নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ হয়ে জন্মানোর মর্যাদাবোধের খোঁজে,,,,,
রিক্সা 'হুঁ হুঁ করে' ছুটেছে শেকেরটেক-আদাবরের রোড ধরে। রিক্সায় বসে ফোনে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের খেলা দেখছিলাম। অকস্মাৎ কাতর কণ্ঠে "মা'রে দু'টো টাকা দে.. ভাত খাবার টাকা দে..." শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি বছর বাইশের এক পাগলী, পুরোটাই খালি গায়ে, একটা বাচ্চা কোলে ভিক্ষে মেগে ফিরেছে। পেট বসে গেছে ক্ষুধায়!
খালি গায়ে বলে কেউ ফিরে চাইছেও না, ভিক্ষে তো বহুত দূর কী বাত্! কী পরিমাণ সেন্স চলে গেলে একটা পাগলী উলঙ্গ হয়ে ঘুরতে পারে? অথচ কোলের ওই এক গোছা জুঁই (বাচ্চাটা) সাক্ষ্য দিচ্ছে-- এই পাগলী কাছে রাতের আঁধারে দিনের ফেরশতা(!) এসেছিল।
যিশু জন্ম দিয়ে গেছে!
তখন নোংরা, পাগলী, সামাজিক স্ট্যাটাস, ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি আরো যত ভড়ং আছে সে সবের কিছুতেই বাঁধেনি।
ওইদিন আরেকটা জিনিসের বুঝ হলো। লজ্জাস্থান ঢাকার মতো সংজ্ঞা নেই, কিন্তু সন্তানকে দিব্যি রেখেছে বুকের কাছে আগলে! মা হয় আলাদা আলাদা কিন্তু মাতৃত্বের রূপ সার্বজনীন। এখন আপনার মনে যে প্রশ্ন উঁকি দিল, সেটা ভেবে পেছনে উঁকি দিলাম। পাগলীর পেটে মাতৃত্বের দাগ সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল।
গত সপ্তাহে নুরজাহান রোডের দক্ষিণ মাথায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এক পাগলী বসেছিল; সারা গায়ে মনুষ্য মল মেখে। মাছি ভন ভন করছে। নাকে কাপড় না গুঁজে যাওয়া কষ্টকর। কেউ ভিক্ষে দিচ্ছিল না। দেবেই বা কিভাবে?
অথচ সাহায্য ওরই বেশি দরকার ছিল; পরিচ্ছন্ন থাকার মতো হুশ নেই, মল-মাটির পার্থক্য ভুলে গেছে, নোংরা হয়ে আছে, বাড়িয়ে রাখা হাতেও মাছি বসছে। কেউ দেবে ভিক্ষা?
তাই তো ওর-ই বেশি দরকার। ক্ষুধার তো আর পাগল-ভালোর জ্ঞান নেই! ওর কাছে তো ধনী-গরিব, সুস্থ-বাতুল সবাই সমান।
একটা কথা ভেবে বড্ড অবাক লাগে। এদের কথা এখন আর কেউই ভাবে না, বলেও না।
এ যুগের কবিরা এসব দেখে না। দেখলেও লেখে না। হয়তো চোখে ময়লা পড়ার ভান করে, নয়তো নাকে কাপড় গুঁজে প্রস্থান করে। সবখানেই শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা।
ভালোবাসা থাকায় দোষ নেই; বরং উচিৎ। কিন্তু সেই ভালোবাসার এক রতি পরিমাণও যদি এমনি কোন দুঃখী পাত্রে পড়তো; বিশ্বাস করেন, এতটুকুতেই সেই দুঃখের পাত্র ভরে উপচে পড়ে যেত!
সবখানেই এখন মানুষের বদলে শুধু মাংসের স্তুতি-বন্দনা। কবিদের চোখে মুখে লেগে থাকে প্রিয়ার লিপস্টিক! কলমের মুখ গুঁজে আছে প্রেমিকার বুকে। পীণোন্নত পয়োধরের পরতে পরতে ঘোরে তাদের চোখের লেখিনী। দুঃখীর কথা আসবে কেমন করে?
অনেক অনেক বছর আগে এদের মধ্যে ক'জন কবি এসে নেমেছিল। একজন তো এদের রুটি ব্যবস্থা করতে গিয়ে আঠারোতেই ধরা ছেড়েছে আরেকজন পড়েছে ট্রামের তলে। আরেকজন সব দেখে শুনে ক্ষেপে নিশ্চুপ অভিমানে শুয়ে আছে গহীন ব্যথার মাটি বুকে ধরে!
ভেবেছি, ভদ্রতার এই ভড়ং ছেড়ে
একদিন ফুটপাতে শোব
ঈশ্বর যাদের ক্ষুধায় মিশে একাকার
ওদের সেই "ঈশ্বর" পথে বসে খাব।
প্রেমিকার বুকের সুগন্ধি রুমালে আমার রুচি মরে গেছে।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: পাঁচ লাইনের কবিতাটা সুন্দর হয়েছে।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১২
পদ্মপুকুর বলেছেন: কবিদের দেখার চোখে এখন প্রাপ্তির চশমা জেঁকে বসেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লেগেছে।