নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কেবলই ফুরিয়ে যায়।

মোঃ মাইদুল সরকার

একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............

মোঃ মাইদুল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কালো ছায়া-১ (ভৌতিক গল্প)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯


চট্টগ্রাম শহরে মৃদুল সাহেব দশ হাজার টাকায় ৫ রুমের ফ্যাট ভাড়া পেয়ে যার পর নাই খুশি। পরিবারের সবাই সন্তুষ্ট। রাস্তার মুখেই বাসা যাতায়াতের সুবিধা, চব্বিশ ঘন্টা পানি, দুটো বারান্দা। মোজাইক করা মেঝ আর কি চাই ?

কিন্তু সুথ তাদের কপালে সইলনা। একদিন সন্ধ্যায় মৃদুল সাহেব বাসায় ঢুকতে তার নজড়ে পড়ল দুটি মেইন গেটের উপরে আরবী লিখা কস্টিপ দিয়ে সাটানো। তিনি কাউকে কিছু বললেন না। মাস গড়িয়ে নতুন মাস এলে ভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়িওয়ালির কাছে যখন গেলেন তখন জিজ্ঞেস করলেন-

বাসায় উঠার সময়তো দরজার উপরে কোন আরবি লেখা দেখিনি। এখন দেখছি কারণ কি ?

বাড়িওয়ালী জানাল- না এমনি বাড়তি নিরাপত্তার জন্য দিয়েছি।

কেন ? বাসায় কি কোন প্যারানরমাল সমস্যা আছে ?

না নেই। কবরস্থানের পাশে বাসা তো তাই সতর্কতা অবলম্বন আর কি। ও নিয়ে আপনি ভাববেননা।

প্রথম ৩ মাস ভালই কেটে গেল। পরিবারের সবাই নতুন বাসা ও এলাকায় মানিয়ে নিয়েছে। বাড়িওয়ালী মাঝে মাঝে এসে মৃদুল সাহেবের স্ত্রী মাহিলার সাথে আলাপ সালাপ করেন। একসাতে চা খান। এটা সেটা বলাবলি করেন।

বাড়িওয়ালী এর আগে এমন ভদ্র পরিবার ভাড়াটে হিসাবে পাননি। চার তলা বিল্ডিং-এ ৩য় তলায় তিনি তার এক ছেলে ও চার মেয়ে নিয়ে থাকেন। ২য় তলায় মৃদুল সাহেব, নীচ তলায় ময়মনসিংহের লোক ও ৪র্থ তলায় চট্টগ্রামের লোক ভাড়া থাকে।

মালিহার সাথে বাড়িওয়ালীর হৃদ্যতা বাড়লে মালিহা জানাতে চান তার স্বামীর কি হয়েছে ?

প্রশ্ন শুনে বাড়িওয়ালীর মুখ মলিন হয়ে গেল। দুঃখী মানুষের মত চেহারা করে বাড়িওয়ালী বলল- এ বাড়িটি আমার স্বামী আমাকে উপহার দিয়েছেন। এ বড়িটিই তার কাল হলো। সে ছিল ঠিকাদার। তার ভাই-ভাবীরা তার উন্নতী দেখে হিংসা করত। তার থেকে টাকা নিয়ে দিতে চাইতো না। নানান টাল বাহানা করতো। সেও অবস্থা বিবেচনায় অনেক টাকা আর ফিরে চাইতেন না দান হিসাবে দিয়ে দিতেন।

কোনভাবে তার আর্থিক ক্ষতি করতে না পেরে তার এক ভাবী একদিন অনেক মাছ নিয়ে গ্রাম থেকে আমাদের বাসায় আসেন। কিছু মাছ বড় পাতিলে জিয়ানো ছিল। মাছ দেখে আমি খুশি হই। বুয়া আমি ও ভাবি বিকালে মাছ কুটতে বসি। পাতিলের জিয়ানো মাছ কুটতে চাইলে ভাবী বলল-এগুলো থাক। এমনিতে অনেক মাছ। আমি চলে যাওয়ার পর জিয়ানো মাছ তোমরা খাইও।

