![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্লাসে যুক্তিবিদ্যার টিচার সিস্টার মিনতি একবার জিজ্ঞেস করেছিলেন, ভালোবাসা বলতে আমরা কে কী বুঝি! বিশ্বাস, ভরসা, ভালোলাগা- সবাই একে একে উত্তর দেওয়ার পরে আমি বলেছিলাম, "কমিটমেন্ট"।
তখন মনে হয়, কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে তিন বা চার মাস চলছে। প্রায় তিন বছর আগের কথা। স্কুলের গন্ধ তখনও গায়ের থেকে যায়নি। নাকি সেটা ২০১৯ এর জানুয়ারি মাস ছিল? ঠিক মনে পড়ছে না, একেকবার একেক সময়ের কথা মনে হচ্ছে। তো যাই হোক, তখনও আমার জগৎ খুব সীমিত- সীমিত মানুষের সাথে মেলামেশা, সীমিত জীবনের কাছাকাছি যাওয়া। এখন যে অনেক বেশি মানুষের সাথে মিশি কিংবা অনেকগুলো জীবন দেখে ফেলেছি, তা নয়! তবে ওই সময়ের তুলনায় একটু তো এগিয়েই আছি। স্বাভাবিক, যেহেতু সময়ও এগিয়ে গিয়েছে অনেক দূর।
তখন আমি প্রবলভাবে বিশ্বাস করতাম, ভালোবাসা অসাধারণ একটা পবিত্র বিষয়। আর "কমিটমেন্ট" এই সম্পর্কে অপরিহার্য। একজন আরেকজনকে ভালোবেসে যদি একে অপরের প্রতি কমিটেডই না থাকতে পারে, তবে আর কী ধরণের সম্পর্ক হলো!
সিস্টার সেদিন এই শব্দটা শুনে অনেকক্ষণ আলোচনা করেছিলেন এই বিষয়টা নিয়ে। তাঁর আলোচনার সারমর্ম ছিল এই যে, "কমিটমেন্ট" শব্দটা খুবই ভারী, তাৎপর্যপূর্ণ এবং জটিল! সবাই এই কথাটার দাম রাখতে পারে না, অথবা সব সম্পর্কে এই কথাটা দাম পায় না।
এখন সিস্টারের কথার যথার্থতা কিছুটা উপলব্ধি করতে পারি। "কমিটমেন্ট" শব্দটা আসলেই জটিল। তবে একে জটিল করেছি আমরা, জটিল করেছে আমাদের জীবন। কারণ, আমাদের মন জিনিসটাই অত্যন্ত জটিল, সে নিজেও জানে না কখন কী চায়। তাই এই জটিল, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা আমাদের বেশিরভাগের জীবনের ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। এই কারণেই সম্পর্ক ভেঙে যায়, পরকীয়ার মতো ঘটনা ঘটে। একটা সময় ভাবতাম, সন্তানের কাছে তার বাবা-মা যেমন আপন, তেমন বাবা-মায়েরা দুইজনও একে অপরের আপন। কোনো পার্থক্য নেই। জীবনে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম একজন স্ত্রী তার স্বামীকে "পরের ছেলে" বলছে কিংবা শ্বশুরবাড়িতে একটা মেয়ে "পরের মেয়ে" হিসেবেই পরিচিত, তখন খুব অবাক হয়েছিলাম। তারপরে, আরেকটু বড় হওয়ার পরে জেনেছিলাম- স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক কাঁচের গ্লাসের মতো। আর এই সম্পর্কে কাঁচটা হচ্ছে "বিশ্বাস"। একটি কাঁচের গ্লাস ভেঙে গেলে যেমন আর জোড়া লেগে আগের মতো হয় না, তেমন বিশ্বাস একবার ভেঙে গেলেও আর জোড়া লাগে না। সম্পর্কের মধ্যে একটা চিড় ধরে যায়। সেই চিড়ের পরিমাণ কখনো বেশি হয়, কখনো কম হয়। তীব্র চিড় দূর থেকে দেখা যায়, কিন্তু সুক্ষ্ম চিড়ের প্রভাব শুধু কাছাকাছি থাকলেই টের পাওয়া যায়। দূর থেকে মনে হয় অত্যন্ত স্বচ্ছ, সুন্দর।
হয়তো... আমরা মন থেকে কমিটেড থাকতে পারি না বলেই সম্পর্কের কাঁচটা ভেঙে যায়। এই পৃথিবীর প্রত্যেকেই যদি তার ওই পাশের মানুষটার প্রতি সত্যিকারভাবেই "কমিটেড" থাকতে পারতো, তাহলে জীবনটা কত সুন্দর, নির্ভেজাল হতো; তাই না?
#মৌরি_হক_দোলা
১৪ই আগস্ট, ২০২১
২| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:০৭
সামছুল আলম কচি বলেছেন: স্কুলের গন্ধ তখনও গা থেকে যায়নি- সে কেমন কথা হলো ??!!
কমিটমেন্ট বলে আসলে কিছু নেই। আমরা সব কিছুর উর্ধ্বে সময়-কেই ভালোবাসি। জীবনের চেয়ে সময়ের মূল্য অনেক অনেক বেশী !!
৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:০৭
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার এই স্কুল জীবনের শেষ কলেজের শুরু সময়ের কথা শুনে আমার নিজের স্মৃতি তাজা হয়ে গেলো ।
কলেজে আমার স্কুলের সহপাঠি তিন জন ভর্তি হয়েছিলো । দ্বির্ঘ দশ বছরের বন্ধুত্ব যাদের সাথে কি এক অদ্ভুত কারনে কলেজের প্রথম দিন থেকে তাদের চিনেও না চেনার যে প্রয়াস তা দেখে যার পর নাই আশ্চার্য হয়েছিলাম । একি ক্লাশে একসাথে না বসা , কথা না বলা, চোখে চোখ পরলে এড়িয়ে যাওয়া, যেকোন অনুষ্ঠানে দুরত্ব বজায় রাখা যেন নিত্তনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে গেলো । আমি প্রথমে প্রচন্ড কষ্ট পেতাম, তারপর ধীরে ধীরে নিজেকে বোঝাতাম। তারপরেও বেশরমের মতো অনেক লোকের মাঝে দেখা হলে পরিচয় করিয়ে দিতাম আমার স্কুল মেট । প্রতিদানে কি পেতাম জানেন, ঠোঁট বাকিয়ে বাঁকা হাসি ।
৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:৪০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: পরের ছেলে পরের মেয়ে বলা অত্যন্ত অন্যায় ও অযৌক্তিক। আপন করতে না পারলে কোন কিছুই স্থায়ীত্ব পাবেনা।
৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৩
নতুন মেসাইয়া বলেছেন:
এখন কি করেন, পড়ালেখা শেষ হয়েছে? "৩৬শে জুলাইর স্বাধীনতায়" অবদান আছে?
৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:০০
বিজন রয় বলেছেন: আপনি সব সময় লেকায় থাকতে চান, এই বিষয়টি আমার ভালো লাগে।
আশাকরি সামনের দিনগুলোতে আপনার লেখা আরো গভীর হবে।
৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন পর!!!
আপনাকে ব্লগে দেখে ভালো লাগছে।
লেখা সুন্দর হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:২৫
মৌরি হক দোলা বলেছেন: পোস্টে ছবি যুক্ত করা গেল না কেন বুঝতে পারলাম না।