নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমরা একদিন করবো জয়............।

অাজমাল েহােসন মামুন

আমি একজন উন্নয়নকর্মী, শিক্ষক এবং ফ্রিল্যান্স লেখক। আমার উভয় চোখ ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন। তাই ছোট কাল থেকেই অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। তাই পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে দেশের ১২ টি প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিকে লেখালিখি করি। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যের উপর অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছি। বর্তমানে হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। ইতোপূর্বে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। দেশের ১৩টি দৈনিকে প্রতিবন্ধিতা, নারী ও শিশু এবং বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রায় ৩০০ প্রবন্ধ, ফিচার এবং মতামত প্রকাশিত হয়েছে।যোগাযোগের ঠিকানা:আজমাল হোসেন মামুনসহকারী শিক্ষক, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাপাইনবাবগঞ্জ। মোবাইল নং-০১৭০৪২৪৪০৮৯

অাজমাল েহােসন মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুশীল সমাজের ভূমিকা

২৬ শে মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৪

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুশীল সমাজের ভূমিকা

আজমাল হোসেন মামুন



‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবো নাকি, তুমি সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।’ বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র্যতম দেশ হলেও শান্তির দেশ। এই দেশের সাধারণ মানুষ দু’মুঠো ভাত তিনবেলা খেতে পেলেই সন্তুষ্ট থাকে।

আমাদের দেশের অর্থনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন সুশীল সমাজ দেশ গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িয়ে তারা দেশ ও জাতির স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কারণ, সুশীল সমাজ মটিভেটর, মডারেটর ও দেশের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের বলা হয় "intermediary institutions" বা মধ্যস্থকারী প্রতিষ্ঠান। তারা বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন, ধর্মীয় গ্রুপ,সিটিজেন এ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবি সংগঠনের পক্ষে জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্যে কথা বলে থাকে।



একটা কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, আমাদের দেশে শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে যারা জীবনের মৌলিক অধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ ১৯৭১ সালে আমরা সকলে একসাথে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এক কোটি ত্রিশ লাখ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার এক সাগর রক্তের বিনিময়ে দেশকে স্বাধীন করেছি। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়কে মানুষ স্বাগত জানিয়েছিলো। কিন্তু নির্মম ঘাতকদের হাতে স্বপরীবারে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে সরকার গঠন করেছে বিভিন্ন দল। সবাই চেষ্টা করেছে দেশকে উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও আত্মীয়করণের ছোবলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা হয়েছে পঙ্গু। দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দেশের খেটে খাওয়া দারিদ্র্য পীড়িত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে। যারা কোন দিন দুর্নীতি করে নি। দেশের প্রধানকে নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে। তাদের খোঁজ-খবর কেউ নেয় নি। দেশের সুশীল সমাজ তেমন বিকাশ লাভ করতে পারে নি। বরং সুশীল সমাজ যখন মাথা চাড়া দিতে চেয়েছে, তখনই রাজনৈতিক সরকার সমূহ তাদেরকে নানা অপকৌশলে তাদের গোড়া কেটে দিয়েছে।



স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। বর্তমানে জনসংখ্যা ১৪ কোটির ওপর। ২০২৫ সালে জনসংখ্যা হবে ২০ কোটি ৪৫ লাখ ৩৯ হাজার। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা জনসংখ্যা বৃদ্ধি। আগামী ২০২৫ সালে এদেশের জনসংখ্যা যদি দাঁড়ায় ২০ কোটির ওপরে তখন কী হবে এ দেশের? প্রতি নিয়ত দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সবুজ গাছ-পালা ও বন-জঙ্গল উজার হয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রাকৃতিক জলবায়ুর ওপর এর প্রভাব পড়ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিÿার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো বৃদ্ধি পায়। দেশের কৃষি উৎপাদন তথা উৎপাদনের পরিমাণ এ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। প্রতিবছর এদেশে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়। কৃষি এদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। প্রতিবছর খাদ্য ঘাটতি এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক ভূমিকা রেখে চলছে। খাদ্য ঘাটতি পূরণে যতোই ব্যবস্থা নেয়া হোক না কেন জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তার সুফল পাওয়া মুশকিল।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমাদের দেশের ওপর প্রভাব পড়লে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হবে। দেশে বাড়বে দুর্যোগ। বৈদিশ সাহায্যও কমে যাবে। কমে যাবে প্রবাসীদের রেমিটেন্স। এই দেশের শ্রমজীবী মানুষের আয়-রোজগার কমে আসবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল সুবিধাবঞ্চিত মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নেমে আসবে তাদের জীবনে অমানিশা। এছাড়াও যেসব বেসরকারি সংস্থা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের উন্নয়নে কাজ করছে তাদের ক্ষেত্রে বৈদেশিক সাহায্যও কমে যেতে পারে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে, আমাদের বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছে। যাদেরকে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র বোঝা মনে করে। আসলে তারা কারো বোঝা নয়। তাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ প্রদান করা হলে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম। বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি (বিপিকেএস) তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে কাজ করার মাধ্যমে হাজার হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আজ স্বাবলম্বী তথা আত্মনির্ভরশীল। যাদেরকে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ বোঝা মনে করতো। ওসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। যদিও তাদের ব্যাপারে কোন সঠিক পরিসংখ্যান তৈরী করা সম্ভব হয়নি।



এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। যার দিকে একটু নজর দিলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সুদৃঢ় হতে পারে। মঙ্গা, বন্যা ও ঘুর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগ দেশের মানুষের আত্মবিশ্বাস ও সম্পদকে কাজে লাগিয়ে মোকাবেলা করা অসম্ভব নয়। জানা যায়, আমাদের দেশে লক্ষাধিক কুটির শিল্প রয়েছে। বিদেশী অপসংস্কৃতির ছোবলে আধুনিক নগরায়নের দরণ ওসব কুটির শিল্প ধবংসের পথে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে হাজার বছরের বাঙালির ।

সোনা-ভরা ফসলে স্বপ্ন, বিদেশী করা সুনামে মগ্ন আমাদের বাংলাদেশে আজ জাতি দিশেহারা। ২৫ ফেব্রুয়ারীর পিলখানা ট্যাজেডীর কারণে মানুষ শোকাহত।



এই দেশের জাতি একুশে ফেব্রুয়ারীর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে, সকল দেশদ্রোহী অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ সোচ্চার। কিন্তু বর্তমানে এক শ্রেণীর ঘরোয়া বুদ্ধিজীবীর, অসাধু আমলা ও রাজনৈতিক দলের নেতকর্মীদের কারণে দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশে জঙ্গি তৎপরতা আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকল সুশীল সমাজকে জাতি গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের মাঝে ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। কবি নজরুলের ভাষায়, ‘গাহি সাম্যের গান, যেখানে আসিয়া এক হয়েছে হিন্দু, মুসলিম-খ্রিশ্চান।’

ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একযোগ সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তার নয়ন মণি, হিন্দু তার প্রাণ।’



আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের যুগে পা রেখে বাংলাদেশ নতুন স্বপ্ন ভিশন-২০২৫ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, আন্তর্জাতিক বিশ্বে নিজেদের অবস্থানকে উন্নতকরণ এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠাসহ অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে বেশকিছু কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এই বিষয়ে সুশীল সমাজকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্রথমত: বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো দারিদ্রে্যর অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ। এই দেশে বর্তমানে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় মঙ্গা বা দারিদ্রে্যর তীব্র ছোবল প্রত্যক্ষ করেছি। বন্যা, খরা ও সিডরসহ বিভিন্ন মহা দুর্যোগের কবলে পড়ে আমাদের দেশের অনেক মানুষ গৃহহারা হয়েছে। সহায় সম্পদ হারিয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমুন্নয়ের ত্রৈমাসিক প্রকাশনা বাংলাদেশ ইকোনমিক আউটলুক-এর বর্ষপূর্তি সংখ্যায় বলা হয়েছে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে মাথাপিছু দারিদ্র্য ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়ে মোট জনসংখ্যার ৪৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ দাড়িয়েছে। ফলে প্রায় ১২ লাখ পরিবার নতুন করে দরিদ্র হয়ে গেছে। দেশের সুশীল সমাজ নতুন করে চিন্তা-ভাবনা না করলে দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটবে।

দ্বিতীয়ত: আমাদের দেশের শতকরা ৩৫ ভাগ মানুষ নিরক্ষর। দারিদ্যের কারণে অনেক শিশু স্কুলে যায় না। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিশুরা মাত্র ৪ ভাগ শিক্ষার্জনের সুযোগ পাচ্ছে। আর যারা শিক্ষিত তাদের অধিকাংশই কেবল অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। কারিগরী বা কর্মমূখী শিক্ষার প্রতি অনগ্রসর আমাদের এই জাতি। অন্যদিকে দেশে একমুখী শিক্ষার অভাব। প্রতিটি নাগরিককে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলাই জাতির সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। কারণ, ২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য বা মিলেনিয়াম গোল অর্জনে ৮টি টার্গেটের মধ্যে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন একটি। কিন্তু এখনও আশাতীত শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রসর হয় নি। এই বিষয়ে সুশীল সমাজকে উদ্যোগ নিতে হবে।

