নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃশ্য আকাশ

...আমি আকাশ..আমি একজন সাধারণ মানুষ..লিখালিখি করতে পারিনা তবে অনেক ইচ্ছা আছে জীবনে কিছু লিখার...

অদৃশ্য আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এর নাম কি ভালোবাসা

১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১৫

আকাশ তখন ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। ছাত্র হিসেবে এতো টা ও খারাপ ছিল না সে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সব মিলিয়ে ভালোই চলছিলো। হঠাত একদিন আকাশ এর এলাকার এক ক্লোজ বড় ভাই নিলয় (ছদ্মনাম) আকাশ কে ডাক দিয়ে বললো...
-: আকাশ, একটা হেল্প করবা প্লিজ?
-: জ্বি, ভাইয়া বলেন। পারলে করবো।
-: তোমাদের স্কুলের একটা মেয়ে কে আমার ভালো লাগে। একটু..............
-: ওকে ভাইয়া। এটা কোনো ব্যাপার না। মেয়ের ডিটেইলস টা বলেন
-: নাম মেঘলা(ছদ্মনাম) । ক্লাস নাইন এ পড়ে। বাসা ........... এই গ্রামে।
-: ওকে। আমি কাল দেখবো ব্যাপার টা।
-: হুম। থ্যাংকস।
-: আমি যাই। বাই।
.
পরের দিন আকাশ স্কুলে যায় এবং মেয়ে টিকে খুঁজে বের করে। ছুটির পরে আকাশ মেয়ে টির উদ্দ্যেশে বললো...
-: হ্যালো শুনছেন।
-: আমাকে বলছেন?
-: জ্বি, একটু কথা ছিলো।
-: বলুন।
-: আসলে হইছে কি আমার এক বড় ভাইয়া আপনাকে খুব লাইক করে।
-: কে?
-: আপনার বড় ভাইয়ার বেষ্ট ফ্রেন্ড নিলয় আছে না? উনি! চিনতে পারছেন?
-: হ্যা।
-: আচ্ছা আপনি ভাবুন। আমাকে কাল ডিসিশন জানিয়েন। বাই।
-: বাই।
বাই বলেই চলে আসলো আকাশ। মেঘলা খুব সুন্দর একটি মেয়ে। ওর মুখ খানি যেন পরীর মতো। চোখ দুটো যেন মায়ার সাগর। সব মিলিয়ে ডানাকাটা পরী।
.
পরের দিন স্কুলে মেঘলা এবং তার ২টা বান্ধবী আকাশ এর কাছে আসে এবং বলে..
-: দেখেন আমি এখনো এসব নিয়ে ভাবিনি এবং এসব এ জড়াতে চাই না। আমার ফ্যামিলি কে আমি ঠকাতে পারবা না।
-: ওকে। আমি ভাইয়া কে বলে দিবো। বাই।
এরপর থেকে মেঘলা ও তার ফ্রেন্ড প্রায়ই ছুটির পর আকাশের সাথে কথা বলতো। আকাশ ও বলতো।
.
ফেব্রুয়ারি ২৮ তারিখ...
-: আকাশ, একটা কথা বলি?
-: হুম।
-: আচ্ছা আমরা এতোদিন ধরে কথা বলি বাট আমরা এখনো ফ্রেন্ড হলাম না, ব্যাপার টা অদ্ভুত না?
-: হুম।
-: তো চলো আমরা ফ্রেন্ড হয়ে যাই???
-: সত্যি? (অবাক হয়ে)
-: হ্যা। কোনো প্রব্লেম?
-: নাহ!
-: ওকে। আজ থেকে আমরা ফ্রেন্ড।
-: ওকে।
আকাশ একটু দূরে গিয়েই আবার উল্টো ফিরে এসে মেঘলা কে বললো
-: এই আমাকে একটু টাচ করো তো।
-: কেন?
-: বিশ্বাস হচ্ছে না কেন জানি। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখতেছি।
-: (চিমটি কেটে) এবার বিশ্বাস হইছে?
-: উফফফ!!! ব্যাথা পাই তো।
-: আচ্ছা ক্লাসে যাই। ছুটির পর কথা হবে। বাই
-: বাই।
.
শুরু হলো আকাশ আর মেঘলার বন্ধুত্ব। আকাশ প্রতিদিন সকালে নিজের প্রাইভেট বাদ দিয়ে অপেক্ষা করে মেঘলার জন্য। মেঘলার সাথে স্কুলে টিফিন পিরিয়ড এবং ছুটির পর কথা হয় আকাশের সাথে। সারাদিনে প্রায় অনেক টা সময় ই কথা হতো ওদের। এমন কি স্কুল ছুটির পরেও আকাশ প্রতিদিন মেঘলার বাসার সামনে যেতো বিকেলে এবং মেঘলা ও নিচে নামতো দেখা করার জন্য। এর মধ্যে আকাশ এর নাম্বার মেঘলা নেয় এবং তাদের মধ্যে প্রতিদিন ম্যাসেজিং চলতে থাকে। মেঘলার বাসার নাম্বার তাই সে যাস্ট ম্যাসেজিং করার ই চান্স পেতো তাও অনেক কষ্টে! তাছাড়া মেঘলার বড় বোন পালিয়ে বিয়ে করে যার ফলে মেঘলা কে অনেক চাপের মধ্যে রাখে তার ফ্যামিলি। মেঘলার কথা না বললেই নয়। যেমন সুন্দরী তেমনি ওর কথা-বার্তা, ব্যাবহার আরো বেশি সুন্দর। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ও। সবমিলিয়ে আকাশের জীবনে দেখা বেষ্ট মেয়ে মেঘলা।
.
মেঘলা কে দেখে আকাশ ও নিজেকে অনেক টা পরিবর্তন করে ফেলেছে। আকাশ নামাজ পড়ে, সবার সাথে ভালো ব্যাবহার করে ইত্যাদি। মেঘলার প্রতি আকাশ এর কেমন যেন একটা মায়া জন্মে গেছে।
.........
#৪_এপ্রিল...
আজ মেঘলার জন্মদিন। আকাশ মেঘলা কে উইশ করে এবং একটি গিফট দেয়।
সবই ভালভাবে চলছিল, হঠাত একদিন
আকাশের সাথে দেখা হলো নিলয়
ভাই এর।
-: আকাশ, ভাই কেমন আছো?
-: ভালো ভাই।
-: তো ঐ টা কিছু হইলো না আর?
-: ভাই ও এখন এসব নিয়া ভাবতে চায়
না।
-: আচ্ছা থাক। বাদ দেও মিয়া। ওর মতো
কতো মেয়ে আমার পিছনে ঘুরতেছে
বাট আমি পাত্তা দেই না। ও
নিজেকে যে কি মনে করে হুহ!!!
যত্তোসব ফালতু মাইয়া। ব্লাহ ব্লাহ!
কিচ্ছু বললো না আকাশ। যাস্ট রাগ টা
কে কন্ট্রোল করলো।
-: যাক বাদ দাও। ও থাকুক গা। আর দাম
বাড়ান লাগবো না।
-: ভাই একটু কাজ আছে। যেতে হবে।
বাই।

