নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি অবার বিস্ময়ে বেঁচে থাকি, অবৈধ স্থাপনার মতো উচ্ছেদ হয়ে যাবো কোনো একদিন।

Hasin mahtab

একজন নৈরাশ্যবাদী

Hasin mahtab › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন পতিতা এবং ভূতের বাচ্চা জাফর ইকবাল

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫০

ভুতুড়ে পরিবেশ। বিদঘুটে অন্ধকার। ঝিঁঝিপোকাদের খেলানেলা নেই। সাড়াশব্দ কিছুই না। পোকাদের ডাকে অন্ধকারে হাটলে কিছুটা না হয় সাহস পাওয়া যায়। কিন্তু এই সাহসটুকুও সঞ্চার করতে পারছেনা বেশ্যা ইয়াসমিন। সে বাড়ি যাবে। বেশ্যাবৃত্তি করে
আসছে। পথিমধ্যে তার এই অবস্থা। হাটছে... ধীর গতিতে। একটু কোমর দুলিয়ে। এভাবেই সে হাটাচলা করে।
মানুষদের আকৃষ্ট করার জন্য। কিন্তু এই ভুতুড়ে অন্ধকারে, সাড়াশব্দবিহীন রাস্তায় কোমরটা আর দুলছে না। দোলাতে পারছে না। ভয়ে কম্পমান। হাত পা কাঁপছে, আর এই কাঁপাকাঁপা পা দিয়েই এগুচ্ছে। বাড়ির দিকে...
.
প্রতিদিন রাতে সে বাড়ি ফিরে। কুকর্ম সেরে। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে কখনই পড়েনি। রাস্তায় মানুষ থাকতো, নয়তো চাঁদের আলোয় আলোকিত থাকতো রাস্তা। অথবা ঝিঁঝিপোকাদের ডাকাডাকি শব্দে নির্ভয়ে চলে যেত বাড়ি। কোন বেগ পোহাতে হতো না।
ভয়ে মাথার ঘাম পায়ে যেত না। নিঃসঙ্কোচে বাড়ি পৌঁছতে পারতো। দ্রুতবেগে হাটছে। ঘামে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। এদিকে
গলাটাও শুকিয়ে গেছে। কী করবে, ভেবে কুল পাচ্ছেনা। না পিছু ফিরতে পারছে, না পারছে সামনে এগুতে। আইডিয়া করছে, অর্ধেক রাস্তা চলে আসছে। এখন কেমনে কী করে! কিছু হোক আর না হোক, একফোঁটা পানির প্রয়োজন তার। গলা ভিজাবে। নয়তো সে আটকে
যাবে। এখানেই। যার জন্য এই পতিতাবৃত্তি, কিছুই হবেনা। তার আশা নিরাশায় পরিণত হবে।
.
রাস্তা থেকে নীচে নামলো সে। এখানে একটা চাপকল আছে। পানি থাকার কথা। অনুমান করেই। প্রতিদিন ঠিক
রাস্তার পাশে এই চাপকলে তার চোখে পড়ে। এইভেবে পানি পান করে মৃত্যু থেকে বাঁচতে নীচে নামছে। রাস্তার নীচে নামার সাথে সাথেই কিসের যেন চিল্লাপাল্লা শুনতে পেল। শরীরে গরম বাতাস লাগছে অনুভব করলো। মনকে শক্ত করে ভালোভাবে শরীরকে ঝাঁকুনি দিলো।
পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে আসতেই দেখতে পেল, এটা তো জঙ্গল। উপরের দিকে চেয়ে দেখে এখানে কোন রাস্তার চিহ্নও নেই। বেশ্যার আর বুঝতে বাকী রইলো না, তাকে ভুতে এখানে নিয়ে আসছে। একরাস্তা থেকে আরেক রাস্তায়। তার বাড়ির পথের রাস্তা দেখিয়ে অন্যরাস্তায় নিয়ে এসে বিপদে ফেলছে। মাঝেমধ্যে এমনটা শুনা যায়, গভীর রাতে ভুতে ধরে একরাস্তা থেকে আরেকরাস্তায় মানুষদের
নিয়ে বিপদে ফেলে। তার বেলায় এমনটাই ঘটলো। সে শক্ত হয়ে আছে। রাগ করতেসে খুব। সাহসিনী হয়ে উঠলো। আর তার এমনিতেই অনেক সাহস। সাহস না থাকলে কী আর বেশ্যাগিরি করে! কত পুরুষের সাথে মিশতে হয়, তাদের পকেটের টাকা আদায় করতে হয়। পায়ের জুতা খুলে হাতে নিলো। খুঁটিলাগানো শক্ত জুতা। দৌড় দিবে এমন প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমতাবস্থায় দেখতে পেলো একজন
