নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"এই বাবাগুলো কি অষ্কারের বিচারে কোন অংশে পিছিয়ে????"

১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

তিনি ভাজ করা সার্ট পড়তে অস্বস্তিবোধ করেন। আয়রন করা কাপড়ের ভাজ খুলছেন আর বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে। তিনি বহুবার রাবেয়াকে (তার স্ত্রী) বলেছেন যে কাপড় আয়রন করার দরকার নেই। আয়রন করা কাপড় পড়লে মনে হয় নতুন কাপড় পড়েছেন আর সবাই তার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
যদিও কাপড়টা একবছর ধরে পড়ছেন।
<
যার কথা বলছিলাম ইনি একজন বাবা। মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। এই বাবাটা ছোটবেলা থেকে আর কিছু পারুক বা না পারুক অভিনয় করা রপ্ত করেছেন অত্যন্ত সিদ্ধ হস্তে। সকাল থেকে অভিনয় শুরু করেন। একটা সার্ট এক সপ্তাহ যাবৎ পড়ছেন। অফিসের কলিগ জিজ্ঞাসা করল কি ব্যাপার এক সার্ট এতদিন পড়ছেন? বাবা অমায়িক হাসি দিয়ে বললেন এই গরমে সার্টটা পড়ে খুব আরাম পাই।
<
অভিনয়ের আরও একটা নমুনা দেখুন। দুপুর তিনটা পঁচিশ বাজে। প্রচন্ড রোদে ঘামে ভিজে বাবাটা বাসায় এসেছেন। ভাত খেতে বসেছেন সারাদিন অভুক্ত থাকার পর। ঠিক সেই মূহুর্তে বাবার ছোট ছেলে এসে গলা জড়িয়ে ধরে বলল বাবা আমিও ভাত খাব। কোন প্রকার টু শব্দ না করে নিজের খাবার সন্তানের মুখে তুলে দিতে লাগলেন। যতক্ষন সন্তান খেল ততক্ষন তাকে খাওয়ালেন। একটা দানাও নিজে মুখে নিলেন না যদি সন্তানের খাওয়া শেষ না হয়। স্ত্রী বলল তুমি খাও ওকে আমি অন্য কিছু খাওয়াচ্ছি। বাবা খুব সুন্দর করে খুদার কষ্টটা লুকিয়ে বললেন আমার ছেলে খেলেই আমার খাওয়া হয়ে যাবে।
<
আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবারা পরিবারের ভিতর নিজেদেরকে একটা প্রাচীরের আড়ালে লুকিয়ে রাখেন। সন্তানরা কখনও সেই দেয়াল ভেদ করে দেখতে পারে না বাবাদের ভিতরটা। সন্তানরা বাবাদের হাসির আড়ালের কষ্টটা কখনও আঁচও করতে পারে না। তাদের কাছে বাবা মানে আবেগ অনুভুতিহীন এক কঠিন হৃদয়ের মানুষ। সন্তান কখনও তার বাবার মুখের শুকনো হাসি ছাড়া কিছু দেখতে পায় না।
<
সন্তানরা মনে করে তাদের বাবা তাদেরকে বুঝে না। কিন্তু এটা কোন সন্তান জানবেও না যে তাদের বাবারা তাদের সন্তানের প্রত্যেকটা দু:খ, প্রত্যেকটা আনন্দ, প্রত্যেকটা অনুভুতি
এক নি:শ্বাসে বলে দিতে পারবে। সন্তানের সম্পুর্ণ শরীর ও মন বাবার নখদর্পণে থাকে।
<
এই বাবারা সারাজীবন সুখে থাকার অভিনয় করে যাবেন। হয়তোবা অভিনয়ের মাধ্যমে কষ্ট চেপে রাখাতেই নিজের সুখ খুঁজে পান। হয়তোবা একটা সার্ট সারাবছর পড়ে, ভাঙা চশমা রশি দিয়ে বেঁধে ব্যবহার করার মাঝে , সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য এক বেলা ভাত কম খেয়ে একটা টাকা সঞ্চয় করার মাঝেই সুখ খুঁজে পান। জীবনের প্রতিটি খাঁজে অপূর্ব এই অভিনয়ের জন্য বাবারা কখনও অষ্কার পান না। তাদের নিকট অষ্কারের চেয়ে কোটিগুন বড় পুরুষ্কার সন্তানের মুখের এক টুকরা হাসি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২০

কানিজ রিনা বলেছেন: এই নিষ্ঠাবান কর্তব্য পরায়ন ব্যাকতিত্ব্য সম্পন্ন
বাবারা অস্কার পাবেন আল্লহর কাছে।
কন্যা সোরশী বয়সে অনুভব করে আমার
পিতার মত ব্যাক্তিত্ব্য সম্পন্ন একজন স্বামী
যেন আমার জীবনে আসে। আর একজন
যুবক ছেলে অনুভব করবে আমার মায়ের
মত এমন একটি মেয়ে যেন আমার জীবনে
বউ হয়ে আসে। এসব বাবা মা তখনই
সাফল্য মন্ডিত সম্মানিত।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৪

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: একদম ঠিক। প্রত্যেক কন্যার কাছে তার বাবাই একমাত্র আদর্শবানপুরুষ আর প্রত্যেক সন্তানের কাছে তার মা একমাত্র আদর্শবাদী মহিলা।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: নতুন ব্যবহার করতিছি তো কিভাবে মুছছে বলতে পারব না। আপনার মন্তব্য কি ডিলেট হয়ে গেছে? দু:খিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.