আমিও আর ওখানে হাত দেইনি। সন্ধ্যার একটু আগে আমার স্বামী বাসায় ফিরলে তাকে নাস্তা দিয়ে মাছের কথা জানালে সে বলল- জিয়ানো মাছ থেকে একটা মাছ ভাজা করো। রাতে তাজা মাছের ভাজা আর গরম ভাত খাব। বুয়াকে বললাম ওখান থেকে একটি মাছ বের করে যেন কুটে রাখে।

বুয়া তাই কররো। মাছ নামিয়ে সে রান্না ঘরে কি যেন পুড়ে যাচ্ছে বলে চলে গেল। মাছ লাফাচ্ছে। এদিকে আমার স্বামীর শরীরও খারাপ হয়ে গেল। তার অস্থিরতা বেড়ে গেল।

পানি, পানি বলে-চিৎকার করছে। বলছে- আমার বুকটা যেন মরুভূমির মত শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি পান করেও কিছু হলোনা। এক সময় সে কাতরাতে শুরু করল।

কি করব না করব ভেবে পাচ্ছিনা। শুরু হল রক্ত বমি। ওর ছোট ভাইকে পাঠালাম ডাক্তার আনতে।

সেই মাছটা যেই মারা গেল এমনি আমার স্বামীরও প্রাণ বায়ু বেড়িয়ে গেল। আমরা দুই জা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আমি যেন পাথর হয়ে গেলাম। কি হল কিছু যেন বুঝতে পারলামনা। চোখের সামনে সব আবছা হয়ে গেল। আমি জ্ঞান হারালাম।

পরে এক কামেল লোকের কাছে গিয়ে সব ঘটনা খুলে বললে তিনি আমাকে জানালেন দুইদিন পরে আস তোমাকে সব বলবো।

দুদিন পর গেলে তিনি যা বললেন-শুনে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলামনা।

তোমার স্বামীকে বান মারা হয়েছে। একটা মাছের উপর কালো যাদু করে রাখা হয়েছিল। সে মাছ যতদিন বাঁচবে , তোমার স্বামীও ততদিন বাঁচবে। মাছ মারা গেলে তোমার স্বামীও মারা যাবে।

তোমাদের কাছের এক আত্মীয় মহিলা একাজ করেছে। আমার আর বুঝতে বাকি রইলানা। আমার দেবর ও জা আমার এই সর্বনাশ করেছে।

কাহিনি শেষ করে তিনি বললেন- এ বড়িটি আমার স্বামী কিনেছে। যারা এর প্রথম মালিক তাদের এক কণ্যা ভালবেসে তার প্রেমিক পুরুষকে না পেয়ে আত্মহত্যা করে।

তারপর থেকে শুরু হয় ভৌতিক সব কর্মকান্ড। কান্নার আওয়াজ, হাটা-চলার শব্দ। বই নাড়াচাড়া আরও কত কি ঘটতো সেই মৃত মেয়ের রুমে। ভয়ে আতংকে তারা বাড়ি বিক্রি করে চলে যায়।

আমরা বাড়ি বন্ধ করে, মিলাদ পড়িয়ে ও নীচে একপাশে একটি ছোট রুম উঠিয়ে সেখানে এবাদত খানা চালু করে বাসায় উঠি।

সব সময় পাক পবিত্র থাকি। নামাজ পড়ি, দোয়া -দুরুয পড়ি । আল্লার রহমতে কোন সমস্যা এখন পর্যন্ত হয়নি।

একথা কাউকে বলোনা, ভয় পেয়না। আল্লাহ ভরসা।

বাড়িওয়ালী চলে যাওয়ার পর মালিহার মন কেমন খচ খচ করতে লাগলো।


উৎসর্গ ঃ সিগন্যাস ভাইকে যিনি ভৌতিক গল্প পছন্দ করেন ও লিখেন।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৭

