। আমি এ পর্যন্ত কারো মধ্যে সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করিনি। আমি হায়দার সাহেবের সাথে কথা বলে ঘুমাতে গেলাম।
মাত্র শুয়েছি, একটু তন্দ্রাভাব এসেছে। এমন সময় বাড়ির পিছন দিকটাতে একটা মহিলা কন্ঠের আর্তনাদ শুনা গেল। সেই সাথে কিছু একটা পড়ার শব্দ। দ্রুত মোবাইলটা সাথে নিয়ে দৌড় দিলাম। হায়দার সাহেব ও এসেছেন। বাড়ির একটা কাজের মহিলা হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, কে যেন এদিক দিয়ে বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাকে দেখে দেওয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। আমি মোবাইলের টর্চটা জ্বেলে দেওয়ালের দিকে ধরলাম। কয়েকটা পায়ের ছাপ আছে। বিয়ে বাড়িতে চুরি করার মতলবে এসেছে হয়ত। হায়দার সাহেব সবাইকে সর্তক থাকতে বলে চলে গেলেন। আমাকে ডাক দিয়ে বললেন," ফাহিম, পারলে আপনি একটু নজর রাখবেন।" আমি মাথা নেড়ে সায় দিয়ে রুমে চলে এলাম।
মিনিট দশেক পরে পুরো বাড়ির কি অবস্থা সেটা দেখার জন্য বের হলাম। বাবুর্চিরা পিছনের দিকটার ঘরে ঘুমাচ্ছে, ভোর রাতে উঠে তাদের কাজ করতে হবে। যে যেখানে পারছে ঘুমিয়ে পড়েছে। পুলিশের কনস্টেবল দু'জন বসে বসে জিমোচ্ছে। পুরো বাড়িতে শুনশান নীরবতা। হঠাৎ করে আমার পিছনে কি যেন একটা নড়ার শব্দ পেয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে মাটিতে পড়ে থাকা পাতার উপর দিয়ে কেউ হেটে যাচ্ছে। আমি থেমে যাওয়াতে সে শব্দ ও থেমে গেছে। মাথা সতর্কভাবে পিছনে ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখি কেউ নাই। আবার এক পা এগোতেই হাটার শব্দ কানে এল। কিন্তু কাউকে দেখতে পেলাম না। পিছনে কয়েকটা ফল গাছ আছে, সেখানে মনে হল লুকিয়ে আছে কেউ। বুকের স্পন্দন আরো বেড়ে চলেছে ক্রমশ। খুনি কি তাহলে এ বাড়িতেই আছে। আত্নীয়স্বজনদের মধ্যে কেউ কি এটা করছে। এখন তো জায়গা জমি বা টাকার জন্য অহরহ খুন হচ্ছে, সে রকম কিছু কি হবে। আমি আর বিলম্ব না করে সামনে এগিয়ে গিয়ে প্যান্ডেলের দিকটা দেখতে গেলাম। বাড়িতে সব রুমে লাইট জ্বলছে। প্যান্ডেল থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ দেখলাম জলন্ত কয়েকটি সিগারেটের অংশ। কয়েকটাতে আগুনের ফুলকি এখন ও আছে। তার মানে কিছুক্ষণ আগে হয়ত খুনি এখানে বসে সিগারেট খেয়েছে, আর সব কিছু চুপ দেখে খুন করার জন্য যায়। সামনে কাজের মহিলা থাকায় সে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায়।
দুই.
