![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোন বিষয় একবার পড়ে বা শুনে মনে রাখা এবং তা প্রয়োজনের সময় সুন্দর ভাবে বলতে পারা নিঃসন্দেহে একটি বড় গুন। অনেকেই জন্মগতভাবে এমন অসাধারন প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। যেমন, ১৫ শতকে শ্রী চৈতন্য, ১৮ শতকে পশ্চিমা ধ্রুপদী সঙ্গীতের রাজা মোজার্ট, রাশিয়ার সোরসোভস্কি, জাদুকর জুয়েল আইচ এবং ভারতে শকুন্তলা দেবী যিনি ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের মত দ্রুত গতিতে যে কোন Calculation এর Solution করে দিতেন। তাহলে মনে রাখা কি শুধু জন্মগত প্রতিভার ব্যাপার? নাকি এ শক্তি অর্জন করা যায়? এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে- অবশ্যই মনে রাখার শক্তি অর্জন করা যায়।
সহজে মনে রাখার সূত্র নিয়ে ভিডিও দেখুনঃ কোন কিছু মনে রাখার সহজ উপায়
মূল লেখাটির প্রকাশ যেভাবে হলোঃ কিভাবে কোন পড়া দীর্ঘদিন মনে রাখবেন
স্মৃতিশক্তির অভাবে বিজ্ঞানী আইন্সটাইনের পড়াশুরু করতেই ৯ বছর বয়স পার হয়ে যায়। স্কুল ভর্তি হলেন ১ম বার ফেল করে, এন্ট্রাস পাস করেন ২য় বারে। এমনকি স্মৃতি শক্তির স্বল্পতার কারনে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেই রাজি হন নি। পরবর্তী ২০ বছরের মাথায় তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার পেলেন। এটাকে আপনি জন্মগত প্রতিভা বলবেন? স্মৃতি শক্তি বাড়ানো যায় কিনা এই প্রশ্নের জবাবে আইনস্টাইন বলেছিলেন, আমার ছেলেবেলা আর বর্তমানের মাঝে তুলনা করলেই আপনি বুঝতে পারবেন।
মুসলিম দার্শনিক ইমাম গাজ্জালীর ছোটবেলায় স্বরনশক্তি একদম ছিলো না বললেই চলে। এজন্যে তিনি সবকিছু খাতায় নোট করে সাথে বয়ে বেড়াতেন। একবার মরুভূমিতে ডাকাত দলের পাল্লায় পড়ে তাদের কাছে সবকিছুর বিনিময়ে লেখার খাতা গুলো ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করলেন। ডাকাত সর্দারের কানে কথাটা যেতে তিনি বেশ মজা পেলেন এবং খাতাগুলো কেড়ে নিয়ে যান। গাজ্জালী ডাকাত দলের পেছনে পেছনে খাতার জন্য ছুটতে থাকেন এবং বলতে থাকেন “ আমার সকল জ্ঞান তোমরা নিয়ে যেও না” গাজ্জালী কোন দিন আর খাতায় নোট করেন নি। তিনি অসাধারন স্মৃতিশক্তির অধিকারি হয়ে ওঠেন। তাঁর রচিত বিশাল বিশাল গ্রন্থই এর প্রমান।
অধিক পঠিত আর্টিকেলঃ কিভাবে ফেসবুকে লাইক বাড়াবেন
এছাড়াও হোমার, মাইকেল এঞ্জেলো, বিপদেব গোস্বামী, স্যামুয়েল জন্সন, জেনারেল জর্জ প্যাটন, ভাস্কর অগাস্ত রঁদা প্রমুখ মনীষীরা এ শক্তি জন্মসূত্রে পাননি, নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছিলেন। এসব প্রতিভাবানদের কোন কিছু মনে রাখার কি কোন সহজ সূত্র আছে? অবশ্যই আছে।
সহজে মনে রাখার সূত্র নিয়ে ভিডিও দেখুনঃ কোন কিছু মনে রাখার সহজ উপায়
তাহলে আসুল জেনে নেই মনে রাখার সহজ সূত্রগুলোঃ
১। শুধু প্রয়োজনীয় বিষয় মনে রাখুনঃ
একজন মানুষ সবকিছু মনে রাখবে এ প্রত্যাশা করা আর সে এ পর্যন্ত যা খেয়েছে তার পুরোটাই তাঁর শরীরে বহন করবে তা প্রত্যাশা করার সমান। প্রথমে এ ধারনাটি Change করার দরকার যে, “ আমাদের সব কিছু মনে রাখতে হবে”। আসলে আমাদের মনে রাখা দরকার সেই বিষয়গুলো যেগুলো আমাদের জন্য গুরুত্ত্বপূর্ণ। আর কোন বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ এটা বুঝতে পারলে সে বিষয়ের প্রতি আমাদের আগ্রহ ও মনোযোগ বাড়ে।