.
পরেরদিন প্রচন্ড রকমের রাগ মাথায় নিয়ে
মেঘলার কাছে গেলো আকাশ...
-: মেঘলা! তুমি আর নিলয় ভাইয়ের কথা
মাথায় ও আনবা না।
-: কেন? কি হইছে?
-: জানিনা। যা বলছি তা শুনো।
-: হইছে টা কি?
আকাশ আকার-ইঙ্গিতে কিছুটা বুঝিয়ে
দিলো নিলয় ভাইয়ের চিন্তাধারা
সম্পর্কে।
......
কয়েক দিন ধরেই আকাশ লক্ষ্য করছে যে
মেঘলা কেমন যেনো মনমরা হয়ে
থাকে। কারো সাথে কথা বলেনা,
হাসে ও না। ব্যাপার টা আকাশের
কাছে অনেক কষ্টের মনে হলো। তাই
আকাশ অনেক চিন্তা-ভাবনা করে
ডিসাইড করলো যে সে মেঘলার
সাথে শেষ বারের মতো কথা বলবে...
-: মেঘলা একটু কথা ছিল।
-: হুম বলো।
-: তোমার কি হইছে?
-: কিছু না।
-: ওকে। তোমাকে কিছু কথা বলতাম।
-: হ্যা বলো।
-: আসোলে আমি আর তোমার সাথে
ফ্রেন্ডশিপ টা রাখতে চাই না। আর
হ্যা, আমি নিলয় ভাই এর সম্পর্কে
তোমাকে যা বলেছি সব মিথ্যা।
ওগুলো আমি নিজে থেকেই বানিয়ে
বলেছি। আই এম সরি। প্লিজ পারলে
মাফ করে দিও। ভালো থেকো। বাই
-: যা হইছে বাদ দাও। আমি কিছু মনে
করিনি। বাট ফ্রেন্ডশিপ ব্রেক করার
কোনো দরকার নাই।
-: দরকার আছে। আমি তোমাকে খুশি
দেখতে চাই। আর এর জন্য আমাকে অবশ্যই
তোমার থেকে দূরে সরে যেতে হবে।
ভালো থেকো। বাই।

.
কথা গুলো বলেই চলে আসলো আকাশ।
জানিনা সে ভুল করলো না ঠিক!!! তবে
মেঘলা কে খুশি রাখার জন্য এই একটি
পথ ই খোলা ছিল তার কাছে। হোক না
সেটা একটু কষ্টদায়ক কিন্তু এতে তো
মেঘলা খুশি থাকবে। এটাই তার কাছে
বড় পাওয়া।
কয়েকটা বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলো।
আকাশ আজ জানেনা যে নিলয় ভাই আর
মেঘলার কোনো সম্পর্ক হয়েছিল কি
না। তবে সে আজও মেঘলা কে ভুলতে
পারনি। আজও মেঘলার স্মৃতি আকাশ এর
হৃদয়ে গেঁথে আছে।
আকাশ এর জীবনে একটা প্রশ্ন আজও রয়ে
গেলো "আকাশ ঐ দিন কেন এমন করেছিল!! আচ্ছা
এর নাম কি বন্ধুত্ব? নাকি
ভালোবাসা"?...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.