নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাসুম শাহরিয়ার

Masum Shahriar

মাসুম শাহরিয়ার

Masum Shahriar › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আহমেদ\'কে নিয়ে কিছু কথা।

১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫০

হুমায়ুন আহমেদ, তিনি তার লেখায় না লিখেছেন জাতীয়তাবাদ নিয়ে, না লিখেছেন রাজনীতি নিয়ে,
না লিখেছেন সমাজ সংস্কার নিয়ে। তিনি তার ভোজবাজি দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের বশ করেছিলেন ঠিকি,
কিন্তু তার লেখাগুলো ঠিক বিশ্বমানের নয়। কথাগুলো আমার নয়, তথাকথিত জনৈক বুদ্ধিজীবীর।
যদিও স্বাভাবিকভাবে তার লেখার সমালোচনা হতেই পারে,
তবে অমন অশিষ্ট মন্তব্য ছুড়ে হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্যের মান বিচারের স্পর্ধা আমার নেই।

দেখা যায় তো এখনকার তরুণদের সাহিত্যের চেয়ে অন্যান্য উপভোগ্য-জিনিসে ঝোঁক বেশি।
তাদের মনের অনুক্ত প্রশ্ন হতে পারে- মানুষ সাহিত্য পড়ে কেনো?
সে প্রশ্নের উত্তরে- রবিন উইলিয়ামের একটা কথা মনে পরলো তিনি বলেছেন
"মেডিসিন, আইন, ব্যবসা, প্রকৌশল, এগুলো হলো মহান পেশা এবং জীবন ধারণের মাধ্যম; কিন্তু কবিতা, সৌন্দর্য, রোমাঞ্চ, ভালোবাসা হলো, যার জন্য আমরা বাঁচতে চাই,,। আসলেই তো জীবন ধারণের জন্য আমরা সারাদিন নিজেদের বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যস্ত রাখি। নিজের এবং পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেয়ার জন্য দিনরাত খেটে যাই। সারাদিন অবিশ্রান্ত খাটাখাটনির অন্যতম উদ্যেশ্য হয়তো- পেটে অন্নের যোগান দেয়া, এর পর আমাদের পরবর্তী চাহিদা হলো মনের ক্ষুধা নিবারণ করা।

এই মনের ক্ষুধা নিবারণের জন্য আমরা কেউ বই পড়ি, কেউ চলচ্চিত্র দেখি, কেউবা প্রকৃতি দেখতে যাই ইত্যাদি। এই জিনিসগুলো করার মাধ্যমে আমরা প্রতিদিনকার একঘেয়ে জীবনটাকে একটু ভুলে থাকতে চাই, কর্মব্যস্ত-বৈচিত্র্যহীন-ভোতা জীবনটাকে একটু শানিত করতে চাই। জীবনের সব গ্লানি, সব অপ্রাপ্তি, সম্পর্কের জটিলতা, সমাজের কুটিলতা থেকে কিছু সময়ের জন্য ছুটি নিতে চাই। কারণ একটানা এত বেশি কষ্ট মানব মন সহ্য করতে পারেনা বৈকি।

আমরা আসলে দুই কারণে বই পড়ি। এক, বইয়ের পাতায় জীবনের বাস্তবতাকে খুঁজে পাই বলে। বইয়ের নায়কের জীবনের কিছু অধ্যায় আমাদের জীবনের কিছু অধ্যায়ের সঙ্গে হুবুহু মিলে যায় বলে;- লেখক সেভাবেই মানবমনের গতি, ভাব, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে আলোচনা এবং বিচার-বিবেচনা করে বইয়ের চরিত্র গঠন করেন।
দুই, আমরা জীবনে যা করতে চাই, হতে চাই, যা বাস্তব জীবনে করা দুষ্কর, তা লেখকের লেখনীতে খুঁজে পাই বলে। এতে আমাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়, আরো কয়টা দিন বাঁচতে ইচ্ছা করে।

হুমায়ুন আহমেদ উপরের দুই শ্রেণীর মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়েন। তার উপন্যাসের চরিত্র হিমু যেমন জীবনের সব আশা আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে স্বাধীনভাবে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়, আমাদের সকলের মনেই কোনো না কোনোদিন এমনটা করার ইচ্ছা জাগে। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে তা ঠিক হয়ে উঠেনা। তবে যখন হিমু পড়া শুরু করি, আমরা ভাবতে শুরু করি উপন্যাসে হিমু যা করছে, তা আসলে আমরাই করছি। আমরাই তখন হিমু হয়ে যাই! হুমায়ুন আহমেদ পাঠকদের সাইকোলজি খুব ভালোমতো বুঝতেন। তিনি জানতেন আমাদের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা, যা তিনি তার লেখার মাধ্যমে জীবিত করতেন। তিনি পাঠকদের ইউফোরিয়ার অনুভূতিটা দিতে পারতেন। তাই তো আমার মত হাজারো পাঠক জীবনের গ্লানি থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য ছুটি নিতে তার বানানো স্বপ্নের দুনিয়ায় ডুব দিতে চায়। আমি মনে করি এখানেই তার লেখার স্বার্থকতা।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.