বিষয়টি আপনার জন্য দরকারি কিনা তা জানতে নিজেকে এই প্রশ্ন করুন-বিষয়টি মনে না রাখলে কি হবে?ভুলে গেলে কি কোন ক্ষতি হবে? কত তাড়াতাড়ি এই তথ্য আবার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে? এই প্রশ্ন গুলো আপনাকে কোন বিষয়টি বা তথ্যটিকে প্রায়োরিটি দিতে হবে তা বুঝতে সাহায্য করবে।
২। বুঝে বুঝে পড়ুনঃ
যে বিষয়টি আপনি বুঝে বুঝে পড়বেন সেটি ৯ গুন বেশি মনের রাখতে পারবেন। তাই যে বিষয়টি মনে রাখতে চান শুরুতে বিষয়টির খুঁটিনাটি খেয়াল করুন, অজানা শব্দগুলো বুঝার চেষ্টা করুন। আর কয়েক বার পুরো বিষয়টির আগা-গোড়া পড়ে আসলে এতে কি বোঝাতে চাচ্ছে বা লেখা বিষয়টিতে কি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে তা Visualize করুন।
৩। বিপরীত বিষয়ে ধারনা রাখুনঃ
সহজে মনে রাখার জন্য আপনি যে বিষয়টি পড়লেন তাঁর বিপরীত বিষয়, শব্দ এবং ব্যাখ্যা শিখুন। এতে বিষয়টি আপনার মেমরিতে স্থায়ী হয়ে যাবে। যেমন, আপনি Englsih Word- Day এর মিনিং শিখতে চাইলে এর বিপরীত শব্দ ও তার অর্থটি শিখুন। Day ওয়ার্ডটি মনে করতে চাইলেই যেন এর বিপরীতে Night শব্দটি চোখের সামনে ভেসে আসে।
৪। জানা শব্দের সাথে অজানা শব্দ জুড়ে দিনঃ
যে ওয়ার্ড, লাইন বা প্যারাগ্রাফটি আপনি জানেন সেটির সাথে অজানা নতুন ওয়ার্ড, লাইন বা প্যারাগ্রাফটি জুড়ে দিন। ধরুন, কোন ভাষা শিখবেন, তো সে ভাষার জানা শব্দটির সাথে অজানা শব্দটি জুড়ে দিন। মনে করুন, Thumbnail ওয়ার্ডটি আপনার মনে থাকে না বা মনে রাখতে চান। ওয়ার্ডটিকে ২ ভাগ করলে আমরা দেখবো, Thumb+Nail =Thumbnail.
কিন্তু আপনি Nail শব্দটি জানেন, তাহলে Thumbnail মনে রাখার জন্য শুধু আপনার নখের কথাই মনে রাখুন, নখ নিয়ে কোন ঘটনা থাকলে তাও স্বরন রাখুন।
৫। গল্প তৈরি করে ফেলুন
একসাথে অনেক তথ্য মনে রাখার জন্য বা অনেক শব্দ মুখস্থ করার জন্য ছোট ছোট গল্প বানিয়ে ফেলুন। বাজারের তালিকা মনে রাখতে ও অনেকেই গল্প বানিয়ে ফেলেন। ধরুন আপনাকে নিচের ৭টি বিষয় মনে রাখতে হবে-
চকলেট
চামচ
ডিম
নীল
কাগজ
কলম
দুধ
তাহলে কিভাবে এই তালিকা মনে রাখবেন? একটা গল্প বানিয়ে ফেলুন। যেমন, আপনার সবচেয়ে বড় শুত্রুর কথাই ধরুন। তিনি বাজারে যাচ্ছেন চকলেট খেতে খেতে মুখে চামচ ধরে তার উপর ডিম বসিয়ে নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে। হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেলেন। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার কলম দিয়ে কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখে দিলেন। আর বললেন দুধ বেশি করে খেতে। খেয়াল করে দেখুন এই গল্পে বাজারের তালিকার সবকিছুই আছে।
এই পুরো লেখাটিকে সামারাইজ করলে আমরা পাই-
মনে রাখার জন্য প্রয়োজন আগ্রহ, মনোযোগ, অভিজ্ঞতা আর অভ্যাস।
মনে রাখার নতুন নতুন টেকনিক অবলম্বন করুন। বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল- শব্দগুলো মনে রাখার জন্য একটি শব্দ বানিয়ে ফেলুন- বেনীআসহকলা। এই শব্দটিতে ৭টি রঙের নাম রয়েছে।
মনে রাখার জন্য হুক, আংটা, বা কিউ ব্যবহার করুন, ধারনাকে গল্প বাঁ ছন্দের রুপ দিন।
মাঝে মাঝেই স্মৃতিকে ঝালিয়ে নিন। পড়া বিষয়টি বার বার পড়ুন।
এই আর্টকেলটি আগে এখানে প্রকাশিত হয়েছে।
কিভাবে ফেসবুকে লাইক বাড়াবেন
লেখকের ফেসবুক প্রোফাইলঃ মাহবুব আলম
©somewhere in net ltd.