নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ভ্রমন এবং খাওয়া দাওয়া / ক্ষনিকের_ডায়েরী_২৪"

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০০

ক্ষনিকের_ডায়েরী_২৪ তম পর্ব।

আলহামদুলিল্লাহ আমি ভ্রমনপ্রিয় মানুষ। আমি যখন ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকেই বাইরে বাইরে ভ্রমন করা শুরু করি। যখন ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ি তখন আমার প্রথম ভ্রমন এবং পরিবার ছেড়ে প্রথমবারের মত বাইরে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা হয়। খুলনা থেকে এক বন্ধুর সাথে তার বাসা নড়াইলে গিয়েছিলাম এবং সেখানে প্রায় ৩-৪ দিন ছিলাম। এভাবেই প্রতি বছর মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা সফরে যাওয়া হোত। আমি প্রতি বছরই যাওয়ার চেষ্টা করতাম। এছাড়াও প্রতি ঈদে বাড়িতে গিয়ে খালাত ভাই, এলাকার বড় ভাইদের সাথে কোথাও না কোথাও যাওয়া হোতই। চাকরিতে ঢুকার পর এই অভ্যাসটায় ভাটা পড়া শুরু করে। এখন কালেভাদ্রে কোথাও যাওয়া হয় নচেৎ নয়। তারপরও সুযোগ পেলে হাতছাড়া করিনা।

অনেকদিন পর এরকমই একটা সুযোগ পেয়ে গেলাম। আমাদের কম্পানিতে জয়েন করা এক ছেলের দরূন। উদ্দেশ্যহীন ভ্রমনের অভ্যাসটা আবারও উজ্জীবিত হোল। উইকেন্ডে ঘুরতে গিয়েছিলাম আমার ফ্যাক্টরির পাশেরই এক এলাকাতে৷ যখন রওনা দিয়েছি তার ২০-৩০ মিনিট পরেই আসরের নামায। তাই আমরা ঠিক করলাম মাঝরাস্তায় নেমে গিয়ে কোন মসজিদে আসরের সলাত আদায় করে নিব। ১০-১৫ মিনিট পর রাস্তার পাশের একটা বড় মসজিদ চোখে পড়াতে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম। সেখানে আসরের সলাত আদায় করলাম। আবার গাড়িতে ওঠার আগে দুইজনে একটা টং এর দোকানে বসে চা খেলাম। চা খেতে খেতে দোকানের দিকে তাকিয়ে দেখি হলুদ থেকে কালো হতে থাকা এক কাদি কলা ঝুলছে। দুইটা কলাও খেলাম সেখান থেকে। কলা খেয়ে আবার গাড়িতে উঠলাম। গন্তব্যস্থলে পৌঁছালাম তখন মাঝ বিকাল।

স্থানটা মুলত একটা পাঁকা সড়ক। আর দুইপাশে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। রাস্তার কিনারে দাঁড়িয়ে থাকলাম বেশ অনেকটা সময়। শরীর শীতল করা ঠান্ডা বাতাস আলতো পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। মনে হোল ইশ! আজীবন যদি এখানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকা যেত। সুবহানাল্লাহ। অপলক নয়নে বেশ কিছুক্ষণ সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। এরপর ক্ষেতের আইল ধরে হাঁটা শুরু করলাম। প্রায় আধাঘন্টা হাঁটার পর অপর প্রান্তের পাঁকা রাস্তায় উঠলাম। মাগরিবের আজান দিবে দিবে এমন একটা অবস্থা এখন। রাস্তায় বেশ কিছু দোকান থাকলেও পরিতাপের বিষয় মসজিদ পেলাম না আশেপাশে। অনেকদুর হেঁটে হেঁটে যাওয়ার পর অবশেষে একটা মসজিদের দেখা পেলাম। মাগরিবের সলাত আদায় শেষে আবার ফেরার পালা। এবার আর হাঁটলাম না সরাসরি গাড়িতে উঠলাম। কয়েকটা গাড়ি পরিবর্তন করে চলে আসলাম রেলগেট নামক একটা স্থানে।

রেলগেটে নেমে লক্ষ্য করলাম প্রচুর তৃষ্ণা খুদায় আমরা দুইজনই কাতর৷ প্রথমে গলাটা ভেজানোর ব্যবস্থা করা যাক। রাস্তার পাশে আখের রস বিক্রি হচ্ছে। সেখানে গিয়ে আগে বেঞ্চে বসে পড়লাম। বললাম "মামা দুই গ্লাস আখের রস দেন।" দুই গ্লাস রস খেলাম ২০ টাকা দিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ অন্তরটা শীতল হয়ে গেল। কি অসাধারণ এক নে'আমত সুবহানাল্লাহ। গলা ভিজল কিন্তু পেটতো অশান্ত এখনও। কিছুটা হেঁটেই একটা হোটেলে ঢুকলাম। খুব পরিচিত এবং অত্র এলাকার নামকরা হোটেল। খিচুড়ির জন্য বিখ্যাত। দুই প্লেট খিচুড়ি অর্ডার করলাম। এখানে আমার প্রথমবারের মত খিচুড়ি খাওয়া। এরা প্রথমে প্লেটে খিচুড়ি দেয় এরপর মুরগির দুই পিস গোস্ত এবং মুরগির ঝোল খিজুড়ির উপর ছড়িয়ে দেয়। দামে কম হলেও রান্নার স্বাদটা অসাধারন।আলহামদুলিল্লাহ তৃপ্তিসহকারে খাওয়া শেষ করলাম। দুই প্লেট খিজুড়ি বিল আসল মাত্র ৬০ টাকা। খিচুড়ি খাওয়ার পরেই পাশের দোকান থেকে বেলের শরবত খেলাম। বেলের শরবত দুই গ্লাস ২০ টাকা নিল। বেলের শরবত বলতে আসলে শুধু বেল তা নয়। বেল আছে, এলোভেরা আছে, কালোজিরা আছে, কলা আছে আরও নাম না জানা কি কি মিক্সড আছে। খাওয়া দাওয়া শেষে রেসিডেন্সের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রেসিডেন্সে পৌঁছে এশার নামায আদায় করলাম। ভ্রমন আসলেই সুন্দর। ভ্রমনে অন্তর প্রশস্ত হয়, আল্লাহর সৃষ্টির অপরুপ সৌন্দর্যে হৃদয় বিগলিত হয়।

#ক্ষনিকের_ডায়েরী_২৪

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:৩৬

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৩

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: জাঝাকাল্লাহু খাইরান

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর ভ্রমন কাহিনী।
ভ্রমন কাহিনীতে ছবি না থাকলে ঠিক জমে না।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৪

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: অযাচিত ছবি তোলায় বেজায় আপত্তি আমার। ছবি তোলায় মনোযোগ দিতে চাইলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ফিকে হয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.