পরের দিন সকালে নাস্তা সেরে ড্রয়িং রুমে বসলাম। মুহিবের ফোন এখন ও বন্ধ। বিশাল বিয়ের আয়োজন। সাত আটজন বাবুর্চি রান্না করছে। সেদিকটাতে একটু চক্কর দিয়ে আসলাম। বাড়িতে সবাই অনেক আনন্দ করছে কিন্তু হায়দার সাহেবের মুখটা একটু ফ্যাকাশে হয়ে আছে। একে তো বিয়ের কাজ তদারকি করা তার সাথে মৃত্যুর হুমকি। বিয়ে উপলক্ষে তো কত লোকই আসবে। তার মধ্যে কে খুন করার মতলবে আসবে সেটা বের করা অনেক কষ্টের কাজ। আমি হায়দার সাহেবের কাছ থেকে সন্দেহভাজনদের ছবি গুলো আগেই দেখে রেখেছিলাম। হাটতে হাটতে বাড়ির গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এমন সময় কয়েকটা মোটর সাইকেল বাড়ির সামিনে কিছুক্ষণ থেমে আবার চলে গেল। এ গুলো সব পাতি মাস্তান হবে। পুলিশের কনস্টেবলের সাথে মিনিট পাঁচেক কথা বলে আবার বাড়িতে চলে গেলাম। আমার চোখ অনেকটা ঈগল পাখির ন্যায় হয়ে যাচ্ছে। যাকে দেখছি তার দিকেই তাকাচ্ছি। বাড়ির ভিতরে যারা আছে তাদের কাউকে সন্দেহ হচ্ছে না। বাড়ির ভিতরে ওনার নিকট আত্নীয়স্বজন, রান্না করার বাবুর্চি আর প্যান্ডেল সাজানোর লোকজন আছে। হায়দার সাহেব বাড়ির কাউকে এই বিষয়টা জানান নি। জানালে হয়ত বিয়ের আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে। বুদ্ধিমান লোক বটে।
তিনটার দিকে বরযাত্রী আসল। প্রায় দেড়শ হবে। আমি বাড়ির ছাদের উপর বসে সবার গতিবিধি লক্ষ্য করছি। তার সাথে হায়দার সাহেবকে ও চোখে চোখে রাখছি। সন্দেহের তালিকায় যারা ছিল তারা সবাই একে একে এসেছেন। প্রথমেই বিয়ে পড়ানো শেষ করল। খাওয়ার পর্ব শুরু হচ্ছে। বাবুর্চিরা ইতিমধ্যে খাবার পরিবেশনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। একটা টেবিলে হায়দার সাহেবসহ বর পক্ষের গন্যমান্য কয়েকজন বসলেন। হঠাৎ একজন বাবুর্চি এসে তাকে ডেকে বাড়ির পিছনের দিকটায় নিয়ে গেল। আমার কিছুটা সন্দেহ হওয়াতে দ্রুত সিড়ি দিয়ে নেমে বাড়ির পিছনে দৌড় দিলাম। পিছনের দিকটা একেবারেই নীরব। বাড়ির সবাই কাজে ব্যস্ত। এদিকে এখন কেউই আসবে না। আমি সেখানে গিয়ে হায়দার সাহেবকে দেখতে পেলাম না। আমার হার্টবীট স্পষ্ট বুঝতে পারছি। একটু এগিয়ে পিছনের ঘরটায় গেলাম যেখানে গতকাল রাতে বাবুর্চিরা ঘুমিয়ে ছিল। ঘরে ঢুকেই আমি হতবম্ব হয়ে গেলাম। একজন বাবুর্চি হায়দার সাহেবের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।উনার চোখ কালো কাপড়ে বাধা। আমি ঢুকতেই আরেকজন বাবুর্চি পাশ থেকে এসে দঁড়ি দিয়ে আমাকে বেধে ফেলল। তারপর কালো কাপড়ে চোখ বেধে দিল।বাড়ির কেউ জানতেই পারছে না যে কিছুক্ষণের মধ্যে হয়ত আমরা দুটি প্রাণী মারা যাচ্ছি। সামনের দিকে সবাই খাওয়া নিয়ে আর মহিলারা বউ সাজানো নিয়ে ব্যস্ত। কেউ ভুলে ও এখন পিছনে আসবে না। চোখের সামনে সব অন্ধকার দেখতে লাগলাম।
" খুব গোয়েন্দাগিরি করতে আসছ না, সোজা এখন উপরে পাঠিয়ে দিব।" কথাটা বলল হায়দার সাহেবের মাথায় যে পিস্তল ধরে আছে সে। কথাটা বলে আস্তে একটা বিদ্রুপের হাসি দিল।
এবার হায়দার সাহেব কথা বলা শুরু করলেন, " তোরা কারা? আমি তোদের সাথে কি করেছি?"
