নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিজাব নারীদের জন্য অমর্যাদার নাকি সম্মানের??
(বোনদের জন্য একটি বার্তা)
অনেক বোনই বুঝতে পারেননা যে:
**কেন ইসলাম এই ধরনের অদ্ভুত হিজাব রীতির কথা বলল?**
**কেন নারীরা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শনে স্বাধীন নয়?**
**এটা কি নারীজাতির প্রতি একটি অসম্মান নয়?**
প্রথমত, আপনারা আপনাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে কি পেতে পারেন? আমি মনে করি আপনি ইসলামি হিজাব পদ্ধতিকে অপছন্দ করেন, দু'টি জিনিস চিন্তা করে :
=> পরিতৃপ্তি
=> প্রশংসা
এটা দ্বারা কি বুঝায়?
আমি মনে করি, আপনি হয়ত এভাবে চিন্তা করেন:
"আমি খুবই খুশি হব যদি আমার পছন্দনীয় ফ্যাশানেবল স্টাইলে নিজেকে সাজাতে পারি"
অন্য কথায়, আপনি চিন্তা করেন যে, যদি আকর্ষনীয় প্রকাশভঙ্গি নিয়ে বাইরে যেতে পারেন, তবে আপনি মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করবেন। এর পরবর্তীতে যে চিন্তাটা আপনার মাথায় আসতে পারে সেটা হল,
"ওহ! মানুষ আমার দিকে তাকাবে, আমি কতই না ফ্যাশানেবল। আর তারা যদি আমার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে..... ওহ! আমি আর ভাবতে পারছি না" ।
অন্য কথায়, আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন যে, মানুষ আপনার সুন্দর প্রকাশভঙ্গি দেখবে আর যদি সম্ভব হয়, মাঝে মাঝে এর প্রশংসাও করবে।
এগুলো সবই আপনার মানসিক উদ্দীপনা। কিন্তু আপনি কি কখনও বাস্তবতাটা নিয়ে ভেবে দেখেছেন?
মনে করুন, আপনার হাতে একটা কমলা লেবু আছে। আপনি এটা দেখছেন এবং অনুভব করছেন; এটা এতই সুস্বাদু যে আপনি এই ফলটি খেতে চান। তাই আপনি কমলা লেবুটির ভেতরের অংশ বের করে নিলেন।
এখন এটা পূর্বের ঘটনার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করুন। আপনি খুবই আকর্ষনীয় প্রকাশভঙ্গি নিয়ে বাইরে বের হলেন। একজন পুরুষ আপনাকে দেখল এবং তীব্রভাবে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হল। (ধরুন) সে খুব বেশি ভাল চরিত্রের পুরুষ নয়। সে নিজের যৌন হরমোনাল প্রভাব নিয়ন্ত্রন করতে পারে না, আর তাই সে আপনাকে অনুসরণ করা শুরু করল। সে একটা নির্জন জায়গা পেয়ে আপনাকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল এবং তারপর পালিয়ে গেল।
এখন দয়া করে আমাকে বলুন, এটা কি আপনার জন্য অসম্মানের নয়? আমি মনে করি এটা অসম্মানজনক। কারন সে আপনাকে এরূপ পদ্ধতিতে উপভোগ করেছে।
এভাবে যদি কোনো পুরুষ আপনাকে ধর্ষন করার মাধ্যমে উপভোগ করে, এটা আপনার জন্য অপমানজনক হবে ; তাহলে কিভাবে আপনি বলতে পারেন যে, অন্য লোকেরা আপনাকে আকর্ষণীয় প্রকাশভঙ্গিতে দেখলে আপনার সম্মান বৃদ্ধি পাবে? তারাও কি আপনাকে উপভোগ করছে না??
আপনি হয়তো বলতে পারেন, 'আপনাদের (পুরুষদের) মনে এত নোংরা চিন্তাভাবনা কেন?'
আপনি যাই বলুন না কেন, আপনি কি প্রাকৃতিক যৌন হরমোনাল প্রভাবকে বন্ধ করতে পারবেন? পবিত্র চিন্তা-ভাবনা হয়তো মানসিক, কিন্তু যৌন হরমোনাল প্রভাব শারীরিক। আপনি কি এটা উপেক্ষা করতে পারবেন??
একটু চিন্তা করে দেখুন।
ইসলাম এই ধরনের বহিঃপ্রকাশের অনুমোদন দেয় না। যেখানে আপনি মনে করছেন যে, আপনি মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছেন, সেখানে আসলে আপনি আপনার নাফ্সকে (নিজেকে বা নিজের ইচ্ছাকে) সন্তুষ্ট করছেন। যখন আপনি আপনার আকাঙ্ক্ষার পিছনে ছুটছেন, তখন আপনার প্রশান্ত মন প্রবৃত্তির অনুসরণ, দম্ভ এবং স্বেচ্ছাচারিতায় রুপান্তরিত হচ্ছে। এমনকি আপনার সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ যেন পরিণত হচ্ছে অপবিত্র যৌন আকর্ষনের উৎস হিসেবে যার ক্রিয়াশীলতা প্রকাশ পাচ্ছে ধ্বংসাত্মক আগুনের ন্যায়।
.
