নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

আমিই সাইফুল

চলতে চলতে হবে পরিচয়.....

আমিই সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ড. ইউনুসের বক্তব্যের ব্যাবচ্ছেদ

২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২০

আজ সন্ধ্যায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ শুনলাম। প্রায় ৩৫ মিনিটের এই বক্তৃতা অনেকের কাছে হয়তো ঘ্যানঘ্যানানি আর প্যানপ্যানানির মতো মনে হতে পারে, কিন্তু আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটাকে একটু অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করলাম। চলুন, ড. ইউনুসের বক্তব্যের কিছু গুরুত্বপপূর্ণ অংশ নিয়ে আলাপ করি এবং দেখি, এটা আমাদের জন্য আসলে কী বয়ে আনছে।

কন্টেইনার হ্যান্ডলিং আর রপ্তানি বৃদ্ধি: সংখ্যার খেলা না সমাধান?

ড. ইউনুস বলেছেন, সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জানুয়ারি মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ৭% বেড়েছে আর রপ্তানি বেড়েছে ১৩%। শুনতে ভালোই লাগে, কিন্তু এই সংখ্যার পেছনে কী আছে? আমার মনে প্রশ্ন জাগে, এই বৃদ্ধি কি সত্যিই জনগণের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনছে, নাকি এটা শুধুই কাগজে-কলমে সাফল্য দেখানোর চেষ্টা? আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনও এমন সংখ্যার ফুলঝুরি দেখিয়েছে তারা। কিন্তু আমরা জানি, সেই টাকা গেছে তাদের দলীয় নেতা-কর্মী আর দুর্নীতিবাজদের পকেটে। এই অন্তর্বর্তী সরকার কি সেই পথেই হাঁটছে? আমি একজন কর্মী হিসেবে বলব, এই সংখ্যা দিয়ে আমাদের ভোলানো যাবে না। আমরা চাই জীবনযাত্রার মান বাড়ুক, দ্রব্যমূল্য কমুক—শুধু পরিসংখ্যানের খেলা নয়।

বিডা প্রত্যাবর্তন আইন আর আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ: বড় বড় কথার ফাঁকি

বিডা প্রত্যাবর্তন আইনের জটিলতা দূর করার কথা বলেছেন ড. ইউনুস। এটা শুনে মনে হলো, হয়তো কিছু একটা হবে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই ধরনের কথা আমরা আগেও শুনেছি। আওয়ামী লীগও বিদেশি বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখিয়েছিল, কিন্তু শেষে দেখা গেছে, তাদের লুটপাটের জন্যই এসব আইনের ফাঁকফোকর বাড়ানো হয়েছে। এই অন্তর্বর্তী সরকারও কি সেই পথে যাবে? আগামী মাসে চার দিনের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের কথা বললেন তিনি। ডিপি ওয়ার্ল্ড, সিঙ্গাপুর পিএসএ, এপি মোলান মার্কসের মতো বড় নামগুলো কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। ভালো কথা। কিন্তু এই বিনিয়োগ কি সত্যিই আমাদের গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছাবে, নাকি শুধু ঢাকা আর চট্টগ্রামের এলিটদের পকেট ভারী করবে? আমি একজন কর্মী হিসেবে এই প্রশ্ন তুলতে বাধ্য।

সুইজারল্যান্ড, আরব আমিরাত আর শিল্পাঞ্চল: আন্তর্জাতিক মঞ্চে ঘোরাঘুরি

গত জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের ডব্লিউইএফ-এ ৪৭টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে বিভিন্ন সরকারপ্রধান আর বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ড. ইউনুস। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাবে আরব আমিরাত দুটি প্রকল্পে আগ্রহী—হালাল মাংস প্রক্রিয়াকরণ আর মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা। সমুদ্রবন্দর পরিচালনার জন্যও তারা এগিয়ে এসেছে। এসব শুনে মনে হচ্ছে, ড. ইউনুস আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশকে তুলে ধরছেন। কিন্তু আমার মনে একটা খটকা লাগছে। এই সব বড় বড় কথা কি শুধুই কথার কথা? আওয়ামী লীগও এমন স্বপ্ন বেচেছে বছরের পর বছর। আমরা দেখেছি, তাদের আমলে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ঠিকই, কিন্তু সেটা গেছে তাদের দলীয় লোকজনের হাতে। এই সরকার কি সেই চক্র থেকে বেরোতে পারবে?