" তোর সাথে কোন শত্রুতা নেই আমাদের উকিল সাহেব। আমাদের টাকা দিয়ে ভাড়া করা হয়েছে। কে ঠিক করেছে সেটা তো বলা আমাদের ধর্ম না, সে জন্য জানতে ও পারবি না কে ঠিক করেছে আমাদের। আমরা তার আদেশের জন্য অপেক্ষা করছি, আদেশ আসা মাত্রই তোদের খুন করে ফেলব।" কথা গুলো বলে হাসতে লাগল দু'জন।
" গোয়েন্দাকে ছেড়ে দে তোরা, ওর কোন দোষ নেই।" কথাটা বলে হয়ত আমার দিকেই তাকিয়েছেন হায়দার সাহেব। চোখ বাধা থাকায় কিছুই দেখছি না।
"না, ওকে সহ মেরে ফেলার আদেশ আছে।" বলল বাবুর্চিদের একজন।
" আমাকে খুন করার জন্য যত টাকা পাইছিস তোরা, তার দ্বিগুন দিব আমি তোদের, আমাকে ছেড়ে দে।"
" না উকিল সাহেব, এটা আমাদের ধর্ম না।"
কথাটা শেষ হতেই মোবাইলে একটা মেসেজের শব্দ পেলাম। হয়ত খুনি মেসেজ দিয়েছে। তার এক মিনিটের মধ্যেই গুলি করার শব্দ হল একবার। হায়দার সাহেবকে খুন করা হয়েছে। চোখ বন্ধ থাকায় তার শেষ বিদায়ের চেহারাটা দেখতে পেলাম না। আমার ও একি পরিনতি হবে এখন। দুজনের দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ পেলাম। বাহিরে ধপাস একটা শব্দ হল। ওরা কি তাহলে হায়দার সাহেবের লাশকে ফেলে দিল বাহিরে। এবার আমার পালা। খুব দ্রুত পায়ে কে যেন ঘরে আসল।শেষ মূহুর্তে মুসলমান হিসেবে কালেমাটা পড়ে নিলাম একবার।
"ফাহিম।" মুহিবের কন্ঠ শুনে অবাক হলাম।মৃত্যুর ভয়ে হয়ত প্রিয় বন্ধুর কন্ঠের হ্যালোচিনেশন শুনতে পাচ্ছি। আমার চোখের বাঁধন খুলে দিল।সামনের দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গেলাম। জীবনে কোনদিন এমন অবাক হয়নি। আমার সামনে একজন বাবুর্চি দাঁড়িয়ে আছে। মুখের নকল সাজ খুলতেই দেখলাম মুহিব। পাশে হায়দার সাহেব এখন ও চোখ বাধা অবস্থায় বসে আছেন। আমি খুলে দিলাম। উনি অবাক হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
" চোখ বাধা অবস্থায় আমি ভেবেছিলাম ফাহিমকে বুঝি গুলি করেছে আগে।" বলেই আমার দিকে তাকালেন হায়দার সাহেব। যেহেতু গুলির শব্দ হয়েছে সেহেতু আমরা একজন ভাবছিলাম অন্য জনকে গুলি করা হয়েছে।
আমরা মুহিবের সাথে বের হয়ে আসলাম। বাহিরে এসে দেখি একজন লোককে মাটিতে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে আগের দুই বাবুর্চি।
লোকটার দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে হায়দার সাহেবের দিকে তাকিয়ে মুহিব বলল, " এই হল আপনার আসল খুনি। তবে আপনি পাকা অভিনেতার মত অভিনয় করেছেন।"
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, " অভিনয় মানে?"
তারপর হাটতে হাটতে মুহিব বলল," বাবুর্চি হায়দার সাহেবকে ডেকে এনে চোখ বেধে রেখেছে,তারপর তুই আসলে তোকে ও বেধেছে। এসব আসলে সবই আমার পাতানো ফাঁদ ছিল। এত লোকের মাঝে আসল খুনি বের করা আসলেই কঠিন ছিল। সে জন্য এ ফাঁদ পেতেছিলাম।" কথা গুলো শেষ করে একটা মুচকি হাসি দিল সে। কিন্তু হায়দার সাহেবের মুখ এখনো ফ্যাকাশেই আছে।
গুলির আওয়াজে অনেক লোক চলে এসেছে। পুলিশের হাতে আসামীকে তুলে দিল বাবুর্চিরা।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল," হায়দার সাহেব জানতেন এ ফাঁদের কথা। আসল খুনি যেন না বুঝতে পারে সে জন্য উনি ও অভিনয় করেছেন। বাবুর্চি সাজতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করা হয়ে গেছে।" কথাটা শেষ করে ফ্রেশ হওয়ার জন্য রুমে চলে গেল মুহিব।