মানুষ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে চশমা লাগানো। মাথায় সাদাকালো মিক্সিং চুল। ক্লিনসেইভ মুখ। তবে গোঁফ আছে। দেখতে অবিকল একটা ভুতের বাচ্চার মত লাগছে।
.
তার ভাবসাব ভালো না দেখে দৌড় দিতে লাগলো সে। হাত দিয়ে খামচে ধরলো গোফওয়ালা। শক্ত করে। ছাড়ুন
ছাড়ুন বলে চিৎকার করছে ইয়াসমিন। কিন্তু কিছুতেই ছাড়ছে না। এই লোকটাকে তার ভালোলাগেনি। দেখতে শয়তানের মত লাগছে। ভাবতে লাগলো, মনে হয় এই লোকটা মানুষ না। ভুতের বাচ্চা। কোন মানুষ এতরাতে জঙ্গলে থাকার কথা না।
.
জোরাজোরি করছে। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা। ভুতের বাচ্চা কিছুই করতে পারছেনা। ইয়াসমিন এবার সিদ্ধান্ত নিলো, তাকে জুতোপেটা করবে। যা হবার হবে। বেশ্যার শরীরে প্রচুর শক্তি। ওই শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে হাতে থাকা খুঁটিওয়ালা জুতাজুড়া দিয়ে এমনভাবে আঘাত করলো, নিমিষেই সে মাঠিতে লুটিয়ে পড়লো। তারপর দিতে লাগলো থাপ্পড়। একেরপর এক কষে থাপ্পড় লাগালো।
.
কী অবাক কাণ্ড! যখন ফিরে আসবে, দেখতে পেল বুকের মধ্যে ফিতাঝুলানো কার্ড। দ্রুতগতিতে কার্ড হাতে নিলো। দেখতে পেলো নাম। জাফর ইকবাল। অট্টহাসি দিয়ে বলতে লাগলো, এই বুঝি ভুতের বাচ্চা জাফর ইকবাল! যাকগে। ক'দিন যাবত খুঁজছিলাম, জুতোপেটা
করার জন্য। কাজটা হয়ে গেলো। খুব শান্তি পেলাম। এখন নিরাপদে বাড়ি যেতে পারলেই আদায়। (পরে অবশ্য বুঝতে পারলো, জাফর ইকবাল হরিণ শিকার করতে জঙ্গলে ঢুকে পড়ছিলো। শিকারের যন্ত্রপাতি দেখে।)
.
কিন্তু না! সেই যে গরম বাতাস। শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু করছে। এখন। হাটতে পারছেনা। ভুতের খপ্পরে ঠিকই পড়ছে সে। মধ্যখানে একবিপদ থেকে উদ্ধার হলো। এবার আসল বিপদ। কী করা! ভাবতে লাগলো। কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই শুনতে পেল, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার........ আসসালাতু খাইরুম্মিনান্নাউম। সব পরিষ্কার। ক্লিয়ার দেখতে পাচ্ছে অন্যরাস্তায় আছে সে। এবার
নিজ গন্তব্যে পা বাড়ালো। ইচ্ছা করলো, আর বেশ্যাগিরি করবে না। খারাপের পথে পা বাড়াবে না
_______ Hasin mahtaab ( একজন নৈরাশ্যবাদী)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫০

টুনটুনি০৪ বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগল । আপনার জন্য শুভ কামনা এবং somewhereinblog -এ আপনাকে স্বাগতম।

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩৪

Hasin mahtab বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও ♥

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৯

কালীদাস বলেছেন: ব্যপক ইন্টারেস্টিং গল্প :) আমার ভাল লেগেছে :)

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০৪

Hasin mahtab বলেছেন: ♥

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.