নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ হয়ে জন্মানোর মর্যাদাবোধের খোঁজে,,,,,
মাঠে ছাগলটা বেঁধে বড়শির মতো বাঁকা হয়ে আসা শরীর নিয়ে ফিরছিল গুলোবুড়ি। গুল মারা, কূটনামিতে এত এত পারদর্শী যে তার আসল নামটাই ঢাকা পড়ে গেছে লোকের দেয়া নামের আড়ে। বয়সের ভারে আগের মতো এখন আর ভালো দেখেও না শোনেও না।
চুরি নিয়ে কী যেন একটা গোল বেঁধেছে আব্দুল হকের মুদিটার সামনে। অনেক ভীড় জমেছে সেটা নিয়ে। সোজা পোক্ত তাল ঢ্যাঙা না হলে সে ভীড় ঠেলে বার্তা নেয়, সাধ্য কার! বুড়ি খানিকক্ষণ উঁকি ঝুকি মারলে দেখবার জন্য.. পেরে উঠলে না। সবার মনোযোগের পুরোটা চোরের দিকে পাশের জনের দিকে দেখবার ফুরসৎ কোথায়? তাই সে আবার চললে আপন গন্তব্যে।
কিন্তু কথায় যে বলে, অভিজ্ঞতা শ্রেষ্ঠ জ্ঞান। 'এক চোর যে ধরা পড়েছে' সেটা বুড়ি নিজ অভিজ্ঞতায় ঠাউরে নিল।
"চোরের পালের বড্ড বাড় বেড়িছে।"-- পানির কলস কাঁখে শফির মাকে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলে। "বুঝলি বউ! গাছে একটা ফল পর্যন্ত রাখার জো নেই! কলির তে বেরুলো কী.. আর অমনি উধাও!"
"কী হইচে? অত বকচো কেনে?"
"আর কইস নে..চোর ধরছে, চোর! পরের জিনিসে এত্তো লোভ সব!" পেছনের জটলার দিকে খানিক চেয়ে নিয়ে বললে, "বলি বাপ-মা ভালো না হলি ছেলি কী ভালো হয়! ক?"
"তা তুমি ঠিক কইচো খুড়ি।"
"তা...! এই যে এতদিন...কই কেউ তো তোর শফির বিরুদ্ধে একটা রা পর্যন্ত তো করলে না! আর আমার জালালের কথাই ধর..."
"মিনসে গোস্যা হবিনে, আমি যাই খুড়ি।" বুড়ির কথার মাঝে থামিয়ে দিয়ে হাঁটা ধরে সে।
"কারে কী কও?"--বুড়ির বকবকানি শুনে শফির মার কিছুটা পেছনে থাকা রফুর বউ বলল। অল্প বয়স তাই যা মুখে আসে ফটাং করে বলে ফেলে। চলতে চলতেই বলল, "সবাই তো কচ্ছে তুমার ছেলিই চুরি করিচে।"
বুড়ি কী একটা বলতে যাচ্ছিল। হঠাৎ এই খবরে সে থমকে যেন কথা হাতড়ে ফিরলো।
"আল্লা বাপু, কি জানি!"--খানিক বিচলিতের ছায়া বুড়ির চোখে মুখে। কি যেন ভেবে নিয়ে বললে--"তবে কি বুঝলি... এ বয়সের ব্যাটা ছেলি একটু আধটু এসব করেই। এ বয়সে না তো কখন করবে?"
নিজের ছেলে করলে সাত খুন মাফ!
৫৬% এর মাতৃভাষাকে কেড়ে নিয়ে ৪% এর ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করেছিল পাকিস্তান। অবৈধ ছিল।
বাংলাকে আরবি হরফে লেখার চেষ্টা করেছিল বলে কত গালিই না দেই সেই শাসনকে! অথচ chat/message করি বাংলা কথা ইংরেজিতে লিখে! যেটুকু বাংলা লিখি তাও অভ্র দিয়ে লিখি... কেউ জিজ্ঞেস করলে দাঁত কেলিয়ে বলি, "হে হে, বাংলায় লিখতে পারি নে!"