মিনিট দশেক পর সে ফিরে এল। কিন্তু ওর মুখে কিছুক্ষণ আগের সেই ভাবটা দেখলাম না। একটা রহস্য সমাধান করার পর ওর মুখ যে রকম হাসিখুশি থাকে সেটা দেখতে পাচ্ছি না। এক টেবিলে বসে সবাই খাওয়া শুরু করলাম। ইতিমধ্যে বাড়ির সবাই ঘটনাটা জেনে গেছে, আড় চোখে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে সবাই। আমি ওকে কোন প্রশ্ন করছি না, কারন আমি জানি সময় হলে সে নিজেই সব বলবে। হায়দার সাহেব মেয়েকে নতুন জামাই সহ বিদায় দিলেন, আমরা ও একটু পর বিদায় নিব। ড্রয়িং রুমে এসে সবাই বসলাম। সন্দেহের তালিকায় যারা ছিল তারা ও আছে। মুহিব তখন নিজে থেকে বলা শুরু করল,
" পাঁচ দিন আগে যখন হায়দার সাহেব আমাকে ফোনে সব কিছু বলেন তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম কুমিল্লা আসার। কারন বিয়ে বাড়িতে অনেক লোক থাকে, এত জনের মধ্যে খুনিকে খুজে বের করা সহজ কাজ নয়। আমি এ বাড়িতে এসেছি, এ কথা শুনলে খুনি অনেক বেশি সর্তক থাকবে। সে জন্য আমার বন্ধু ফাহিমকে পাঠাই। খুনি যেন ওকে নজর রাখে। আমি বাবুর্চিদের সর্দারের সাথে এ বিষয়ে কথা বললাম। ছদ্দবেশ নিয়ে গত দু'দিন ধরে এ বাড়িতে আছি বাবুর্চিদের সাথে। গতকাল রাতে দু'জন বাবুর্চিকে ফাঁদের কাজ গুলো বুঝিয়ে দিলাম। আর আমি সব সময় সন্দেহের তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের দিকে নজর রাখলাম। যার খুন করার উদ্দেশ্য থাকবে, সে সব সময় হায়দার সাহেবের দিকে নজর রাখবে। আর এই সুযোগটা আমি কাজে লাগিয়েছি। বাবুর্চি এসে যখন হায়দার সাহেবকে নিয়ে যায়, তখন খুনি ও পিছু পিছু যায়। আর আমি যাই খুনির পিছনে। বাবুর্চির হাতে আমি নকল পিস্তল দিয়েছিলাম। আর জানতাম যে ফাহিম সেখানে যাবে। সে জন্য আরেক জনকে রেখেছিলাম ফাহিমকে দঁড়ি দিয়ে বেধে ফেলতে।" কথা গুলো বলে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিল মুহিব।
এমন সময় বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ির হর্ণ শুনলাম। মিনিটের মধ্যে থানার এস.আই সহ সাত আটজন পুলিশ সদস্য ঢুকল।
" আসুন, এস আই সাহেব। আমি গোয়েন্দা ডাক্তার মুহিব ফয়সাল।" কথাটা বলেই মুহিব হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করল।
"আপনার ফোন পেয়েই আমি চলে এলাম। বলুন তো কি হয়েছে এ বাড়িতে?" প্রশ্নটা করে মুহিবের দিকে তাকাল পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর হেলাল আহমেদ।
পুলিশ অফিসারকে সব বলল মুহিব।
" এই খুনিকে তাহলে কি ভাড়া করা হয়েছে?" প্রশ্নটা করলাম আমি।
"এ হচ্ছে খুব অনেকগুলো মামলার আসামি। মাত্র কয়েকদিন হল জামিনে মুক্তি পেয়েছে।" বললেন এস.আই হেলাল আহমেদ।
"তাহলে কে তাকে ভাড়া করেছে হায়দারকে খুন করার জন্য?" প্রশ্নটা করল হায়দার সাহেবের ব্যবসায়ীক পার্টনার সুমন মোল্লা।
" আমি এখন এমন কিছু কথা বলব কেউ হয়ত বিশ্বাস করবেন না।" কথাটা বলে রুমের সবার দিকে একবার করে তাকাল মুহিব। রুমে সবাই বসে আছেন। ওর মুখের কালো ছায়াটা আরো বেড়ে চলেছে আস্তে আস্তে। পুরো রুমে পিনপতন নীরবতা। সবাই সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছেন।
এবার মুহিব বলা শুরু করল," আমি যখন বিয়ের প্যান্ডেল থেকে খুনির পিছু যাচ্ছিলাম তখন সে আমাকে লক্ষ্য করেছে। সে একটা গাছের আড়ালে বসে ছিল।