তৃতীয়ত: এই মুহূর্তে জাতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুর্খীন জঙ্গি তৎপরতা ও দুর্নীতি। আমরা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এক পা এগুলেও জঙ্গি তৎপরতা ও দুর্নীতির কারণেই পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। ওসব বিষয়ে শ্লোগান, সেমিনার, কনফারেন্সসহ বিভিন্ন গাল-গল্প শোনা গেলে কার্যকরী ভূমিকা নেই বললেই চলে। বিষয়টি নিয়ে জোড়ালোভাবে কাজ কাজ করতে হবে।

চতুর্থত: অপসংস্কৃতির ছোবলে দেশী সংস্কৃতির বিকাশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হারাচ্ছে জাতির হাজার বছরের পুরানো ঐতিহ্য। মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির চর্চা আর আধুনিকতার ঢাকঢোলে দেশীয় সংস্কৃতি বিলীন হতে বসেছে। তাই নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি ঝুকে ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে হবে। অপসংস্কৃতির অগ্রাসন মোকাবেলা না করলে দেশীয় কুটির শিল্প সব বিনষ্ট হবে এতে সন্দেহ নেই। তাই জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত, দলীয় স্বার্থ ও দ্বন্দ্ব ভুলে জাতির স্বার্থে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে সুশীল সমাজ।

পঞ্চমত: আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বিদ্যমান থাকলেও সাম্প্রতিককালে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ পাওয়ায় ব্যাপক বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সুশীল সমাজ তাদের সচিত্র ঘটনা তুলে ধরার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আবার যেসব কারণে বা ক্ষেত্রে দেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদের জন্য নির্যাতন ও শোষণ বিরোধী অবস্থান নিয়েও সুশীল সমাজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

ষষ্ঠত: দেশের পরিবেশগত সমস্যা একটি মারাত্মক সমস্যা। একটু লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই নিজেদের অবহেলার কারণেই আমরা তৈরি করছি বিষাক্ত পরিমন্ডল। নিজেরদের ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছি এক নিঃ শব্দ বিষক্রিয়ার মধ্যে। পলিথিনের ব্যবহার, নদীর পানি দূষিত, প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার, বন উজাড়, পানিতে আর্সেনিক, শব্দ দূষণ, পানি দূষণ ও বাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ হুমকির স্বরূপ। ফলে খড়া, ঝড়, অনাবৃষ্টিসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে প্রতি বছর। এই ব্যাপারে পরিবেশবাদীদের যথাযথ ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সুশীল সমাজকে এখনও ভূমিকা নিতে হবে।

সপ্তমত: সুশীল সমাজের পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সুশীল সমাজ আজ বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তারা রাজনৈতিক দলের কাছে জিম্মি। ফলে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী নামের যে শ্রেণীটা রয়েছে তারাও নানাভাবে কলুষিত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নিচ্ছে। আবার কেউ ক্ষমতাসীনদের খুঁটি হিসবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরার কথা সেখানে নেতা বা নেত্রীর বাঁশিতে সুর তুলে দিচ্ছেন। তাই সুশীল সমাজকে দেশের স্বার্থে একত্রিত হতে হবে।



আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। এই দেশের জাতি কখনোও পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকতে চায় নি। যুগ যুগ ধরে সংগ্রাম করেছে। তাই একটি শোষণ মুক্ত, উন্নত ও প্রগতিশীল আধুনিক সমাজ গঠনে সুশীল সমাজকে প্রকৃত ভূমিকা পালনের জন্য বেশি সংগঠিত ও ঐক্যদ্ধ হতে হবে। তবে একটি উন্নত ও শান্তির দেশ গড়া সম্ভব।































মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৮

হা...হা...হা... বলেছেন: বাঙ্গালীদের উপর অত্যাচার দেখে অনেক পাকিস্তানী ও কেঁদেছিল।
আওয়ামীলীগ কি একটি ধন্যবাদ পেতে পারে?

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১০ সকাল ১১:৩০

অাজমাল েহােসন মামুন বলেছেন: Must

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৬

মামুন সাখী। বলেছেন: বিশ্ব মানবতার ঐক্য ও শান্তি পথ সম্পর্কে একটি প্রবন্ধক লেখেছি,জানতে এখানে ক্লিক করুন Click This Link
আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাই, প্লিজ...........ইমেল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.