নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"নতুন সূচনা/ ক্ষনিকের ডায়েরী-০৯"

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫৭

(আলহামদুলিল্লাহ ক্ষনিকের ডায়েরীর নবম পর্ব আজকে।)
সময়টা সম্ভবত ২০১৪ এর মাঝামাঝি বা একটু পরের। ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি মাত্র। ক্লাস দুই একটা চলছে, চলছে না এরকম অবস্থা। জীবনে প্রথমবারের মত ফ্রেন্ডদের সাথে পরিবার ছেঁড়ে প্রায় ৮০/৯০ কিলোমিটার দূরে ম্যাসে বসবাস করা শুরু করলে যেরকম ছন্নছাড়া ড্যাম কেয়ার ভাব চলে আসে মনের ভিতরে আমারও ঠিক সেই অবস্থা। আগের যেই আমি নিয়মিত জামা’আতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত পড়তাম সেই আমার সলাত নিয়মিত কা’যা হওয়া শুরু করল। এমনকি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম সেকেন্ড ইয়ার থেকে নিয়মিত স্মোকিং করা শুরু করব। এভাবে খাম খেয়ালি করে একটা বছর কেঁটে গেল। নিজের লক্ষ্য ,নিজের দায়িত্ব সব জলাঞ্জলি দিয়ে সেকেন্ড ইয়ারে উঠে পড়লাম।

সেকেন্ড ইয়ারে উঠার পর সেই পুরাতন সংকল্প স্মোকিং এর কথা মনে পড়ে গেল। আমার একটা ফ্রেন্ডও তখন নতুন স্মোকিং করা শুরু করেছে। ইচ্ছাটা খুব প্রবলভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। কিন্তু যেহেতু কা’যা করে হলেও সলাত পড়তাম , তাই যখনই মনে হত কালকে থেকেই স্মোকিং শুরু করব তখনই মনে পড়ত এত কষ্ট করে সলাত পড়ি এরপরেও যদি হারাম (কারও মত অনুসারে মাকরুহ) খাই আমার ঈবাদত তো কবুল হবে না। তারউপর জুনিওর ব্যাচ চলে আসল ক্যাম্পাসে। ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম অন্যান্য কাজে তাই আর শুরু করা হল না স্মোকিং।

বেশ কিছুদিন পর হলে উঠে পরলাম আমাদের ব্যাচের সবাই। যেখানে ম্যাসে আমরা মাত্র ছয়জন ছিলাম সেখানে হলে ব্যাচের ৫৪ জন একত্রিত হয়ে থাকা শুরু করলাম। এখানে এসে মোটামুটি নিয়মিত সলাত পড়তে লাগলাম তবে প্রায় দিনই ফযরের সলাত কা’যা হতে লাগল। নিয়মিত সলাত পড়ার দরূন আর কখনও স্মোকিং করার কথা মাথাতেও আনি নি। কিন্তু খুব হতাশ হতে হল ব্যাচের অন্যান্য ছেলেদের সলাতের প্রতি অনাগ্রহ দেখে। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার রুমমেট আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সবাইকে সলাতে আদায়ে রাজী করাব।
কারন "আর সলাত কায়েম করো। নিশ্চয়ই সলাত (মানুষকে) অশ্লীল এবং খারাপ কাজ হতে বিরত রাখে।" [১]

সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরের দিন থেকে আমি আর আমার রুমমেট ফযরসহ অন্যান্য সলাতের সময় মসজিদে যাওয়া শুরু করলাম। এভাবে আরেকটা ছেলে আমাদের সাথে যাওয়া শুরু করল। তিনজন বেশ কয়েকদিন সলাত পড়তে লাগলাম এভাবে মসজিদে গিয়ে। কিন্তু আমাদের হলে মুসলমানের সংখ্যা ৫৪ জনের মধ্যে প্রায় ৪০জনের মত। এই ৪০ জনের ভিতর হয়তো দশ থেকে বারজন রুমে একা একা সলাত পড়ত, বাকীরা একেবারেই পড়ত না । তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যেকয়জনকে পারা যায় জামা’আতে আনতে হবে। আমার রুমমেটই শুরু করল সবাইকে ডাকাডাকি করা। সে প্রতিদিন ফযরের আযানের আধা ঘন্টা আগে উঠে গিয়ে চারতলা হলের সবার দরজায় গিয়ে গিয়ে ডাকতে লাগল। ও ডাকাডাকি করার পর আমি নিচে নামার সময় আবার সবাইকে ডাকাডাকি করতাম । এভাবে করে আলহামদুলিল্লাহ্‌ এখন পনের থেকে বিশজন জামা’আতে সলাত আদায় করছি নিজেদের ঈমামতিতে।

আমার ক্ষনিকের ডায়েরীতে আজকের এই ঘটনা উল্লেখ করার কারণ হল আঠার-বাইশ এই বয়সটা আসলেই খুব পা স্লিপ করার বয়স। এই বয়সের একটা ছেলে যা চাইবে তাই করতে পারবে। কিন্তু সেই ছেলে স্লিপ করবে না যার সাথে নামায আছে। নামায তাকে যেকোন কর্দমাক্ত রাস্তায় স্লিপ করার হাত থেকে রক্ষা করবে। তাই আমি সবসময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যাতে আমার সাথে আমার সকল ব্যাচমেটকে নামাযী করতে পারি। আমার প্রত্যেকটা বন্ধুর জন্য দোয়া’প্রার্থী।

[১]সূরা আনকাবুতঃ ৪৫

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ!!! ভালো লিখেছেন।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৯

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.