আসিয়ান, চায়না আর সাউথ এশিয়ান অর্থনীতি: স্বপ্নের জাল

আসিয়ান সদস্য হওয়ার জন্য ড. ইউনুস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে আবেদন করেছেন। মালয়েশিয়া এতে সাড়া দিয়েছে এবং শ্রমিক ইস্যু সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চায়না সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি আর বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোলার কোম্পানি লংজির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে কারখানা করতে চায়, প্রযুক্তিগত সহায়তা আর চিকিৎসা সেবা দেবে। এমনকি আমাদের মৌসুমি ফল দ্রুত নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছে। আবার নেপাল-ভুটানের জলবিদ্যুৎ নিয়ে সাউথ এশিয়ান অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তিনি। এসব শুনে মনে হয়, আমরা যেন স্বপ্নের এক জগতে ঢুকে পড়েছি। কিন্তু আমি একজন কর্মী হিসেবে বলব, এই স্বপ্ন কি বাস্তবে রূপ নেবে? আওয়ামী লীগও এমন বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু শেষে আমরা পেয়েছি শুধু দুর্নীতি আর লুটপাট। এই সরকারের হাতে কি সত্যিই কিছু বদলাবে?

দুর্নীতি, ই-সেবা আর স্টারলিংক: কথার ফুলঝুরি

দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স, সরকারি অফিসে ই-ফাইলিং আর অনলাইন সেবার কথা বলেছেন ড. ইউনুস। এমনকি স্টারলিংক চালু করে ইন্টারনেটের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ কমানোর কথাও বলেছেন। এয়ার টিকিটের দাম ৭৫% কমেছে, ভূমি সেবা অনলাইন করা শুরু হয়েছে—এসব শুনে মনে হচ্ছে, কিছু একটা হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন, এই সব কি শুধুই কথার ফুলঝুরি? আওয়ামী লীগও এমন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু শেষে দেখা গেছে, সেই ডিজিটাল সেবা হয়ে গেছে তাদের দুর্নীতির নতুন হাতিয়ার। এই সরকার কি সত্যিই দুর্নীতি কমাতে পারবে, নাকি এটাও একটা নতুন নাটক?

আমাদের সময়ের প্রতিফলন

ড. ইউনুসের বক্তব্যে আরও অনেক কিছু ছিল—হজযাত্রীদের জন্য অ্যাপ, ডিএনএ ল্যাব, তারুণ্যের উৎসব। কিন্তু আমি একজন কর্মী হিসেবে বলব, এই সব কথা আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে? আমরা যারা রাজপথে লড়েছি, আন্দোলন করেছি, আমাদের স্বপ্ন ছিল একটা ন্যায়ের দেশ। কিন্তু আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসন আমাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেও আমরা তেমন কিছু আশা করিনি। ড. ইউনুস হয়তো একজন খন্ডকালীন নেতা হিসেবে কিছু ভালো কথা বলছেন, কিন্তু আমি মনে করি, এই সরকারও সেই পুরনো চক্র থেকে বেরোতে পারছে না।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আপনার সাথে একমত।

২| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দূর্দান্ত প্রশ্ন করেছেন।

৩| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪

পলাশমিতা বলেছেন: দ্রব্যমূল্য আর বিদ্যুৎ সমস্যা যিনি সফলভাবে কাটিয়ে উঠেছেন তাঁর পক্ষে আর অসম্ভব বলে কিছু থাকতে পারে? আমরা আশাবাদী।

৪| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পলাশমিতা@বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে সরকার কি পদক্ষেপ নিয়েছে?

৫| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:২৭

চেংগিস খান বলেছেন:



উনার ৬ মাসে কি পরিমাণ "নতুন চাকুরী" হলো; আর কি পরিমাণ মানুষ "চাকুরী হারালো" তা বলেছে?

৬| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:২৯

চেংগিস খান বলেছেন:



আপনি নিজকে "কর্মী কর্মী" বলেন, কিসের কর্মী? কর্মী তো হামাসেরও আছে!

৭| ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: চিটিং শান্তিময়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.