কেউ কেউ বলে, "অনেক সময় লাগে। অক্ষর খুঁজে পাওয়া যায় না।"
আমরা কী সব দ্রুত লেখা শিখেই জন্মেছি? জন্মেই সব বর্ণ চিনতাম?
কেউই তো কোনো কিছুই শিখে আসে না। চেষ্টা করে, শেখে। তবেই না সে পারে!
আমরা তো চেষ্টাও করিনে!
অথচ আটই ফাল্গুন...মহান! ভাষা দিবস...মহান! অনেকে হয়তো জানেই না আট ফাল্গুন একুশে ফেব্রুয়ারি!
উপরন্তু আমাদের মুখের বুলির জন্য/ভাষার জন্য/'মা' শব্দটা বলার জন্যে---পূর্বসূরিরা যেদিন জীবন দিয়ে গেল সেই দিনে আমরা কত্ত সাজুগুজু করে উৎসব করবো!
সব শালা জাতমারা স্বয়ং বেজাত বাঙালি!
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৮
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
বাংগালি এক অলস জাতি। নতুন কিছু শেখা নিয়ে উহাদের মস্ত যাতনা।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৩
মাস্টারদা বলেছেন: বন্ধু!
আলো তো সেথা জ্বালা সবচেয়ে দরকার
যেথা অমানিশা ঘনায়েছে গাঢ়-ঘোর আঁধার।
ভ্রমরের ডানায় দুলে যেমনে আসে বসন্ত
শীত পাঁজরের চাপে ভাঙা ডাল-পাতারা
নইলে তেমনি থাকত জড়ো, অনন্ত।
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬
শের শায়রী বলেছেন: দারুন লিখছেন, এখনকার ছেলে মেয়েরা যেভাবে চ্যাট করে তাতে তো বাংলা খুজে পাওয়াই যায় না, ইংরেজী বাংলা লিখে আবার অদ্ভুত অদ্ভুত সব শব্দ ব্যাবহার করে এগুলোই এখনকার ফ্যাশান। শেষের দিকে দারুন লিখছেন।।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৮
মাস্টারদা বলেছেন: সমাজের রীতিতে পরিবর্তন আসবে এইটে স্বাভাবিক। তা না হলে তো সমাজ পঁচে যায়। বড়দের শুধু খেয়াল রাখতে হবে এই পরিবর্তন যেন কল্যাণকর হয়। এই কল্যাণ যেন নিজস্বতা নষ্ট না করে, বিকৃত না করে। দিন শেষে তো আমরা বাঙালি রইবো।
৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: নান্দনিক লেখনী ।
৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: গুলোবুড়ি চরিত্র ভালো তৈরি করেছেন।
৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৭
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শেষাংশে এসে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছি। গল্প কি শেষমেশ প্রবন্ধে রূপ নিল?
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৭
মাস্টারদা বলেছেন: না গল্প উদ্দেশ্য -না প্রবন্ধ উদ্দেশ্য--সত্য বলতে কী 'সাহিত্য সৃষ্টি করবো' এই মানসিকতা লেখা হয়নি এখনো। প্রধানতঃ লেখার মধ্য দিয়ে সমাজকে একটা বার্তা দিতে চাই..খেয়াল করি সেটা পেরেছি কি না। অসঙ্গতিগুলোর ফলাফল দেখাতে চাই...সেটা পেরেছি কিনা--। এখন সবচেয়ে ভালোভাবে বুঝাতে গিয়ে গল্পের আশ্রয় নেয়া আমার পছন্দ। শেষমেশ সেটা কোথায় গিয়ে ঠেকল তারচেয়ে যদি মূল কথাটা বুঝাতে সক্ষম হই তাতেই আমি সন্তুষ্ট।
আশা করি বুঝেছেন।
মন্তব্যের জন্য ভালোবাসা।
৭| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কি জানি বাপু,
বাচ্চা পোলাপান কিই্ বা এমন বয়স!
এত বকতে আছে ?? এরাই আমাদের সোনার ছেলে মেয়ে
ভবিষ্যতের কান্ডারি !!
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪
জাহান জারা মুন বলেছেন: লাষ্টের কথাগুলো দারুন ছিলো!!শুভ কামনা রইলো !