নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক বোনের কথা ............................
"আমি লামিয়া, এবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি
পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু কোথাও সুযোগ পায় নি।আমি ছাত্রী হিসাবে প্রথম সারির ছিলাম বরাবর।ফলাফল নিয়ে কখনও আমাকে পিছিয়ে থাকতে হয় নি বা ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বাধা হতে পারে নি।তবে কেন আমি কোথাও টিকলাম না????
<
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার কথা বলি.....
খুব সকালে রেডী হয়েছি পরীক্ষা দিতে যাব।এখন বাস পাওয়াটা খুব মুশকিলের ব্যাপার।বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি একটা বাস আসল কিন্তু বাসের মহিলা আসনের দিকে তাকিয়ে কোন মহিলা দেখতে পেলাম না। তাই সেই বাসে আর উঠলাম না।এভাবে বাসে না উঠতে না উঠতে অনেকগুলো বাস চলে গেল চোখের সামনে দিয়ে তারপরেও সাহস পাচ্ছি না। একা একটা মেয়ে এতগুলো ছেলে বোঝাই বাসে উঠতে।শেষপর্যন্ত একটা বাসে উঠলাম। কিন্তু উঠার সময় আমার জীবনে সবচেয়ে ঘৃনিত ঘটনা ঘটল।সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাব ঠিক সেই মুহুর্তে হেল্পার সাহায্য করার ছলে আমার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিল।চোখ বন্ধ করে কান্না আটকানোর চেষ্টা করলাম।ঠোঁট দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে এই লজ্জা ঢাকা দেয়ার চেষ্টা করলাম, ঠোঁট কেটে রক্ত বের হল। এই রক্ত দেখা যাচ্ছে কিন্তু আমার মেয়ে হয়ে জন্মানোর অপরাধে মনে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা কেও দেখছে না।এতগুলো ছেলে এই দৃশ্য দেখেছে আর উপভোগ করেছে।
<
পরীক্ষার হলে গেলাম এখানে আরেক চিত্র।ছোট একটা বেঞ্চে তিনজন বসার ব্যবস্থা। আর আমারও সেই লেভেলের ভাগ্য সিট পড়ল মাঝখানে আর দুই পাশে দুইটা ছেলে।ছেলেগুলো যখনই আমার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে তখনই আমি আঁৎকে উঠছি।আর আমি যখনই আমার ডান হাত টেবিলের উপর উঠিয়ে বৃত্ত ভরাট করছি ডানপাশের ছেলেটা ঠিক তখনই আমার শরীরের দিকে তাকাচ্ছে।আসলে আমি মাদ্রাসার ছাত্রী তাই কখনও ছেলেদের সংষ্পর্শে আসি নি। বা কোন ছেলের সাথে কথা বলা তো দূরে থাক এরকম নগ্ন দৃষ্টিরও স্বীকার হই নি।কারন আমি ছোট থেকেই মহিলা মাদ্রাসায় আলিম(এইচ.এস.সি) পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি।আর আমি মাদ্রাসায় গণ্ডিতে যখন চলাফেরা করতাম তখন আমার এই পোশাক বোরকা নিয়ে খুব নিরাপত্তা অনুভব করতাম।মনে করতাম আমার পোশাক তো ঠিকই আছে তাহলে বখাটে ছেলেদের নিয়ে আমি চিন্তা করব কেন??
<
যাই হোক এই মানসিক অবস্থা নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া যায় না।আমিও কয়েকটা বৃত্ত ভরাট করে আর পারলাম না।অশ্রুবিহীন কান্না করতে করতে হল থেকে বেরিয়ে আসলাম।"
<
এটা আমাদের দেশের হাজারও লামিয়ার ভিতরে একজন লামিয়ার গল্প।যে দেশের জনগন যতদিন নিরাপত্তা অনুভব করবে না সে দেশে ততদিন শান্তি ফিরে আসবে না।সেটা হোক আর্থিক নিরাপত্তা, জীবনের নিরাপত্তা বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মান সম্মানের নিরাপত্তা।বনের ভিতরে বাঘের ভয়ে তাড়া খাওয়া হরিনেরও একটা নিরাপত্তা থাকে যখন সে তাড়া খায় তখন তার সাথে তার আশেপাশে অন্যান্য হরিনরা থাকে।কিন্তু আমাদের সমাজে এই মেয়েদের প্রতি আমাদের অধিকাংশের শুধু নগ্ন দৃষ্টিই থাকে।যেই দৃষ্টি দেখে এই মেয়েরা সাহায্য চাওয়া তো দূরের কথা ভয়ে আরও কুঁকড়ে যায়।
<
কিছু কিছু পুরুষ নামক পশুর জন্য সত্যিই আমাদের লামিয়ারা আজ বড্ড অসহায়। এই লামিয়ারা মেয়ে হয়ে জন্মানোকে জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসাবে ধরে নিয়েছে। এই লামিয়াদের চিন্তা হল পুরুষ মানে খাদক। পুরুষরা শুধুমাত্র তাদের ছিঁড়ে খাওয়ার জন্যই ওত পেতে আছে। তাই এরকম হাজারও লামিয়া নিজেকে চার দেয়ালের আড়ালে আটকে ফেলেছে। তাদের কাছে চার দেয়ালের বাইরের পৃথিবী অত্যান্ত ভয়াবহ।
<
আমরা কি পারব এই ধরনের পুরুষ হওার কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে। নাকি গুটি কয়েক পুরুষ নামক পশুকে রুখতে না পেরে আমরা ঘরে চুরি পড়ে বসে থাকব???
২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২২
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
পড়ালেখায় সাহায্য করার চেস্টা শুরু হচ্ছে; আমার পোস্টে, আমার সাথে যোগাযোগ করতে বলবেন।
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:৪৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশে মাদ্রাসা ইত্যাদি খুলে বাচ্ছাদের পড়ালেখার ক্ষতি করা হয়েছে।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২৬
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আমার কিন্তু তা মনে হয় না, আমার মনে হয় পারিবারিক শিক্ষাটাই সন্তানকে নীতিবান মানুষে পরিনত করতে মুখ্য ভুমিকা পালন করে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:১৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সন্তানকে ইসলামী মূল্যবোধ শেখাতেই হবে। আমাদের সমাজে দেখা যায় বাড়ির বাবা মা নামাজ পড়ে, আর ছেলে মেয়েরা নামাজের ধারে কাছেও নেই - এটা বদলাতে হবে।