নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু প্রশ্ন করি....
১.কারও কন্ঠে কৃতজ্ঞতা দেখেছেন?
২. কারও চোখের তারায় 'বাবা আল্লাহ তোমার ভাল করবে' এই লেখাটা ফুটে উঠতে দেখেছেন।
৩.কোন বৃদ্ধের চোখে ছলছল করতে থাকা আনন্দ দেখেছেন?
৪.কোন শিশুর হৃদয়ে আনন্দের বাণ বয়ে যেতে দেখেছেন?
।
প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার আগে নিজের কিছু কথা বলা জরুরী।
আমাদের ক্যাম্পাসে সবে ৩য় বর্ষে পদার্পণ করেছি তখনকার কথা।
হঠাৎ আমাদের ক্যাম্পাসের একটা সংগঠনে রক্ত সংগ্রহ এবং ডোনেট করার দায়িত্ব পেলাম। রক্তের গ্রুপ B+। সেদিন থেকে আমি উপরোক্ত অনূভুতিগুলোর সাথে পরিচিত। কিভাবে?
একদিন ঘুমিয়ে আছি দুপুর তিনটার দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এল। 'আপনি মামুন বলছেন? আমার এক ব্যাগ বি পজেটিভ রক্ত লাগবে। অন্তু ভাই আমাকে আপনার নম্বর দিয়েছে।' প্রচন্ড মেজাজ গরম হল কাঁচা ঘুমটা ভেঙে যাওয়ার দরুন। কিন্তু নিজেকে শান্ত করে বললাম, 'আপনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। আমি জানাচ্ছি কল দিয়ে।' তখনকার মত ঘুম শেষ। আমার ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট লিস্ট থেকে বি পজেটিভ ডোনার খুঁজতে লাগলাম। চার পাঁচজনকে ফোন দেওয়ার পর এক ব্যাগ রক্ত জোগাড় সম্ভব হল, আমার জুনিয়র ব্যাচের একটা ছেলে রক্ত দিবে।
।
আমি আধা ঘন্টা পর সেই অপরিচিত নম্বরে ফোন দিয়ে বললাম 'আপনার জন্য এক ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে পেরেছি। অমুক আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।'
তখন ঐ প্রান্তের কন্ঠে যে কৃতজ্ঞতা দেখেছি সেটা ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ একটা পাওয়া।সেদিন একজন বিপদে পড়া মায়ের মুখে শুনেছিলাম 'বাবা আল্লাহ তোমার ভাল করবে' বাক্যটি। আনন্দে কান্না করতে থাকা মায়ের কন্ঠে এই বাক্য শুনে নিজেকে মানুষ বলে মনে হয়েছিল। নিজেকে নিজে বলছিলাম মামুন দেখ তোর মত অচেনা অজানা একটা ছেলের জন্য অচেনা অজানা এক মা আল্লাহর কাছে হৃদয় থেকে দো'আ করছে। মায়ের দো'আ কখনও বৃথা যায় না। আমার এই কথাটা খুব বেশী বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছিল সেই মুহুর্তে।
।
হুম সেই সংঠনের সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে উপরে প্রশ্ন করা সবগুলো অনূভুতির সাথে আমি পরিচিত। যারা সেবামূলক সংগঠনে কাজ করা কষ্ট মনে করেন তাদের সাথে আমি একমত। আমার কাছেও কষ্টই মনে হয়। এখানে নিজের বলে কিছু নেই, সব অন্যের। আমার ফ্রেন্ডরা মাঝে মাঝে জিজ্ঞাস করে কি লাভ এত খাটাখাটি করে। তখন আমি মুচকি হাসি। মনে মনে বলি দিনশেষে যখন ঘুমাতে যাই তখন সেই মায়ের দো'আর কথা স্মরণ করি আর নিজেকে একবারের জন্য হলেও মানুষ বলে মনে হয়। আর এই অনূভুতিগুলোই সব কষ্ট ভুলিয়ে দেয়।
।
সংগঠনটির নাম অনির্বান। আমার ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত একটি সংগঠন। এই সংগঠন আমাকে দিয়েছে মানুষের আনন্দের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগ। মানুষের চোখে আমার জন্য সৃষ্টি হওয়া কৃতজ্ঞতা দেখার সুযোগ। এই পাওয়াগুলোই কি যথেষ্ট নয় এক ক্ষুদ্র জীবনের সকল আনন্দকে ছাপিয়ে আত্ম তৃপ্তির মৃত্যুর জন্য।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:০৭
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। এই টুকটাক চেষ্টা করা আরকি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:১৫
সুমন কর বলেছেন: ভালো কাজ করে যাচ্ছেন।