![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রাগৈতিহাসিক কালের উন্মুক্ত যৌন জীবন ব্যবস্থা সময়ের স্রোতে ভেসে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। বহুগামিতা থেকে সরে এসে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একগামিতার ধারণা। তবুও কখনো কখনো বর্তমান সমাজে প্রায়ই একটা দাবির ছড়াছড়ি দেখা যায় যে- ‘মানুষ প্রাকৃতিকভাবে বহুগামী। তাহলে তাকে একগামিতার দোহাই দিয়ে সংযমের শৃঙ্খলে বন্দি করার চেষ্টা কেন?’ অনেকের মতে এই বহুগামিতা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি বলেই যখন কেউ বৈধভাবে নিজের প্রবৃত্তি মেটাতে বাধা পায়, তখন সমাজে ধর্ষণ ও পরকীয়ার উৎপত্তি হয়।
কিন্তু মানব সমাজে বহুগামিতার থেকে সরে এসে একগামিতার ধারণা হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি। এর একটি আপাত ধারাবাহিক ইতিবৃত্ত পাওয়া যায় সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা রাহুল সাংকৃত্যায়নের "ভোলগা থেকে গঙ্গা" বইয়ে। এটা যদি ধরে নেওয়া হয় যে, এই বইয়ে বর্ণিত একেকটি সময়কালের সাথে সম্পৃক্ত সমাজ ব্যবস্থা একেবারে ভিত্তিহীন নয়, বরং তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে- তাহলে দেখা যাবে প্রথম অনুচ্ছেদে উপস্থাপিত দ্বন্দের একটা সম্ভাব্য উত্তর পাওয়া যাবে।
"ভোলগা থেকে গঙ্গা" বই অনুসারে, প্রাগৈতিহাসিক কালের গোষ্ঠী সমাজে বিবাহের কোনো ধারণা ছিল না। সকলেই সকলের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারত। "নিশা" ও "দিবা" পর্বে দেখা যায়, কখনো কখনো নারী তার সন্তানকে কিংবা ভাইকেও বেছে নিচ্ছে যৌনসঙ্গী হিসেবে। এমনকি "কনসেন্ট"এর কোনো ধারণাও "নিশা" পর্বে দেখা যায় না। তবে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ সময়কালে বর্ণিত "দিবা" পর্বে কাঙ্ক্ষিত সঙ্গীকে মুগ্ধ করার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়; যদিও কোনো নারীই পুরুষ সঙ্গীর কামনার আহ্বান ফিরিয়ে দিত না কখনো। কিছু কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে লজ্জার অনুভূতি থাকলেও নারীদের মধ্যে তা অলক্ষিত।
"অমৃতাশ্ব" পর্ব অনুসারে, প্রায় ৫ হাজার বছর আগের সমাজে প্রথম বিবাহ প্রথা চালু হয়। তবে তখন নারীরা বিয়ের পরেও অস্থায়ী প্রেমিক রাখতে পারত। কখনো কখনো স্বামীই তার স্ত্রীকে উপহার হিসেবে অন্য পুরুষের নিকট পাঠাতেন। অর্থাৎ সে সময় প্রাগৈতিহাসিক কালের মতো উন্মুক্ত যৌনাভ্যাস না থাকলেও বহুগামিতা চলমান ছিল। এই ধারা প্রায় আরও হাজার বছর ধরে চলে।
আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার বছর আগের সময়কালে বা তার কাছাকাছি সময়েই সম্ভবত "ওয়ান-টু-ওয়ান" প্রেমসম্পর্ক গড়ে উঠতে থাকে নারী-পুরুষের মধ্যে। "সুদাস" পর্বের অপলা ও জেতার ভালোবাসার গল্প এই ধারণাই দেয়। এই সময়ের প্রায় আটশ বছর পরেও একই ধরণের সম্পর্ক দেখা যায় লোপা ও প্রবাহণের মধ্যে, যা নাগদত্ত-সোফিয়ার জীবন পেরিয়ে বর্তমান সময়ও বিদ্যমান।
তাই বলা যায়, সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষের অনুভূতির বিবর্তন ঘটেছে, ফলত মানুষ ধীরে ধীরে একগামী হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ একগামিতা সভ্যতার পরিণতি। আর মানুষ সভ্য বলেই নিজের বহুগামিতা প্রবৃত্তিকে দমন করে আমাদের সমাজে গ্রহণযোগ্য জীবনব্যবস্থা বেছে নিতে চায় (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে), আর এটাই নৈতিক বলে সমাজে প্রতীয়মান হয়।
শনিবার
১৪ জুন, ২০২৫
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৩৯
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: বহুগামিতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। সামাজিকতার কারণে লুকিয়ে রাখে আর কী। সুযোগে অনেকে সদ্ব্যবহার করে।
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:৪৭
বিপ্লব০০৭ বলেছেন: রাহুল সাংকৃত্যায়ণ "ভোলগা থেকে গঙ্গা"-য় আমাদের যে ইতিহাস দেখালেন এইটার উৎস কী? মানে আমি জানতে চাচ্ছি- (উদাহরণ হিসেবে) হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড যখন প্রাচিন মিশর নিয়ে কল্প-কাহিনী লিখেন, তখন মিশরের প্রাচিন ইতিহাস পড়াশোনা করে উনি তার কল্পনার জগৎ আঁকেন যেই ইতিহাসটা সবার জানা আছে, আর্কিওলোজিস্টরা প্রাচিন লিপি বা ধ্বংসাবশেষ থেকে এসব ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছেন। কিন্তু রাহুল সাংকৃত্যায়ণ যে বর্ণনাসমৃদ্ধ গল্প শোনাচ্ছেন এগুলোর নেপথ্যের সোর্সগুলো কী?
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:০৬
কামাল১৮ বলেছেন: মানুষ এটা করেছে তার অর্জিত সম্পদের উত্তারিধিকারী নিশ্চিতের কারণে।