শামচুল হক বলেছেন: ভৌতিক ঘটনা যেমন বান মারার ঘটনাও তেমন। ভালই লাগল।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ভাল লাগায় কৃতজ্ঞতা।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

সিগন্যাস বলেছেন: সর্বনাশ মাইদুল ভাই।এটা তো দেখছি পুরো ব্ল্যাজ ম্যাজিকের কারবার।মাছ নিয়ে অনেক ঘটনা শুনেছি।মাছ দিয়ে ব্ল্যাক ম্যাজিক করা এই প্রথম পড়লাম।সমস্যা নেই,আমি নিজেও একজন ব্ল্যাক ম্যাজিশিয়ান।পানি পড়া লাগলে নক কইরেন :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে গল্প।

ধন্যবাদ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:০৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সত্যি আপনি ব্ল্যাক ম্যাজিশিয়ান।

নাকি শখের বসে শিখেছেন।

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি শিরোনামে ভৌতিক লেখায় গল্পটা ভৌতিক হয়ে গেছে। গুগলে দেখলাম, একটা ফরাসী কিন্ডারগার্যটেনের মেয়ে এই ধরণের গল্প বলে বিরতিহীনভাবে।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পৃথিবীর সব দেশেই ভৌতিক কর্মকান্ড আছে।

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফরাসী মেয়ে গল্প বলছে:
French girl telling story

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:০৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সত্যিইতো তাই।

অনেকেই এই গল্প পছন্দ করে।

ভাল থাকুন।

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভূতের গল্প অথচ ভয় লাগে না।
ভূতের মুভি দেখি তাও ভয় লাগে না।
মরিচ খাই ঝাল লাগে না।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ভয় না লাগলে, ভাল লাগলেই চলবে।

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ছোট বেলাই এসব বান মারার গল্প শুনতাম,যাক ভালই লাগলো ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আসলেই এধরনের সবকিছু শুনে আমরা বড় হয়েছি।

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এটা প্রথম পর্ব নাকি? এখন পর্যন্ত তো ভয় লাগলো না। পরের পর্বে লাগতেও পারে, কি বলেন?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ঠিক ধরেছেন ১ম পর্ব।

ধন্যবাদ।

৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:২৩

লাবণ্য ২ বলেছেন: সুন্দর গল্প।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ আপু।

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

আখেনাটেন বলেছেন: এই ধরণের অারবী লেখা বাড়ি বিভিন্ন শহরে দেখা যায়। অনেকেই নানা কুসংস্কারের কারণে কবরস্থান সংলগ্ন বাড়ি, বাগান বাড়ি ইত্যাদিতে ভাড়া থাকতে চায় না। :P

গল্প পড়ে ভয়টয় না লাগলেও ভালো লেগেছে মাইদুল ভাই।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ভাই ঠিক বলেছেন।

ভাল লাগায় কৃতজ্ঞতা।

১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: গল্প ছোট হলেও কাহিনীর গভীরতা আছে।

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর মন্তব্য ।

ধন্যবাদ ভাই।

১১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৩২

খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পের নামটা ভাল হয়েছে, ব্রাকেটের অংশটুকু বাদে।
গল্পের শেষ পর্যন্ত পাঠকের আগ্রহে ভাটা পড়বেনা বলে আশা করি।
গল্পে ভাল লাগা + +

০৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গল্পের শেষ পর্বে ভৌতিক কর্মকান্ড ঘটবে।

সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।

ধন্যবাদ কবি।

১২| ০৬ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৪:০৩

রাকু হাসান বলেছেন: ভৌতিক বলে দিয়ে ভয় কমে গিয়েছে ।

শুভরাত্রি

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: শেষ পর্বে ভৌতিক ঘটনা ঘটবে।

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.