আমি আমার রিভলভারটা হাতে নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। হঠাৎ সে গাছের আড়াল থেকে বের হয়ে আমার দিকে গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। ততক্ষণে তার পা লক্ষ্য করে আমি আমার রিভালভারের ট্রিগার চেপে দিলাম। আর সে আওয়াজটা ফাহিম শুনেছে। বাবুর্চিরা তখন দ্রুত দৌড়ে এসে তাকে ধরে ফেলে। আমি দৌড়ে এসে খুনির সব পকেটে খুজে একটা বড় অংকের টাকার চেক পাই এবং তার মোবাইল নিয়ে যাই।
সামান্য কাঁশি দিয়ে আবার মুহিব বলতে শুরু করল, " আসলে খুনিকে ভাড়া করা হয়েছিল আমাকে আর ফাহিমকে খুন করতে। খুনির পকেটে একটা পাঁচ লাখ টাকার চেক পেয়েছি। সুতরাং যে ভাড়া করেছে তার প্রমাণ ঐ চেকের মধ্যে আছে।গতকাল রাতে একটা নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে ভাড়াটে খুনির মোবাইলে। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে আমাকে খুন কিভাবে করতে হবে। সেই ফোন নাম্বারটা হচ্ছে চেকে যার সাইন আছে তার।"
কথাগুলো বলে টাকার চেক আর ভাড়াটে খুনির মোবাইলটা পুলিশ অফিসারের হাতে দিয়ে দিল মুহিব। আমি পুরাই অবাক। কে এমন শত্রু আছে যে আমাদের খুন করবে। আজকের মতো আমি কোনদিন ও এত চিন্তায় পড়তে দেখিনি মুহিবকে।
" হায়দার সাহেব, আপনি এত জঘন্য কাজ করলেন কেন? ডা. মুহিবের সাথে তো আপনার কোন শত্রুতা নেই।" রাগের কন্ঠে বললেন পুলিশ অফিসার হেলাল আহমেদ।
হায়দার সাহেব! নামটা শুনে বিস্ময়ে সবাই ওনার দিকে তাকালাম।
"হ্যা, হায়দার সাহেব আমাদের মারার জন্য খুনি ভাড়া করেছিল। আমার ফাঁদ পাতার সব প্লান উনি জানতেন।আমি বাবুর্চির সাজে আছি সেটা ও জানতেন।ভাল একটা সুযোগ উনি ব্যবহার করেছেন। আমাকে খুনি মারলে সবাই ভাবত যে হায়দার সাহেবকে যে খুন করতে এসেছে সেই আমাকে মেরেছে। টাকার চেক আর মোবাইলের মেসেজ না দেখলে আমি ও কখনো বুঝতে পারতাম না। আমার সাথে কি শত্রুতা আপনার হায়দার সাহেব?" প্রশ্নটা করে হায়দার সাহেবের দিকে তাকাল মুহিব।
সবার দৃষ্টি এখন হায়দার সাহেবের দিকে। উনি এবার মুখ খুললেন।
" ধরা খেয়েছি যখন, তখন আর অস্বীকার করব না। আমিই খুনিকে ভাড়া করেছি মুহিবকে মারার জন্য।" বললেন হায়দার সাহেব।
" কিন্তু কেন?" জিজ্ঞেস করলেন পুলিশ অফিসার।
মূহুর্তের মধ্যে আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই নিজের পকেটে থেকে রিভলভার বের করে নিজের মাথায় গুলি করলেন হায়াদার সাহেব। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশগুলো আমাদের সামনে ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ল। রুমের উপস্থিত সবাই নির্বাক দর্শকের মত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম সে দিকে। ঘন্টাখানেক পরে আমরা বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। এস.আই কে বলে আসলাম কোন খবর থাকলে আমাদের জানাতে। বাসে মুহিব কোন কথা বলেনি। শুধু একবার বলেছিল, " আমার বিরুদ্ধে খুব শক্তিশালী একটি গ্রুপ কাজ করতেছে, অনেক আগেই বুঝেছি। হায়দার হয়ত সেই গ্রুপের একজন হবে। আমি সেই গ্রুপের খোজ না পাওয়া পর্যন্ত ঘুমাতে পারব না।"
২| ২৮ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:০৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক দিন পর গোয়েন্দ গল্প পড়লাম!
বাহ! বেশতো! ..আরেকটা রহস্যের ইংগিত দিয়ে সমাপ্তি!
পরের গল্পের অপেক্ষায়
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩
দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: কাহিনিটা ভালো ছিলো।তবে গোয়েন্দা কাহিনী আরো থ্রিল মাখিয়ে লিখলে ভালো লাগতো।