এটা আপনার জন্য কোনো প্রকার 'সম্মান' বলে গন্য হতে পারে না।
যদি আপনি বাজার থেকে একটা ডিম কিনে আনেন, তাহলে এটা আপনি রান্নাঘরে গিয়ে ভাঙবেন কারন এটাই উপযুক্ত স্থান।
একইভাবে আপনার সৌন্দর্য প্রদর্শনের প্রকৃত স্থান হল একমাত্র আপনার বিবাহিত স্বামীর নিকট, এখানে সেখানে নয় যাতে আপনি ভোগ্যপণ্যে পরিণত হন।
সুতরাং, হিজাব আপনাদের অসম্মান করে না, বরং আপনাদের শালীনতা বজায় রাখার রাস্তাটিই দেখিয়ে দেয় এবং নারীজাতির মর্যাদাকে সর্বোচ্চ সম্মানের স্থানে উপবিষ্ট করে। এটা এমনই একটি পন্থা যা আপনাকে ভিতর এবং বাইরে থেকে পবিত্র রাখে।
এছাড়া এটা এমন একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি জনগনের সহজলভ্য পন্য হওয়ার পরিবর্তে পাবেন সম্মান ও আত্মমর্যাদা ।
পুরুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে নারীর প্রতি তীব্র কামনা দিয়ে; একইভাবে নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পুরুষের প্রতি তীব্র কামনাস্বরূপ।
সুতরাং, পুরুষের দায়িত্ব নিজেকে পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রন করা। একইভাবে নারীর দায়িত্ব তার সৌন্দর্য পরিপূর্ণভাবে আবৃত করে রাখা।
সৌন্দর্যের পিছনে ছুটে বেড়ানো নিজের আকাঙ্ক্ষার পিছনে ছুটে বেড়ানোই নামান্তর। সৌন্দর্যের প্রতি আসক্তি অন্তরের ব্যাধি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই পুরুষ এবং নারী উভয়েরই দায়িত্ব তাদের হিজাব পরিপূর্ণভাবে পালন করা। কোরআন নারীদের পূর্বে পুরুষদের হিজাবের বিধান দিয়েছে ৷
.
"**মু’মিন পুরুষদের** বলো তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, এটাই তাদের জন্য বেশি পবিত্র, তারা যা কিছু করে সে সম্পর্কে আল্লাহ খুব ভালভাবেই অবগত।
আর **ঈমানদার নারীদেরকে** বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, আর তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যতীত। ...."
--মহাগ্রন্থ কোর'আন ২৪:৩০-৩১
যদি এখনও আপনি চান আপনার সৌন্দর্য সর্ব সাধারনের সামনে প্রদর্শন করতে, তবে ইসলাম আপনাকে ভোগ্যপণ্য হওয়ারও অপশন দিচ্ছে। (তবে জেনে রাখুন) আপনার কর্মফল পরকালে (অবশ্যই) পরিপূর্ণভাবে বিচার করা হবে।
لَآ إِكْرَاهَ فِى ٱلدِّينِۖ قَد تَّبَيَّنَ ٱلرُّشْدُ مِنَ ٱلْغَىِّۚ فَمَن يَكْفُرْ بِٱلطَّٰغُوتِ وَيُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسْتَمْسَكَ بِٱلْعُرْوَةِ ٱلْوُثْقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
"দীনের(ইসলামের) ব্যাপারে **কোন জবরদস্তি কিংবা বাধ্যবাধকতা নেই**। নিশ্চয়ই ভ্রান্তি হতে সুপথ প্রকাশিত হয়েছে। অতএব যে তাগুতকে(অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য বাতিল উপাস্যসমূহকে) অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সে দৃঢ়তর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরলো যা কখনও ছিন্ন হবার নয় এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।"
--মহাগ্রন্থ কোর'আন ২:২৫৬
লেখকঃ- আহমেদ আলি সিরিজ/ইসলামে হিজাব - পর্ব ১
("Is Hijab an insult or honour to women???" রচনাটি হতে অনুবাদকৃত ও কিছুটা সংযোজিত)
[অনুবাদ করেছেন - মামুন রেজওয়ান]
০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫২
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আপনার মন্দ কপাল , মন্তব্য দেখার সৌভাগ্য পেলেন না। ধন্যবাদ হাতের কাজটা ভালো বলার জন্য। আসলে এটা মূল লেখক পাওয়ার যোগ্য। আমি অনুবাদক মাত্র।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬
নাঈম মুছা বলেছেন: ভালো হাতের কাজ করেছেন। এখন কে কি মন্তব্য করে সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।