![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে ঝড়ের ঘনঘটা। সবকিছু যেন একটা অচলায়তনে ঠেকে গেছে। আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে দেশে যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের নেতৃত্বে মুহাম্মদ ইউনূসের মতো নামকরা ব্যক্তিত্ব থাকলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে তারা ব্যর্থ। এদিকে নতুন করে গড়ে ওঠা ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) নামক দলটির উত্থান দেখে মনে হচ্ছে, তারা কেবল ছাত্র আন্দোলনের জোয়ারে ভেসে এসেছে, কিন্তু দেশ চালানোর মতো দক্ষতা বা দূরদর্শিতা তাদের নেই। আর বিএনপি? তারা যেন এখনো পুরোপুরি জেগে ওঠেনি, তবে আমার মনে হয়, তাদের মধ্যে এখনো একটা সম্ভাবনা আছে। তবে সব মিলিয়ে আমি বলব, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো দলই জনগণের আস্থার প্রতীক হতে পারছে না। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এই অবস্থা দেখে হতাশ, কিন্তু আশা ছাড়ছি না।
রাজনীতির অস্থিরতা: আওয়ামী লীগের ধ্বংসলীলা থেকে শুরু
শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ যে ১৫ বছর ধরে দেশকে একটা লোহার মুঠোয় শাসন করেছে, সেটা আমরা সবাই জানি। তারা গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্র চালিয়েছে। বিরোধী দলগুলোকে দমন, নির্বাচনে কারচুপি, আর জনগণের কণ্ঠরোধ—এসব ছিল তাদের শাসনের মূল চেহারা। ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের পতন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তারা যে ধ্বংসের বীজ বুনে গেছে, তার ফল আমরা এখনো ভোগ করছি। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন হয় পালিয়ে বেড়াচ্ছে, নয়তো জেলে। তাদের দুর্নীতির মামলা আর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের খবরে আমার মনে কোনো দয়া জাগে না। এরা দেশকে লুটে খেয়েছে, আর এখন তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো মানে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম দেখে মনে হয়, তারা কেবল সময় কাটাচ্ছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নামে যে ভরসা ছিল, তা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, অপরাধ বেড়ে গেছে, আর সংস্কারের নামে তারা শুধু বড় বড় কথা বলছে। নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে ২০২৫-এর শেষে বা ২০২৬-এর শুরুতে, কিন্তু কোনো স্পষ্ট রোডম্যাপ নেই। এটা কি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা নয়? আমি মনে করি, এই সরকারের অপারগতা দেশকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এনসিপি: ছাত্র আন্দোলনের ছায়ায় অপরিপক্কতা
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি নিয়ে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও আমার মনে হয়, এরা এখনো রাজনীতির মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত নয়। ছাত্র আন্দোলনের জোয়ারে এরা ভেসে এসেছে ঠিকই, কিন্তু দেশের জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য যে অভিজ্ঞতা আর পরিকল্পনা দরকার, তা কি এদের আছে? আমি বলছি না যে নতুন দলের উত্থান খারাপ, কিন্তু এনসিপির নেতৃত্ব যেভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়ায় কাজ করছে, তাতে মনে হয় এরা কেবল ক্ষমতার খেলায় পড়তে চায়। জনগণের জন্য লড়াই করার মানসিকতা এদের মধ্যে দেখি না। বরং এরা যেন আওয়ামী লীগের শূন্যস্থান পূরণের জন্য তৈরি করা একটা পুতুল দল।
বিএনপি: আশার আলো, তবে দুর্বলতাও আছে
বিএনপির প্রতি আমার একটা নরম দৃষ্টিভঙ্গি আছে, কারণ তারা অতীতে দেশকে স্থিতিশীল করার কাজে সফল হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন অন্তত জনগণের কথা শোনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে তারা যেন পুরোপুরি নিজেদের গুছিয়ে উঠতে পারছে না। আওয়ামী লীগের পতনের পর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সেটা পূরণে বিএনপির আরও তৎপর হওয়া উচিত। তারা জনগণের পাশে আছে, এটা ঠিক, কিন্তু নেতৃত্বের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা আর পুরোনো কৌশলের ওপর ভরসা আমাকে হতাশ করে। তবু আমি বলব, বর্তমান দলগুলোর মধ্যে বিএনপিই একমাত্র, যাদের ওপর ভরসা করা যায়।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশ: ভারত-চীন-পাকিস্তানের খেলা
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন একটা সংবেদনশীল জায়গায় দাঁড়িয়ে। শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সঙ্গে অতিরিক্ত নৈকট্য আমাদের স্বাধীন নীতির ওপর প্রশ্ন তুলেছিল। পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ এখনো অমীমাংসিত। এদিকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে, বিশেষ করে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের মাধ্যমে। কিন্তু আমার মনে হয়, এই দুই শক্তির মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে আমরা নিজেদের স্বার্থ হারাচ্ছি। আর পাকিস্তান? ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সাক্ষাতে সার্ক পুনরুজ্জীবনের কথা উঠেছে। এটা দেখে আমার মনে হয়েছে, এই সম্পর্কের উষ্ণতা কি ভারতের বিরুদ্ধে একটা কৌশল? আমি চাই না বাংলাদেশ বড় শক্তিগুলোর খেলার মাঠে পরিণত হোক। আমাদের নিজস্ব স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।
অর্থনীতির সংকট: জনগণের কষ্ট
অর্থনীতির দিকে তাকালে মন ভারী হয়ে যায়। মূল্যস্ফীতি আকাশছোঁয়া, বেকারত্ব বেড়ে গেছে, আর ডলার সংকটে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা টালমাটাল। আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাওয়ায় চাপ আরও বেড়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গল্প শুনেছি, সেটা যে কতটা ফাঁকা ছিল, তা এখন প্রকাশ পাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই সংকট মোকাবিলার কোনো পরিকল্পনা নেই। এনসিপির মতো নতুন দলগুলো এসব নিয়ে কথাই বলে না। বিএনপির অতীত রেকর্ড দেখে মনে হয়, তারা অন্তত এই সংকটে হাল ধরতে পারে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় না এলে এই আশা শুধু আশাই থেকে যাবে। জনগণের কষ্ট আমি রাস্তায় দেখি—দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এটা আর চলতে দেওয়া যায় না।
২| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:০৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এনসিপি কোন ধারার রাজনীতি করবে আগে সেটা ঠিক করা জরুরি। এরা তাদের আসল আদর্শ লুকিয়ে মানুষ কে নকল আদর্শের রাজনীতি করছে।
৩| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:১৪
চেংগিস খান বলেছেন:
@সৈয়দ কুতুব ,
এনসিপি যারা করেছে, এরা জংগী; এরা পাকিস্তানী "রাজনীতি"র জল্লাদ; এরা জংগীবাদ কায়েম করবে।
৪| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: এনসিপি আসলে জামাতের একটা শাখা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:৫১
চেংগিস খান বলেছেন:
আপনি কি ধরণের "রাজনৈতিক কর্মী"? কোন দলের, কিংবা কোন রাজনৈতিক ধারার?